রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী (রাজনীতিবিদ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী
পাকিস্তানের তৃতীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৬২ – ১৯৬৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৮৮৯
গোপালপুর, বেগমগঞ্জ থানা
মৃত্যু১৯৭০
সন্তান২ ছেলে ও ৯ মেয়ে

রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসাবে পাকিস্তানের তৃতীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন।[১]

প্রাথমিক ও কর্মজীবন[সম্পাদনা]

রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ১৮৮৯ সালে বেগমগঞ্জ থানার অন্তর্গত গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গোপালপুর চৌধুরী বাড়ির আলী হায়দার চৌধুরীর ৭ পুত্রের মধ্যে রেজ্জাকুল হায়দার ৫ম পুত্র ছিলেন।

রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ১৯২৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ বি.এল পাশ করার পর নোয়াখালীতে বসবাস করার পাশাপাশি আইন ব্যবসার সাথে যুক্ত হন। তিনি একাধিকবার নোয়াখালী জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। খান বাহাদুর ওলি উল ইসলামের কন্যাকে বিবাহ করে পারিবারিক জীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি ১৯২৮ সালে নোয়াখারী জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৫৬ সালে তৃতীয় বারের মতো নোয়াখালী জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৩৭ সালে তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্ট কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৫০ সালে নোয়াখালী পাবলিক প্রশিকিউটর হিসেবে নিযুক্ত হন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

১৯৪৬ সালের বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক পরিষদ নির্বাচনে সম্প্রদায় ভিত্তিক আসন বন্টন করা হয়। ওই সময় মুসলিম আসন ক্যাটাগরীতে রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর (মুসলিম পার্লামেন্টারী র্বোড) থেকে নোয়াখালী উত্তর (বেগমগঞ্জ-সেনবাগ) আসনে নির্বাচন করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন মুসলিম লীগের ফজলুর রহমান। ১৯৫৪ সালে পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদ নির্বাচনে সম্প্রদায় ভিত্তিক মুসলিম সম্প্রদায় আসন নোয়াখালী মধ্য উত্তর (রামগঞ্জ একাংশ-বেগমগঞ্জ অপরাংশ) আসনে রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, যুক্তফ্রন্ট, (কেএসপি)র হয়ে নির্বাচন করে মোট ১৫৮০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মুসলিম লীগের মৌলভী রশিদ আহমেদ জয়াগী।

রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের নোয়াখালী-২ এর প্রতিনিধি হিসাবে পাকিস্তানের তৃতীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন।[২] তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট হতে নির্বাচন করে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছরে পাকিস্তান আমলে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আইয়ুব খানের শাসনামলে, ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্থান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (বেগমগঞ্জ, রামগঞ্জ একাংশ রায়পুর) আসন থেকে রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে ১৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন।

খাঁন বাহাদুর পদবী[সম্পাদনা]

খাঁন বাহাদুর রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা বোর্ডের চেয়াম্যান থাকা অবস্থায় বিভিন্ন জনহিতকর কাজে জড়িত ছিলেন। মাইজদী শহরে নোয়াখালী সদর দপ্তর রাখার ব্যাপারে তার অসাধারণ অবদান ছিল। এতদ্ব্যতীত তিনি দীর্ঘদিন কলকাতাস্থ নোয়াখালী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। সমাজসেবামূলক ও জনহিতকর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তৎকালীন বৃটিশ সরকার তাঁকে খাঁন বাহাদুর পদবী উপাধিতে ভূষিত করে।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৭০ সালে বার্ধক্য জনিত কারণে ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে ও ৯ মেয়ে রেখে যান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ। Debates: Official Report (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৪৫০-১৪৫১। 
  2. "LIST OF MEMBERS OF THE 3RD NATIONAL ASSEMBLY OF PAKISTAN FROM 1962-1964" (পিডিএফ)na.gov.pk। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২১