নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লাসায় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ত্রিরত্ন মান তুলাধার (বামে বসা) এবং জ্ঞান জ্যোতি কংসকার (ডানে বসা), ১৯৪৭
নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা, ১৯৫৫

নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা হলো ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে চালু হওয়া একটি ব্যবসায়িক সংগঠন। এটি নেপালি ব্যবসায়ীদের দ্বারা তিব্বতের রাজধানী লাসা ভিত্তিক পরিচালিত প্রথম বাণিজ্যিক সংস্থা।[১] নেপালের নেওয়ার বণিকেরা অশ্বচালিত কাফেলার মাধ্যমে হিমালয়ের উপর দিয়ে লাস থেকে কলকাতায় বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন করত।[২] বাণিজ্য সঙ্ঘটি নেপালের ঐতিহাসিক বাণিজ্যকে প্রসারিত করার জন্য কাজ করত এবং তাদের ব্যবসায়িক সামগ্রীর অভিন্ন দাম নির্ধারণের জন্য তার সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করত। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের পক্ষে অনুকূল নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সম্পর্কিত সরকারের কাছে তদবির করত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

লাসার নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘের প্রথম সভাপতি ছিলেন জ্ঞান রত্ন তুলাধর এবং সম্পাদক ছিলেন পূর্ণ কাজি তাম্রকার

প্রতিষ্ঠার এক বছর পর লাসার নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ বন্ধ হয়ে যায়।[৩] এর পর ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে লাসায় ছুশিংস্যার নামক বাণিজ্য কুঠির সত্ত্বাধিকারী ত্রিরত্ন মান তুলাধর পুনরায় সংস্থাটিকে নতুন করে গঠন করেন এবং সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হন। ত্রিরত্ন মান পরবর্তী এক বছর সঙ্ঘের সভাপতি পদে সমাসীন থাকেন।

কাঠমান্ডু কার্যালয়[সম্পাদনা]

১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে কাঠমান্ডুতে নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসার একটি কার্যালয় চালু করা হয়। ত্রিরত্ন মান তুলাধর তিব্বত থেকে কাঠমান্ডুতে ফিরে আসার পর ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সংস্থার কাঠমান্ডু দপ্তরের নির্বাহী সদস্য মনোনীত হন এবং ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সংস্থার দায়িত্বে বহাল থাকেন। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে নেপালে প্রথম সফর চলাকালে চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইকে স্বাগত জানাতে নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা কর্তৃক একটি সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়।[৪] ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের দ্বিতীয় দফায় নেপাল সফরের সময়ও তার সম্মানে নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা কাঠমান্ডুতে একটি সম্মাননা সভার আয়োজন করে, যা সে বছরের ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়।[৫]

১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে (১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দ) চীনভারতের মধ্যকার যুদ্ধের ফলে সিকিম হয়ে তিব্বতে নেপালিদের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যপথ রুদ্ধ হয়ে যায় এবং ফলশ্রুতিতে তিব্বত, নেপাল ও ভারতের মধ্যকার আন্তঃহিমালয় বাণিজ্যও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নেপালি বাণিজ্য সঙ্ঘ, লাসা এবং এর কাঠমান্ডুর দপ্তর বন্ধ করে দেওয়া হয়।[৬]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Tuladhar, Kamal Ratna (2011) Caravan to Lhasa: A Merchant of Kathmandu in Traditional Tibet. Kathmandu: Lijala & Tisa. আইএসবিএন ৯৯৯৪৬-৫৮-৯১-৩. Page 107.
  2. Lewis, Todd T.। "Buddhism, Himalayan Trade, and Newar Merchants"। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১১ 
  3. Hilker, Deb Shova Kansakar (2005) Syamukapu: The Lhasa Newars of Kalimpong and Kathmandu. Kathmandu: Vajra Publications. আইএসবিএন ৯৭৮-৯৯৯৪৬-৬৪৪-৬-৭. Page 138.
  4. Tuladhar, Kamal Ratna (২২ মার্চ ২০০৯)। "A man of letters"The Kathmandu Post। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১১ 
  5. United States Consulate General (Hong Kong, China) (১৯৬০)। "Nepalese Chamber of Commerce Reception for Chinese Premier"। Survey of China Mainland Press, Issues 2248-2268  Page 47.
  6. "Nathu La to open for Indo-China trade after 44 yrs"The Economic Times। ২০ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১১ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

Red China hinders Nepal Tibet trade, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২ অক্টোবর ১৯৬০।
• ভাসিন, এএস (১৯৭০) "নেপালি চেম্বার অফ কমার্স (লাসা), কাঠমান্ডু, ২ এপ্রিল এপ্রিল, ১৯৬০ (সংক্ষিপ্তসার) দ্বারা আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিঃ চৌ এন-লাইয়ের বক্তব্য," ভারত ও চীনের সাথে নেপালের সম্পর্কের নথি, ১৯৪৯ - ৬৬। পৃষ্ঠা ২৬৩।
• জৈন, রাজেন্দ্র কুমার (সম্পাদনা) (১৯৮১) " চীন দক্ষিণ এশীয় সম্পর্কের খণ্ড ২, ১৯৪-19-১৮৮০ " ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউয়ের সংবাদদাতা উইলসনের কাছে প্রিমিয়ার বিপি কৈরালার সাক্ষাৎকার (এক্সট্রাক্ট)। পৃষ্ঠা ৩২৬।