দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি
ভৌগলিক সীমাইউরোপ
সময়Chalcolithic Europe
তারিখcirca 2900 BCE – circa 2350 BCE
প্রধান স্থানBronocice
পূর্বসূরীনার্ভা সংস্কৃতি, Funnelbeaker culture, Globular Amphora culture
উত্তরসূরীBeaker culture, Andronovo culture (derived from Corded Ware culture)[১]

দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি (Corded Ware culture), CWC[২] (জার্মান: Schnurkeramik; ফরাসি: céramique cordée; ওলন্দাজ: touwbekercultuur) ইউরোপের একটি বৃহৎ পুরাতাত্ত্বিক দিগন্ত নিয়ে গঠিত, এবং এটি আনু. খ্রিপূ ২৯০০ অব্দ থেকে আনু. ২৩৫০ অব্দ পর্যন্ত বর্তমান ছিল। সুতরাং বলা যায় এই সংস্কৃতি নব্যপ্রস্তর যুগের শেষ পর্যায় থেকে, তাম্র যুগ হয়ে ব্রোঞ্জ যুগের শুরুর দিকে এসে শেষ হয়।[৩] দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত ছিল, পশ্চিমে রাইন নদী থেকে পূর্বে ভোলগা নদী পর্যন্ত অঞ্চল নিয়ে এটি উত্তর ইউরোপ, মধ্য ইউরোপপূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তৃত হয়।[৩]

হাক প্রমুখ (২০১৫) গবেষণা অনুসারে দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী জনগোষ্ঠী ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির জনগোষ্ঠীর সাথে বংশাণুগতভাবে ঘনিষ্ঠ ছিল। গবেষণাটিতে লেখা হয়, "ইউরোপের পূর্ব প্রান্ত, ইউরেশীয় স্তেপ অঞ্চল থেকে ইউরোপের হৃদয়ভূমিতে প্রচুর সংখ্যক লোকের অভিপ্রায়ণ ঘটে।"[৪] দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি প্রত্ন-জার্মানীয়প্রত্ন-বাল্টীয়-স্লাভীয় ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষায় বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে জন্ম নেয়া সিন্তাশতা সংস্কৃতির লোকেদের সাথেও কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি জিনগত সম্পর্ক দেখায়, যেই সিন্তাশতা সংস্কৃতিতে প্রত্ন-ইন্দো-ইরানীয় ভাষার জন্ম হয়ে থাকতে পারে।[১]

নামকরণ[সম্পাদনা]

১৮৮৩ সালে দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি নামটি (জার্মান: Schnurkeramik-Kultur, ওলন্দাজ: touwbekercultuur, ফরাসি: ceramique cordée) প্রথম রাখেন জার্মান পুরাতাত্ত্বিক ফ্রেডরিখ ক্লপফ্লাইশ।[৫] তিনি এদের মৃৎশিল্পের উপর দড়ি বা কর্ড এর মত ছাপ দেখতে পেয়ে এই নামটা দেন।[৫] এদের একটি উপদল সিংগেল গ্রেইভ কালচার (Single Grave culture) নামেও পরিচিত। এই নামটি এদের সমাধিস্থকরণের রীতি থেকে এসেছে, যেখানে মাটির ঢিপির (টুমুলি) নিচে একটি সমাধি রাখা হয়, যেখানে মৃতদেহকে ক্রাউচড পজিশনে রেখে তার সাথে বিভিন্ন হস্তনির্মিত বস্তু রাখা হত। ক্রাউচড পজিশন বলতে বসিয়ে, পা ভাঁজ করে, মাথা পায়ের দিকে নত করে রাখা অবস্থাকে বোঝানো হয়। আরেক উপদল ব্যাটল এক্স সংস্কৃতি (Battle Axe culture) বা বোট এক্স সংস্কৃতি (Boat Axe culture) এর নামকরণ করা হয়েছে পুরুষের সমাধিতে মৃতদেহের সাথে দেয়া বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে, কারণ এক্ষেত্রে তাদের সমাধির সাথে একটি পাথরের তৈরি নৌকা আকৃতির ব্যাটল-এক্স প্রদান করা হত।[৫]

ভৌগোলিক অবস্থান[সম্পাদনা]

দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি ইউরোপ মহাদেশের বেশিরভাগ উত্তর ইউরোপ জুড়ে পশ্চিমে রাইন নদী থেকে পূর্বে ভোলগা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, যে অঞ্চলের মধ্যে বর্তমান জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলারুস, চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, সুইজারল্যান্ড, উত্তর পশ্চিম রোমানিয়া, উত্তর ইউক্রেন, রাশিয়ার ইউরোপীয় অংশ, উপকূলীয় নরওয়ে এবং সুইডেনফিনল্যান্ড এর দক্ষিণ অংশ অন্তর্ভুক্ত।[৩] তাম্রযুগের শেষ পর্যায়ে বা ব্রোঞ্জ যুগের প্রথম পর্যায়ে এটি প্রায় সম্পূর্ণ বলকান উপদ্বীপ জুড়ে বিস্তৃত হয়েছিল, যেখানে দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি স্তেপ অঞ্চলের উপাদানের সাথে মিশ্রিত হয়েছিল।[৬]

প্রত্নতাত্ত্বিকগণ লক্ষ্য করেন, দড়ির ছাপযুক্ত মৃৎসামগ্রী সংস্কৃতি একটি "একীভূত সংস্কৃতি", যেহেতু কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির দলগুলো রাইন নদী থেকে ভোলগা নদী পর্যন্ত একটি বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত, তাই এই সংস্কৃতির বিভিন্ন অঞ্চলে অঞ্চলভিত্তিক বিশেষ রকমের জীবিকার কৌশল ও অর্থনীতি ছিল।[৭]:226 এই সংস্কৃতির বিভিন্ন বসতির মধ্যে উপাদান সংস্কৃতির ভিন্নতা ছিল।[৩] একই সাথে আবা কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি্র সকল দলের মধ্যে বিভিন্ন সাধারণ বৈশিষ্ট্যও উপস্থিত ছিল, যেমন অনেষ্টিক্রিয়া, "দড়ি" অলঙ্করণে নির্মিত মৃৎশিল্প, এবং একটি বিশেষ ধরনের পাথরের কুঠার যা অন্য কোথায় দেখা যায় না।[৩]

সমসাময়িক বিকার সংস্কৃতির (Beaker culture) (আনু. খ্রি.পূ. ২৮০০ অব্দ থেকে ১৮০০ অব্দ) সাথে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির পশ্চিম প্রান্তের (এলবে এর পশ্চিমাঞ্চলে) মধ্যে উপরিপাতন ছিল। এই বিকার সংস্কৃতি কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিকে ইউরোপ জুড়ে বিস্তৃত হতে সহায়তা করে থাকতে পারে। কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিতে বিকার সংস্কৃতির মতই সামাজিক সংগঠন ও বসতির বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করা হয়েছিল, কিন্তু সমুদ্র ও নদী দিয়ে বাণিজ্য ও যোগাযোগের মাধ্যমে বিকার সংস্কৃতি তাদের সংস্কৃতিতে যেসব নতুন পরিশোধন আনতে পেরেছিল কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিতে সেগুলো অনুপস্থিত ছিল।[৮]

ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী দলগুলোর সাথে সম্পর্ক[সম্পাদনা]

Corded Ware pottery in the Museum für Vor- und Frühgeschichte (Berlin). Ca. 2500 BCE

উৎপত্তি[সম্পাদনা]

কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির উৎপত্তি ও ছড়িয়ে পড়া হচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় উওরহাইমাট সমস্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সমস্যা।[৯] দীর্ঘদিন ধরেই কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিকে ইন্দো-ইউরোপীয় হিসেবে ধরা হচ্ছে কেননা এর পূর্ববর্তী সংস্কৃতিগুলোর তুলনায় এই সংস্কৃতিতে বসতির অভাব দেখা যায়। এর অর্থ হচ্ছে এই সংস্কৃতিতে ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির মতই গতিশীল ও চারণজীবী অর্থনীতি বিদ্যমান ছিল, এবং সাংস্কৃতিক ভাষাতত্ত্ব থেকেও কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষী হওয়ার ব্যাপারটি অনুমিত হয়। এই সংস্কৃতির বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়া ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের বিস্তরণের যে সময়কালকে ধরা হয়, সেই সময়ে এর দ্রুত সম্প্রসারণকে নির্দেশ করে। এই সংস্কৃতির লোকেদের ঘোড়াচাকার গাড়ি যানবাহন অধিকার, আপাত যুদ্ধ প্রবৃত্তি, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এবং ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের বিস্তরণের অনুমিত সময়কালে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য একসময় কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিকে প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয়দের উওরহাইমাট বা জন্মভূমি হিসেবে ধরা হত।[৯] বর্তমানে এই ধারণাটিকে আর সত্য বলে মনে করা হয় না, কুরগান অনুকল্পই বর্তমানে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের উদ্ভব ও ছড়িয়ে পড়া সংক্রান্ত সবচাইতে বেশি গৃহীত প্রস্তাব।[১০]

কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির উৎপত্তি বিষয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। কোন কোন প্রত্নতাত্ত্বিক মনে করেন এর উৎপত্তি মধ্য ইউরোপে, এবং অন্যেরা আবার এই সংস্কৃতির উৎপত্তিতে স্তেপ অঞ্চলের চারণজীবী সমাজের যাযাবরদের প্রভাব দেখেন।[১০] যারা মনে করেন যে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির উৎপত্তি মধ্যে ইউরোপে, তারা এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এটি মনে করেন যে, এই সংস্কৃতির সাথে উত্তর-মধ্য ইউরোপের ফানেলবিকার সংস্কৃতির (Funnelbeaker culture) (আনু. খ্রি.পূ. ৪৩০০ - ২৮০০ অব্দ) মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মিল ছিল। গিম্বুটাস এর মতে, কর্ডেড অয়ার কালচার সংস্কৃতির পূর্বে ছিল গ্লোব্যুলার এমফোরা সংস্কৃতি (Globular Amphora culture) (আনু. খ্রি.পূ. ৩৪০০ - ২৮০০ অব্দ), যাকে তিনি একটি ইন্দো-ইউরোপীয় সংস্কৃতি বলে মনে করতেন। এই গ্লোব্যুলার এমফোরা সংস্কৃতি মধ্য ইউরোপ থেকে বাল্টিক সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, এবং এটির উৎপত্তি হয় ফানেলবিকার সংস্কৃতি থেকে।[১১] কিন্তু অন্যান্য অঞ্চলে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিকে নতুন সংস্কৃতি ও শারীরিক ধরন নিয়ে আসতে দেখা যায়।[৯] এই সংস্কৃতিটি যে বিশাল অঞ্চল দখল করেছিল তা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, এটি একটি অন্যতম চিত্তাকর্ষক ও বৈপ্লবিক সাংস্কৃতিক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে যাকে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ সত্যায়িত করেন।[৮] অবশ্য এদের এই অভিবাসন কতটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন এনেছিল তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, এবং এরকম বিতর্কই কর্ডেড অয়ার বিতর্কের বড় অংশ দখল করে আছে।

Corded Ware stone-axe in the Museum für Vor- und Frühgeschichte (Berlin). Ca. 2800-2400 BCE.

বিতর্কিত রেডিওকার্বন ডেটিং অনুসারে, একক সমাধিতে কর্ডেড অয়ার সিরামিক ফর্মগুলি পশ্চিম ও দক্ষিণ মধ্য ইউরোপের তুলনায় বর্তমান পোল্যান্ড অঞ্চলে বিকাশ লাভ করে।[১২]

কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির প্রাচীনতম রেডিওকার্বন ডেটগুলো আসে প্রকৃতপক্ষে মধ্য ও দক্ষিণ পোল্যান্ডের কুইয়াভিয়া এবং লেসার পোল্যান্ড থেকে আসে এবং আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দ সময়কালকে নির্দেশ করে।

তবে পরবর্তী পর্যালোচনা এই দৃষ্টিকোণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, এর বদলে এটি কর্ডেড অয়ার ডেটিং এর বিস্তৃত পরিসরের বৈচিত্র্যকে নির্দেশ করে, বিশেষ করে এই সংস্কৃতির শুরুর দিকের ডেটিং আলাদা আলাদা সমাধির উপর ভিত্তি করে পাওয়া যায় যা সমগ্র সংস্কৃতির প্রত্নতাত্ত্বিক উপাত্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না, এবং এই সংস্কৃতির সমস্ত রেডিওকার্বন ক্যালিব্রেশন রেখার বাইরে থাকে। সুইজারল্যান্ডের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ বিষয় লক্ষ্য করা গেছে। এখানে ডেটিংকে ডেনড্রোক্রোনোলজির সাথে পরিষ্কার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেখা গেছে এই অঞ্চলে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি খুব কম সময়ের জন্যই বর্তমান ছিল। সেখানে খ্রিস্টপূর্ব ২৭৫০ থেকে ২৪০০ অব্দ পর্যন্ত এই সংস্কৃতির অস্তিত্ব ছিল।[১৩] অধিকন্তু, যেহেতু সুইজারল্যান্ডের সংক্ষিপ্ত সময়টিতে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির সমস্ত প্রধান উপ-সময়কালের শিল্পকর্মের উদাহরণই পাওয়া যায় বলে মনে হয়, তাই কিছু গবেষক এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২৯ শতকের প্রথম দিকে (আনু. খ্রিস্টপূর্ব ২৯০০ অব্দ) কমবেশি একই সাথে সমগ্র উত্তর মধ্য ইউরোপ জুড়ে অনেকগুলো কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিল, যেই কেন্দ্রগুলো পরবর্তীতে তাদের নিজেদের স্থানীয় নেটওয়ার্ক তৈরি করে নেয়।[৭]:297 বাদবাকি মধ্য ইউরোপীয় অঞ্চলের কার্বন-১৪ ডেটিং থেকে দেখা যায়, সেইসব অঞ্চলে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি খ্রিস্টপূর্ব ২৮৮০ অব্দের পরে এসেছিল।[১৪] এই তত্ত্ব অনুসারে এই সংস্কৃতিটি বর্তমান জার্মানির লুনেবার্গ হিথ এর দিকে প্রসারিত হয়, তারপর উত্তর ইউরোপীয় সমভূমি, রাইনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, স্ক্যান্ডিনেভিয়া, বাল্টিক অঞ্চল ও রাশিয়া হয়ে মস্কো পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়, রাশিয়ার অঞ্চলে এই সংস্কৃতি চারণজীবীদের সম্মুখীন হয় যারা স্তেপ অঞ্চলে মূলনিবাসী ছিল।[৮]

সাম্প্রতিক প্যালিওজিনোমিক উপাত্ত দেখাচ্ছে যে, খ্রিস্টপূর্ব ২৪০০ অব্দের কর্ডেড অয়ার জনসংখ্যার নমুনার অন্তত ৭৫% স্তেপ অঞ্চলের ইয়াম্নায়া জনসংখ্যার অনুরূপ। এটি কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতির উৎস্য হিসেবে স্তেপ অঞ্চলের মানুষের বড় ধরনের অভিপ্রায়ণকে নির্দেশ করছে। তবে এই ব্যাখ্যাটিকে প্রত্নতাত্ত্বিকগণ বেশি পরিমাণে সরল বলে দাবি করছে, কারণ এটি প্রত্নতাত্ত্বিক ব্যাখ্যার জটিল প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে।

পশ্চিমাঞ্চলে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিতে পরিবর্তন দ্রুত ও মসৃণ হয়েছিল বলে প্রস্তাব করা হয়। আর এর পূর্বের ফানেলবিকার সংস্কৃতিতে যে অন্তঃস্থ পরিবর্তনগুলোর মধ্য দিয়ে কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতি আসছিল, সেই অন্তঃস্থ পরিবর্তনগুলো পূর্ব জার্মানিতেই শুরু হয়।[১৫] অন্যদিকে বর্তমান বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহে (এস্তোনিয়া, লাতভিয়ালিথুয়ানিয়া) এবং উত্তর-পূর্ব পোল্যান্ডে একে নারভা সংস্কৃতির (Narva culture) (খ্রি.পূ. ৫৩০০ - ১৭৫০ অব্দ) দক্ষিণ পশ্চিম অংশ থেকে সেইসব অঞ্চলে অনুপ্রবেশকারীদের উত্তরাধিকারী হিসেবে দেখা হয়। যাইহোক, বর্তমানে সকল ক্ষেত্রেই কর্ডেড অয়ার সংস্কৃতিকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হয়, তবে অনুপ্রবেশকারী হলেই যে সব ক্ষেত্রে এরা আক্রমণকারী ছিল, এমন কোন কথা নেই, এরা অনেক ক্ষেত্রেই কোন অঞ্চলের স্থানীয় সংস্কৃতিগুলোর সাথে একত্রে বসবাস করেছে।[১৬]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Allentoft, Morten; Sikora, Martin (২০১৫)। "Population genomics of Bronze Age Eurasia"Nature522 (7555): 167–172। ডিওআই:10.1038/nature14507পিএমআইডি 26062507বিবকোড:2015Natur.522..167A 
  2. "Fig. 4 | Nature Communications" – www.nature.com-এর মাধ্যমে। 
  3. Beckerman, Sandra Mariët (২০১৫)। Corded Ware Coastal Communities: Using ceramic analysis to reconstruct third millennium BCE societies in the Netherlands। Leiden: Sidestone Press। 
  4. Haak, W.; ও অন্যান্য (১ জুন ২০১৫)। "Massive migration from the steppe was a source for Indo-European languages in Europe"Nature522 (207–211): 207–211। arXiv:1502.02783অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1038/nature14317পিএমআইডি 25731166পিএমসি 5048219অবাধে প্রবেশযোগ্যবিবকোড:2015Natur.522..207H 
  5. Karel Sklenář, Archaeology in Central Europe: The First 500 Years (Leicester: Leicester University Press; New York: St. Martin's Press, 1983), 120.
  6. Aleksandar Bulatović; ও অন্যান্য (Spring–Summer ২০১৪)। "Corded Ware in the Central and Southern Balkans: A Consequence of Cultural Interaction or an Indication of Ethnic Change?"Journal of Indo-European Studies42 (1–2)। 
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Beckerman নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. Cunliffe, Barry (১৯৯৪)। The Oxford Illustrated Prehistory of Europe। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 250–254। 
  9. Mallory 1997, পৃ. 127–128
  10. Asya Pereltsvaig and Martin Lewis 2015. The Indo-European Controversy: Facts and Fallacies in Historical Linguistics. Cambridge: Cambridge University Press.
  11. Mallory 1999, পৃ. 250।
  12. Furholt, Martin (২০০৪)। "Entstehungsprozesse der Schnurkeramik und das Konzept eines Einheitshorizontes"Archäologisches Korrespondenzblatt (German ভাষায়)। 34 (4): 479–498। ১৯ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  13. Wlodarczak, Piotr (২০০৯)। "Radiocarbon and Dendrochronological Dates of the Corded Ware Culture"Radiocarbon51 (2): 737–749। ডিওআই:10.1017/s003382220005606x। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৬ 
  14. Czebreszuk, Janusz (২০০৪)। "Corded Ware from East to West"। Crabtree, Pam; Bogucki, Peter। Ancient Europe, 8000 B.C. to A.D. 1000: An Encyclopedia of the Barbarian World 
  15. Bloemers, JHF; van Dorp, T (১৯৯১)। Pre- & protohistorie van de lage landen, onder redactie (Dutch ভাষায়)। De Haan/Open Universiteit। আইএসবিএন 978-90-269-4448-2। 644। 
  16. Gimbutas 1997

উৎস্য[সম্পাদনা]

বহিঃস্থ সূত্র[সম্পাদনা]