গদিয়ালী ভাষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গদিয়ালী
𑚌𑚛𑚯, गदी গদি
𑚌𑚛𑚊𑚯, गदकी গদকী
𑚌𑚛𑚮𑚣𑚭𑚥𑚯, গদিয়ালী
𑚡𑚤𑚢𑚵𑚪𑚯, भरमौड़ी ভরমৌড়ী
টাকরী লিপিতে লেখা ওপর থেকে নীচে গদী, গদকী, গদিয়ালী এবং ভরমৌড়ী
দেশোদ্ভবহিমাচল প্রদেশ
অঞ্চলভরমৌড়
জাতিগদ্দি জাতি
মাতৃভাষী
১,৮১,০৬৯ (২০১১ জনগণনা)[১]
বহু সংখ্যক সিরমৌরীভাষী নিজেদের হিন্দি ও পাহাড়ীভাষী বলে উল্লেখ করেছেন৷
টাকরী, দেবনাগরী লিপি
ভাষা কোডসমূহ
আইএসও ৬৩৯-৩gbk
গ্লোটোলগgadd1242[২]

গদি ভাষা (যা গদকী, গদিয়ালী বা ভরমৌড়ী; টাকরী: 𑚌𑚛𑚯, 𑚌𑚛𑚊𑚯, 𑚌𑚛𑚮𑚣𑚭𑚥𑚯, 𑚡𑚤𑚢𑚵𑚪𑚯 নামেও পরিচিত) পশ্চিমা পাহাড়ী ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি ভাষা, যা মূলত উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের চম্বা জেলার ভরমৌড় অঞ্চলে বসবাসকারী গদ্দি জনগোষ্ঠীর ভাষা৷ ঐতিহাসিক পরিযানের ফলে পার্শ্ববর্তী জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর, কাঠুয়া এবং ডোডা জেলাতে বেশ কিছু গদ্দি জাতি অধ্যুষিত গ্রাম রয়েছে৷[৩]

ইউনেস্কো এই ভাষাটিকে ভারতের বিপন্ন ভাষাগুলির তালিকাভুক্ত করেছে৷[৪]

লিপি[সম্পাদনা]

গদিয়ালী ভাষার জন্য ব্যবহৃত মূল লিপি হলো টাকরী লিপির একটি বিশেষ স্থানীয় প্রকার, যা চম্বিয়ালি লিপি নামে পরিচিত৷ চম্বিয়ালি ভাষার জন্যও এই লিপি ব্যবহার হয়৷ তবে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর দেবনাগরী লিপি এই লিপিটিকে প্রতিস্থাপিত করে৷[৫]

উপভাষা[সম্পাদনা]

ভাষাটির চারটি উপভাষা রয়েছে, এগুলি হলো:[৬]

  • প্রথম উপভাষাটি বলা হয় চম্বা জেলার ভরমৌড়, ছত্রারী এবং ভটিয়াত তহশিল এবং পার্শ্ববর্তী কাংড়া জেলার গদিয়ালী অঞ্চল৷ এটিই প্রমিত গদিয়ালী ভাষা৷
  • দ্বিতীয় উপভাষাটি বলা হয় পিউহর, বেলজ, গূন, বাকানি, মেহলা অবং কাদেদ অঞ্চলে৷
  • তৃতীয় উপভাষাটি বলা হয় বাসু এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে৷
  • চতুর্থ উপভাষাটি বলা হয় লিল এবং পাহো অঞ্চলে৷

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

গদিয়ালী ভাষাভাষী লোক মূলত ভরমৌড়ী অঞ্চলে বসবাস করেন৷ ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী ভারতে গদিয়ালী ভাষাভাষীর সংখ্যা ১,৮১,০৬৯ জন, যেখানে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে এই জনসংখ্যা ছিলো ৬৬,২৪৬ জন৷[৭] জন সচেতনতার অভাবে যথেষ্ট সংখ্যক লোক নিজেদের হিন্দি এবং পাহাড়ী ভাষা (পাহাড়ি মূলত হিমাচলের ভাষাগুলিকে একত্রিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রবর্তিত নাম) বলে উল্লেখ করেছেন৷

ভারত - ১,৮১,০৬৯
  • হিমাচল প্রদেশ - ১,৫৩,১৭১ (২.২৩%)
    • চম্বা জেলা - ১,১৩,১৪৩ (২১.৮০%)
      • চুরাহ ব্লক - ১,৮৯২ (২.৪০%)
      • সালুনী ব্লক - ২,৮১৮ (৫.৮৮%)
      • ডালহৌসী ব্লক - ৫,০১২ (১০.৭২%)
      • ভটিয়াত ব্লক - ৬,৪৩০ (১৫.০৩%)
      • সিহুন্তা ব্লক - ১০,৬১১ (২৬.৬২%)
      • চম্বা ব্লক - ৪৯,২০৩ (২৭.৪৫%)
      • হোলি ব্লক - ১৩,৮১৪ (৯৮.০১%)
      • ভরমৌড় ব্লক - ২৩,৭৫৫ (৯৪.৯৭%)
    • কাংড়া জেলা - ৩৯,৭৯৮ (২.৬৪%)
      • জাওয়ালি ব্লক - ৩,২৭৬ (২.৯১%)
      • শাহপুর ব্লক - ৬,১৮১ (৯.১২%)
      • ধর্মশালা ব্লক - ১৮,৬৮৯ (১৩.৬৯%)
      • পালমপুর ব্লক - ৬,৯৯৪ (৩.৭০%)
      • বৈজনাথ ব্লক - ২,৪০৭ (২.৫৩%)
  • জম্মু ও কাশ্মীর - ২৪,১৬১

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

গদিয়ালী ভাষাটি সাধারণভাবে পাহাড়ি অথবা হিমাচলি ভাষা নামে পরিচিত। তবে কারো কারো মতে বৃহত্তর পাঞ্জাবির ডোগরি ভাষার একটি উপভাষা। এই ভাষাটি কোন সরকারি পদমর্যাদা নেই এবং এটি বর্তমানে হিন্দি ভাষার একটি উপভাষা হিসেবে পরিগণিত হয়। ইউনেস্কোর তথ্য অনুসারে এই ভাষাটি বিপন্ন ভাষার তালিকাভুক্ত, যার অর্থ অধিকাংশ গদিয়ালী ভাষাভাষী শিশুরা নিজের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভে অক্ষম।[৮]

ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে পাহাড়ী হিমাচলি ভাষাগুলির অন্তর্ভুক্তির জন্য ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সিংহভাগ সম্মতিতে বিষয়টি রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত হয়৷[৯] ছোটো ছোট সংস্থাগুলির দাবীকে বাদ দিতে সরকারীভাবে বিশেষ ঐই ভাষাগুলি সংরক্ষণ ও মান্যতা দানের কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি৷[১০] রাজনৈতিক প্রভাবে ভাষাগুলির অধিকাংশের সাথেই হিন্দি ভাষাগোষ্ঠীর কোনরূপ পারস্পরিক সম্পর্ক না থাকলেও পাহাড়ি এই ভাষাগুলি হিন্দি ভাষার অন্তর্গত একেকটি উপভাষা হয়ে রয়েছে৷[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Statement 1: Abstract of speakers' strength of languages and mother tongues - 2011"www.censusindia.gov.in। Office of the Registrar General & Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-০৭ 
  2. হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Gaddi"গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট। 
  3. Kaul, Pritam Krishen (২০০৬)। Pahāṛi and Other Tribal Dialects of Jammu1। Delhi: Eastern Book Linkers। পৃষ্ঠা 137। আইএসবিএন 8178541017 
  4. "UNESCO Atlas of the World's Languages in danger"। Unesco.org। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২ 
  5. "Takri for Gaddi" (পিডিএফ) 
  6. PLSI The languages of Himachal Pradesh। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 104। 
  7. [১]
  8. "Endangered Language" 
  9. "Pahari Inclusion"Zee News 
  10. "Pahari Inclusion"The Statesman। ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ 
  11. "Indian Language Census" (পিডিএফ)