কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া
একটি কার্বন পরমাণু (ধূসর বল) একটি অক্সিজেন পরমাণুর (লাল বল) সাথে ত্রিমাত্রার বন্ধনী দ্বারা যুক্ত
কার্বন মনোক্সাইড
বিশেষত্ববিষবিজ্ঞান, জরুরী চিকিৎসাবিজ্ঞান
লক্ষণমাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বমি, বুকে ব্যথা, বিভ্রম[১]
জটিলতাজ্ঞান হারানো, অ্যারিথমিয়া, খিঁচুনি[১][২]
কারণশ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কার্বন মনোক্সাইড গ্রহণ[৩]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিকার্বক্সিল-হিমোগ্লোবিন মাত্রা নির্ণয়:
৩% (অধূমপায়ী)
১০% (ধূমপায়ী)[২]
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয়সায়ানাইড বিষক্রিয়া, অ্যালকোহলঘটিত কিটোঅ্যাসিডোসিস, অ্যাসপিরিন বিষয়ক্রিয়া, ঊর্দ্ধ ফুসফুসীয় নালির সংক্রমণ[২][৪]
প্রতিরোধকার্বন মনোক্সাইড নির্ণয়কারী যন্ত্র, গ্যাসচালিত যন্ত্রের গ্যাসের নল পরিষ্কার রাখা, ধোঁয়া নির্গমন পথের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ[১]
চিকিৎসাসহায়ক সেবা, ১০০% অক্সিজেন, হাইপারবেরিক অক্সিজেন থেরাপি[২]
আরোগ্যসম্ভাবনামৃত্যুর ঝুঁকি ১–৩১%.[২]
সংঘটনের হারঅগ্নিকাণ্ডের কারণে ছাড়াও ২০,০০০-এর বেশি ক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা প্রদান করা হয় (যুক্তরাষ্ট্র)[১]
মৃতের সংখ্যাঅগ্নিকাণ্ডের কারণ ছাড়া ৪০০-এর বেশি (যুক্তরাষ্ট্র)[১]

কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া সাধারণত শ্বসনের সময় অতিরিক্ত মাত্রায় কার্বন মনোক্সাইড (CO) গ্রহণের ফলে সৃষ্টি হয়। এধরনের বিষক্রিয়ার লক্ষণের সাথে প্রায় সময়-ই সর্দি-কাশির লক্ষণের মিল পাওয়া যায়। প্রচলিত লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বমি করা, বুকে ব্যথা, এবং বিভ্রম। খুব বেশি মাত্রায় কার্বন মনোক্সাইড গ্রহণের ফলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, অ্যারিথমিয়া, খিঁচুনি, বা মৃত্যুর পর্যন্ত হতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখিত লক্ষণ হিসেবে ‘চেরির মতো লাল’ ত্বক ধরনের অবস্থায় খুব কম-ই দেখা যায়। এই বিষক্রিয়ার দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাগুলোর মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা বোধ করা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, এবং নড়াচড়ায় সমস্যা হওয়া। যারা ধোঁয়া গ্রহণের স্বীকার হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সায়ানাইড বিষক্রিয়ার সম্ভাবনাও বিবেচনা করা প্রয়োজন।

দুর্ঘটনাবশত, আত্মহত্যার প্রচেষ্টা, বা হত্যা চেষ্টার অংশ হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবে কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। গ্যাস হিসেবে কার্বন মনোক্সাইড বর্ণ ও গন্ধহীন এবং প্রাথমিকভাবে এই গ্যাস গ্রহণের ফলে কোনো জ্বালাপোড়া অনুভব হয় না। সাধারণত জৈব বস্তুর অসম্পূর্ণ দহনের ফলে এই গ্যাস উৎপন্ন হয়। কার্বন-ভিত্তিক জ্বালানী ব্যবহার করে পরিচালিত হয় এমন মোটরগাড়ি, তাপশক্তি উৎপন্নকারী যন্ত্র, রান্নার চুলা থেকে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। ডাইক্লোরোমিথেনের প্রভাবেও এই গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। সাধারণত রক্তের হিমোগ্লোবিনের সাথে কার্বন মনোক্সাইডের বিক্রিয়ায় কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিন উৎপন্ন হয় রক্তকে অক্সিজেন বহনে বাধা প্রদান করার মাধ্যমে শরীরে প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে। একই সাথে এই বিষক্রিয়ার ফলে মায়োগ্লোবিন এবং মাইটোকনন্ড্রিয়াল সাইটোক্রোম অক্সিডেজও প্রভাবিত হয়। কার্বন মনোক্সাইড বিষয়ক্রিয়া নির্ণয়ের জন্য রক্তের কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিনের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। যদি কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিনের পরিমাণ অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে ৩%-এর বেশি ও ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে ১০%-এর বেশি হয় তবে শরীরে কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধরা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; CDC2015FAQ নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Gu2012 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Sc2016 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. Caterino, Jeffrey M.; Kahan, Scott (২০০৩)। In a Page: Emergency medicine (ইংরেজি ভাষায়)। Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 309। আইএসবিএন 978-1405103572। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

শ্রেণীবিন্যাস
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান