ইরান-চীন ২৫ বছর মেয়াদী সহযোগিতা কর্মসূচী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পূর্ণাঙ্গ কৌশলগত অংশীদারিত্ব
তৈরি২৭শে মার্চ, ২০২১
অবস্থানতেহরান, ইরান
লেখক(গণ)গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
উদ্দেশ্যদ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রশ্নের সমস্ত ক্ষেত্রে চুক্তি

ইরান-চীন ২৫ বছর মেয়াদী সহযোগিতা কর্মসূচি বা ইসলামী প্রজাতন্ত্রী ইরান ও গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যকার পূর্ণাঙ্গ কৌশলগত অংশীদারত্ব[১] চীন ও ইরান সরকারের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তি।[২][৩] ২০২১ সালের ২৭শে মার্চ তারিখে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইরানের রাজধানী তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি অনুষ্ঠানে চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করে বলবৎ করেন। চীন-ইরান সম্পর্ক ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক চুক্তি। চুক্তিটি অনুসারে চীন ২৫ বছর ধরে ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে (প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল উত্তোলন, ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, বন্দর, রেলব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও তথ্য প্রযুক্তি) ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের অর্থ বিনিয়োগ করবে এবং এর বিনিময়ে ইরান চীনের বর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য নিয়মিতভাবে, স্থিতিশীলভাবে ও হ্রাসকৃত মূল্যে খনিজ তেল সরবরাহ করবে। এছাড়া চুক্তিটিতে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গভীরকরণের (যেমন যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ ও মহড়ার আয়োজন, যৌথ সামরিক গবেষণা ও অস্ত্র নির্মাণ এবং গুপ্তচর তথ্য ভাগাভাগি করা) আহ্বান করা হয়েছে। এই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে চীনের প্রভাব আরও গভীর হতে পারে এবং ইরানকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার লক্ষ্যে মার্কিন প্রচেষ্টা খর্ব হতে পারে।[৪]

২০১৬ সালে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি চিনফিং ইরান সফরের সময় প্রথম এই চুক্তিটি প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু সেসময় ইরানের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয় যাতে ইরান তার পারমাণবিক গবেষণা অতিসীমিত রাখার পরিবর্তে ঐসব দেশ ইরানের উপর থেকে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা হ্রাস করার প্রতিশ্রুতি দেয়। চুক্তির পরে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলি ইরানের প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল ক্ষেত্রগুলি উন্নয়ন করার জন্য বিনিয়োগের প্রস্তাব করা শুরু করে। কিন্তু ২০১৬ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে এই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নিলে এবং ইরানের উপরে নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ইরান পূবে তাকানোর নীতি গ্রহণ করে। ২০২০ সালের ২৩শে জুন তারিখে ইরানের রাষ্ট্রপতি মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকে চুক্তির অন্তম খসড়াতে স্বাক্ষর করেন এবং ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চুক্তি-সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা সমাপ্ত করার আদেশ প্রদান করেন।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Full text of Joint Statement on Comprehensive Strategic Partnership between I.R. Iran, P.R. China"www.president.ir। ২০২০-০৯-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১১ 
  2. "Iran-China 25-year comprehensive plan for co-op proves failure of efforts to isolate Iran: SPOX"Shana (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৬-২৪। ২০২০-০৭-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৯ 
  3. "Iran-China 25-year comprehensive plan for co-op proves failure of efforts to isolate Iran: government"Tehran Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৬-২৩। ২০২০-০৬-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৯ 
  4. Farnaz Fassihi; Steven Lee Myers (২৭ মার্চ ২০২১)। "China, With $400 Billion Iran Deal, Could Deepen Influence in Mideast"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০২১