স্কট মুলার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্কট মুলার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামস্কট অ্যান্ড্রু মুলার
জন্ম (1971-07-11) ১১ জুলাই ১৯৭১ (বয়স ৫২)
হারস্টন, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
উচ্চতা১.৮২ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৮২)
৫ নভেম্বর ১৯৯৯ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট১৮ নভেম্বর ১৯৯৯ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯০/৯১ - ২০০১/০২কুইন্সল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০
রানের সংখ্যা ২১০
ব্যাটিং গড় ১০.০০ ৫.০০
১০০/৫০ -/- -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ৬* ২৬ *
বল করেছে ৩৪৮ ৪৮৩৯ ৩৫১
উইকেট ১০২ ১২
বোলিং গড় ৩৬.৮৫ ২৩.৫০ ২৩.৩৩
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৬৮ ৫/৩৫ ৫/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- ১২/- ২/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ আগস্ট ২০২০

স্কট অ্যান্ড্রু মুলার (ইংরেজি: Scott Muller; জন্ম: ১১ জুলাই, ১৯৭১) কুইন্সল্যান্ডের হারস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

১৯৯৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার।[১] ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন স্কট মুলার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৯০-৯১ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত স্কট মুলারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯ বছর বয়সে প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রেখে খেলার জগতে অগ্রসর হন। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে মেলবোর্নে কুইন্সল্যান্ড বনাম ভিক্টোরিয়া দলের মধ্যকার খেলার মাধ্যমে স্কট মুলারের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় কুইন্সল্যান্ড বুলসের ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনায় সচেষ্ট ছিলেন। রাজ্য দলের খাঁটি খেলোয়াড়ে রূপান্তরিত হন। ২৩.০০ গড়ে বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।

কিন্তু, খুব শীঘ্রই তিনি এ ধারা থেকে নিজেকে বিচ্যুত করেন ও ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমের পূর্ব-পর্যন্ত আর কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলতে পারেননি। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলেন। ফলশ্রুতিতে, জাতীয় দলের পক্ষে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ বার্তা পান।

ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা সত্ত্বেও খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। কুইন্সল্যান্ড বুলসের পক্ষে শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা থেকে সড়ে দাঁড়ান। এমনকি, অল্প কিছুকাল পরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন তিনি। এক পর্যায়ে কুইন্সল্যান্ডের কোচ জন বুকাননের অনুরোধক্রমে পুনরায় খেলার জগতে ফিরে এসেছিলেন। পরবর্তী দুই বছর হতাশার কবলে পড়ার পাশাপাশি ক্রমাগত আঘাতপ্রাপ্তির ফলে দীর্ঘসময় মাঠের বাইরে তাকে অবস্থান করতে হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন স্কট মুলার। সবগুলো টেস্টই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ৫ নভেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে ব্রিসবেনে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১৮ নভেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে হোবার্টে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে দূর্দান্ত খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ আঘাতপ্রাপ্ত জেসন গিলেস্পি’র পরিবর্তে বিস্ময়করভাবে সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কা গমনের উদ্দেশ্যে তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর দুই মাস পর ব্রিসবেনে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। তবে তার উত্থান পর্ব অনেকাংশে হঠাৎ আলোর ঝলকানীর ন্যায় ছিল।

১৯৯৯ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া গমনে আসে। সিরিজের দুই টেস্টে স্কট মুলারকে রাখা হয়। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সাথে তার একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। খেলায় তিনি সাত উইকেট দখল করেন। সবগুলো উইকেটই প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের ছিল।[২] উভয় খেলায় স্বাগতিকরা জয়লাভ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু, তিনি তুলনামূলকভাবে বেশ রান খরচ করে ফেলেন। ওভারপ্রতি ৪.৫ রান দেন।[৩] মাইকেল কাসপ্রোভিচকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। দশম উইকেট জুটিতে শেন ওয়ার্নের সাথে ৮৬ রানের নতুন রেকর্ডের সাথে যুক্ত হন। তবে, তার বোলিংয়ে অগোছালোভাব ও নিখুঁত নিশানা বরাবর বোলিংয়ে অমনোযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। এরপর তাকে দলের বাইরে রাখা হয়।

বিতর্কিত ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের মধ্যকার হোবার্ট টেস্টের মাইক্রোফোনে সরাসরি সম্প্রচারকৃত ‘কান্ট বোল, কান্ট থ্রো’ শীর্ষক কুখ্যাত বাক্য সংক্রান্ত ঘটনায় স্বীয় নামকে জড়িয়ে রেখে স্মরণীয় করে রেখেছেন স্কট মুলার। ফাইন লেগ থেকে বল সংগ্রহ করে উইকেট-রক্ষক অ্যাডাম গিলক্রিস্টের নাগালের বাইরে ছুঁড়ে দেয়ার পর মাইক্রোফোনে এ বাক্যটি শোনা যায়।[৪] তবে, ডানহাতি পেস বোলার ও অসাধারণ ফিল্ডার হিসেবে তার সাফল্যকে ম্লান করে দিতে পারেনি এ ঘটনাটি।

ঐ কুখ্যাত ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তাকে বিতর্কের মুখোমুখি হতে হয়। টেলিভিশন আলাপচারিতামূলক অনুষ্ঠান ‘দ্য প্যানেলে’ এ দৃশ্যের পুনরায় অবতারণা ঘটানো হয় ও এ মন্তব্যের পিছনে শেন ওয়ার্নের দিকে অঙ্গুলী হেলানো হয়। ওয়ার্ন তা অস্বীকার করেন এবং এ ঘটনায় শেন ওয়ার্নের সম্পৃক্ততা ও মুলার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন।[৫]

অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমে এ ঘটনাটি বেশ কয়েকদিন উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে ও ওয়ার্নের উপর দোষারোপ করা হয়। অল্প কিছুদিন পরই চ্যানেল নাইনের চিত্রগ্রাহক জো প্রিভিটেরা ‘এ কারেন্ট অ্যাফেয়ার’ শীর্ষক অনুষ্ঠান নিজের দোষ স্বীকার করেন।[৬]

অবসর[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্বল্পকালীন সময়ের জন্যে অবস্থান করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে আর কয়েকটি খেলায় তার অংশগ্রহণ ছিল। ২০০২-০৩ মৌসুমে পুনরায় লিস্ট এ ক্রিকেটের খেলায় অংশ নেন। তবে, এরপর থেকে তাকে আর বড় ধরনের খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়নি।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]