জে বি এস হ্যালডেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জে. বি. এস. হ্যালডেন

১৯১৪ সালে হ্যালডেন
জন্ম(১৮৯২ -১১-০৫)৫ নভেম্বর ১৮৯২
অক্সফোর্ড, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১ ডিসেম্বর ১৯৬৪(1964-12-01) (বয়স ৭২)
নাগরিকত্ব
  • ব্রিটিশ (১৯৬১ অবধি)
  • ভারতীয়
শিক্ষাইটন কলেজ
মাতৃশিক্ষায়তনঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণ
দাম্পত্য সঙ্গী
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টাফ্রেডরিক গাওল্যান্ড হপকিনস
ডক্টরেট শিক্ষার্থী

জন বারডন স্যান্ডারসন হ্যালডেন (John Burdon Sanderson Haldane, এফআরএস (/ˈhɔːldn/; ৫ নভেম্বর ১৮৯২ – ১ ডিসেম্বর ১৯৬৪[১][২]) ডাকনাম "জ্যাক" বা "জেবিএস" [৩] ছিলেন ব্রিটেন এবং পরবর্তীকালে ভারতের একজন বিজ্ঞানী। তিনি শারীরবিজ্ঞান, জেনেটিক্স, বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান, এবং গণিত এর রচনার জন্য খ্যাত ছিলেন। জীববিজ্ঞানের পরিসংখ্যান এর উদ্ভাবনী ব্যবহারের সাথে তিনি নব্য-ডারউইনবাদ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি বিশিষ্ট জেনেটিসিস্ট এবং ফিজিওলজিস্ট ছিলেন।

১৯২৯ সালে অ্যাবিওজেনেসিস সম্পর্কিত হ্যালডেনের নিবন্ধটি "প্রাইমরডিয়াল স্যুপ তত্ত্ব" প্রবর্তন করেন যার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রাণের রাসায়নিক উৎসের ধারণা।[৪] তিনি এক্স ক্রোমোজোমএর উপর হিমোফিলিয়া এবং বর্ণান্ধতার জন্য মানুষের জিন ম্যাপ প্রবর্তণ করেছিলেন এবং সংকর প্রজাতির হেটেরোগ্যামেটিক সেক্সবন্ধ্যাত্বহ্যালডেনের নিয়ম সংহিতাবদ্ধ করেছিলেন। [৫][৬] তিনি সঠিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে সিকেল-সেল ডিজিজ ম্যালেরিয়ায় কিছুটা অনাক্রম্যতা প্রদান করে। তিনিই প্রথম 'ইন ভিট্রো' 'ফার্টিলাইজেশন এর কেন্দ্রীয় ধারণা, তার পাশাপাশি হাইড্রোজেন ইকোনমি, সিআইএস এবং ট্রান্স-অ্যাক্টিং নিয়ন্ত্রণ, কাপলিং রিয়াকশন, আণবিক বিকর্ষণ, ডারউইন (বিবর্তনের একক হিসাবে) এবং অর্গানিজমাল ক্লোনিং এর ধারণাও দিয়েছিলেন। [৭] "ক্লোন" এবং মানব জীববিজ্ঞানে "ক্লোনিং" এবং "এক্টোজেনেসিস" শব্দটি তৈরি করার জন্যও তাকে স্মরণ করা হয়।

হ্যালডেন তাঁর বোন নওমি মিচিসন এর সাথে স্তন্যপায়ীর মধ্যে জেনেটিক লিঙ্কেজ এর প্রথম প্রদর্শণ করেন। পরবর্তী কাজগুলির মধ্যে মেন্ডেলিয়ান জিনেটিক্স এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা ডারউইনের বিবর্তনকে আধুনিক বিবর্তনীয় সংশ্লেষ এর ভিত্তি স্থাপনের সময় একীকরণ করেন এবং এই ভাবে জনসংখ্যার জেনেটিক্স তৈরিতে সহায়তা করেন।

হ্যালডেন ছিলেন সমাজতান্ত্রিক, মার্কসবাদী, নাস্তিক এবং মানবতাবাদী। রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে তিনি ১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ড ত্যাগ করেন এবং [ [ভারত]] এ বাস শুরু করেন। ১৯৬১ সালে প্রাকৃতিকায়িত (ন্যাচারালাইজড) ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ করেন।

আর্থার সি. ক্লার্ক তাঁকে "সম্ভবত তাঁর প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল বিজ্ঞান জনপ্রিয়তাবাদী" হিসাবে কৃতিত্ব দিয়েছেন।[৮][৯] নোবেল বিজয়ী পিটার মেডাওয়ার হ্যালডেনকে "আমি ওস্তাদ মানুষ হিসাবে জানতাম" বলে অভিহিত করেছিলেন। [১০] থিওডোসিয়াস ডবহানস্কি এর মতে "হ্যালডেন সবসময়ই একক ক্ষেত্রে স্বীকৃত ছিলেন"; এবং মাইকেল জে. ডি. হোয়াইট এর অভিমত "তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে বুদ্ধিমান জীববিজ্ঞানী এবং সম্ভবত এই শতাব্দীর"। [১১]

জীবনী[সম্পাদনা]

তাঁর বাবা জন স্কট হ্যালডেন আনু. ১৯১০

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

হ্যালডেনের জন্ম অক্সফোর্ড এ। তাঁর বাবা জন স্কট হ্যালডেন ছিলেন একজন শারীরবৃত্তবিদ, বিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং তিনি লিবারেল পার্টি করতেন। তাঁর মা লুইসা ক্যাথলিন ট্রটার ছিলেন রক্ষণশীল পার্টির এবং স্কটিশ বংশজাত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হ্যালডেন ফ্রান্স ও ইরাকের ব্ল্যাক ওয়াচ দিয়ে কাজ করেছিলেন। তাঁর ছোট বোন নওমি মিচিসন লেখিকা হয়ে ছিলেন এবং তাঁর কাকা ভিসকাউন্ট হ্যালডেন এবং তাঁর কাকীমা ছিলেন লেখিকা এলিজাবেথ হ্যালডেন। অভিজাত ও ধর্মনিরপেক্ষ পরিবার [১২] ছিল হ্যালডেন বংশ। তিনি পরে দাবি করেছিলেন যে তাঁর ওয়াই ক্রোমোজোমরবার্ট দ ব্রুস -এর সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।[১৩]

উত্তর অক্সফোর্ডের ১১ ক্রিক রোডে তিনি বেড়ে ওঠেন।[১৪] তিন বছর বয়সে তিনি পড়তে শিখেছিলেন এবং চার বছর বয়সে কপালে আঘাতের পরে তিনি চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন "এটি কি অক্সিহিমোগ্লোবিন বা কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিন?" আট বছর বয়স থেকে তিনি তাঁর বাবার সাথে তাঁদের হোম ল্যাবরেটরিতে কাজ শুরু করেছিলেন যেখানে তিনি তাঁর প্রথম স্ব-পরীক্ষামূলক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এই পদ্ধতিটির জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর বাবা তাদের নিজস্ব "হিউম্যান গিনি পিগ" হয়েছিলেন। যেমন বিষ গ্যাসগুলির প্রভাব সম্পর্কে অনুসন্ধাণ কালে। ১৮৯৯ সালে তাঁর পরিবার তাঁদের নিজস্ব ল্যাবরেটরি নিয়ে অক্সফোর্ডের উপকণ্ঠে লেট ভিক্টোরিয়ান হাউসের "চেরওয়েল" এ চলে যায়।

তাঁর আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু ১৮৯৭ সালে অক্সফোর্ড প্রিপারেটরি স্কুল (বর্তমানে ড্রাগন স্কুল) এ। সেখানে তিনি ১৯০৪ সালে ইটন এ প্রথম বৃত্তি অর্জন করেন। ১৯০৫ সালে তিনি ইটনে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে অহঙ্কারী বলে অভিযোগ করা হয় এবং উচ্চ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হন। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা তাঁকে ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি চিরস্থায়ী বিদ্বেষের জন্ম দেয়। যাইহোক অগ্নিপরীক্ষা তাঁকে স্কুলের ক্যাপ্টেন হওয়া থেকে থামাতে পারেনি। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর নিউ কলেজ থেকে গণিত এবং ক্লাসিকস অধ্যয়ন করেছিলেন এবং ১৯১২ সালে গাণিতিক মডারেশন এ প্রথম শ্রেণির সম্মান অর্জন করেন এবং ১৯১৪ সালে গ্রেটস লাভ করেন। তিনি জেনেটিক্সে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং ১৯১২ এর গ্রীষ্মে মেরুদন্ডীদের জিন সংযোগ সম্পর্কিত একটি গবষণাপত্র উপস্থাপন করেছিলেন। তাঁর প্রথম প্রযুক্তিগত রচনা হিমোগ্লোবিনের ফাংশন সম্পর্কিত একটি ৩০-পৃষ্ঠার দীর্ঘ নিবন্ধ। সেটি একই বছর তাঁর পিতার পাশাপাশি সহ-লেখক হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল। [১৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

হ্যালডেন দু'বার বিয়ে করেছিলেন যথাক্রমে ১৯২৬ সালে শার্লোট ফ্রাঙ্কেন এবং ১৯৪৫ সালে হেলেন স্পারওয়ে কে।[১৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pirie, N. W. (১৯৬৬)। "John Burdon Sanderson Haldane. 1892–1964"Biographical Memoirs of Fellows of the Royal Society12: 218–249। এসটুসিআইডি 73216473ডিওআই:10.1098/rsbm.1966.0010 
  2. Rao, Veena (2015). J B S Haldane, an Indian scientist of British origin. Current Science 109 (3): 634-638.
  3. Dronamraju, Krishna R (২০১২)। "Recollections of J.B.S. Haldane, with special reference to Human Genetics in India"Indian Journal of Human Genetics18 (1): 3–8। ডিওআই:10.4103/0971-6866.96634পিএমআইডি 22754215পিএমসি 3385175অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. New research in this field began in 2018 in Canada nationalpost.com
  5. Turelli, M; Orr, HA (১৯৯৫)। "The dominance theory of Haldane's rule"Genetics140 (1): 389–402। পিএমআইডি 7635302পিএমসি 1206564অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  6. Haldane, J. B. S. (১৯২২)। "Sex ratio and unisexual sterility in hybrid animals"Journal of Genetics12 (2): 101–109। এসটুসিআইডি 32459333ডিওআই:10.1007/BF02983075 
  7. Yount, Lisa (২০০৩)। A to Z of Biologists। New York, NY: Facts on File, Inc.। পৃষ্ঠা 113–115। আইএসবিএন 978-1-4381-0917-6। ৭ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  8. Clarke, Arthur C. (২০০৯)। "Foreword"। John Burdon Sanderson Haldane। What I Require From Life: Writings on Science and Life from J.B.S. Haldane। Oxford: Oxford University Press। পৃষ্ঠা ix। আইএসবিএন 978-0-19-923770-8। ৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. Dronamraju, KR (১৯৯২)। "J.B.S. Haldane (1892–1964): centennial appreciation of a polymath"American Journal of Human Genetics51 (4): 885–9। পিএমআইডি 1415229পিএমসি 1682816অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  10. Gould, Stephen Jay (২০১১)। The Lying Stones of Marrakech : Penultimate Reflections in Natural History (1st Harvard University Press সংস্করণ)। Cambridge, Mass.: Belknap Press of Harvard University Press। পৃষ্ঠা 305। আইএসবিএন 978-0-674-06167-5 
  11. Adams, Mark B. (২০০০)। "Last judgment: the visionary biology of J.B.S. Haldane"। Journal of the History of Biology33 (3): 457–491। এসটুসিআইডি 46244914জেস্টোর 4331611ডিওআই:10.1023/A:1004891323595পিএমআইডি 13678078 
  12. Acott, C. (১৯৯৯)। "JS Haldane, JBS Haldane, L Hill, and A Siebe: A brief resumé of their lives."South Pacific Underwater Medicine Society Journal29 (3)। আইএসএসএন 0813-1988ওসিএলসি 16986801। ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০০৮ 
  13. Hedrick, Larry (১৯৮৯)। "J.B.S. Haldane: A Legacy in Several Worlds"The World & I Online। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  14. "J. S. Haldane (1860–1936)"। Oxfordshire Blue Plaques Board। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  15. Douglas, CG; Haldane, JS; Haldane, JB (১৯১২)। "The laws of combination of haemoglobin with carbon monoxide and oxygen"The Journal of Physiology44 (4): 275–304। ডিওআই:10.1113/jphysiol.1912.sp001517পিএমআইডি 16993128পিএমসি 1512793অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  16. "J.S.B. Haldane", Obituary Notices, Br Med J, 1964;2:1536.