রায়পেট্টা

স্থানাঙ্ক: ১৩°০৩′১৪.০″ উত্তর ৮০°১৫′৫০.৬″ পূর্ব / ১৩.০৫৩৮৮৯° উত্তর ৮০.২৬৪০৫৬° পূর্ব / 13.053889; 80.264056
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রায়পেট্টা
இராயப்பேட்டை
চেন্নাইয়ের অঞ্চল
রায়পেট্টা চেন্নাই-এ অবস্থিত
রায়পেট্টা
রায়পেট্টা
রায়পেট্টা তামিলনাড়ু-এ অবস্থিত
রায়পেট্টা
রায়পেট্টা
স্থানাঙ্ক: ১৩°০৩′১৪.০″ উত্তর ৮০°১৫′৫০.৬″ পূর্ব / ১৩.০৫৩৮৮৯° উত্তর ৮০.২৬৪০৫৬° পূর্ব / 13.053889; 80.264056
রাষ্ট্র ভারত
রাজ্যতামিলনাড়ু
জেলাচেন্নাই
তালুকএগমোর
মহানগরচেন্নাই
অঞ্চল ওয়ার্ড৯-তেনামপেট, ১১৮
উচ্চতা৯ মিটার (২৯ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১৪,৯১২[১]
ভাষা
 • দাপ্তরিকতামিল
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৬০০০১৪
টেলিফোন কোড০৪৪
যানবাহন নিবন্ধনTN-01 (টিএন-০১)
সিভিক এজেন্সিচেন্নাই নগর নিগম
নগর পরিকল্পনাসিএমডিএ
লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রচেন্নাই মধ্য
বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্রথাউজেন্ড লাইট
সাংসদদয়ানিধি মারন
ওয়েবসাইটhttp://www.chennaicorporation.gov.in/

রায়পেট্টা দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই জেলার একটি অঞ্চল৷ এটি শহরের অন্যতম অগ্রগণ্য অর্থনৈতিক ও আবাসিক অঞ্চল। রায়পেট্টাতে রয়েছে একটি ক্লক টাওয়ার[২]

অবস্থান[সম্পাদনা]

রায়পেট্টা চেন্নাই শহরের মধ্যস্থলে সমুদ্রতল থেকে ৯ মিটার বা ২৯ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।[৩] এটি চেন্নাই কর্পোরেশনের ৯ নং তেনামপেট অঞ্চলে ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত।[৪]

সীমানা[সম্পাদনা]

রায়পেট্টার উত্তর-পশ্চিম দিকে নুঙ্গমবক্কম, উত্তর দিকে চিন্তাদ্রিপেট, উত্তর-পূর্ব দিকে চেপবক্কম, পশ্চিম দিকে গোপালপুরম, পূর্ব দিকে তিরুবল্লীকেণি, দক্ষিণ পশ্চিম দিকে তেনামপেট, দক্ষিণ দিকে ময়িলাপুর এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মেরিনা সমুদ্র সৈকত রয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৭২১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নথিভূক্ত তথ্য অনুসারে রায়পেট্টা, নুঙ্গমবক্কম ও তেনামপেট এই তিনটি লোকালয় একত্রে বহু পূর্বে পথচারীছত্র ছিল।[৫] খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ব্রিটিশ আগমনের পর অষ্টাদশ শতাব্দীর অবধি বড় সংখ্যায় ইউরেশীয় লোকজন এই অঞ্চলে বসবাস করতে আসেন।[৬] অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ এরপর থেকে মুসলিম বণিকদের আনাগোনা শুরু হয়।[৭] ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে এখানে আমির মহল নির্মাণ করে।[৮] ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে কর্ণাট রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করলে নবাবের বাসগৃহ ও খলসা মহল বা চেপবক্কম প্যালেস মাদ্রাজ সরকারের হস্তগত হয়।[৮] এরপর নবাব ত্রিপলিকেণ (তিরুবল্লীকেণি) হাইওয়ের ওপর শাদি মহল নামে একটি অট্টালিকায় বসবাস করা শুরু করেন।[৮] তবে ব্রিটিশ সরকারের তৎপরতায় আমির মহল আর্কটের নবাবপুর থেকে দেওয়া হয় এবং রবার্ট খ্রিশমের পরিকল্পনা অনুসারে অফিস বিল্ডিংকে রাজপ্রাসাদে পরিণত করা হয়।[৯] ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে নবাব ও তার পরিবার আমির মহলে প্রত্যাবর্তন করলে তার পর থেকে এটি ছিল আর্কটের নবাবদের স্থায়ী ঠিকানা।[৮]

১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত পিউরিফিকেশন চার্চ ছিল এই লোকালয়ের প্রথম গির্জা। অবশ্য ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই গির্জাটি প্রেজেন্টেশন চার্চ বা ওয়ালাজাপেট গির্জা নামে পরিচিতি পায়। ২১ ভূমি প্লটের উপর নির্মিত এই গির্জাটি ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে নবাব দ্বারা অনুমতিপ্রাপ্ত হয়।[১০] বর্তমান জামবাজার অঞ্চলে তথা গির্জাটির পাশেই ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয় সুব্রহ্মণ্যস্বামী মন্দির।[১০] ১৮১০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় হাউসেন্ড লাইট মসজিদ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম মেথডিস্ট খ্রিস্টীয় ভজনালয় প্রতিষ্ঠিত হয় রায়পেট্টাতে। প্রতিষ্ঠার এক বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠাতা জেমস লিনচ এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। এই গির্জাটি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে উইস্লি চার্চ নামে পরিচিত হয়।[১১]

১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদ্রাজ আই ইনফির্মারি।[১২][১৩] এটি এশিয়ার প্রবীণতম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় প্রবীণতম চক্ষু বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল।[১২] লন্ডন|লন্ডনে অবস্থিত মুরফিল্ডস আই হসপিটাল ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে এই হাসপাতালটিকে এগমোর|এগমোরে নিয়ে যাওয়া হয় ও ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে এটির নাম দেওয়া হয় এগমোর চক্ষু হাসপাতাল[১২] ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে রায়পেট্টা সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৪] এই হাসপাতালের প্রথম সুপারিনটেনডেন্ট নিযুক্ত হন কলনেল সি ডনোভান।[১৫]

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে রায়পেট্টাতে প্রবীণতম প্রোটেস্ট্যান্ট বিদ্যালয় মোনাহান বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।[১১] ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে উইস্লি স্কুল নামে একটি শরীরচর্চার বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৬] ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে জর্জ টাউনে‌ অবস্থিত চেন্নাই সাধারণ ডাকঘরের সহযোগী হিসেবে রায়পেট্টাতে একটি নতুন ডাকঘর খোলা হয়।[১৭] ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে এই লোকালয় জেনারেল প্যাটার্স রোডের উপর উডল্যান্ডস হোটেল এবং মডার্ন হিন্দু হোটেল নির্মিত হয় যা ছিল এই শহরে প্রথম ভারতীয় পদ্ধতিতে তৈরি নিরামিষ খাবারের হোটেল।[১৮]

১৯৩০ এর দশকি এখানে একটি ক্লক টাওয়ার তৈরি করা হয়। বর্তমান গানি এন্ড সন্স তথা তৎকালীন সাউথ ইন্ডিয়া ওয়াচ কোম্পানি ওই ক্লক টাওয়ারের ঘড়ির সমস্ত যন্ত্রাংশ তৈরি করে।[১৯]

জনতত্ত্ব[সম্পাদনা]

২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনগণনা অনুসারে রায়পেট্টার মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪,৯১২ জন, যেখানে পুরুষ ৭,৪৪৪ জন এবং নারী ৭,৪৬৮ জন।[২০]

স্বাস্থ্য পরিষেবা[সম্পাদনা]

রায়পেট্টা সরকারি হাসপাতাল এই লোকালয়ে অবস্থিত প্রধান স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং শহরের সীমান্তবর্তী দ্বিতীয় বৃহত্তর হাসপাতাল,[২১] এর বিস্তার চেঙ্গলপট্টু অবধি।[২২] এই হাসপাতালের পূর্ণ পরিষেবা বিশিষ্ট জরুরিকালীন বিভাগ রয়েছে এছাড়াও রয়েছে সবুজায়ন, কালার কোড অঞ্চল এবং তামিলনাড়ু এক্সিডেন্ট এন্ড ইমার্জেন্সি কেয়ার ইনিসিয়েটিভের নির্দেশাবলী।[২৩]

রাজনীতি[সম্পাদনা]

রায়পেট্টা চেন্নাই মধ্য লোকসভা কেন্দ্রের থাউসেন্ড লাইটস বা আয়িরম বিলকু বিধানসভার অন্তর্গত।[২৪] এই লোকালয় রয়েছে তামিলনাড়ু কংগ্রেস সমিতি এবং সর্বভারতীয় আন্না দ্রাবিড় মুনেত্র কড়গম রাজনৈতিক দলদুটির সদর এবং পুরাচি থালাইভি আম্মা মালিগাই, ভারতীয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল আম্মা মক্কাল মুনেত্রা কাজগামের সদর দফতর।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Census of India 2011: District Census Handbook, State Tamil Nadu, Chennai (Royapettah is ward no. 0112)" (পিডিএফ)Office of the Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৯ 
  2. Madhavan, D. (১৯ জানুয়ারি ২০১৪)। "Clock tower at Mint ticks again"The Hindu। Chennai। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৪ 
  3. "Search Coordinates and Elevation of Royapettah Tamil Nadu India"Google Earth। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-০৯ 
  4. "Welcome to Greater Chennai Corporation/Zone details"Greater Chennai Corporation। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৬ 
  5. Muthiah 2014, পৃ. 442।
  6. Muthiah 2014, পৃ. 77–78।
  7. Muthiah 2014, পৃ. 5।
  8. Muthiah 2004, পৃ. 168।
  9. Jayewardene-Pillai 2007, পৃ. 200।
  10. Muthiah 2014, পৃ. 197।
  11. Muthiah 2014, পৃ. 389।
  12. Muthiah 2014, পৃ. 372।
  13. Parthasarathy, The Hindu 16 October 2012
  14. TNHealth.org, n.d.
  15. Muthiah 2014, পৃ. 369।
  16. Muthiah 2014, পৃ. 100।
  17. Muthiah 2014, পৃ. 330–331।
  18. Muthiah 2014, পৃ. 76–77।
  19. Venkatraman, The New Indian Express, 27 August 2012
  20. "District Census Handbook, Chennai, Village and Town Directory" (পিডিএফ)Directorate of Census Operations, Tamil Nadu। Office of the Registrar General and Census Commissioner, India। পৃষ্ঠা 30। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২১ 
  21. The Times of India, 17 August 2012
  22. The Hindu, 30 April 2013
  23. Josephine, The Hindu, 28 April 2019
  24. "Thousand Lights Vidhan Sabha Election – Thousand Lights Assembly Election Results, Polling Stations, Voters, Candidates"Datanet India Pvt. Ltd.। ২০২০-১১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-০৬