পল উইনস্লো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পল উইনস্লো
১৯৫৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে পল উইনস্লো
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামপল লিন্ডহার্স্ট উইনস্লো
জন্ম(১৯২৯-০৫-২১)২১ মে ১৯২৯
জোহানেসবার্গ, ট্রান্সভাল
মৃত্যু২৪ মে ২০১১(2011-05-24) (বয়স ৮২)
পার্কটাউন, জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কএল উইনস্লো (দাদা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৭৭)
১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২১ জুলাই ১৯৫৫ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৭৫
রানের সংখ্যা ১৮৬ ২৭৫৫
ব্যাটিং গড় ২০.৬৬ ২৩.৩৪
১০০/৫০ ১/০ ২/১৩
সর্বোচ্চ রান ১০৮ ১৩৯
বল করেছে ১৩০
উইকেট
বোলিং গড় ৬১.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ৮৫/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জুলাই ২০২০

পল লিন্ডহার্স্ট উইনস্লো (ইংরেজি: Paul Winslow; জন্ম: ২১ মে, ১৯২৯ - মৃত্যু: ২৪ মে, ২০১১) ট্রান্সভালের জোহেন্সবার্গ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শুরুরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে রোডেশিয়াট্রান্সভাল এবং ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, লেগ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন পল উইনস্লো

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশুনো সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। পল উইনস্লো’র পিতা চার্লস উইনস্লো শীর্ষস্থানীয় টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯১২ সালের অলিম্পিক গেমসে দুইটি স্বর্ণপদক ও ১৯২০ সালের অলিম্পিকে ব্রোঞ্জপদক লাভ করেন।[১] তার দাদা লিন্ডহার্স্ট উইনস্লো সাসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন ও অভিষেক খেলায় প্রতিপক্ষ গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন।[২]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬১-৬২ মৌসুম পর্যন্ত পল উইনস্লো’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সালে এসএ নুফিল্ড একাদশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এরপর ১৯৪৯ সালে সাসেক্স দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলেন। নিজস্ব বিংশতিতম জন্মদিন উদযাপনের দুই সপ্তাহ পূর্বে সাসেক্সের সদস্যরূপে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যাবর্তন করে ট্রান্সভালের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে লিন্ডসে হ্যাসেটের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে দুই খেলায় মুখোমুখি হন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ট্রান্সভালের পক্ষে সফলতম মৌসুম অতিবাহিত করেন। ৪২.১১ গড়ে ৩৭৯ রান তুলেন তিনি। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ করেন ৯৪ রান। এরফলে, ইংল্যান্ড গমনার্থে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অন্তর্ভূক্তির সুযোগ এনে দেয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন পল উইনস্লো। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫০ তারিখে জোহেন্সবার্গে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ জুলাই, ১৯৫৫ তারিখে লিডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

জোহেন্সবার্গের এডিলস পার্কে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। তবে, খুব কমই সফল হয়েছিলেন। অংশগ্রহণকৃত পাঁচ টেস্টে কেবলমাত্র একবারই আক্রমণধর্মী খেলা উপহার দিতে পেরেছিলেন পল উইনস্লো।

ইংল্যান্ড গমন[সম্পাদনা]

১৯৫৫ সালে দলের সাথে ইংল্যান্ড গমন করেন। ২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে ছিল তার দল। ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২৮৪ হলে সফরকারীরা ব্যাটিংয়ে নামে। ২৪৫/৫ থাকা অবস্থায় উইকেট-রক্ষক জন ওয়েটের সাথে জুটি গড়ে। এ দুজন ষষ্ঠ উইকেটে ১৭১ রান তুলেন। উইনস্লো ১০৮ ও ওয়েট ১১৩ রান তুলে আউট হন। এ সেঞ্চুরিটিই তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের প্রথম ঘটনা ছিল।

সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত শনিবারের খেলায় তিন ঘণ্টার অল্প সময় বেশি নিয়ে ১০৮ রান তুলতে সমর্থ হন। এ পর্যায়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার ফ্রাঙ্ক টাইসন, টনি লক, ট্রেভর বেইলিঅ্যালেক বেডসার সমৃদ্ধ ইংরেজ দলের বোলিং আক্রমণ মোকাবেলা করে চাবিরতির অল্প সময় পূর্বে শতরান করেন। টনি লকের বলে ছক্কার মারে স্ট্রেটফোর্ড প্রান্তের অনুশীলনী মাঠে ফেলে এ কৃতিত্বের দাবীদার হন। এরফলে, খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার নাটকীয় বিজয়ে ভূমিকা রাখতে সক্ষমতা দেখান। মিনিটপ্রতি ১৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে মিনিটখানেক সময় বাকী থাকতে তিন উইকেটে জয়লাভ করে। উইনস্লো সময় উপযোগী ১৬ রান তুলেন। চতুর্থ টেস্টে ব্যক্তিগতভাবে ব্যর্থ হন। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পায়।

এ সফরে ২২ খেলায় অংশ নেন। ২৩.৬৮ গড়ে ৭৫৮ রান তুলেন তিনি। তিন টেস্টে ২৬.০০ গড়ে ১৫৬ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে মাত্র ৪৩ মিনিটে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন পল উইনস্লো। স্পিনার জ্যাক ইকিনের এক ওভারে ৪, ৪, ৬, ৬, ৪, ৬ মোট ৩০ রান সংগ্রহ করেন।

অবসর[সম্পাদনা]

এরপর থেকে তার খেলোয়াড়ী জীবনে তেমন কিছুই উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসেনি। কেবলমাত্র ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে সলসবারিতে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে রোডেশিয়ার সদস্যরূপে ৮১ ও ১৩৯ রান তুলেছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল যে, তাকে হয়তোবা দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হবে। তবে, তা ঘটেনি। এরপর, প্রিটোরিয়ার লোফ্টাস ভার্সফেল্ডে দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের সদস্যরূপে ১২ ও ২২ রান তুলেছিলেন।

মূলতঃ মাঝারিসারির মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন যা ঐ সময়ে বেশ ব্যতিক্রম ছিল। ট্রান্সভাল দলের সফলতায় বেশ অবদান রেখেছিলেন। ৩০ বছর বয়সে ব্যবসায় জগতে চলে যান ও ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ফলশ্রুতিতে, দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি বেশ দূরে সরে যায়।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

এরপর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করতে থাকেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে মোইরা নাম্নী এক রমণীর সাথে পরিচিত হন ও পরবর্তীতে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। ৮২তম জন্মদিনের পর ২৪ মে, ২০১১ তারিখে জোহেন্সবার্গের পার্কটাউন এলাকার রোজব্যাংক নেটকেয়ার ক্লিনিকে পল উইনস্লো’র দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Overson, p. 10.
  2. Overson, p. 9.

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]