আন্দ্রিয়াস ফ্রানৎস ভিলহেলম শিম্পার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আন্দ্রিয়াস শিম্পার
c. 1890
জন্ম১২ মে ১৮৫৬
মৃত্যু১২ মে ১৮৫৬
জাতীয়তাজার্মান
মাতৃশিক্ষায়তনস্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রউদ্ভিদবিজ্ঞানী
Author abbrev. (botany)A.Schimp.

আন্দ্রিয়াস ফ্রানৎস ভিলহেল্ম শিম্পার একজন জার্মান উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও উদ্ভিদভূগোলবিদ ছিলেন। তিনি টিস্যুতত্ত্ব, পরিবেশবিজ্ঞান ও উদ্ভিদভূগোলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ১৮৯৯ সালে সমুদ্রযাত্রায় শিম্পার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং ক্যারিবীয় এলাকায় গমন করেন। তিনি ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য ও "স্ক্লেরোফিল" ধারণার উদ্ভাবন করেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

শিম্পার স্ট্রাসবুর্গ (বর্তমানে ফ্রান্সের অংশ) শহরে বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ভিলহেল্ম ফিলিপ শিম্পার স্ট্রাসবুর্গ শহরের প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরের পরিচালক ছিলেন। এছাড়াও ভিলহেল্ম ব্রায়োফাইটা উদ্ভিদ সম্বন্ধে একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। এছাড়াও তিনি ভূতত্ত্ব বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। গিওর্গ ভিলহেল্ম শিম্পার (১৮০৪-১৮৭৮) তার বাবার চাচাতো ভাই ছিলেন। গিওর্গ আরব্যআফ্রিকা অঞ্চলে কর্মরত একজন প্রথিতযশা সংগ্রহকারী ও অভিযাত্রী ছিলেন। প্রকৃতিবিদ কার্ল ফ্রেডরিখ শিম্পার-ও আন্দ্রিয়াস এর একজন আত্মীয় ছিলেন।

১৮৭৪ থেকে ১৮৭৮ সালে শিম্পার স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। তিনি সেখান থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পরবর্তীকালে লিওঁ শহরে কাজ করেন। ১৮৮০ সালে শিম্পার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন। তিনি সেখানে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো নির্বাচিত হন।

১৮৮২ সালে বন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিম্পার শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি সেখানে এডওয়ার্ড স্ট্রাসবুর্গার এর সঙ্গে কাজ করেন। ১৮৮৩ সালে শিম্পার ক্লোরোপ্লাস্ট এর এন্ডোসিমবায়োটিক উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন। এর ফলে কনস্তান্তিন মেরেসচাউস্কি এবং লিন মারগুলিস জৈবিক সহাবস্থান তত্ত্ব প্রদানে সক্ষম হন।[১] তিনি কোষের টিস্যুতত্ত্ব, ক্রোমাটোফোর ও স্টার্চের বিপাক প্রক্রিয়া নিয়েও গবেষণা করেন। ১৮৮৬ সালে শিম্পার বন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজভেনিজুয়েলায় ১৮৮২-১৮৮৩ সালে অভিযাত্রা পরিচালনা করেন। ১৮৮৬ সালে শিম্পার ফ্রিৎস মুলারের সঙ্গে ব্রাজিল ভ্রমণ করেন। ১৮৮৯-১৮৯০ সালে তিনি সিংহল (বর্তমান শ্রীলঙ্কা), মালয় (বর্তমান মালয়েশিয়াসিঙ্গাপুর), বোগোরজাভা দ্বীপ ভ্রমণ করেন।

১৮৯৮ সালে শিম্পার বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ঐ বছর তিনি জার্মানি কর্তৃক আয়োজিত ভালদিভিয়া অভিযাত্রায় যোগ দান করেন। অধ্যাপক কার্ল চুনের নেতৃত্বে এসএস ভালদিভিয়ায় তারা সমুদ্রযাত্রা করেন। ভ্রমণটি নয় মাস দীর্ঘ ছিল। এসময় শিম্পার ক্যানারি দ্বীপ, ক্যামেরুন, কেপ টাউন, কার্গুয়েলেন, নিউ আমস্টারডাম, কোকোস দ্বীপ, সুমাত্রা, মালদ্বীপ, সিংহল, সেশেললোহিত সাগর ভ্রমণ করেন।

শিম্পার প্লাস্টিড এর একটি নিখুঁত ও পরিষ্কার বর্ণনা প্রদান করেন। ১৮৯৯ সালে তিনি বাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ক্যামেরুন ও দার-এস-সালামে তিনি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন। ১৯০১ সালে ৪৫ বছর বয়সে শিম্পার শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

শিম্পার ফ্লানজেনজিওগ্রাফি আউফ ফিজিওলজিশ্চার গ্রুন্ডলাগে রচনার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ১৮৯৮ সালে জেনা বিশ্ববিদ্যালয় রচনাটি প্রকাশ করে। সেখানে তিনি উদ্ভিদের সম্প্রসারণ ও পরিবেশবিজ্ঞান নিয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেন।

এ সময় রুশ মৃত্তিকাবিজ্ঞানীদের সাথে সহমত হয়ে শিম্পার বলেন, উদ্ভিদবসতি কিছু নির্দিষ্ট জলবায়ু অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যান্যদের মধ্যে ফ্রেডরিক এডওয়ার্ড ক্লিমেন্টস ১৯১৬ সালে এবং ভূজীববিজ্ঞানী হাইনরিখ ভাল্টার ১৯৫৪ সালে এ ধারণার সম্প্রসারণ ঘটান।

১৮৯৪ সালে শিম্পার উদ্ভিদবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক লেহব্রুক ডার বোটানিক রচনা করেন। ১৯০২ সাল পর্যন্ত এর প্রকাশিত সংস্করণগুলোর পঞ্চম অধ্যায়ের সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Schimper, A. F. W. (1883). "Über die Entwicklung der Chlorophyllkörner und Farbkörper". Bot. Zeitung. 41: 105–14, 121–31, 137–46, 153–62.
  2. "DFG-Viewer: Syllabus der Vorlesungen über pflanzliche Pharmacognosie"dfg-viewer.de 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]