সিয়েরা লিওনের ভূগোল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সিয়েরা লিওনের মানচিত্র।

সিয়েরা লিওন আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে, নিরক্ষরেখার উত্তরে ৭ম এবং দশম সমান্তরালের মধ্যে অবস্থিত। সিয়েরা লিওনের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বে গিনি, দক্ষিণে এবং দক্ষিণ-পূর্বে লাইবেরিয়া এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সীমানা রয়েছে।[১]

সিয়েরা লিওনের মোট ক্ষেত্রফল ৭১,৭৪০ বর্গ কিলোমিটার (২৭,৬৯৯ বর্গ মাইল)। এর মধ্যে স্থল ৭১,৬২০ (২৭,৬৫৩ বর্গ মাইল) বর্গ কিমি আর জল ১২০ বর্গ কিমি (৪৬ বর্গ মাইল)।[২]

ভৌত ভূগোল[সম্পাদনা]

সিয়েরা লিওনের টপোগ্রাফিক বা ভূসংস্থানিক মানচিত্র।

সিয়েরা লিওন আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে, নিরক্ষরেখার উত্তরে ৭ম এবং দশম সমান্তরালের মধ্যে অবস্থিত। সিয়েরা লিওন উত্তর এবং উত্তর-পূর্বে গিনি, দক্ষিণে এবং দক্ষিণ-পূর্বে লাইবেরিয়া এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সীমাবদ্ধ।[১] সিয়েরা লিওনের মোট ক্ষেত্রফল ৭১,৭৪০ বর্গ কিলোমিটার (২৭,৬৯৯ বর্গ মাইল)। এর মধ্যে স্থল ৭১,৬২০ (২৭,৬৫৩ বর্গ মাইল) বর্গ কিমি আর জল ১২০ বর্গ কিমি (৪৬ বর্গ মাইল)।[২]

সিয়েরা লিওনের চারটি পৃথক ভৌগোলিক অঞ্চল রয়েছে: উপকূলীয় গিনি ম্যানগ্রোভ, কাঠের পাহাড়ি অঞ্চল, একটি উঁচুভূমি মালভূমি এবং পূর্বের পর্বতমালা। পূর্ব সিয়েরা লিওন হলো উচ্চ পর্বতমালার সাথে ছেদকৃত বড় মালভূমির একটি অভ্যন্তর অঞ্চল, যেখানে বিন্টুমনি মাউন্টটি ১,৯৮৪ মিটার (৬,৩৯১ ফুট) উপরে অবস্থিত।[১]

ভূতত্ত্ব[সম্পাদনা]

সিয়েরা লিওনকে তিনটি ভূতাত্ত্বিক অঞ্চলে বিভক্ত করা যেতে পারে, পূর্বাঞ্চল পশ্চিম আফ্রিকার ক্র্যাটনের অংশ, পশ্চিমাঞ্চলটি রোকলিয়েডস নামক একটি অর্জোজেনিক বেল্ট এবং ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার উপকূলীয় পলল নিয়ে গঠিত।[৩]

প্রান্তবিন্দু[সম্পাদনা]

সিয়েরা লিওনের অবস্থান।

সিয়েরা লিওনের প্রান্তবিন্দুগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। প্রান্তবিন্দু বা extreme points হলো সেসব স্থান যা অন্যান্য স্থান থেকে সবচেয়ে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে অবস্থিত।

  • উত্তরতম প্রান্ত- উত্তর প্রদেশে গিনির সাথে সীমানার উত্তর প্রান্ত।*
  • পূর্বতম প্রান্ত- পূর্ব প্রদেশে গিনি এবং লাইবেরিয়ার সাথে সীমানার সংযোগস্থল।
  • দক্ষিণতম প্রান্ত- দক্ষিণ প্রদেশের মানো নদীর মুখে মানো সালিজা শহরের দক্ষিণে নামহীন উপদ্বীপ।
  • পশ্চিমতম প্রান্ত- উত্তর প্রদেশে গিনির সাথে সীমানাটি যেখানে আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করে।
  • *মন্তব্য- প্রকৃতপক্ষে সিয়েরা লিওনের উত্তরতম প্রান্ত নেই, সীমানাটি এখানে দশম সমান্তরাল উত্তর দ্বারা তৈরি করা হয়েছে।

জলবায়ু[সম্পাদনা]

কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী সিয়েরা লিওনের মানচিত্র।

এর জলবায়ু ক্রান্তীয়, তবে একে ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। এর জলবায়ুকে ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য জলবায়ুক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ুর মধ্যে পরিবর্তনশীল জলবায়ু হিসেবে বর্ণনা করা যায়।[৪]

এখানে দুটি মরসুম বিদ্যমান। একটি শুষ্ক মরসুম (নভেম্বর থেকে মে) আর বর্ষা মরসুম (জুন থেকে অক্টোবর)।

ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি বছরের শীতলতম মাস, যদিও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে, নিম্ন থেকে মাঝারি আর্দ্রতা বছরের এই সময়ের তাপকে আরও সহনীয় করে তোলে। মার্চ এবং এপ্রিলে প্রায় ৩৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়, এবং একটি আর্দ্রতার পরিমান থাকে ৫০%। আর্দ্রতার সাথে তাপ মিলে গরম বেশি অনুভূত হওয়ায় তাপ সুচকে প্রকৃত তাপমাত্রার থেকে অধিক তাপমাত্রা দেকাহ যায়। গড় সমুদ্র তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উপকূলের গড় বৃষ্টিপাত সর্বোচ্চ, প্রতি বছর ৩০০০-৫০০০ মিমি। অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে তা হ্রাস পায় এবং দেশের পূর্ব সীমান্তে গড় বৃষ্টিপাত ২০০০-২৫০০ মিমি।[৫]

পরিবেশসংক্রান্ত সমস্যা[সম্পাদনা]

সিয়েরা লিওনের আউতাম্বা কিলিমি জাতীয় পার্কে জলহস্তী।

সিয়েরা লিওনে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রাকৃতিক পরিবেশকে চাপ দিয়েছে। পরিবেশগত সমস্যার মধ্যে রয়েছে অতিমাত্রায় কাঠ কাটা, গবাদি পশু চরাঞ্চল ও ঝুম চাষের ফলস্বরূপ বন উজাড় ও মাটির অবসন্নতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অত্যধিক মাছ ধরা হয়।

সিয়েরা লিওন বেশ কয়েকটি পরিবেশগত চুক্তির পক্ষে[২]:

স্বাক্ষরিত, কিন্তু অনুমোদিত নয়:

  • পরিবেশগত পরিবর্তন (ENMOD)

সাধারণ তথ্য[সম্পাদনা]

ভৌগোলিক স্থানাঙ্ক: ৮°৩০′ উত্তর ১১°৩০′ পশ্চিম / ৮.৫০০° উত্তর ১১.৫০০° পশ্চিম / 8.500; -11.500

জমির সীমানা:

মোট: ১,০৯৩৮ কিমি

সীমান্ত দেশ: গিনি (৭৯৪ কিমি সীমানা), লাইবেরিয়া (২৯৯ কিমি সীমানা)

উপকূলরেখা: ৪০২ কিমি

সামুদ্রিক দাবি:

  • আঞ্চলিক সমুদ্র: ২০০ এনএমাই (নটিক্যাল মাইল) (৩৭০.৪ কিমি; ২৩০.২ মাইল)
  • সংলগ্ন অঞ্চল: ২৪ এনএমআই (৪৪.৪ কিমি; ২৭.৬ মাইল)।
  • এক্সক্লুসিভ অর্থনৈতিক অঞ্চল: ২০০ এনএমআই (৩৭০.৪ কিমি; ২৩০.২ মাইল)
  • মহাদেশীয় শেল্ফ: ২০০ মিটার গভীরতা

জলবায়ু: ক্রান্তীয়; গরম, আর্দ্র; গ্রীষ্মে বর্ষাকাল (মে থেকে ডিসেম্বর); শীতের শুকনো মরসুম (ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল)

ভূখণ্ড: ম্যানগ্রোভ জলাভূমির উপকূলীয় বেল্ট, কাঠের পাহাড়ি অঞ্চল, উজানের মালভূমি, পূর্বে পাহাড়

সর্বনিম্ন স্থান: আটলান্টিক মহাসাগর, ০ মি

সর্বোচ্চ স্থান: লোমা মানসা (বিনতিমনি), ১,৯৪৮ মি

প্রাকৃতিক সম্পদ: হীরা, আকরিক টাইটানিয়াম, বক্সাইট, আকরিক লোহা, স্বর্ণ, ক্রোমাইট

ভূমির ব্যবহার:

  • আবাদযোগ্য জমি: ২৪.৪%
  • স্থায়ী ফসল: ২.৩%
  • স্থায়ী চারণভূমি: ৩০.৫%
  • বনাঞ্চল: ৩৭.৫%
  • অন্যান্য: ৬.৩% (২০১১)
  • সেচ সম্পন্ন জমি: ৩০০ কিলোমিটার; (২০১২)

মোট নবায়নযোগ্য পানিসম্পদ: ১৬০ ঘন কিমি; (২০১১)

প্রাকৃতিক ঝুঁকি: সাহারা থেকে শুষ্ক বালুবাহিত হারমাত্তান নামক বায়ু প্রবাহিত হয় (ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি); বালি ঝড়, ধূলি ঝড়

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

সিয়েরা লিওন

সিয়েরা লিওনের জেলা

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. LeVert, Suzanne (২০০৬)। Cultures of the World: Sierra Leone। Marshall Cavendish (প্রকাশিত হয় ২০০৭)। পৃষ্ঠা 7আইএসবিএন 978-0-7614-2334-8 
  2. "CIA: The World Factbook: Sierra Leone"। ১৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  3. Schlüter, Thomas; Martin H. Trauth (২০০৮)। Geological atlas of Africa: with notes on stratigraphy, tectonics, economic geology, geohazards, geosites and geoscientific education of each country। Springer। পৃষ্ঠা 220। আইএসবিএন 978-3-540-76324-6 
  4. Gabler, Robert E.; James F. Petersen; L. Michael Trapasso; Dorothy Sack (২০০৮)। Physical Geography। Cengage Learning। পৃষ্ঠা 238। আইএসবিএন 978-0-495-55506-3 
  5. Hughes, R. H.; J. S. Hughes (১৯৯২)। A directory of African wetlands। IUCN। পৃষ্ঠা 435। আইএসবিএন 978-2-88032-949-5 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]