মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মক্কা বিজয়ের পরে মুহাম্মদ এই সময়কালটি ৬৩০ সালে মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে শুরু হয়ে এবং ৬৩২ সালে তাঁর মৃত্যুর সাথে শেষ হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

এই সময়টি মদিনায় মুহাম্মাদের আমলের পূর্ববর্তী সময়।

৬১০[সম্পাদনা]

মক্কা দখল (মক্কা বিজয়)[সম্পাদনা]

মুসলিম সেনাবাহিনী ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় প্রবেশ করে এবং তা বিজয় করে। ৬২৮ সালে মক্কার কুরাইশদের এবং মদিনার মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে হুদায়বিয়ার সন্ধি নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। হুদায়বিয়ার চুক্তি স্বাক্ষরের পরে মক্কা ও মদিনার মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি সত্ত্বেও, কুরাইশরা ১০ বছরের শান্তি চুক্তি লঙ্গন করে তাদের মিত্র বকর উপজাতিরা মুসলিমদের মিত্র খুজাহ গোত্রকে আক্রমণ করে এবং চুক্তি ভঙ্গ করে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মক্কার কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান চুক্তি পুনঃস্থাপনের জন্য মদীনায় যান কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওসাল্লাম)পুনঃস্থাপনে অস্বীকৃতি জানান। যখন তিনি জানতে পারেন যে ১০,০০০ সৈন্যের একটি মুসলিম বাহিনী মক্কার দিকে যাত্রা করছে, তখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং  দখল এড়ানোর জন্য মক্কার ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা করেন।[১] হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওসাল্লাম) মক্কাবাসীদের প্রতি উদারতা দেখান। শুধুমাত্র কাবার আশেপাশের পৌত্তলিক প্রতিমা ধ্বংস করা হয়।

হুনাইনের যুদ্ধ[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ, তার অনুসারীগণ এবং বেদুঈন গোত্র হাওয়াজিন ও তার উপশাখা সাকিফ এর মধ্যে মক্কা থেকে তাইফের পথে একটি উপত্যকায় ৬৩০ সালে হুনাইনের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। মুসলিমদের বিজয়ের মাধ্যমে যুদ্ধটি সমাপ্ত হয়, তারা প্রচুর পরিমানে বিপক্ষের মালামাল দখল করে নেয়। হুনাইনের যুদ্ধ কুরআনে বর্ণিত দুটি লড়াইয়ের একটি যা সূরায় উল্লেখ আছে। মুহাম্মদও তার বাহিনী মক্কায় অভিযানের উদ্দেশ্যে মদীনা থেকে চলে গেছে এখবর তাদের গুপ্তচরদের কাছ থেকে জানতে পেরে হাওয়াজিন ও তাদের মিত্র সাকিফ তাদের বাহিনীকে একত্রিত করতে শুরু করে। মিত্ররা স্পষ্টতই আশা করেছিল যে মক্কা অবরোধের সময় তারা মুসলিম সেনাদের আক্রমণ করবে। মুহাম্মদ অবশ্য তার নিজের গোয়েন্দাদের মাধ্যমে হাওয়াজিনের শিবিরের উদ্দেশ্য উদ্ঘাটিত করেছিলেন এবং মক্কা বিজয়ের মাত্র দু'সপ্তাহ পরে ১২,০০০ লোকের বাহিনী নিয়ে হাওয়াজিনের বিরুদ্ধে অভিযানে বের হন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মদীনা ছাড়ার পর মাত্র চার সপ্তাহ কেটে গেছে। বেদুঈন কমান্ডার মালিক ইবনে আওফ আল-নাসরি মুসলিমদের এমন একটি জায়গায় আক্রমণ করেন যেখানে আল-তায়েফের রাস্তাটি ঘূর্ণায়মান গিরিতে প্রবেশ করেছে; মুসলমানরা বেদুইন অশ্বারোহী বাহিনীর এই আক্রমণে অপ্রস্তুত হয়ে যায়, তারা মনে করেছিল যে শত্রুরা আওতাসে শিবির স্থাপন করেছে, তারা হতাশায় পশ্চাদপসরণ শুরু করে। আধুনিক ঐতিহাসিকরা এদিক থেকে যুদ্ধের গতিপথ সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠন করতে অক্ষম হয়েছেন কারণ যুদ্ধের বর্ণনা দেওয়া বিভিন্ন মুসলিম উৎসগুলো পরস্পরবিরোধী বিবরণ দেয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যেহেতু মালিক ইবনে আওফ আল-নাসরী হাওয়াজিনদের পরিবার ও পশুপাল সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন, তাই মুসলমানরা ৬,০০০ নারী ও শিশু এবং ২৪,০০০ উট নিয়ে গঠিত বিশাল লুঠের মাল দখল করতে সক্ষম হয়েছিল। কিছু বেদুঈন পালিয়ে এসে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল ফিরে যায়, যার ফলে আওতাস যুদ্ধ সংগঠিত হয়, আর বৃহত্তর দলটি আল-তায়েফের আশ্রয় নেয়, সেখানে মুহাম্মদ তাদের ঘেরাও করেন।

আওতাসের যুদ্ধ[সম্পাদনা]

তায়েফের অবরোধ[সম্পাদনা]

তায়েফের অবরোধ ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল, হুনাইন ও আওতাস যুদ্ধে জয়ের পরে মুসলমানরা তায়েফ শহর অবরোধ করে। তবে শহরটি অবরোধের কবলে পড়ে নি। তাদের এক সেনাপতি উরওয়াহ ইবনে মাসউদ সেই অবরোধের সময় ইয়েমেনে অনুপস্থিত ছিলেন।

দশম হিজরি[সম্পাদনা]

  • মুবাহেলার হাদীস [২]

৬৩১ খ্রিষ্টাব্দ[সম্পাদনা]

তাবুক যুদ্ধ[সম্পাদনা]

তাবুক যুদ্ধ (তাবুকের যুদ্ধও বলা হয়) একটি সামরিক অভিযান ছিল যেটি মুহাম্মদ এর নেতৃত্বে ৬৩০ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে পরিচালিত হয়েছিল। মুসলিম জীবনী অনুসারে, বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য মুহাম্মদ ৩০,০০০ সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে উত্তরে তাবুকে (বর্তমানে সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিম অবস্থিত) অভিযানে যান। যদিও সাধারণ অর্থে কোন যুদ্ধ সংগঠিত না হলেও এই ঐতিহাসিক ঘটনাটিকে আসন্ন বাইজেন্টাইন-আরব যুদ্ধের প্রারম্ভিক উপস্থাপন হিসেবে ধরা হয়। ঘটনাসমূহের কোন সমসাময়িক বাইজেন্টাইন বিবরণ পাওয়া যায় না, বিবরণসমূহের অধিকাংশই পরবর্তীকালে মুসলিম সূত্র থেকে পাওয়া যায়। এটি লক্ষনীয় যে, সেনাবাহিনীর মধ্যে কখনই মোকাবেলা হয়নি, পশ্চিমা কিছু পণ্ডিত এই ঘটনার বিবরণের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন; যদিও আরব বিশ্বে এটি ব্যাপকভাবে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে ধরা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ঘাসানিয়[সম্পাদনা]

ঘাসানীয়রা হ'ল দক্ষিণ আরবের একটি খ্রিস্টান উপজাতি গোত্র যারা তৃতীয় শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইয়েমেন থেকে দক্ষিণ সিরিয়ার হাওরান, জর্ডান এবং পবিত্র ভূখণ্ডে অভিবাসী হয় সেখানে হেলেনীয় রোমান জনগোষ্ঠী এবং গ্রীক ভাষী আদি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে কিছু বিবাহ সংগঠিত [সন্দেহজনক - আলোচনা] হয়েছিল। । ঘাসান শব্দটি ঘাসানীয় রাজত্বকে বোঝায়।

থাকিফের ইসলাম গ্রহণ[সম্পাদনা]

তায়েফ শহরের প্রধান উপজাতি থাকিফ ৬৩২ সালে ইসলাম গ্রহণ করে, তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে হুনাইনের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর থেকে উত্তেজিত ছিল।

৬৩২[সম্পাদনা]

বিদায় হজ্জ[সম্পাদনা]

গাদির খুম[সম্পাদনা]

বৃহস্পতিবার, ৪ জুন — মুহাম্মদ এর ইচ্ছা[সম্পাদনা]

মুহাম্মদ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বৃহস্পতিবার তার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি ঘটে। তিনি তার সাহাবীদের ডেকে পাঠিয়ে বলেন যে তিনি উইল করতে চান, তিনি তার বিবৃতি লেখার জন্য লেখার উপকরণ আনতে বলেন যা "মুসলিম জাতিকে চিরতরে পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে বিরত রাখবে"। প্রথম জবাব দেন উমর, তিনি বলেন যে কোনও বিবৃতির দরকার নেই; যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, মুহাম্মদ অসুস্থ এবং আমাদের কাছে কুরআন রয়েছে যা আমাদের জন্য যথেষ্ট।

শনিবার, ৬ জুন — উসামার প্রেরণ[সম্পাদনা]

মুহাম্মদ এর আগে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের (রোমান) বিরুদ্ধে অভিযান পাঠিয়েছিলেন যা মুতার যুদ্ধ হিসাবে পরিচিত। সেই অভিযানের নেতা ছিলেন মুহাম্মদ এর পালক পুত্র গাঢ় বর্ণের যায়েদ ইবনে হারেসা। এই অভিযানের সময় জায়েদ মারা যান।

সোমবার, ৮ ই জুন — মৃত্যু[সম্পাদনা]

সোমবার, ৮ ই জুন, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ / ১২ রবি উল-আউয়াল, ১১ হিজরিতে তার মৃত্যু হয়।

ফলাফল[সম্পাদনা]

এই সময়কালটি মুহাম্মদের উত্তরসূরীরা অনুসরণ করেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. K. Armstrong, Muhammad: A Biography of the Prophet (London: Phoenix, 2001 ed.), p. 642.(ইংরেজি ভাষায়)
  2. "Muhammad" (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০