কলিতা জনগোষ্ঠী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কলিতা জনগোষ্ঠী
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
    আসাম৫০ লাখ
ভাষা
অসমীয়া ভাষা
ধর্ম
হিন্দু ধর্ম
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
অসমীয়া

কলিতারা হচ্ছে আসামের এক প্রাচীন এবং ক্ষত্রিয় জনগোষ্ঠী। [১] অনেক পুরানো কাল থেকে কলিতা রাজ্যের অস্তিত্বর কথা জানা যায়। ১৫-১৬ শতকে কলিতা রাজ্যের থাকার প্রমাণ আছে।[২]

সামাজিক জীবন[সম্পাদনা]

কলিতারা মূলতঃ কৃষিজীবী যদিও আহোম রাজত্বের সময় তাঁরা সৈনিক, সেনাপতি, প্রশাসক, রাজদূত এবং বিচারক হিসাবে নিজেদের সামর্থ্য দেখাতেও সক্ষম হয়েছিল।

আহোম রাজ্যের পাইক ব্যবস্থার উপাধিসমূহ ক্রমে বরা, শইকীয়া, হাজারিকা, বরুয়া এবং ফুকন কলিতাদের মধ্যেও পাওয়া যায়। ফুকন, বরুয়া ইত্যাদি উপাধি আহোম, কলিতা এবং ব্রাহ্মণদের মধ্যে সমান পাওয়া যায়। তদুপরি বরা, বরুয়া, শইকীয়া, হাজারিকা এবং রাজখোয়া উপাধিসমূহ আহোম, চুতীয়া, কোচ রাজবংশী এবং কলিতাদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। বৈরাগী এবং খাউণ্ড - এই দুই উপাধি আহোম রাজার রাজদূতদের প্রদান করা হয়েছিল। এই উপাধি প্রদান করার সময় কলিতাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।[৩]

অন্যদিকে প্রধানভাবে মোগলশাসিত পশ্চিম আসামে কলিতারা রাজস্ব বিভাগে আগে স্থান পান।

কিছু উল্লেখযোগ্য কলিতা উপাধিসমূহ হচ্ছে লস্কর, মহন্ত, বর্মন, বরদলৈ, ভূঞা, চলিহা, চৌধুরী, ডেকা, দাস, দত্ত, কাকতি, বরকাকতী, ঠাকুরীয়া, মেধি, তালুকদার, খাটনিয়ার, তহবিলদার ইত্যাদি। কলিতারা শ্রীমন্ত শঙ্করদেব দ্বারা প্রচারিত একশরণ নাম ধর্ম নিয়েছে। বর্তমান ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রায় প্রত্যেকটি মহকুমায় এই জনগোষ্ঠী পাওয়া যায়। আসাম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চল বিভিন্ন জাতি জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ের স্থল। আসাম নামের ভূ-খণ্ড আদিতে কামরূপ, প্রাগজ্যোতিষপুর ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন নামে বিভিন্ন সময় পরিচিত ছিল এবং এর চারদিকও বর্তমানের মতো ছিল না। বিভিন্ন সময় এর পরিসীমা ভিন্ন ভিন্ন ছিল। কখনো যদিবা এর বিস্তৃতি অনেক প্রসারিত হয়েছিল, কখনো আবার এটি অনেকপরিমানে সংকুচিত হয়েছে। কলিতারা (বিজু সেনাপতি 7002014452র লেখা থেকে সংগ্রহ করা) হচ্ছে আসাম, বিশেষকরে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রাচীনতম এবং সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠী। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ পদ্মনাথ গোঁহাঞিবরুয়াদেব তাঁর ‘আসাম ইতিহাস’য়ে এই কথা স্পষ্ট করে গিয়েছেন যে কলিতারা আসামের অনেক পুরানো আদিবাসী – নরক, ভগদত্ত এবং অন্যান্য রাজারা কলিতাদের আদিপুরুষ ছিলেন। রাজমোহন নাথের ‘The Background of Assamese Culture’য়ে উল্লেখ অনুসারে ২৪ জন নরকের মধ্যে প্রথম নরকের সময় ছিল খ্রি. পূ. ২২০০ থেকে খ্রি. পূ. ২১৬৯। দ্বিতীয় থেকে ত্রয়োবিংশতিতম নরকের সময় ছিল খ্রি: পূ: ২১৬৯র থেকে খ্রি: পূ: ১৫০৯। শেষের নরকের সময় ছিল খ্রি: পূ: ১৫০৯ থেকে খ্রি: পূ: ১৪৪৯ এবং তাঁরেই ছেলে ছিলেন ভগদত্ত। ইতিহাস না পাওয়ার কালে আসামে কলিতারা নিজেদের সভ্যতা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিল। পরর্বতী সময় বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অনেকসংখ্যক লোক কলিতাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। সেইজন্যই কলিতাদের ইতিবৃত্ত সম্পর্কে অনেক ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকৃত সত্যটি হল কলিতারা এই ভূ-খণ্ডর সাবেক নাগরিক। বিভিন্ন উৎস থেকে আসা তথ্যসমূহও শুদ্ধ। কারণ বেদ উপনিষদের কাল থেকে প্রভুত্ব থাকা কলিতা সভ্যতায় ভিন্ন ভিন্ন সময় এসে সংযোজিত হওয়া লোকদের নিয়ে বৃহত্তর কলিতা জনগোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। ভারতবর্ষে আর্য্যরা আসার অনেক পূর্বেই আসা আলপাইনরা হচ্ছে কলিতাদের নৃ-গোষ্ঠীয় পরিচয়। এরপরও অনেক সময় বিভিন্ন দিক থেকে লোক এসে এমনকি ব্রহ্মপুত্রেরও অনেক সময় বিভিন্ন দিক থেকে লোক এসে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার আলপাইন মূলীয় কলিতাদের সাথে বিলীন হয়েছে। কুলুতাচদের একটি গোষ্ঠীও কলিতাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। কনৌজ থেকে আসা কিছু লোক এবং এর অনেক পূর্বেই হিমালয়ের পাদদেশে থাকা লোকদের অনেক লোক বৃহত্তর কলিতাদের এক অংশের পূর্বপূরুষ বলা যায়। কলিতা লোকদের মধ্যে গভীর অধ্যয়ন করলে দেখা যায় যে এই লোকদের জাতি, জনগোষ্ঠী উভয়ের লক্ষণ বিরাজমান। সেইজন্য বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণে কলিতা এক জাতি না জনগোষ্ঠী এককথায় বলে দেওয়া কঠিন। পণ্ডিত ড. বাণীকান্ত কাকতীদেব কলিতা এক জাতি বলে অভিহিত করলেও কলিতাদের মধ্যে দেখতে পাওয়া অনেক উপাদানর ভিত্তিতে কলিতা এক জনগোষ্ঠী বলাটিই বেশি সমীচীন। এই জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত বিভিন্ন সম্প্রদায় আছে। তার মধ্যে কামার কলিতা, কুমার কলিতা, ছোট কলিতা, বর কলিতা, নট কলিতা, সুত কলিতা, কঁহার কলিতা, নাপিত কলিতা, ধুবী কলিতা, সোনারী কলিতা, কাড়ী কলিতা, হালৈ কলিতা, জালৈ কলিতা, শালৈ কলিতা,মালী কলিতা ইত্যাদিই প্রধান। এছাড়াও কলিতা জনগোষ্ঠীর লোকরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বৃত্তি বা কর্মে মনোনিবেশ করার কারণে তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। অনেকসময় তেমন কাজ এবং দায়িত্বর উপরে ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন উপাধিও লাভ করেছিলেন। বর্তমানো ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বসবাস করা কলিতারা প্রায় ৯৩টা উপাধি ব্যবহার করেন। এর মধ্যে সেনাপতি, ভূঁঞা, বরুয়া, মহন্ত, শইকীয়া, কাকতি, দত্ত, পাগবন্ধা, কলিতা, দাস, তামূলী, বরা, খারঘরীয়া, বারিক, পাঠক, চৌধরী, খাতনিয়ার, লস্কর, তালুকদার, হাজারিকা, নেঁওগ, পাটগিরি, পোদ্দার, অধিকারী, বড়া, ঠাকুরীয়া, বর্মন, ডেকা, দিহিদার, মেধী, পাটোবাড়ি, হুন্দুরী, বৈরাগী, মালী, স্বজন, তাঁতি, সাউদ, বেজবরুয়া, বাঢ়ৈ, বাণিয়া, কুমার, জরামূরীয়া, দুলীয়া, বনিক, কায়স্থ, শহরীয়া, বৈশ্য, কেঁওত, যোগী, নাথ, সুরী, তেলী, ভকত, হাড়ী, বরদলৈ, ধনদিয়া, গায়ন, বায়ন, রাজ খোয়া, ফুকন, দেউরী, নামতিয়াল, সুত্রধার, ভরালী, পুরকায়স্থ, ডাডাকা ইত্যাদিই প্রধান। অবশ্য এর অনেক উপাধি কলিতাদের বাইরেও অন্য অন্য জনগোষ্ঠীর লোকেও ব্যবহার করতে দেখা যায়। কলিতারা এই ভূ-খণ্ডের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জনগোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত হয়ে আসছে। এরা যুগ যুগ ধরে অতি প্রভাবশালী ছিল এবং কলিতা সভ্যতা ছিল স্বতন্ত্র এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ। সমাজ ব্যবস্থা একটি সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজ এরা নিজেই করত এবং সমাজের প্রায় সবধরণের কাজে এরা মনোনিবেশ করেছিল। কিন্তু, সুবিধাবাদী তথাকথিত উচ্চবংশীয় লোকের প্ররোচনা এবং চক্রান্তে পড়ে কলিতাদের মধ্যেই অনেক শ্রেণিবিভাগ এবং উচ্চ নিচের ভেদাভেদ আসল। এমন ভেদাভেদ এবং অনেক ঐতিহাসিক অন্যায়র কবলে পড়ে কলিতাদের মধ্যে কিছু সম্প্রদায় বিভাজিত হল। কেবল কাজের ভাগ হিসাবে ভিন্ন ভিন্ন বৃত্তি গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাস করার অছিলাতে কলিতাদের ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ে বিভক্ত করা হল। এদের কিছু আবার ভারতীয় সংবিধানের জাতিভিত্তিক সংরক্ষণ ব্যবস্থার আওঁসেখানে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করে পুনরায় বিভাজনর ফাঁট বহল করার ষড়যন্ত্র করা হল। কিন্তু একে জীবনশৈলির গরিষ্ঠ সংখ্যক কলিতা লোক সাধারণ জাতির আঁওসেখানে থেকে গ’ল। যার ফলে নিজ জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি স্পষ্ট বিভেদ আনতে ষড়যন্ত্রকারিরা সক্ষম হল এবং এসময় অনেক থেকে প্রভাবশালী জনগোষ্ঠীরূপে পরিচিত কলিতারা ভারতবর্ষর স্বাধীনতারপর ক্রমে ক্রমে সমস্ত দিকের থেকেই পিছপরি আসল। বর্তমান আসামে কলিতারা হলগিয়ে অনেক থেকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসমূহের অন্যতম। আজির তারিখত বর কলিতা এবং ছোট কলিতার প্রভেদ বর বিশেষ নাই বলা যায় কিন্তু কুমার কলিতা, সুত কলিতা, শা পর্যন্ত কলিতা, হারী কলিতা ইত্যাদি লোকরা একটি গোষ্ঠী অন্য একটির থেকে এতটাই দূরে যাওয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে যে অনেকক্ষেত্রে একটি গোষ্ঠী অন্য একটি গোষ্ঠীর সাথে একে জনগোষ্ঠীর বলে পরিচয় দিবলৈও শঙ্কা করেন। এমন হওয়ার ফলে ঐতিহ্যময় কলিতা সভ্যতাটির প্রতিয়েই তীব্র সংকট এসে পড়েছে এবং জনগোষ্ঠীটিরসমূহীয়া সমস্যাসমূহ সমাধানের জন্য পথ মূকলী করার ক্ষেত্রে বড়ো প্রত্যাহবান এসে পড়েছে। কলিতা সভ্যতা হচ্ছে নিজস্ব্র ভাষা সাহিত্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য পরম্পরারে সম্পূর্ণ সভ্যতা। কলিতারা মূলত কৃষিজীবী ছিল এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সবধরণের খাদ্যশস্যের উৎপাদক ছিল এরা। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসমূহ এরা নিজেই তৈরি করে নিয়েছিল। লোকসংস্কৃতির ক্ষেত্রটিতে কলিতারা পূর্ণ ছিল। কলিতাদের নিজস্ব লোকবাদ্য, লোকনৃত্য, লোকাচার, খাদ্যাভ্যাস, খেলধামালি, গৃহনির্মাণ প্রণালী, লোকবিশ্বাস এবং পরম্পরা আছে। ভথেলী এবং ম’হোহো উৎসব হচ্ছে কলিতাদের দুটি উল্লেখযোগ্য উৎসব। এছাড়াও এঁদের মধ্যে নিদিষ্ট কিছু পূজা-পাতল এবং ধর্মীয় বিশ্বাস আছে। জয়পুরীয়া কলিতা সমাজে থাকা কালীপূজা এর এক উত্কৃষ্ট উদাহরণ। এছাড়াও কলিতাদের মধ্যে থাকা ভূত-প্রেত এবং বেজালী বিশ্বাস, আশির্বাদ, গালি, শাও-শপনী, শপত, পাপ এবং পানাচিত্রের বিশ্বাস, জন্ম-মৃত্যু সম্বন্ধীয় বিশ্বাস ইত্যাদি অতি বিস্ময়কর এবং এইসমূহের উপর গবেষণার যথেষ্ঠ থল আছে। কলিতাদের নিজস্ব এক জুপুরী ঘরের আদল ছিল। বাঁশ, কাঠ্, বেত, ইকরা, খাগরী, খড় ইত্যাদিতে ঘর তৈরির কাজে এরা পাকৈত। মৃৎশিল্প এবং নৌকাশিল্পে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় এরা অনবদ্য। ঘরের বাড়ির চারিদিকে চারটি খাল খনন করিয়ে ঢাপ মেরে নেওয়া কলিতাদের নিয়ম। এছাড়া কলিতাদের গোয়ালঘর, ভান্ডারঘর, ঢেকীশাল, বরঘর, রান্না করোয়ানীশাল এবং জুইশাল সম্পন্নের নিদিষ্ট নিয়ম এবং পরম্পরা আছে। অনেকক্ষেত্রে ডাকের বচনও পালন করতে দেখা যায়। ‘পূর্বে হাঁস, পশ্চিমে বাঁশ, উত্তরে চরু, দক্ষিণে গরু’ ইত্যাদি আজও পালন করতে দেখা যায়। এমনগুলি নীতিনিয়ম সমস্ত সম্প্রদায় এবং বৃত্তির সাথে জড়িত কলিতাদের মধ্যে দেখা যায়। একেও সংমিশ্রিত জনগোষ্ঠীটির ঐক্যবন্ধনের এক আসলা হিসাবে নেওয়া যায়। বৃহত্তর কলিতা সম্প্রদায়ের অন্তর্গত সমস্ত কলিতা নিজেদের মধ্যে ষড়যন্ত্র এবং প্ররোচনামূলকভাবে দেওয়া ভেদাভেদগুলি ভুলে পুনরায় একত্রিত হওয়ার সময় এসে পড়েছে। এমন করলে কলিতাদের সমস্ত সমস্যাসমূহ সমাধানের পথ সচল হবে এবং ঐতিহ্যময় কলিতা সভ্যতাও পুনরায় প্রাণ পেয়ে উঠে সমগ্র বিশ্বের এক জাকতজিলিকা সভ্যতায় পরিণত হবে। এই সংমিশ্রিত জনগোষ্ঠীটি হয়ে থাকা সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য এক আদর্শ।

কলিতা জনগোষ্ঠীর কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তি[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Col Ved Prakash (২০০৭)। "Encyclopaedia of North-East India, Volume 1"India, Northeastern। Atlantic Publishers & Dist। পৃষ্ঠা 150। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৪ 
  2. Pratap Chandra Choudhury (১৯৮৮)। "Assam-Bengal Relations from the Earliest Times to the Twelfth Century A.D"Assam (India)। Spectrum Publications। পৃষ্ঠা 193,275। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৪ 
  3. A History of Assam by Sir Edward Gait, page 124

টেমপ্লেট:আসামের জনগোষ্ঠী