চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যম
चिदम्बरम् सुब्रह्मण्यम्
ভারতের কৃষিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৬৪ – ১৯৬৬
প্রধানমন্ত্রীলাল বাহাদুর শাস্ত্রী
পূর্বসূরীস্বর্ণ সিং
উত্তরসূরীজগজীবন রাম
পরিকল্পনা আয়োগের উপ-সভাপতি
কাজের মেয়াদ
২ মে ১৯৭১ – ২২ জুলাই ১৯৭২
প্রধানমন্ত্রীইন্দিরা গান্ধী
পূর্বসূরীডি.আর. গাডগিল
উত্তরসূরীদুর্গাপ্রসাদ ধার
ভারতের অর্থমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৯৭৫ – ১৯৭৭
প্রধানমন্ত্রীইন্দিরা গান্ধী
পূর্বসূরীযশবন্তরাও চৌহান
উত্তরসূরীহরিভাই এম. পেটেল
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৮ জুলাই ১৯৭৯ – ১৪ জানুয়ারি ১৯৮০
প্রধানমন্ত্রীচরণ সিং
পূর্বসূরীজগজীবন রাম
উত্তরসূরীইন্দিরা গান্ধী
মহারাষ্ট্রর রাজ্যপাল
কাজের মেয়াদ
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ – ৯ জানুয়ারি ১৯৯৩
পূর্বসূরীকাশু ব্রহ্মনন্দ রেড্ডী
উত্তরসূরীপি.সি. আলেকজেন্ডার
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯১০-০১-৩০)৩০ জানুয়ারি ১৯১০
মৃত্যু৭ নভেম্বর ২০০০(2000-11-07) (বয়স ৯০)
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
প্রাক্তন শিক্ষার্থীমাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কারভারতরত্ন (১৯৯৮)

চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যম (হিন্দি: चिदम्बरम् सुब्रह्मण्यम्; ৩০ জানুয়ারি ১৯১০ – ৭ নভেম্বর ২০০০) বিশিষ্ট ভারতীয় রাজনৈতিক নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারে কৃষি, অর্থমন্ত্রক এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে কার্য নির্বাহন করেছিলেন। পরে মহারাষ্ট্রর রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ভারতের খাদ্য এবং কৃষিমন্ত্রী থাকাকালীন ভারতকে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল করতে এম.এস. স্বামীনাথন, বি. শিবরমণ এবং নর্মান ই. বরলুঙর সঙ্গে ভারতে সবুজ বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন।[১] তাকে ভারত সরকার সবুজ বিপ্লবে অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৮ সালে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন প্রদান করে।

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

১৯১০ সালের ৩০ জানুয়ারি তারিখে তামিলনাডুর কৈম্বটোর জেলার পলাশীতে চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যমের জন্ম হয়েছিল।[২] তিনি প্রারম্ভিক শিক্ষা পলাশীতে গ্রহণ করে চেন্নাইয়ে যান৷ সেখানে তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাজ আইন মহাবিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।[৩] কাকা স্বামী স্বামীনাথন তার আদর্শ ব্যক্তি ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক সময়কাল[সম্পাদনা]

তিনি মহাবিদ্যালয়ে পড়াকালীন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আইন অমান্য আন্দোলন-এ যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৪২ সালে ভারত ত্যাগ আন্দোলন-এর সময় তিনি কারাবাসবরণ করেন।[২] পরে তিনি সংবিধান সভাতে নির্বাচিত হন এবং ভারতের সংবিধান প্রস্তুতকরণে নিজের যথাসাধ্য অবদান রাখেন। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত মাদ্রাজ স্টেটে মুখ্যমন্ত্রী চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী এবং কে কামরাজের মন্ত্রীসভায় শিক্ষা, আইন এবং অর্থবিভাগের মন্ত্রী ছিলেন। এই সময়কালে তিনি মাদ্রাজ বিধানসভার নেতা ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি লোকসভাতে নির্বাচিত হন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তীহা এবং খনিমন্ত্রীর পদে নিযুক্ত হন। তারপরে তিনি ভারতের কৃষি মন্ত্রীর কার্যভার গ্রহণ করেন। ২ মে ১৯৭১ তারিখ থেকে ২২ জুলাই ১৯৭২ তারিখ পর্যন্ত তিনি ভারতের পরিকল্পনা আয়োগের উপাধ্যক্ষ ছিলেন।

সবুজ বিপ্লব[সম্পাদনা]

তিনি এম. এস. স্বামীনাথন এবং বি. শিবরমনের সঙ্গে ভারতীয় কৃষিব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য পরিচিত। তাদের কাজের সঠিক রূপায়নের জন্য ১৯৭২ সালে ভারতে সর্বকালের রেকর্ড পরিমাণ গম উৎপাদন হয়েছিল। খাদ্য এবং কৃষি মন্ত্রী হিসাবে তিনি ভারতে উচ্চ উৎপাদনক্ষম বীজের জাত, সার এবং কৃষিক্ষেত্রে নিত্য নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের সূচনা করেছিলেন। এর ফলে ভারত খাদ্যশস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে।[১]

তিনি ভারতীয় শ্বেত বিপ্লবের জনক ভার্গীজ কুরেইনকে আমূলের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। তিনি চেন্নাইয়ে রাষ্ট্রীয় কৃষি ফাউন্ডেশন এবং তিরুচিরাপল্লীতে ভারতীদর্শন ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন।[৪]

অর্থ মন্ত্রালয় এবং জরুরিকাল[সম্পাদনা]

১৯৬৯ সালে কংগ্রেসের বিভাজন হওয়ায় ইন্দিরা গান্ধীর আরম্ভ করা কংগ্রেস (আই)-এর তিনি অধ্যক্ষ ছিলেন। পরে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর মন্ত্রীপরিষদে অর্থ মন্ত্রীর দায়িত্বভার লাভ করেন। এই সময়ে তিনি ভারতীয় মুদ্রার মূল্য কম করার মত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে জরুরিকালের সময়ে ভারতের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।[৩] জরুরিকালের পরে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস এড়িয়ে দেবরাজ অর্সু এবং কাশু ব্রহ্মানন্দ রেড্ডীর কংগ্রেসে যোগ দেন।

পরের সময়কাল[সম্পাদনা]

তিনি ১৯৭৯ সালে চরণ সিংয়ের মন্ত্রীপরিষদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেছিলেন।[৫]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০০০ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে ৯০ বছর বয়সে চিদাম্বরম সুব্রমনিয়ামের মৃত্যু হয়।

পুরস্কার এবং সম্মান[সম্পাদনা]

  • ভারতরত্ন, ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান, ১৯৯৮[৬]
  • ওয়াই. বি. চৌহান রাষ্ট্রীয় একত্রীকরণ পুরস্কার[৭]
  • উ থান্ট শান্তি পুরস্কার, ১৯৯৬
  • নর্মান বরলাগ পুরস্কার, ১৯৯৬[২]
  • অনুব্রত পুরস্কার, ১৯৮৮[১]
ডাক টিকিটে চিদাম্বরম সুব্রমনিয়াম

২০১০ সালের আগস্ট মাসে ভারত সরকার তার স্মৃতিতে একটি মুদ্রা প্রচলন করেছিল।[৮] একই বছরে ভারতীয় ডাক বিভাগ তার স্মৃতিতে একটি ডাকটিকিট প্রচলন করে।

রচনাসমগ্র[সম্পাদনা]

  • দ্য নিউ স্ট্র্যাটেজি ইন ইন্ডিয়ান এগ্রিকাল্চার
  • সাম কান্ট্রিজ হুইচ আই ভিজিটেড রাউন্ড দি ওয়ার্ল্ড
  • ইন্ডিয়া অব মাই ড্রিমস

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "C. Subramaniam, bio data"। Rajbhavan, Maharashra state, India। ৭ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "CS ushered in Green Revolution"The Hindu। India। ৮ নভেম্বর ২০০০। ২৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ 
  3. "A visionary and a statesman"Frontline। India। ২০ মার্চ ১৯৯৮। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "More light on personal facets of C. Subramaniam"The Hindu। Chennai, India। ৩১ অক্টোবর ২০১০। ১ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ 
  5. "C Subramaniam resigns" 
  6. "C.Subramaniam awarded Bharat Ratna"। Rediff। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ 
  7. "C Subramaniam passes away"Business Line। India। ৮ নভেম্বর ২০০০। ২৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ 
  8. "Yeoman services rendered by Subramaniam to nation recalled"The Hindu। India। ২৮ আগস্ট ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৮ অক্টোবর ২০১১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]