প্রণিধিপূর্ণ মহাবিহার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রণিধিপূর্ণ মহাবিহার
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিথেরোবাদী বৌদ্ধ ধর্ম
অবস্থান
অবস্থানবলম্বু
দেশনেপাল
স্থাপত্য
প্রতিষ্ঠাতাপ্রজ্ঞানন্দ মহাস্থবির
সম্পূর্ণ হয়১৯৪২
ওয়েবসাইট
www.pranidhipurnamahavihar.org.np

প্রণিধিপূর্ণ মহাবিহার (দেবনাগরী: प्रणिधिपूर्ण महाविहार) হলো কাঠমান্ডুর বলম্বুতে অবস্থিত একটি থেরোবাদী বৌদ্ধ বিহার। বিহারটি ১৯৪০ এর দশকে নেপালে থেরোবাদী বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।[১]

স্থানীয়দের নিকট অনানুষ্ঠানিকভাবে বলম্বু বিহার নামে পরিচিত। বিহারটি কাঠমান্ডু থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে, কাঠমান্ডু উপত্যকার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মহাবিহারের ইতিহাস, ১৯৪২ থেকে যখন বৌদ্ধভিক্ষু প্রজ্ঞানন্দ মহাস্থবির এখানে এসেছিলেন তখন রাস্তার পাশে অস্থায়ী ছাউনিতে বৌদ্ধধর্মের প্রচার করতেন। ১৪শ শতকের পর তিনিই ছিলেন নেপালের প্রথম হলুদ বস্ত্রাবৃত ভিক্ষু। থেরোবাদী বৌদ্ধ ধর্মের ক্রমবর্ধমান কর্মকাণ্ড নেপালে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করছিল। ফলে ভিক্ষুরা নেপালের ক্ষমতাসীন রাণা রাজপরিবার ও সরকারের রোষের সম্মুখীন হয়। তৎকালের নেপাল সরকার বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিরূপ ছিল। সরকারি পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান কর্মকাণ্ড বিস্তারকে দমন চেষ্টার ফলে তা অনুসারীদের মধ্যে রোষের সৃষ্টি করে, যার ফলে বিহারটির উন্নয়ন ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।

১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে রাণা রাজবংশ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার ও নেপাল ভাষায় ধর্মীয় গ্রন্থ লেখার অভিযোগে ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। ধর্মপ্রচার বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় প্রজ্ঞানন্দসহ আটজন ভিক্ষুকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়।[২] নেপাল থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নির্বাসনের প্রেক্ষিতে সরকারের রোষের থেকে বাঁচতে অন্যান্য ভিক্ষুরা স্থানীয়দের সহায়তায় নিকটবর্তী বলম্বু গ্রামে আত্মগোপন করে।

১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক চাপের কারণে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলে ভারত, তিব্বত, ভুটানশ্রীলংকায় ছড়িয়ে থাকা নির্বাসিত ভিক্ষুরা দেশে ফিরে আসেন। এরপরেও সরকার তাদের কর্মকাণ্ড নজরে রাখেন। এ কারণে ভিক্ষুরা নির্বিঘ্নে কাজ করার জন্য ও পুলিশি নজরদারীর বাইরে থেকে থাকার জন্য শহর থেকে দূরে বাস করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবেই একসময় বলম্বু নেপালের থেরোবাদী পুনর্জাগরণের কেন্দ্রে পরিণত হতে থাকে।

স্থানীয়দের অনুদানে বলম্বুতে প্রথম ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে একটি বিহারের নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিহারের প্রতিষ্ঠাতা প্রজ্ঞানন্দ আধুনিক নেপালের প্রথম সঙ্ঘ মহানায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন।[৩][৪]

কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

বলম্বু বিহারে একজন মোহান্তের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ভিক্ষু ও ভিক্ষুণী বসবাস করেন। এটি বিশেষ করে তরুণদের বৌদ্ধ ধর্ম চর্চার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ধর্মীয় সেবার পাশাপাশি এই বিহারে ধর্ম শিক্ষা কার্যক্রম ও স্বাস্থ্য ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ছেলে ও মেয়েদের জীবন সংক্রান্ত অনুষ্ঠানাদি পালিত হয় এবং এর অধীনে একটি বৃদ্ধাশ্রম পরিচালিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. LeVine, Sarah; Gellner, David N. (২০০৫)। "Theravada Missionaries in an Autocratic State"। Rebuilding Buddhism: The Theravada Movement in Twentieth-Century Nepalবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 53আইএসবিএন 978-0-674-01908-9 
  2. Dietrich, Angela (১৯৯৬)। "Buddhist Monks and Rana Rulers: A History of Persecution"Buddhist Himalaya: A Journal of Nagarjuna Institute of Exact Methods। ১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  3. LeVine, Sarah; Gellner, David N. (২০০৫)। "Complete List of Theravada Viharas in Nepal"। Rebuilding Buddhism: The Theravada Movement in Twentieth-Century Nepalবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 298আইএসবিএন 978-0-674-01908-9 
  4. Sujano, Phra S. M. (মে ২০০৯)। "Who is Who in Buddhism in Nepal"Journal of the Lumbini Nepalese Buddha Dharma Society (UK)। পৃষ্ঠা 10। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩