নবীয়ে রহমত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নবীয়ে রহমত
বাংলা অনুবাদের প্রচ্ছদ
লেখকআবুল হাসান আলী নদভী
মূল শিরোনামআরবি: السيرة النبوية, প্রতিবর্ণীকৃত: আস সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ, উর্দু: نبی رحمت ﷺ‎, প্রতিবর্ণী. নবীয়ে রহমত[১]
অনুবাদকআবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী
প্রচ্ছদ শিল্পীবশির মেসবাহ
দেশভারত
ভাষাআরবি (মূল)[২]
মুক্তির সংখ্যা
১ খণ্ড
বিষয়সীরাত[৩]
প্রকাশিত
  • ১৯৭৭ (আরবি)
  • ১৯৯৭ (বাংলা)
প্রকাশকদার আল-শুরুক (আরবি), মজলিসে তাহকিকাত ওয়া নাশরিয়াতে ইসলাম (উর্দু), ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (বাংলা)
মিডিয়া ধরন
পৃষ্ঠাসংখ্যা৪৯১ (বাংলা)
আইএসবিএন৯৭৮-১-৪৬১৯-৫৯৫১-৯
ওসিএলসি৮৯৮০৭০৮৮২
২৯৭.৬৩ বি
এলসি শ্রেণীবিপি১৮৮ .এন২ ১৯৮২
মূল উর্দু সংস্করণ

নবীয়ে রহমত (উর্দু: نبی رحمت ﷺ‎‎; আরবি: السيرة النبوية, প্রতিবর্ণীকৃত: আস সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ) ভারতীয় দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর রচিত একটি জনপ্রিয় সীরাত গ্রন্থ। গ্রন্থটি সীরাতের প্রাচীন মৌলিক গ্রন্থসমূহের উপর ভিত্তি করে আধুনিক ভাষা ও জ্ঞান-গবেষণার রীতিতে লিখিত হয়েছে। লেখকের ভাষায় গ্রন্থটি সংক্ষিপ্ত অথচ পরিপূর্ণ। ১৯৭৭ সালে “আস সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ” নামে এটি সর্বপ্রথম আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশের অল্প সময়ের মধ্যে তা আরব বিশ্বের বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে এটি “নবীয়ে রহমত” নামে উর্দুতে অনূদিত হয় এবং একই নামে বাংলাতেও অনুবাদ করা হয়। এটি বহু ভাষায় বিশেষত সকল ইউরোপীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। গ্রন্থটি আধুনিককালে রচিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ সীরাত গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত।

পটভূমি[সম্পাদনা]

লেখকের বিভিন্ন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রন্থ থাকলেও সীরাতের উপর তার রচিত স্বতন্ত্র কোন গ্রন্থ ছিল না। তবে তার চিন্তা ছিল, সীরাতের উপর রচিত এমন একটি গ্রন্থের তীব্র প্রয়োজন যা আধুনিক জ্ঞান-গবেষণার রীতি নিয়েই লিখিত হবে এবং আধুনিক ও প্রাচীন মৌলিক গ্রন্থরাজির জ্ঞানভাণ্ডারের সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে কিন্তু সীরাতের প্রাচীন মৌলিক গ্রন্থের উপর হবে তার ভিত্তি। কুরআন-হাদিসে বর্ণিত তথ্য চুল পরিমাণ হেরফের করা হবে না। আবার গ্রন্থটি বিশ্বকোষীয় পদ্ধতিতেও লেখা হবে না। এটি হবে এমন এক গ্রন্থ, যা সমকালীন জিজ্ঞাসা, দাবি ও চাহিদা পূরণ করতে পারবে; যা হবে সংক্ষিপ্ত অথচ পরিপূর্ণ; যা মুসলিম-অমুসলিম সকলের নিকট সমাদৃত হবে। অমুসলিমদের জন্য এরকম একটি গ্রন্থের প্রয়োজন সম্বন্ধে লেখকের ভাষায়,[৪][৫][৬]

“ওষুধের প্রয়োজন সুস্থ ব্যক্তির চেয়ে অসুস্থ ব্যক্তির বেশি। যারা নদী পার হয়ে গেছে তাদের চেয়ে পুলের প্রয়োজনীয়তা বেশি তাদের যারা এখনো নদী পার হতে পারেনি।”

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

এ গ্রন্থে সীরাতের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও দাওয়াত দুটি দিকই সমভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তার কোন একদিক যেন বেশি প্রাধান্য না পায় তার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এতে সীরাতের জীবন-স্পন্দন ও আবেগ-অনুভূতিপূর্ণ, এমন সব বিরল নির্বাচিত অংশ সমূহের অধিকহারে সমারোহ ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আর এই সকল ঘটনা ও অংশের উল্লেখ করতে গিয়ে কোন প্রকার কৃত্রিমতার আশ্রয় নেওয়া হয়নি বরং তার স্বাভাবিক ও নিজস্ব রূপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। লেখা ও গবেষণা নীতি অবলম্বনের ক্ষেত্রে আধুনিক যুগের প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। লেখকের ভাষায়, গ্রন্থটিকে নিজস্ব ভাষায় কথা বলার অবকাশ দেওয়া হয়েছে যাতে পাঠকের মন মেজাজে এমনিতেই পথনির্দেশ রচিত হয়। ঘটনা বর্ণনায় লেখক দার্শনিক রং দেওয়া ও দীর্ঘ ভূমিকা সৃষ্টি থেকে বিরত থেকেছেন। তার মতে এসবের প্রয়োজন নেই কারণ সীরাত কোন লেখক-সাহিত্যিকের চমৎকার সাহিত্যকর্ম মনোমুগ্ধকর বর্ণনার প্রত্যাশী নয়। লেখকের জন্য যে জিনিসের প্রয়োজন তা হল সুন্দর উপস্থাপনা ও বর্ণনা, অপূর্ব বিন্যাস ও ঘটনাবলির সঠিক নির্বাচন এবং শব্দ চয়ন। এছাড়া সীরাত সংকলনের প্রচলিত পদ্ধতিও এ সংকলনে স্থান পায়নি। অন্যান্য গ্রন্থের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সমস্ত ধরনের বর্ণনাকেই তাতে স্থান দিয়ে দেওয়া। যার জন্য তা বিভিন্ন প্রশ্নের উদয় ঘটায় আর মুসলিম বিশ্বাসে জন্ম নেয় নানান ধরনের বানোয়াট ঘটনা এবং অমুসলিমদের সরায় সীরাতের মাধুর্য থেকে দূরে। এই সীরাত গ্রন্থে মানচিত্রের প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এসব মানচিত্র ইতিহাস, বিজ্ঞান ও সমসাময়িক ইতিহাসের সুগভীর অধ্যয়নের আলােকে অঙ্কিত হয়েছে। মানচিত্র যাতে তথ্যনির্ভুল, পরিপূর্ণ, সর্বাঙ্গীণ সুন্দর ও আধুনিক যুগের উপযােগী হয় তার প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। গ্রন্থ রচনায় ভক্তি-ভালবাসা ও আবেগ-উচ্ছ্বাসের আধিক্য এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ সমালোচনা দুটাই বাদ দেওয়া হয়েছে।[৭][৪][৫][৮]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা ও সময় স্বল্পতার কারণে লেখকের গ্রন্থটি রচনায় কিছুটা বিলম্ব হয়। পরবর্তীতে রচনা শুরু করলেই তা তার কর্ম ব্যস্ততা ও চিন্তা-গবেষণার একমাত্র কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামার শিক্ষক বুরহান উদ্দিন হাদিস অনুসন্ধান ও তার মূল সূত্র খুঁজে বের করার কাজে এবং সীরাতের গ্রন্থসমূহের জটিল স্থানের ব্যাখ্যা প্রদানে সাহায্য করেছেন। মুহিউদ্দীন খান পাশ্চাত্য ভাষার প্রামাণিক গ্রন্থরাজির অধ্যয়ন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতির ইতিহাস, বিভিন্ন ধরনের বিশ্বকোষ অনুসন্ধান করে সহযােগিতা করেন। নূর আলম খলিল আমিনী গ্রন্থের চূড়ান্ত কপি তৈরি করেছেন। ২৯ অক্টোবর ১৯৭৬ সালে গ্রন্থটি রচনার কাজ সমাপ্ত হয়। ১৯৭৭ সালের শুরুতেই এটি প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পরপরই এটি আরব বিশ্বের অসংখ্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যবই হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।[৫][৯]

১৯৮০ সালে দ্বিতীয়বারের মত এর সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এর পূর্বে মুহাম্মদ আল হাসানী কর্তৃক গ্রন্থটি ‘নবীয়ে রহমত’ নামে উর্দুতে অনূদিত হয়, যা আরবি সংস্করণের মতোই সমাদৃত। ১৯৮৭ সালে লেখক তৃতীয়বারের মত সংশোধিত সংস্করণ প্রকাশ করেন, এ সংস্করণে কিছু নতুন লেখাও যুক্ত করা হয়।[৯][১০] এরই মধ্যে গ্রন্থটির ইংরেজি, হিন্দি প্রভৃতি ভাষায় অনুবাদ সম্পন্ন হয়। ইংরেজি অনুবাদের শিরোনাম “Muhammad Rasulullah The Apostle Of Mercy”[১১][১২] ১৯৯৭ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে এর প্রথম বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয়।[১৩] বঙ্গানুবাদ করেন আবু সাইদ মুহাম্মদ ওমর আলী।[১৪][১৫]

গঠন[সম্পাদনা]

গ্রন্থের শুরুতে “পূর্বকথা” শিরোনামে সীরাত বিষয়ক সংক্ষিপ্ত আলোচনা আছে। “অন্ধকার যুগ” নামক শিরোনামের মাধ্যমে লেখক মূল গ্রন্থের সূচনা করেছেন। এতে তিনি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর বিভিন্ন ধর্ম ও তার অনুসারীদের ব্যাপারে বিস্তর আলোচনা করেছেন এবং ঐ সমস্ত ধর্মের মানবতাকে মুক্তি দিতে পারার দাবিকে অসার প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। তিনি আরও প্রমাণের চেষ্টা করেছেন: তৎকালীন ধর্মগ্রন্থগুলো ক্রীড়াকৌতুকের বিষয়ে পরিণত হয়েছিল, ইহুদিরা বিজয়ী জাতিগোষ্ঠীর চাপে কবুল করে নেয় তাদের বহু আকীদা-বিশ্বাস ও গালগল্প, খ্রিস্টবাদ জন্মের শুরুলগ্নেই শিকার হয়ে যায় রোমান পৌত্তলিকদের শিরক এবং নানান ধরনের মনগড়া ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের, শুধু যিশুর ঐশ্বরিক ও মানবীয় সত্তার অংশজ্ঞান নিয়ে সিরিয়াইরাকের খ্রিস্টানদের পুরোদমে যুদ্ধ চলছিল, ইরানের অগ্নি-উপাসকরা উপাসনাগৃহের বাইরে ছিল খেয়াল-খুশি ও মর্জি মোতাবেক চলনশীন এক জাতি। গৌতম বুদ্ধের অনুসারীরা স্বয়ং তাকেই বানিয়ে নিয়েছিল ঈশ্বর, হিন্দুরা মেতে ছিল মূর্তি পূজায়। পাশাপাশি তিনি এ অধ্যায়ে বিভিন্ন জনপদ ও জাতিগোষ্ঠীগুলোর দুর্দশা ও পৈশাচিক জুলুম-নির্যাচনের করুণ চিত্র এঁকেছেন। প্রাচ্যের রোম সাম্রাজ্যে ক্রীড়া-কৌতুক ও চিত্ত-বিনোদন এতদূর পর্যন্ত পৌঁছেছিল, যা বর্বরতার সীমা অতিক্রম করেছিল। আবার অন্যদিকে কারো বৈরাগ্যবাদ হয়ে উঠছিল অন্য পৃথিবীর মানুষ। পারস্যের জরাথুস্ট্রবাদীরা শুরু করে আরেক কাণ্ড। ইচ্ছে হলেই ঢুকে যেত ঘরে, আর ছিনিয়ে নিত সম্পদ ও নারীদেরকে। উভয়কেই মনে করা হত মতো স্বাধীন সম্পত্তি। সকল প্রজা ছিল রাজার দয়ায় বেঁচে থাকা জীব। ভারতবর্ষ এবং তার প্রতিবেশি দেশগুলোতে শ্রেণিবৈষম্যের জন্য হয়ে উঠেছিল পরিচিত, নারীর কোনো মূল্য ছিল না, জীবন-সংহিতায় ভারতবাসীকে করে দেয়া হয় ৪ ভাগে বিভক্ত, মনিব আর চাকরের রাজত্ব চলছিল এ ভূপৃষ্ঠে তখন। আরব জাতির নৈতিক চরিত্রও বিগড়ে গিয়েছিল। দয়া-মায়ার উপর আস্তরণ পড়ে গিয়েছিল হৃদয়হীনতার। কাফেলা লুণ্ঠন, নিরপরাধকে তলোয়ারের মুখে নিক্ষেপ, বংশীয় সাম্প্রদায়িকতাসহ আরও নানান অভ্যাসে ছিল তাদের দিন গুজরান। এ কয়েকটি উদাহরণ ব্যতীতও লেখক এমনভাবে তৎকালীন পৃথিবীর অবস্থা বর্ণনা করেছেন, যাতে তৎকালীন অজ্ঞতার যুগ সম্বন্ধে বদ্ধমূল বিশ্বাস জন্মে। এ আলোচনার অধীনে তৎকালীন ইরানের বাদশাহ নওশেরওয়া’র একটি ব্যবহারও তুলে ধরেন তিনি। এ অধ্যায়ের অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হল, তাতে আরবদের ভেতর সুপ্ত থাকা এমন কিছু গুণের উল্লেখ করা হয়, যেগুলো দ্বারা অন্যান্য জাতির তুলনায় তারা হেদায়াত গ্রহণ এবং তা ছড়ানোর ক্ষেত্রে অধিক উপযুক্ত ছিল। আত্মমর্যাদাবোধ, ওয়াদার ব্যাপারে নিষ্ঠা, সহনশীলতা ইত্যাদি গুণ-সমষ্টি ছিল তাদের জাতিগত সম্পদ।[৪][৫]

দ্বিতীয় অধ্যায়ে তিনি জাযিরাতুল আরবের ব্যাপারে আলোচনা করেন। তার ভৌগোলিক অবস্থান, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, জাতিগত স্তরবিন্যাস ও ইতিহাস, ভাষাগত ঐক্য, আসমানী ধর্মসমূহের সঙ্গে এ উপদ্বীপের সম্পর্ক বর্ণনা প্রদান এ অধ্যায়ের মুখ্য উদ্যেশ্য।

তৃতীয় অধ্যায়ে ইসমাইলের ইতিহাস থেকে নবি মুহাম্মদের জন্মপূর্ব যুগ পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে। সর্বপ্রথমেই তিনি আলোচনায় আনেন পুর্বপুরুষ ইসমাইলের আগমন, বসবাস, বাবা-ছেলের কাবাঘর নির্মাণ এবং আল্লাহর নিকট তাদের ব্যক্ত করা দোয়ার বিবরণ। অতঃপর কুরাইশ গোত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। বংশধারা, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি। তারপর মক্কায় পৌত্তলিকতার উৎপত্তি ও ইতিহাসের বর্ণনা দেন। এছাড়াও এ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে আসহাবে ফীলের ঘটনা, বাইতুল্লাহর ব্যাপারে কুরাইশদের আকীদা, আব্রাহার সাথে আবদুল মুত্তালিবের কথোপকথনের বিস্তারিত বিবরণ, হস্তীবাহিনী পর্যুদস্ত হওয়া এবং তাতে কুরাইশদের বেড়ে যাওয়া প্রভাব ইত্যদি।

চতুর্থ অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় নবির আবির্ভাবকালে তৎকালীন মক্কার সামাজিক জীবন-ব্যবস্থার ধরন বর্ণনা। এতে মক্কা শহরের ব্যাপারে ভ্রান্তি অপনোদন করা হয়েছে । কতক ব্যক্তির ধারণা অনুযায়ী সেটি "গাঁও-গেরাম" ছিল না, বরং ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যাকে সর্বদিক দিয়ে তুলনা করা যায় কালের সভ্য কোনো নগরীর সাথে। এতে পরিস্ফুটিত হয়, ওহী সর্বদা স্বীয় যুগের সর্বোচ্চ দর্শন এবং জীবন ব্যবস্থা নিয়ে আগমন করে, আর তাতে অন্তরে বদ্ধমূল বিশ্বাস জন্মে ওহী-প্রদত্ত বিধানের যথার্থতার ব্যাপারে। এছাড়াও এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে মক্কা নগরীর বড় ধরনের নির্মাতা, সীমানা নির্ধারক এবং কুরাইশদেরকে ঐক্যবদ্ধকারী হিসাবে কুসাই ইবনে কিলাবকে। আলোচিত হয়েছে জীবন-সংগঠন ও পদ-বণ্টন সম্পর্কিত বিবরণ, দারুন নদওয়া, বাণিজ্যিক তৎপরতা, আমদানি-রফতানি, ব্যবসায়িক সফরের সময়কাল ও গন্তব্য, বায়তুল্লাহর পাশে হারামের ভেতর বসা বাজার, তাতে পাওয়া উপকরণসামগ্রী, মক্কাবাসীদের চিত্তবিনোদন কেন্দ্র, যুবকদের বিলাসিতা, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ সফর ইত্যাদি। এ অধ্যায়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তখনকার মক্কার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ প্রদান। এ এলাকার লোকেরা ব্যবহার করত রোমান, বাইজেন্টাইন, পারস্যসাসানী মুদ্রা। তাদের প্রচলিত মুদ্রার প্রকারভেদ, দুই প্রকার দিরহামের বিবরণ, সেগুলোর ওজন, দীনারের প্রচলিত স্থান, তার নাম, ওজন ও বিবরণ, পাশাপাশি দেখানো হয়েছে হাদিসে সে সমস্ত মুদ্রার ব্যবহার। এরপর আলোচনা করা হয়েছে কুরাইশদের ধনিকশ্রেণি এবং উল্লেখযোগ্য কিছু মানুষের ব্যাপারে। অতঃপর মক্কার শিল্প ও সাহিত্য-সংস্কৃতি আলোচনা করা হয়েছে। তাদের ভাষা-সাহিত্য ছিল জাযিরাতুল আরবের মানদণ্ড এবং সনদ। এছাড়া তাদের শারীরিক গঠন, ভারসাম্য, সৌন্দর্যও ছিল উল্লেখযোগ্য। অতঃপর এ অঞ্চলের সামরিক শক্তি ও যুদ্ধ ক্ষমতার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। অন্যান্যদের থেকে কুরাইশরা ছিল সভ্য। তারা অনর্থক যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়া পছন্দ করত না। এ সমস্ত বৈশিষ্ট্য উল্লেখকরণ ছাড়াও অন্যান্য আরও বিবরণ দিয়ে তিনি তার দাবিকে প্রমাণ করতে সচেষ্ট হোন যে, মক্কা ছিল একটি সভ্য নগরী, এটি কোনো যাযাবর সম্প্রদায়ের এলাকা ছিল না।

পঞ্চম অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় নবির জন্ম থেকে নবুয়ত-পূর্ব জীবন বৃত্তান্ত। এখানে তার পিতা-মাতা, পিতার ইন্তিকাল, তার সম্ভ্রান্ত বংশধারা, দুগ্ধপানকাল ঘটনা বিবরণী, বক্ষবিদীর্ণকরণ, মাতা এবং দাদার ইন্তিকাল, চাচা আবু তালিবের প্রতিপালনে কৈশোর-জীবন কাটানো, তার চারিত্রিক নির্মলতা ও মাধুর্য, পেশাগত জীবন, খাদিজার সঙ্গে বিবাহ, কাবাঘরকেন্দ্রিক গোত্রীয় বিবাদ নিরসন ইত্যাদির বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এখানে তুলে ধরা হয়েছে নবি জীবনের পূর্বেই মানবতার ব্যাপারে তার উথলিয়ে ওঠা দরদের নমুনা এবং “হিলফুল ফুযুল” ছিল সেই ভাষা প্রকাশেরই অংশবিশেষ। এছাড়াও সেই ক্ষণেই তার মধ্যে ভর করে এক অনিশ্চিত অস্থিরতা, যা মূলত ছিল উম্মাহর প্রতি অস্থিরতা। এ অধ্যায়ের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সীরাতের কিতাবসমূহে বর্ণিত পাদ্রীর সাথে মিলিত হওয়ার ঘটনা ও সনদগত দুর্বলতা এবং এই সাক্ষাতের উপর ভিত্তি করে উত্থাপিত সব প্রশ্নের জবাব-প্রদান।

ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে শুরু হয় সংকলক এবং নবির জীবনের আসল লক্ষ্য, নবুয়ত-পরবর্তী জীবন। এতে প্রথমেই “মানবতার সুবহে সাদিক” নামক শিরোনামে নবুয়তপ্রাপ্তির অল্পপূর্বের ঘটনাবলি একত্র করা হয়েছে। হেরা গুহায় আগমন, তাতে প্রথম জিবরাঈলের সাথে সাক্ষাত, খাদিজার কাছে আপন নফসের ব্যাপারে ভীতি-আশঙ্কা এবং তার বিচক্ষণতাপূর্ণ জবাব, ওয়ারাকা ইবনে নওফলের নিকট আগমন এবং তার প্রদানকৃত সুসংবাদ ইত্যাদি। অতঃপর আলোচনায় আসে ইসলামের প্রাথমিক যুগের দাওয়াত ও মুসলমানদের বিবরণ। খাদিজা, আলী, যায়েদ, আবু বকর, কুরাইশ অভিজাতদের ইসলাম-গ্রহণ, সাফা পর্বতে সত্যের ঘোষণা প্রদান, তাতে দাওয়াতের বিজ্ঞোচিত অবস্থার অবতারণা, আবু লাহাবের হঠকারিতা ইত্যদি। অতঃপর নবুয়তের দাবি থেকে সরে আসার ব্যাপারে আবু তালেবের সাথে কথোপকথন এবং নবুয়তের মর্ম বুঝিয়ে নবির আবেগঘন বাক্যমালা, কুরাইশদের দ্বারা নির্যাতন এবং তাদের নানান পদ্ধতির বর্ণনা, নবি সম্পর্কে কুধারণা সৃষ্টি করতে স্বজাতির প্রয়াস, তাকে কষ্ট প্রদানে ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতা-নির্দয়তা, হামযার ইসলাম-গ্রহণ, আবিসিনিয়া মুখে নির্যাতিত মুসলিমদের হিজরত ও কুরাইশদের পশ্চাদ্ধাবন, জাফর ইবনে আবি তালিবের নাজাশি-সম্মুখে ইসলামের পরিচয় পেশ করে ভাষণদান, সেই ভাষণের হেকমত আলোচনা, তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে কুরাইশদের ব্যর্থতা, উমরের ইসলাম-গ্রহণের কাহিনী, শিয়াবে আবি তালিবের বয়কটকাল ও তাতে অমানবিক জীবন যাপন, চুক্তি ভঙ্গ করতে মুতইম ইবনে আদীর পদক্ষেপ, বয়কট অবসান, শোকের বছরের ইতিহাস, তাইফ সফর ও আগত বিপদ-অত্যাচার, মিরাজ-গমন, তার সূক্ষ্ম মর্ম, ব্যাপকভাবে আরবদের দ্বীনের দাওয়াত প্রদান, আনসারদের ইসলাম পরিচয়ের ঘটনা, আকাবার বাইয়াত, তাদের ইসলাম-গ্রহণের কারণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও এ অধ্যায়ে মদিনাকে দারুল হিজরত বানানোর হেকমত এবং তার বৈশিষ্ট্য, তাতে ইসলামের বিস্তার ও হিজরতের অনুমতি প্রদান, হিজরত করে আসা কতক মুসলমানদের ঘটনা বর্ণনা এবং সুসংবাদ প্রদান, কুরাইশদের ষড়যন্ত্রের ব্যর্থতা, হিজরতের শিক্ষা, সাওর গুহায় কাটানো কিছু সময় ও ঐশ্বরিক সাহায্য, সুরাকার অন্মেষণ ও তার উপর পতিত গযব এবং তা থেকে বেঁচে যাওয়ার পাশাপাশি আশ্চর্যজনক ভবিষ্যদ্বাণী সহ আরও নানান বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ ছিল মক্কার নববী জীবন।

সপ্তম অধ্যায়ে মদিনার পূর্ণ একটি বিবরণ প্রদান করা হয়েছে, যাতে ইসলামের উত্থানপর্ব বুঝতে সহজ হয়। এতে মদিনায় বসবাসরত ইহুদি ও তার শাখা, তাদের ধর্মীয়, নৈতিক ও চারিত্রিক জীবনের অবস্থা বর্ণনা করা হয়। এরপর সেখানকার প্রসিদ্ধ দুটি গোত্র আওসখাযরাজের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়। খাযরাজের প্রশাখা, উভয় গোত্রের মধ্যে চলমান বিবাদ, তাদের বিবাদে ইহুদিদের উস্কানি, মদিনার প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক, ধর্মীয় ও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

অষ্টম অধ্যায়ে নবির হিজরত পরবর্তী জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মদিনাবাসীর অভ্যার্থনা থেকে শুরু করে মদিনায় প্রথম জুমা ও কুবা মসজিদ, প্রসিদ্ধ কবিতা “তালা' আল বাদরু আলাই না”র উল্লেখ, নবির প্রথম মেহমানিত্ব গ্রহণ, মসজিদে নববী ও গৃহ নির্মাণ, মুহাজিরআনসারদের মধ্যে ভাতৃত্ব-বন্ধন স্থাপন ইত্যাদির বিবরণের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতি ও ইহুদিদের সাথে চুক্তি সম্পাদন, অত্র অঞ্চলে নিফাকের আবির্ভাব, কারণ ও ইহুদিদের ব্যাপারে কিছু কথা, কিবলা পরিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা করেন। এরপর তিনি ইসলামি জিহাদের বর্ণনা প্রদানে মনোনিবেশ করেন। কুরাইশদের সঙ্গে সংঘর্ষ, সারিয়্যায়ে আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশআবওয়া যুদ্ধ ও প্রেক্ষাপট, এ যুদ্ধের কারণে নবির অসন্তুষ্টি এবং সান্ত্বনা প্রদানে নাযিল হওয়া আয়াত ইত্যাদির মাধ্যমেই এই অধ্যায় শেষ হয়ে যায়।

নবম অধ্যায় থেকে একদম বিস্তারিতভাবে জিহাদের অভিযানগুলোর বিবরণ প্রদান শুরু হয়। এসমস্ত বর্ণনাগুলোর মাধ্যমে পরিস্ফুটিত হয় যে, ইসলাম হলো যুদ্ধের ধর্ম এবং অবশ্যই তা ন্যায়ের পথে। অন্যায়ভাবে একজনকে হত্যা করাকে স্বয়ং নবির মুখে সমস্ত মানবজাতি হত্যার শামিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ অধ্যায়ে বিস্তারিতভাবে বদর যুদ্ধের অভিযান বর্ণিত হয়েছে। এ যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, আনসারদের আনুগত্য, জিহাদ ও শাহাদাতের প্রেরণায় উজ্জীবিত বালকদের আগ্রহ, ইসলাম ও কুফরে সমর অভিযানের ক্ষেত্রে সংখ্যাগত পার্থক্য-দর্শণ, পরামর্শের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আরও আলোচিত হয়েছে, নবির সিপাহসালার, উম্মতের সঠিক পরিচয়, যুদ্ধের সূচনা, প্রথম শহীদ উমায়র ইবনুল হুমাম আনসারী, মুয়াজ ও মুয়াওয়াজের শাহাদাতলোভ, এ যুদ্ধের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল, ঈমানী সম্পর্ক রক্ত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে, বন্দিদের সাথে মুসলিমদের আচরণ ইত্যাদি।

পরবর্তীতে অধ্যায়-অধ্যায়ভাবে জিহাদগুলোর আলোচনা এসেছে, যাতে প্রত্যেকটি জিহাদের বিস্তারিত বিবরণ, তার শিক্ষা এবং আনুষঙ্গিক আরও নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলোতে রয়েছে উহুদের যুদ্ধ, মুসলমানদের শক্তির মূলকেন্দ্র এবং তাতে গাফিলতির ফল, খন্দকের যুদ্ধ, সঙ্কট-সন্ধিক্ষণ ও অবরোধের আঁধারে ইসলামী বিজয়ের আলোকরশ্মি, জিহাদ ও শাহাদাতের জন্য মায়ের অনুপ্রেরণা দান, গাযওয়ায়ে বনু কুরাইজা, সাদ ইবনে মুয়াজের সত্যপ্রীতি ও অটল সিদ্ধান্ত এবং আপনের ক্ষেত্রে শিক্ষা, হুদাইবিয়ার সন্ধি, হিলম ও হেকমতের সম্মেলন, মুসলিম-পরীক্ষা, অবমাননাকর সন্ধি অথবা সুস্পষ্ট বিজয়, এই সন্ধি কীভাবে বিজয় ও সাফল্যে পরিবর্তিত হলো, খালিদ বিন ওয়ালিদআমর ইবনুল আসের ইসলাম গ্রহণ ইত্যাদি ছাড়াও আরও নানান ধরনের শিক্ষণীয় ঘটনা ও উপদেশ।

অন্য আরেকটি অধ্যায়ে আমির-উমারাদের প্রতি প্রেরিত চিঠি, খায়বারের যুদ্ধমুতার যুদ্ধের বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

এর পরবর্তী অধ্যায়ে মক্কা বিজয় নিয়ে পূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে। পটভূমি, কুরাইশদের চুক্তিভঙ্গকরণ, শেষ সুযোগ, সন্ধি চুক্তি নবায়নের জন্য কুরাইশদের চেষ্টা, আবু সুফিয়ানের পেরেশানি ও ব্যর্থতা, ক্ষমার পরোয়ানা ছাড়া আরও নানান শিরোনামে হরেক রকমের আলোচনা করা হয়েছে।

তারপর হুনাইনের যুদ্ধ, তাইফ, তাবুক যুদ্ধের আলোচনার পর প্রতিনিধিদল আগমনের বছর, বিদায় হজ্ব, ওফাত এবং মুসলমানদের কর্তব্যসহ আরও অনেক রকমের শিরোনামের অধীনে নানান আলোচনা পেরিয়ে খলিফা নির্বাচনের বিবরণ প্রদানের মাধ্যমেই মূল গ্রন্থের আলোচনা শেষ হয়।

শেষ তিন অধ্যায়গুলোতে পর্যায়ক্রমে উম্মাহাতুল মুমিনিন, নবির শামায়েল ও চরিত্র এবং সর্বশেষে “নবি জগতবাসীর জন্যে রহমত” নামক শিরোনামের মাধ্যমে সীরাতগ্রন্থটি শেষ হয়। শেষ অধ্যায়টি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। [৫]

উৎস[সম্পাদনা]

লেখক গ্রন্থটি রচনায় শুধুমাত্র কুরআনহাদিসের উপর নির্ভর করেন নি বরং প্রাচীন ও আধুনিক সীরাতশাস্ত্র ও জ্ঞানভান্ডারের যেকোনো প্রয়োজনীয় উপকরণ তার হস্তগত হয়েছে তা থেকেও তিনি পূর্ণরূপে সহযোগিতা নিয়েছেন। এই গ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে তিনি মূলত নির্ভর করছে সেসব প্রামাণিক গ্রন্থের উপর যেগুলো সীরাতশাস্ত্রের মৌলিক ও সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো সীরাতে ইবনে হিশাম, যাদুল মা’আদ, সীরাত ইবনে কাছীর। তাছাড়া বর্তমান যুগেও সীরাতের উপর যে সকল গ্রন্থ রচিত হয়েছে সেগুলো এবং পাশ্চাত্য ভাষায় রচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক ও মৌলিক গ্রন্থ সমূহ যা দ্বারা সীরাতের অনেক দিক স্পষ্ট হয়ে উঠে।[৪] সর্বমোট লেখক এই গ্রন্থে ১৩৫টি আরবি, ২০টি উর্দু ও ৩৭টি ইংরেজি সূত্রের ব্যবহার করেছেন। গ্রন্থটির শেষ দিকে তার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. মুহাম্মদ সালমান, মাওলানা (মে ২০০২)। আবুল হাসান আলী নদভীর জীবন ও কর্ম (পিডিএফ)। ঢাকা: আল ইরফান পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ৩৩৯। 
  2. জাহান, ইবরাত (২০১৩)। "সীরাত সাহিত্যে দারুল উলুম দেওবন্দের অবদান"আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়: ৪০। 
  3. সারী, আইকা মুস্তিকা (২০১২)। "আবুল হাসান আলী নদভীর ইসলামি শিক্ষা ভাবনা" (পিডিএফ)মাওলানা মালিক ইব্রাহিম স্টেট ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় মালং: ১১৩—১১৪। 
  4. ভাট, সামিউল্লাহ (২০১৭)। "তারীখে দাওয়াত ওয়া আজিমাতের বিশেষ উল্লেখ সহ সৈয়দ আবুল হাসান আলী নদভীর ইসলামি ইতিহাসে অবদান"কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় (ইংরেজি ভাষায়): ৭৫—৭৮। 
  5. নদভী, আবুল হাসান আলী (১৯৯৭)। নবীয়ে রহমত। মুহাম্মদ উমর আলী, আবু সাইদ কর্তৃক অনূদিত। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৯—৩৫। আইএসবিএন 984-622-026-2। ১৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ – ইশা ছাত্র আন্দোলন লাইব্রেরি-এর মাধ্যমে। 
  6. মারুফ, আবদুল্লাহ (১০ ডিসেম্বর ২০১৭)। "বাংলা ভাষায় কালজয়ী ৯ সীরাতগ্রন্থ"দৈনিক আমাদের সময় [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. খানম, খেহখাশান (২০১৮)। বিংশ শতাব্দীতে সীরাতের উপর রচিত উর্দু বইসমূহের একটি গবেষণা (উর্দু ভাষায়)। সুন্নি ধর্মতত্ত্ব বিভাগ, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৯২–১৯৫। 
  8. জাওয়াহির, এম নাফেল এম (২০০৮)। "আবুল হাসান আলী নদভীর রাজনৈতিক চিন্তাধারার উপর তুলনামূলক অধ্যয়ন, তার সমসাময়িক দুই ব্যক্তির বিশেষ উল্লেখ"ওয়েলস্ বিশ্ববিদ্যালয়: ২৪৬। 
  9. মুহাম্মদ, শরীফ (৫ ডিসেম্বর ২০১৯)। "এ যুগের সিরাত রচনা-৪ : আস সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ, নবীয়ে রহমত"ইসলাম টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০১ 
  10. রবিউল হক, মুহাম্মদ (২ ডিসেম্বর ২০২০)। "মুসলিম উম্মাহর দরদী দাঈ সাইয়্যিদ আবুল হাসান আলী নদবী"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০১ 
  11. ডক্টর, আশরাফ (২০১৭)। "এন ওভারভিউ অফ দ্য সিরাহ লিটারেচার"জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়া (ইংরেজি ভাষায়): ১০, ২২। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা – সিরাহ কনভেনশন কর্ডোভা লিনব্রো পার্ক-এর মাধ্যমে। 
  12. "প্রফেট অফ মার্চি"অ্যামাজন। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০১ 
  13. খসরু, আতাউর রহমান (৩ জানুয়ারি ২০১৬)। "নবীর আদর্শের প্রচার প্রতিটি মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব"বাংলানিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০১ 
  14. হক, মনযূরুল (১১ নভেম্বর ২০২০)। "মহানবী (সা.)–এর জীবনী রচনার হাজার বছর"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০২-০১ 
  15. রাশেদ, রায়হান (১০ নভেম্বর ২০১৯)। "'নবীজীবন' নিয়ে রচিত আলোচিত ১০ গ্রন্থ"দৈনিক সময়ের আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২১ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]