জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম কুমিল্লা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম কুমিল্লা
প্রাক্তন নাম
জামিয়া মিল্লিয়া
ধরনকওমি মাদ্রাসা
স্থাপিত১৯৫১ ইং
প্রতিষ্ঠাতাজাফর আহমদ
মূল প্রতিষ্ঠান
দারুল উলুম দেওবন্দ
অধিভুক্তিআল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ
ধর্মীয় অধিভুক্তি
ইসলাম
আচার্যআব্দুর রাজ্জাক
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
৫০ (২০২০)
শিক্ষার্থী৫০০ (২০২০)
অবস্থান
লাকসাম সড়ক, কুমিল্লা
শিক্ষাঙ্গনশহর

জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম কুমিল্লা কুমিল্লা জেলার লাকসাম সড়কের পাশে অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা। ১৯৫১ সালে বর্তমান মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন জাফর আহমদ। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির নামানুসারে মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে ‘কাসেমুল উলুম’। ১৯৮৫ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) চালুর পর মাদ্রাসার পুনঃনামকরণ করা হয় ‘জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম’। মাদ্রাসাটির পূর্বনাম ছিল জামিয়া মিল্লিয়া। আতহার আলী, তাজুল ইসলাম, আলাউদ্দিন আজহারী প্রমুখের পরিচালনায় মাদ্রাসাটি চলার পর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৪ সালে বর্তমান মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার জন্য জাফর আহমদ নতুন উদ্যোগ নেন। মাদ্রাসার বর্তমান মহাপরিচালক আবদুর রাজ্জাক। ২০২০ সালে মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ৫০০ ও শিক্ষক ৫০ জন।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ধারণা করা হয়, কুমিল্লা শহরে নওয়াব হোচ্ছাম হায়দার চৌধুরী ১৮৮৫ সালে পুরানো সিলেবাসের একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যা ১৯১৮ সালে জামিয়া মিল্লিয়া নামে একটি উচ্চ মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হয়। সৈয়্যদবাড়ী মসজিদের পাশে ওয়াকফ ভূমিতে গড়ে উঠা এই মাদ্রাসাটি কুমিল্লার সর্বপ্রথম বেসরকারি মাদ্রাসা। চল্লিশের দশকে মাদ্রাসাটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন আতহার আলী। কিন্তু কয়েক বছর পরিশ্রমের পর শিক্ষায় আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি কিশোরগঞ্জ চলে যান। এরপর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাজুল ইসলাম। তার আমলেও অগ্রগতি না হওয়ায় তিনিও মাদ্রাসার দায়িত্ব ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আলাউদ্দিন আল আজহারি। তিনি কিছুদিন মাদ্রাসাটি টিকিয়ে রাখেন।

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মাদ্রাসাটি বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করলে ১৯৪৪ সালে জাফর আহমদ মাদ্রাসাটি নতুন ব্যবস্থাপনায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মসজিদ সংলগ্ন যে স্থানে মাদ্রাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছিল উক্ত জমি মসজিদের ওয়াকফ ভূমি হওয়ায় সেখানে মাদ্রাসার নিজস্ব স্থায়ী ভবন নির্মাণ করা সম্ভব ছিল না। ১৯৫১ সালে লাকসাম রোডের পাশে বর্তমান স্থানটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম জাফর আহমদের নামে ক্রয় করে সেখানে মাদ্রাসাটির নিজস্ব স্থানে একটি টিনের ঘরে স্থানান্তরিত করা হয়। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির নামানুসারে কাসেমুল উলুম নামে মাদ্রাসাটির নবযাত্রা শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে মাদ্রাসাটিকে ‘জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম’ নামে পুনঃনামকরণ করা হয়। ১৯৮৫ সালে কাসেমুল উলুম এতিমখানা নামে একটি এতিমখানাও মাদ্রাসার সাথে সংযুক্ত হয়।[১][২][৩][৪]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. গোলাম ছরোয়ার, মুহাম্মদ (নভেম্বর ২০১৩)। "বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ২৮৮। 
  2. আলম, মো. মোরশেদ (২০১৪)। হাদীস শাস্ত্র চর্চায় বাংলাদেশের মুহাদ্দিসগণের অবদান (১৯৭১-২০১২)বাংলাদেশ: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২২৮। 
  3. হারুনুর রশিদ, জামিয়া পরিচিতি, রাহবার স্মরণিকা ১৪৭২ হি., কুমিল্লা: জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলুম, পৃ.১১
  4. সাইয়েদ, আহসান (২০০৬)। বাংলাদেশে হাদীছ চর্চা উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ। সেগুনবাগিচা, ঢাকা: অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ১০৯। আইএসবিএন 9842000184