মোহাম্মদ ইদ্রিস (শিল্পী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মোহাম্মদ ইদ্রিস
জন্ম(১৯৩১-০৫-১০)১০ মে ১৯৩১
মৃত্যু২২ ডিসেম্বর ২০১৮(2018-12-22) (বয়স ৮৭)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাঢাকা আর্ট কলেজ
(বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
পিতা-মাতা
  • বসিরউদ্দিন আহমেদ (পিতা)
  • আছিয়া বেগম (মাতা)

মোহাম্মদ ইদ্রিস (১০ মে ১৯৩১ – ২২ ডিসেম্বর ২০১৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশী শিল্পী ও নকশাবিদ। তিনি ভাষা আন্দোলনে, ছায়ানট প্রতিষ্ঠায় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা রাখেন।[১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

মোহাম্মদ ইদ্রিস ১৯৩১ সালের ১০ই মে তৎকালীন রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বসিরউদ্দিন আহমেদ ও মায়ের নাম আছিয়া বেগম। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। ১৯৫০ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যট্রিক পাশ করেন[২]।১৯৫১ সালে তৎকালীন ঢাকা আর্ট কলেজের (পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) ৩য় ব্যাচে যোগ দেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

শিক্ষাজীবন শেষ করে মোহাম্মদ ইদ্রিস পাকিস্তান অবজার্ভার (পরবর্তীতে বাংলাদেশ অবজার্ভার) পত্রিকায় যোগ দেন। পরবর্তীতে শিল্পী পটুয়া কামরুল হাসানের অনুপ্রেরণায় ডিজাইন সেন্টারে যোগদান করেন যা পরে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থায় (বিসিক) অঙ্গীভূত হয়। ১৯৯১ সালে সেখান থেকে উপ-প্রধান নকশাবিদ হিসেবে অবসর নেন। এছাড়া তিনি ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।[১][২]

উল্লেখযোগ্য কর্মসমূহ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক

১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন দেশের জাতীয় প্রতীক ও বিভিন্ন মনোগ্রাম তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকার শিল্পী পটুয়া কামরুল হাসানের উপর দায়িত্ব দেয়া হয়। মোহাম্মদ ইদ্রিস ও শামসুল আলমসহ বেশ কয়েকজনকে এই কাজগুলো তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে মোহাম্মদ ইদ্রিসের আঁকা “ভাসমান শাপলা” ও তার পাশাপাশি শামসুল আলমের “দুই পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা” অংশটি মিলিয়ে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হয়[১][৪]

ডাকবিভাগের খামের নকশা[সম্পাদনা]

১৯৭২ সালে সরকার ডাক বিভাগের খাম ও ডাকটিকেটের জন্য নকশা আহ্বান করে। মোহাম্মদ ইদ্রিস সেই সময় খামের জন্য নকশা পাঠান, ডাক বিভাগের জুরি বোর্ড তার পাঠানো নকশাটিকে নির্বাচন করেন।[৪]

ইন্দিরা গান্ধীর শাড়ি[সম্পাদনা]

১৯৭২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সফরে এলে বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রীয় উপহার হিসেবে যে ময়ূর-অঙ্কিত জামদানি শাড়িটি উপহার দিয়েছিলেন, সেই শাড়ির নকশা ছিল তারই করা।[২][৪]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

তার রচিত বই হলো:[৪]

  • বই পড়া (১৯৬৭)
  • এলের পাত বেলের পাত (শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ)
  • হাসির দেশ (ছড়াগ্রন্থ)

প্রচ্ছদকর্ম[সম্পাদনা]

তার কৃত প্রচ্ছদকর্মের অন্যতম হলো:[১]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য

পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিজীবনে ছিলেন ৩ সন্তানের জনক। ১৯৭১ সালের জানুয়ারী মাসে রংপুরের বেগম আক্তার বানুর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[২]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২২ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে কিডনি ও ফুসফুস জটিলতার কারণে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "মোহাম্মদ ইদ্রিস ও তাঁর অমর কীর্তি"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  2. Maasranga Television Bangladesh (২০১২-১১-০২)। "Mohammad Idris Interview On Maasranga Television" 
  3. "ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  4. "মোহাম্মদ ইদ্রিস মলয় বিকাশ দেবনাথ"দৈনিক জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  5. "জাতীয় প্রতীকের নকশাকার ইদ্রিসের জীবনাবসান"bangla.bdnews24.com। ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১