ইমপোস্টার সিনড্রোম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইমপোস্টার সিন্ড্রোম (যা ইমপোস্টার ফেনোমেনন, ইমপোস্টোরিজম, ফ্রড সিনড্রোম নামে পরিচিত) একটি মানসিক অবস্থা যেখানে ব্যক্তি নিজের অর্জন সম্পর্কে দ্বিধায় থাকে। যার এমন সিন্ড্রোম থাকে সে সব সময় 'নিজে প্রতারক' হিসেবে অন্যদের কাছে প্রকাশ হওয়ার ভয়ে থাকে।[১] বাহ্যিক সাফল্য থাকলেও ব্যক্তির এমন সিনড্রোম থাকলে নিজেকে প্রতারক মনে করে। এছাড়াও সে বিশ্বাস করে তার অর্জনের জন্য সে যোগ্য নয়। ইমপোস্টার সিনড্রোম আছে এমন ব্যক্তিরা নিজেদের অর্জনের জন্য ভাগ্যকে কারণ হিসেবে দায়ী করে। এছাড়াও তারা নিজেদের সাফল্যের জন্য অন্যদের প্রতারিত করার মতো বুদ্ধিকে কারণ হিসেবে মনে করে। [২] শুরুর দিকে ইমপোস্টার সিনড্রোমকে নারীদের সমস্যা বলে মনে করা হতো, বর্তমানে নারী-পুরুষ সবাই এই সিনড্রোম আছে বলে গবেষণা বলছে। .[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইমপোস্টার সিনড্রোম শব্দাংশ প্রথম ১৯৭৮ সালে ব্যবহার করতে দেখা যায়। ড. পাওলিন আর ক্ল্যান্স ও ড. সুজান এ ইমেস তাদের নিবন্ধ 'দ্য ইমপোস্টার ফেনোমেনন ইন হাই অ্যাচিভিং উইমেন: ডায়নামিক্স অ্যান্ড থেরাপিউটিক ইন্টারভেনশন'-এ প্রথমবার ব্যবহার করেন। তাদের ভাষ্যে, ইমপোস্টার বা নিজেকে প্রতারক ভাবে মানুষ। নিজের দক্ষতায় অবিশ্বাস বা নিজে নকল ও প্রতারক ভাবার মনোভাব থেকেই এমনটা মনে করে মানুষ।[৪] নমুনা হিসেবে ১৫০ জন সফল নারীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন তারা। এসব নারী তাদের পেশাদার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য সহকর্মীদের দ্বারা সমাদ্রিত ছিলেন। এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সবারই ছিল বেশ ভালো। পেশা জীবনে সাফল্য ও পড়াশোনায় দক্ষ হওয়ার পরেও নারীরা নিজেদের যোগ্যতা নিয়ে নিজেরাই ছিলেন সন্দিহান। প্রত্যেক নারীরই নিজের অর্জন নিয়ে আত্ম-অবস্থান দুর্বল দেখা যায়। ক্ল্যান্স ও সুজান মনে করেন, নারীদের এমন ভাবার প্রধানতম কারণ হচ্ছে লিঙ্গগত নেতিবাচক ধারণা, শৈশবের পারিবারিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক ও আচরণগত কারণ। গবেষকরা আরও জানতে পারেন, যে সকল নারীর ইমপোস্টার সিনড্রোমে ভোগেন তাদের জীবনে হতাশা, আতঙ্ক ও দুর্বল আত্মবিশ্বাস দেখা যায়।

ধরন[সম্পাদনা]

ভ্যালেরি ইয়ং দ্য সিক্রেট থটস অব সাকসেসফুল উইমেন: হোয়াই ক্যাপাবল পিপল সাফার ফ্রম দ্য ইমপোস্টার সিনড্রোম অ্যান্ড হাউ টু থ্রাইব ইন স্পাইট অব ইট বইয়ে ইমপোস্টার সিনড্রোমকে ৫টি সাবগ্রুপে ভাগ করেন।

  • পারফেকশনিস্ট
  • সুপারউইমেন বা ম্যান
  • সহজাত প্রতিভাবান
  • একাকী মননের ব্যক্তি
  • বিশেষজ্ঞ

বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, ৭০% মানুষ জীবনের কোন না কোন সময় ইমপোস্টার সিনড্রোমে ভোগেন। [৫][৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Langford, Joe; Clance, Pauline Rose (Fall ১৯৯৩)। "The impostor phenomenon: recent research findings regarding dynamics, personality and family patterns and their implications for treatment" (পিডিএফ): 495–501। ডিওআই:10.1037/0033-3204.30.3.495 
  2. Sakulku, J.; Alexander, J. (২০১১)। "The Impostor Phenomenon": 73–92। ডিওআই:10.14456/ijbs.2011.6 
  3. Lebowitz, Shana (১২ জানুয়ারি ২০১৬)। "Men are suffering from a psychological phenomenon that can undermine their success, but they're too ashamed to talk about it"businessinsider.comBusiness Insider। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  4. Clance, Pauline R.; Imes, Suzanne A. (Fall ১৯৭৮)। "The Impostor Phenomenon in High Achieving Women: Dynamics and Therapeutic Intervention" (পিডিএফ) (3): 241–247। ডিওআই:10.1037/h0086006সাইট সিয়ারX 10.1.1.452.4294অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  5. "5 Types of Imposter Syndrome and How to Stop Them"The Muse 
  6. "The 5 Types of Impostors:"Impostor Syndrome। ডিসেম্বর ৬, ২০১১। নভেম্বর ১১, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০২০