দারুল উলুম দেওবন্দ

স্থানাঙ্ক: ২৯°৪১′৩২″ উত্তর ৭৭°৪০′৩৯″ পূর্ব / ২৯.৬৯২২২° উত্তর ৭৭.৬৭৭৫০° পূর্ব / 29.69222; 77.67750
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(আকাবিরে সিত্তাহ থেকে পুনর্নির্দেশিত)
দারুল উলুম দেওবন্দ
دارالعلوم دیوبند
দারুল উলুম দেওবন্দ
ধরনকওমি মাদ্রাসা
স্থাপিত৩০ মে ১৮৬৬; ১৫৭ বছর আগে (1866-05-30)
প্রতিষ্ঠাতাআকাবিরে সিত্তাহ
বাজেট৩৮,২৩,৬০,০০০ রুপি (২০২০)[১]
আচার্যআবুল কাসেম নোমানী
অবস্থান, ,
ওয়েবসাইটwww.darululoom-deoband.com
মানচিত্র

দারুল উলুম দেওবন্দ (আরবি: دارالعلوم دیوبند) হল ভারতের একটি মাদরাসা। এখান থেকে দেওবন্দি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। উত্তর প্রদেশের সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ নামক স্থানে এই মাদ্রাসার অবস্থান। ১৮৬৬ সালে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ইসলামি আলেমগণ এটির প্রতিষ্ঠা করেন। মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি তাদের প্রধান ছিলেন। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহীসৈয়দ আবিদ হুসাইন। ইসলামি শিক্ষার প্রসারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।[২][৩] এটি ভারতের মুসলিম সমাজের নানা অসংগতি, কুপ্রথা ও স্থানীয় আচরণকে সংস্কার করে শরিয়তের নৈতিকতা ও আদবকে প্রতিস্থাপন করতে পেরেছিল এবং মুসলিম সমাজের ইসলামায়ন প্রক্রিয়াকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। ঔপনিবেশিক ও অমুসলিম অধ্যুষিত ভারতে মুসলমানদোর ধর্ম ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার পথ দেখিয়েছে।[৪]

সূচনা[সম্পাদনা]

মসজিদে ছাত্তা

দেওবন্দ ছিল মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির শ্বশুরালয়। সেখানে গেলে তিনি সাত্তা মসজিদে নামাজ আদায় করতেন। হাজী আবেদ হোসেন ছিলেন সাত্তা মসজিদের ইমাম। মাওলানা জুলফিকার আলীমাওলানা ফজলুর রহমান অত্র এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। এসব ব্যক্তিবর্গ নামাযান্তে হাজী আবেদ হোসেনের হুজরায় প্রায় সমবেত হতেন। দেশের এহেন পরিস্থিতি তাদেরকেও ভাবিয়ে তুলেছিল ভীষণভাবে। তারা সবচেয়ে বেশি ভাবতেন ইসলামী শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে! কিন্তু বিকল্প কোন পথ কেউ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। দীর্ঘ ৬/৭ বছর এভাবে কেটে গেল। ১৮৬৬ সালে মাওলানা কাসেম নানুতুবী দেওবন্দের দেওয়ান মহল্লায় স্বীয় শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। বাড়ি সংলগ্ন সাত্তা মসজিদের ইমাম হাজী আবিদ হোসানের সাথে মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হওয়ার পর সেখানেই একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করেন।[৫]

একদিন সাত্তা মসজিদের ইমাম হাজী আবেদ হোসেন ফজরের নামাজান্তে ইশরাকের নামাজের অপেক্ষায় মসজিদে মোরাকাবারত ছিলেন। হঠাৎ তিনি ধ্যানমগ্নতা ছেড়ে দিয়ে নিজের কাঁধে রুমালের চার কোণ একত্রিত করে একটি থলি বানালেন এবং তাতে নিজের পক্ষ থেকে তিন টাকা রাখলেন। অতঃপর তা নিয়ে তিনি রওয়ানা হয়ে গেলেন মাওলানা মাহতাব আলীর কাছে। তিনি সোৎসাহে ৬ টাকা দিলেন এবং দোয়া করলেন। মাওলানা ফজলুর রহমান দিলেন ১২ টাকা, হাজী ফজলুল হক দিলেন ৬ টাকা। সেখান থেকে উঠে তিনি গেলেন মাওলানা জুলফিকার আলীর নিকট। জ্ঞানানুরাগী এই ব্যক্তিটি দিলেন ১২ টাকা। সেখান থেকে উঠে এই দরবেশ সম্রাট “আবুল বারাকাত” মহল্লার দিকে রওয়ানা হলেন। এভাবে ২০০ টাকা জমা হয়ে গেল এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত জমা হল ৩০০ টাকা। এভাবে বিষয়টি লোকমুখে চর্চা হতে বেশ টাকা জমে যায়। জনগণের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে তিনি মিরাটে কর্মরত মাওলানা কাসেম নানুতুবির নিকট এই মর্মে পত্র লিখেন যে, আমরা মাদ্রাসার কাজ শুরু করে দিয়েছি আপনি অনতিবিলম্বে চলে আসুন। চিঠি পেয়ে নানুতুবী মোল্লা মাহমুদকে শিক্ষক নিযুক্ত করে পাঠিয়ে দিলেন এবং তার মাধ্যমে মাদ্রাসার কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠি লিখে দিলেন। এভাবেই গণচাঁদার উপর ভিত্তি করে ছোট্ট একটি ডালিম গাছের নিচে দেওবন্দ মাদ্রাসার গোড়াপত্তন হয়। মোল্লা মাহমুদ সর্বপ্রথম শিক্ষাদান করেন সর্বপ্রথম ছাত্র মাহমুদকে। যিনি পরবর্তীতে শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দি দেওবন্দী নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।[৬][৭]

প্রতিষ্ঠাতা[সম্পাদনা]

১৯২৮ সালে মাসিক আল কাসিমে ছাপানো দারুল উলুম দেওবন্দের নকশা

দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতারা আকাবিরে সিত্তাহ নামে পরিচিত। আকাবিরে সিত্তাহ (আরবি: ﺃﻛﺎﺑﺮ السته) শব্দটি দুটি আরবি শব্দ নিয়ে গঠিত। আকাবির ও সিত্তাহ। আকবার শব্দের বহুবচন আকাবির। এর অর্থ বড় ব্যক্তিত্ব, সম্মানিত ব্যক্তি[৮] আর সিত্তাহ শব্দের অর্থ ছয়।[৯] সুতরাং আকাবিরে সিত্তাহ’র শাব্দিক অর্থ ছয়জন সম্মানিত ব্যক্তি। পারিভাষিক অর্থে আকাবিরে সিত্তাহ বলতে দেওবন্দ আন্দোলন তথা দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা ছয়জন ব্যক্তিকে বোঝায়।[১০] ছয় মনীষীর নামঃ[১১][১২]

ক্রম নাম জন্ম মৃত্যু প্রতিষ্ঠাকালীন বয়স
মুহাম্মদ কাসেম ১৮৩২ ১৮৮০ ৩৪
মুহাম্মদ ইয়াকুব ১৮৩৩ ১৮৮৪ ৩৩
মুহাম্মদ আবেদ ১৮৩৪ ১৯১২ ৩২
রফি উদ্দিন ১৮৩৬ ১৮৯০ ৩০
যুলফিকার আলী ১৮১৯ ১৯০৪ ৪৭
ফজলুর রহমান ১৮২৯ ১৯০৭ ৩৭

নামকরণ[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠাকালীন বিশেষ কোনো নাম নির্ধারণ করা হয়নি দারুল উলুম দেওবন্দের ৷ লোকমূখে তখন মাদরাসাটি দেওবন্দ আরবী মাদরাসা নামে পরিচিত হয়ে এটিই মাদরাসার নাম হয়ে যায়। ১২৯৬ হিজরিতে তৎকালীন সদরুল মুদাররিসীন ( প্রধান শিক্ষক ) মাওলানা ইয়াকুব নানুতুবীর প্রস্তাবে মাদরাসার নামকরণ করা হয় ‘‘দারুল উলুম দেওবন্দ’’[১৩]

মূলনীতি[সম্পাদনা]

দেওবন্দ মাদ্রাসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ৮ টি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়। এগুলোকে একসাথে ‘উসূলে হাশতেগানা’ বলা হয়। দেওবন্দের আদলে পরিচালিত সকল মাদ্রাসায় এই নীতিগুলো কঠোরভাবে পালন করা হয়। পরাধীন ভারতে ধ্বসে পড়া ইসলামি শিক্ষাকে পুনরুজ্জীবিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত করার মহান লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে তৎকালীন দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠিতা প্রধান মাওলানা কাসেম নানুতুবি রাষ্ট্রীয় অনুদানের প্রাচীন ধারার পরিবর্তে গণচাঁদার বিষয়টির প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করে এই ৮টি মূলনীতি প্রণয়ন করেন। এগুলো হলঃ[১৪][১৫][১৬][১৭]

  1. যথাসম্ভব মাদরাসার কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরকে অধিকহারে চাঁদা আদায়ের বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। নিজেও এর জন্য চেষ্টা করতে হবে, অন্যের মাধ্যমেও চেষ্টা করাতে হবে। মাদরাসার হিতাকাঙ্খীদেরও এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
  2. যেভাবেই হোক মাদরাসার ছাত্রদের খানা চালু রাখতে হবে বরং ক্রমান্বয়ে তা উন্নত করার ব্যাপারে হিতাকাঙ্খী ও কল্যাণকামীদের সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
  3. মাদরাসার উপদেষ্টাগণকে মাদরাসার উন্নতি, অগ্রগতি এবং সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে। নিজের মত প্রতিষ্ঠার একগুঁয়েমী যাতে কারো মাঝে না হয় এ দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আল্লাহ না করুন যদি এমন অবস্থা দেখা দেয় যে, উপদেষ্টাগণ নিজ নিজ মতের বিরোধিতা কিংবা অন্যের মতামতের সমর্থন করার বিষয়টি সহনশীলভাবে গ্রহণ করতে না পারেন তাহলে এ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিমূল নড়বড়ে হয়ে পড়বে। আর যথাসম্ভব মুক্ত মনে পরামর্শ দিতে হবে এবং মাদরাসার শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি লক্ষণীয় হতে হবে।  নিজের মত প্রতিষ্ঠার মনোবৃত্তি না থাকতে হবে। এ জন্য পরামর্শদাতাকে মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে তার মতামত গ্রহণীয় হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই আশাবাদী না হতে হবে। পক্ষান্তরে শ্রোতাদেরকে মুক্তমন ও সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তা  শুনতে হবে। অর্থাৎ এরূপ মনোবৃত্তি রাখতে হবে যে, যদি অন্যের মত যুক্তিযুক্ত ও বোধগম্য হয়, তাহলে নিজের মতের বিপরীত হলেও তা গ্রহণ করে নেওয়া হবে। আর মুহতামিম বা পরিচালকের জন্য পরামর্শ সাপেক্ষে সম্পাদন যোগ্য বিষয়ে উপদেষ্টাগণের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া অবশ্যই জরুরী। তবে মুহতামিম নিয়মিত উপদেষ্টাদের থেকেও পরামর্শ করতে পারবেন কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত এমন কোন বিদগ্ধ জ্ঞানী আলেম থেকেও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন যিনি সকল দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের জন্য হিতাকাঙ্খী ও কল্যাণকামী। তবে যদি ঘটনাক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সকল সদস্যের সাথে পরামর্শ করার সুযোগ না হয় এবং প্রয়োজনমাফিক উপদেষ্টা পরিষদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্যের সাথে পরামর্শক্রমে কাজ করে ফেলা হয়, তাহলে কেবল এ জন্য অসন্তুষ্ট হওয়া উচিত হবে না যে, ‘আমার সাথে পরামর্শ করা হল না কেন?’ কিন্তু যদি মুহতামিম কারো সঙ্গেই পরামর্শ না করেন, তাহলে অবশ্যই উপদেষ্টা পরিষদ আপত্তি করতে পারবে।
  4. মাদরাসার সকল শিক্ষককে অবশ্যই সমমনা ও একই চিন্তা চেতনার অনুসারী হতে হবে। সমকালীন (দুনিয়াদার) আলেমদের ন্যায় নিজ স্বার্থ প্রতিষ্ঠা ও অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার দুরভিসন্ধিতে লিপ্ত না হতে হবে। আল্লাহ না করুন যদি কখনো এরূপ অবস্থা দেখা দেয়, তাহলে মাদরাসার জন্য এটি মোটেও কল্যাণকর হবে না।
  5. পূর্ব থেকে যে পাঠ্যসূচী নির্ধারিত রয়েছে কিংবা পরবর্তীতে পরামর্শের ভিত্তিতে যে পাঠ্যসূচী নির্ধারণ করা হবে, তা যাতে সমাপ্ত হয়; এই ভিত্তিতেই পাঠদান করতে হবে। অন্যথায় এ প্রতিষ্ঠান সুপ্রতিষ্ঠিতই হবে না, আর যদি হয়ও তবু তা ফায়দাজনক হবে না।
  6. এ প্রতিষ্ঠানের জন্য যতদিন পর্যন্ত কোন স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হবে; ততদিন পর্যন্ত আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতার শর্তে তা এমনিভাবেই চলতে থাকবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু যদি স্থায়ী আয়ের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যেমন কোন জায়গীর লাভ, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, মিল ফ্যাক্টরী গড়ে তোলা কিংবা বিশ্বস্ত কোন আমীর উমারার অনুদানের অঙ্গীকার ইত্যাদি, তাহলে এরূপ মনে হচ্ছে যে, আল্লাহর প্রতি ভয় ও আশার দোদুল্যমান অবস্থা; যা মূলতঃ আল্লাহমুখী হওয়ার মূল পুঁজি, তা হাত ছাড়া হয়ে যাবে এবং গায়েবী সাহায্যের দ্বার রুদ্ধ হয়ে যাবে। তদুপরি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও কর্মচারীগণের মাঝে পারস্পরিক বিদ্বেষ ও কলহ বিবাদ দেখা দিবে। বস্তুতঃ আয় আমদানি ও গৃহাদি নির্মাণের বিষয়ে অনেকটাই অনাড়ম্বরতা ও উপায় উপকরণহীন অবস্থা বহাল রাখার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
  7. সরকার ও আমীর উমারাদের সংশ্লিষ্টতাও এ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে বলে মনে হচ্ছে।
  8. যথা সম্ভব এমন ব্যক্তিদের চাঁদাই প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিক বরকতময় হবে বলে মনে হচ্ছে; যাদের চাঁদাদানের মাধ্যমে সুখ্যাতি লাভের প্রত্যাশা থাকবে না। বস্তুতঃ চাঁদাদাতাগণের নেক নিয়ত প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিক স্থায়ীত্বের কারণ হবে বলে মনে হয়।

দরসে নেজামী[সম্পাদনা]

দারুল উলুম দেওবন্দে পঠিত সিলেবাস বিশ্ব জুড়ে দরসে নেজামী নামেই প্রসিদ্ধ৷ দরসে নেজামীর প্রতিষ্ঠা হয় ১১০০ শতাব্দীর পরে৷ ১১০০ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকহারে থাকলেও তা কোনো সিলেবাসভিত্তিক বা কারিকুলামের আলোকে ছিল না। ১১০৫ হিজরিতে মোল্লা নিজামুদ্দীন সাহলাভী ইসলামী শিক্ষাকে কিছুটা ঢেলে সাজান। তিনিই দরসে নেজামী আকারে মাদরাসা শিক্ষা পদ্ধতি চালু করেন। তিনি ছিলেন একাধারে দ্বীনের সুদক্ষ আলেম, ফিকাহ শাস্ত্রবিদ, দার্শনিক, ভাষ্যকার এবং একজন শিক্ষাবিদ। তিনি উত্তর ভারতের সাহালী শহরে ১০৮৮/৮৯ মোতাবেক ১৬৭৭-৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

হিরাতের প্রসিদ্ধ শিক্ষাবিদ শায়খ আব্দুল্লাহ আনসারী ছিলেন তাঁর পূর্বপুরুষ। শায়খ নিজামুদ্দীন সাহালীতে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের সূচনা করেন। তারই প্রপৌত্র শায়খ হাফিজের জ্ঞানসাধনায় মুগ্ধ হয়ে সম্রাট আকবর তাকে ঐ এলাকায় ভালো একটি জায়গীর প্রদানের নির্দেশ দেন। ফলে শায়খ ও তাঁর পুত্রগণ নিশ্চিন্তে তালীমের কাজে মগ্ন থাকেন। ছাত্রদের খাদ্য ও বাসস্থানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাও করেন। ইসলামের শত্রুরা ১১০৩ হিজরি মোতাবেক ১৬৯১ সালে মোল্লা নিজামুদ্দীনের পিতা মোল্লা কুতুবুদ্দীনকে শহীদ করে তার শিক্ষা উপকরণসমূহ জ্বালিয়ে দেন। ফলে মোল্লা নিজামুদ্দীন তার চার ভাইসহ ভারতের উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌ চলে যান।

সম্রাট আওরঙ্গজেব এই পরিবারের শিক্ষার অবদানের কথা বিবেচনা করে লাখনৌর প্রসিদ্ধ মহল্লা ফিরিঙ্গী মহলে একস্থানে সরকারি আদেশবলে জায়গীর দান করেন। মোল্লা নিজামুদ্দীন এখানে দ্বীনি শিক্ষার কাজ চালিয়ে যান, এমন সময় এটাই মাদরাসায়ে নিজামিয়া নামে সুপরিচিতি লাভ করে। এই ফিরিঙ্গী মহলে এসেই তিনি ১১০৫ হিজরি সনে দরসে নেজমী প্রণয়ন করেন৷ তিনি গঠনমূলকভাবে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে প্রায় ১১টি বিষয়ের সমন্বিত সিলেবাসটি প্রণয়ন করেন। ইতিহাসে এটাই দরসে নেজামী নামে পরিচিত। দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার পরে উক্ত দরসে নেজামীই মাদরাসার নেসাবভুক্ত করা হয়৷ আজ অবধি এই দরসে নেজামীই বিদ্যামান রয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দের নেসাবে৷[৫][১৮][১৯]

মুহতামিমবৃন্দ[সম্পাদনা]

দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ১০ জন মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দের বর্তমান মুহতামিম আবুল কাসেম নোমানী[২০][২১]

নং চিত্র নাম কার্যকাল
হাজী আবেদ হোসেন ১৮৬৬ ১৮৬৭
রফি উদ্দিন উসমানী ১৮৬৭ ১৮৬৮
হাজী আবেদ হোসেন ১৮৬৯ ১৮৭১
রফি উদ্দিন উসমানী ১৮৭২ ১৮৮৮
হাজী আবেদ হোসেন ১৮৮৮ ১৮৯৩
হাজী ফজল হক ১৮৯৩ ১৮৯৪
মুহাম্মদ মুনির নানুতুবি ১৮৯৪ ১৮৯৫
হাফেজ মুহাম্মদ আহমদ ১৮৯৫ ১৯২৮
হাবিবুর রহমান উসমানি ১৯২৮ ১৯২৯
১০ কারী মুহাম্মদ তৈয়ব ১৯৩০ ১৯৮০
১১ মারগুবুর রহমান বিজনুরী ১৯৮২ ২০১০
১২ গোলাম মুহাম্মদ বাস্তনবী ১০ জানুয়ারি ২০১১ ২৪ জুলাই ২০১১
১৩ আবুল কাসেম নোমানী ২০১১ বর্তমান

শিক্ষাক্রম[সম্পাদনা]

২০১৮ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ

দারুল উলুম দেওবন্দ ভারতের উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলায় অবস্থিত একটি মাদ্রাসা, যা ১৮৬৬ সালের ৩০ মে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এটি একটি মৌলিক শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে যা দরসে নেজামি নামে পরিচিত। দারুল উলুম দেওবন্দে এটি উল্লেখযোগ্য সংস্কারের সাথে চালু করা হয়েছিল।[২২] পরবর্তীতে দারুল উলুম দেওবন্দের অনুসরণে সারাবিশ্বে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। তাই এটি দরসে নেজামি মাদ্রাসার মূল আদর্শ হিসেবে স্বীকৃত।[২৩] দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষাক্রম মোট ৩টি ধাপে সমাপ্ত হয়: প্রাথমিক শিক্ষা, ফাযেল কোর্স এবং তাখাচ্ছুছাত। প্রাথমিক শিক্ষা বা দীনিয়াত বিভাগের ব্যপ্তি মোট ৫ বছর। ফাযেল কোর্স বা আলেম কোর্সের ব্যপ্তি মোট ৮ বছর। ফাযেল কোর্স দারুল উলুম দেওবন্দের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোর্স। এই কোর্স সমাপ্তকারীদের আলেম বলা হয়৷ ফাযেল কোর্সের মান সাধারণ শিক্ষার স্নাতকের সমান। ফাযেল কোর্স পরবর্তী বিভিন্ন বিষয়ের বিষেশায়িত উচ্চশিক্ষা তাখাচ্ছুছাত নামে পরিচিত। বিষয় অনুযায়ী এটি ১, ২ বছর বা আরও বেশি হতে পারে।

ফাযেল কোর্সের প্রথম চার বছরকে ছানুভী বিভাগ বলা হয়৷ এই বিভাগে আরবি নাহু ছরফ, আরবি ইনশা মান্তেক (তর্কবিদ্যা), কুরআন তরজমা এবং ইসলামি ইতিহাস সহ ইসলামের মৌলিক বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়। আর শেষ চার বছরে ইলুমল বালাগাত, ফাসাহাত, তাফসির, উসূলে তাফসির, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, হাদিস ও উসূলে হাদিসের পাঠ দান করা হয়৷ শেষ বছরকে দাওরায়ে হাদিস বলা হয়। এতে সিহাহ সিত্তাহসহ মোয়াত্তাইন ও তহাবী এবং শামায়েলে তিরমিজীর পাঠদান করা হয়৷

ফাযেল কোর্স পরবর্তী বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষা বা তাখাচ্ছুছাতের মধ্যে রয়েছে তাদরিব ফিল ইফতা, তাজবিদ, তাখাস্সুস ফিল হাদিস, তাকমিল আদব, তাকমিল তাফসির ইত্যাদি।[২৪][২৫]

স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান[সম্পাদনা]

১৯৮০ সালে প্রকাশিত ভারতের ডাকটিকিটে দারুল উলুম দেওবন্দ

ব্রিটিশদের শাসন থেকে ভারতকে স্বাধীন করার জন্য ভারতীয় মুসলমানরা ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ সংগঠিত করে। সিপাহি বিদ্রোহের ধারাবাহিকতায় শামলীর যুদ্ধ সহ এই বিদ্রোহে পরাজয়ের পর তার ক্ষতি মিটানোর জন্য কাসেম নানুতুবির নেতৃত্বে কয়েকজন আলেম ১৮৬৬ সালের ৩০ মে দেওবন্দের সাত্তা মসজিদের ডালিম গাছের নিচে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করে। এই মাদ্রাসার প্রথম শিক্ষক মাহমুদ দেওবন্দি ও প্রথম ছাত্র ছিলেন মাহমুদ হাসান দেওবন্দি৷ পরবর্তীতে মাহমুদ হাসান দেওবন্দি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান শিক্ষকের পদে অধিষ্ঠিত হন এবং তার ছাত্রদের মাধ্যমে তিনি সশস্ত্র বিপ্লব গড়ে তুলতে স্বচেষ্ট হন। তিনি পর্যায়ক্রমে সামরাতুত তারবিয়াত, জমিয়তুল আনসার, নাযারাতুল মাআরিফ আল কুরআনিয়া গঠন করেন। তার রেশমি রুমাল আন্দোলন ফাঁস হয়ে গেলে তিনি মাল্টায় নির্বাসিত হন। এরই মধ্যে তার ছাত্ররা ভারতে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ গঠন করেন। কারামুক্ত হয়ে ভারতে প্রত্যাবর্তন করে তিনি জমিয়তের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের একমাসের মাথায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন৷ জমিয়ত খিলাফত আন্দোলনভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাথে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে জমিয়তের নেতৃত্বে আসেন দারুল উলুম দেওবন্দের অধ্যক্ষ হুসাইন আহমদ মাদানি। তিনি অখণ্ড ভারতের দাবিতে কংগ্রেসের সাথে মিলে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যান। দারুল উলুম দেওবন্দের সদরে মুহতামিম শাব্বির আহমদ উসমানির নেতৃত্বে আরেকটি দল জমিয়ত থেকে বের হয়ে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম গঠন করে পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করেন, যাদের তাত্ত্বিক গুরু ছিলেন দারুল উলুম দেওবন্দের আরেক ছাত্র আশরাফ আলী থানভী। ১৯৪৭ দেশ ভাগের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন সফল হয়।

শতবার্ষিকী সম্মেলন[সম্পাদনা]

শতবার্ষিকী সম্মেলনের শুরুতে কুরআন পাঠ করছেন মিশরের কারী আব্দুল বাসিত আব্দুস সামাদ, পিছনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী

১৯৮০ সালের ২১, ২২ ও ২৩ মার্চ এই মাদ্রাসার শতবার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি আরবের বাদশাহর প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুহসিন আত তুর্কির সভাপতিত্ব, মিশরের কারী আব্দুল বাসিত আব্দুস সামাদের কুরআন তেলওয়াত, মাদ্রাসার মুহতামিম কারী মুহাম্মদ তৈয়বের উদ্ভোদনী ভাষণ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বক্তৃতার মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং কারী মুহাম্মদ তৈয়বের মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। আকাশবাণীতে এটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য ১০ লক্ষ বর্গমিটারের বিস্তীর্ণ জায়গা প্রস্তুত করা হয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ থেকে ২০ লাখ। এর মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ছিল ১৮,০০০। বিখ্যাত আরবি সাহিত্যিক আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর তার আত্মজীবনী কারওয়ানে যিন্দেগীতে এই সমাবেশকে আরাফাত ময়দানের সাথে তুলনা করেছেন।[২৬] এই সমাবেশে মাদ্রাসার দশ সহস্রাধিক শিক্ষা সমাপনকারীর দাস্তারবন্দীও করা হয়। সম্মেলনে মিন্নাতুল্লাহ রহমানির প্রচেষ্টায় আফগানিস্তানে রাশিয়ার আক্রমণের বিপক্ষে এবং আফগান মুজাহিদদের জন্য সহযোগিতামূলক সহ কয়েকটি কর্মসূচীও গৃহীত হয়। মূল সম্মেলনের পাশাপাশি দারুল হাদিসে মাদ্রাসা, এর দায়িত্ব ও সিলেবাস নিয়ে একটি বিশেষ আলোচনা মজলিসেরও ব্যবস্থা করা হয়।

সীরাত রচনা[সম্পাদনা]

দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা কাসেম নানুতুবি আবে হায়াত নামে একটি সীরাত গ্রন্থ রচনা করেন। তার পরবর্তীতে দারুল উলুম দেওবন্দের অন্যান্য আলেমদের রচিত সীরাত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: যে ফুলের খুশবুতে সারা জাহান মাতোয়ারা, আন নাবিয়্যুল খাতিম, সীরাতে খাতামুল আম্বিয়া, সীরাতুল মুস্তফা, সীরাতে মুবারাকাহ মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ, সীরাতে রাসুলে করিম, আফতাবে নবুয়ত ইত্যাদি। দারুল উলুম দেওবন্দের উল্লেখযোগ্য সীরাতবিদের মধ্যে রয়েছেন; আশরাফ আলী থানভী, মানাজির আহসান গিলানি, শফি উসমানি, ইদ্রিস কান্ধলভি, মুহাম্মদ মিয়া দেওবন্দি, জয়নুল আবেদিন সাজ্জাদ মিরাটী, হিফজুর রহমান সিওহারভি, হাফেজ মুহাম্মদ আহমদ, কারী মুহাম্মদ তৈয়ব, হামিদ আল-আনসারি গাজি, জাফিরুদ্দিন মিফতাহি প্রমুখ।

দারুল ইফতা[সম্পাদনা]

উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী[সম্পাদনা]

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. "Annual Budget 1441 / 2020"দারুল উলুম দেওবন্দ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২১ 
  2. পরিষদ, সম্পাদনা (জুন ১৯৮২)। সংক্ষিপ্ত ইসলামি বিশ্বকোষ ১ম খণ্ড। শেরেবাংলা নগর, ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৪৮১–৪৮২। আইএসবিএন 954-06-022-7 
  3. "Deoband school | Founder, Beliefs, & History"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৬ 
  4. ফাহমিদ-উর-রহমান, |। "আশরাফ আলী থানভীর আধ্যাত্মিক রাজনৈতিক চিন্তাধারা"পুনর্পাঠ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১০-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৮ 
  5. প্রতিবেদক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী (২৮ অক্টোবর ২০১৬)। "কওমী মাদরাসার ইতিহাস ঐতিহ্য ও অবদান"DailyInqilabOnline 
  6. আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহিয়া। "যেভাবে সূচনা হল দেওবন্দ মাদ্রাসার"। দেওবন্দ আন্দোলন: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদান (১৯৯৮ সংস্করণ)। আল আমীন রিসার্চ একাডেমি বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ১৫৯। 
  7. উইলিয়াম ক্যাসলার জ্যাকসন। A Subcontinent's Sunni Schism: The Deobandi-Barelvi Rivalry and the Creation of Modern South Asia the Creation of Modern South Asiasurface.syr.edu। সিরাকিউজ বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৯০। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২০ 
  8. ফীরুযুল লুগাত, ১ম প্রকাশ (২০১২)। আকবার অর্থ। ফীরুয সন্স। পৃষ্ঠা ১০৬। 
  9. "ستة - অনুবাদ - আরবী-বাংলা অভিধান"Glosbe। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৮ 
  10. "THE SIX GREAT ONES(Page one)"www.darululoom-deoband.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৮ 
  11. "দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাকালীন: আকাবিরের জীবনপাঠ - যুবাইর আরশাদ"www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২২ 
  12. আবুল ফাত্তাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (১৯৯৮)। দেওবন্দ আন্দোলন : ইতিহাস ঐতিহ্য অবদান। আল আমিন রিসার্চ একাডেমি বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ১৬০। 
  13. দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী (২৮ অক্টোবর ২০১৬)। "কওমী মাদরাসার ইতিহাস ঐতিহ্য ও অবদান"দৈনিক ইনকিলাব 
  14. আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহিয়া। "উশূলে হাশতে গানা ও বর্তমানে তার প্রেক্ষাপটে তাঁর কার্যকারিতা"। দেওবন্দ আন্দোলন: ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অবদান (১৯৯৮ সংস্করণ)। আল আমীন রিসার্চ একাডেমি বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ১৭৭-১৭৯। 
  15. "Constitution of Darul Uloom Deoband"Darululoom Deoband 
  16. "দেওবন্দের নীতি বিসর্জন দিয়ে সরকারি অনুদান গ্রহণ করতে পারে না কওমি মাদরাসা"দৈনিক নয়া দিগন্ত। ১ মে ২০২০। 
  17. "Eight Principles by the Founder"dud.edu.in 
  18. Zaman, Muhammad Qasim (1999/04)। "Religious Education and the Rhetoric of Reform: The Madrasa in British India and Pakistan"Comparative Studies in Society and History (ইংরেজি ভাষায়)। 41 (2): 294–323। আইএসএসএন 1475-2999ডিওআই:10.1017/S0010417599002091  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  19. "Dars Nizami Course – Al-Karam" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৬ 
  20. সৈয়দ মাহবুব রিজভি। "আরবাব-ই-এহতেমাম"। হিস্টোরি অব দ্য দার আল-উলুম দেওবন্দ (২য় খণ্ড) (পিডিএফ)। অধ্যাপক মুরতাজ হুসাইন এফ. কুরাইশী কর্তৃক অনূদিত (১৯৮১ সংস্করণ)। ইদারা-ই-এহতেমাম, দারুল উলুম দেওবন্দ। পৃষ্ঠা ১৬৪—১৭৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০২০ 
  21. "Chancellors of Darul Uloom Deoband"Darululoom Deoband 
  22. আরশাদ ফারুকী, মুফতি (২৭ জুন ২০২০)। "সমকালীন চাহিদা ও কওমি মাদরাসার আধুনিকায়ন"দৈনিক নয়া দিগন্ত 
  23. মাতুব্বর, আবদুছ ছবুর (১৯ অক্টোবর ২০১৯)। "বাংলাদেশের মাদরাসাশিক্ষা অতীত বর্তমান ভবিষ্যত"দৈনিক সংগ্রাম 
  24. Wani, Bilal Ahmad (২০১৪)। Contribution of Darul 'Ulum Deoband to the Development of Tafsir (1. Aufl সংস্করণ)। Saarbrücken। পৃষ্ঠা ১৭–২৭। আইএসবিএন 978-3-659-56556-4ওসিএলসি 892098479 
  25. রিজভী, সৈয়দ মেহবুব (১৯৮১)। History of Darul Uloom Deoband [দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস]। । এফ. কুরাইশি, মুরতাজ হুসাইন কর্তৃক অনূদিত। দেওবন্দ: ইদারায়ে এহতেমাম। পৃষ্ঠা ১৯৬–২৩৫। ওসিএলসি 20222197 
  26. নদভী, আবুল হাসান আলী (২০১৫)। কারওয়ানে যিন্দেগী। বাংলাবাজার, ঢাকা: মুহাম্মদ ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ২৮৩। আইএসবিএন 978-984-91840-1-0 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • বিলাল আহমেদ ওয়ানী (১ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। কন্ট্রিবিউশন অব দারুল উলুম দেওবন্দ টু দ্যা ডেভলপমেন্ট অব তাফসীর (ইংরেজি ভাষায়)। ল্যাপ ল্যাম্বার্ট অ্যাকাডেমিক পাবলিশিং। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১৬। আইএসবিএন 978-3659565564 
  • নির্দেশনা ও ভূমিকা: মুহাম্মদ তৈয়েব, ভাইস চ্যান্সেলর, দারুল উলুম, দেওবন্দ; সংকলক: সাইয়্যেদ মাহবুব রিজভী, ইংরেজী ভাষান্তর: অধ্যাপক মুরতাজ হুসেইন এফ কুরাইশী (১৯৮০–৮১)। হিস্টোরী অব দার-আল উলুম (২ খন্ড) (ইংরেজি ভাষায়)। ইদারা এ এহতেমাম, দারুল উলুম, দেওবন্দ, উত্তর প্রদেশ, ভারত। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯০১। ওসিএলসি 20222197 
  • মূল: আশেকে ইলাহী মিরাঠী, শায়খুল হাদীস যাকারিয়া, আকবর শাহ বুখারী, আবদুর রশিদ আরশাদ, সংকলক: মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, জামিয়াতুল আবরার, মাতুয়াইল, ঢাকা (সেপ্টেম্বর ২০২০)। আকাবিরে উলামায়ে দেওবন্দ: জীবন ও অবদান। রাহনুমা প্রকাশনী। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৬৪। 
  • প্রফেসর, ব্রানন ডি ইনগ্রাম (২০ নভেম্বর ২০১৮)। রিভাইভাল ফ্রম বিলোও: দ্য দেওবন্দ মুভমেন্ট অ্যান্ড গ্লোবাল ইসলাম (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩২২। আইএসবিএন 978-0520298002 
  • সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আকবার শাহ বুখারী (২০০৩)। (উলাইয়া-ই দেওবন্দ) তাজকিরাহ-ই উলাইয়া-ই দেওবন্দ:বার-ই সগীর পাক ও হিন্দ কে ৮৭ মারুফ (উর্দু ভাষায়)। মাকতাবাহ রাহমানীয়া। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮০০। এলসিসিএন 2003344698 
  • মুহাম্মদ মিয়ান দেওবন্দী। উলামায়ে হক্ব অউর উনকা মুজাহিদানা কারনামা (২ খন্ড) (উর্দু ভাষায়)। ফয়সাল পাবলিকেশন,নয়াদিল্লি (ইদারা ফয়সাল)। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৮০। 
  • মুহাম্মদ মিয়ান দেওবন্দী। উলামায়ে হিন্দ কা শানদার মাজিহ্ (২ খন্ড) (উর্দু ভাষায়)। নিমিয়া ইসলামিক বুক স্টোর, দেওবন্দ। পৃষ্ঠা সংখ্যা ২০৯৬। 
  • সংকলন ও সম্পাদনা: মুফতী বিলাল হুসাইন খান। স্বাধীনতা আন্দোলনে উলামায়ে দেওবন্দ। আশরাফিয়া বুক হাউজ। 
  • অনুবাদ: মাওলানা শামসুদ্দীন সাদী, শিক্ষক,জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়া, সংকলক: ড. নওয়াজ দেওবন্দি। আকাবিরে দেওবন্দ জীবন ও কর্ম (২ খন্ড);মূল: 'সাওয়ানেহে ওলামায়ে দেওবন্দ'। আনোয়ার লাইব্রেরী। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১৭৫। 
  • খলিল আহমদ সাহারানপুরী, অনুবাদ:মাওলানা মুহাম্মাদ বদরুল আমীন। আকায়েদে ইলামায়ে আহলে সুন্নাত দেওবন্দ; মূল: 'আল মুহান্নাদ আলাল মুফান্নাদ'। নাঈম প্রকাশনী, ইসলামী টাওয়ার। 
  • মুফতী তাকী ওসমানী (৩১ জানুয়ারি ২০১৪)। দ্য গ্রেট স্কলার্স অব দ্যা দেওবন্দ ইসলামিক সেমিনারি (ইংরেজি ভাষায়)। তৌরাত পাবলিশিং। পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৪১। 
  • মোহাম্মদ মনসুর আহাম্মেদ (২০০৬)। আনার কে দারখাত তালিই: দারুল উলুম দেওবন্দ (উর্দু ভাষায়)। মাকতাবাতুস শুহাদা। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৫১। এলসিসিএন 2006330492 
  • আবু সালমান শাহজাহানপুরী (২০০৪)। বুজুর্গানে-দার-উল-উলুম দেওবন্দ অউর জিহাদ-এ-শামেলী ১৮৫৭ (উর্দু ভাষায়)। জামিয়াত পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৯৬। এলসিসিএন 2005332653 
  • যুবাইর আরশাদ। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাকালীন: আকাবিরের জীবনপাঠ। পড় প্রকাশ। 
  • মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান, শায়খুল হাদীস, মাদরাসা দারুর রাশাদ মিরপুর। দারুল উলূম দেওবন্দ মুবাশ্‌শারাত, পরিচিতি ও আকাবিরের কারামত। আল-কাউসার প্রকাশনী। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে Darul Uloom Deoband সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
  1. দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
  2. দারুল উলুম দেওবন্দের দারুল ইফতা ওয়েবসাইট
  3. Deobandi Islam
  4. "Traditionalist" Islaamic Activism: Deoband, Tableeghis, and Talibs