আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক, (১১৮/৭২৬-৭৯৭ হিজরী[১]; আরবি:( عب الله بن المبارك)আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক[২] একজন প্রাথমিক যুগের ধার্মিক মুসলমান ছিলেন যিনি তাঁর প্রখর স্মৃতি, পাণ্ডিত্ব এবং হাদীস সংকলন জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি হিশাম ইবনে আবদ-মালিকের আমলে জন্মগ্রহণ করেন। [৩] তিনি আমির আল-মু'মিনিন ফীল হাদীস উপাধিতে ভূষিত হন। ইমাম আহমদ, আবদুল্লাহ ইবনে মোবারক সম্পর্কে বলেছেন যে, তাঁর চেয়ে জ্ঞান সন্ধানের জন্য ভ্রমণ করার আগ্রহ আর কারোরই ছিল না। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আবু হানিফা এবং সুফিয়ান আল-সাওরী।[৪] তিনি কিতাব আল-জিহাদ বইটি লিখেন যেখানে যুদ্ধ বিষয়ে প্রাথমিকযুগের মুসলমানদের হাদীস ও বাণী সংকলিত রয়েছে। কিতাব আল-জুহদ ওয়া আল-রাকিয়াক নামে তপস্যা সম্পর্কিত একটি বইও তিনি লিখেন।[৫]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

তাঁর পিতা মুবারক, তুর্কমেনিস্তানের খোরাসান থেকে আসেন এবং হামাধান শহরের বনু জানযালা গোত্রের এক আরব ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি (মাওয়ালি) হিসেবে কাজ করা শুরু করেন, আর তার মা খোয়ারজন থেকে আসেন।[৬] মোবারক পরে সেই ব্যবসায়ীর কন্যা হিন্দকে বিয়ে করেন। কথিত আছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক তার নিজ শহর ছেড়ে মার্ভ চলে আসেন, এবং হামাধানে বসবাস শুরু করেন, আর সেই সময় থেকে তিনি বাগদাদে আসা যাওয়া করতেন।

কাজ[সম্পাদনা]

তিনি একজন প্রসিদ্ধ লেখক হিসাবে খ্যাত।[৭] তাঁর রচনাগুলির অধিকাংশ কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে, এর মধ্যে কয়েকটি হল:

  • কিতাব আল-আরবা'ইন - آﺘباه اﻷرﺑﻌﻴﻦ
  • কিতাব আল জিহাদ - آﺘبھا اﻟﺠﻬدھا
  • কিতাব আল-ইসতি'ধান - آﺘبھا اﻻﺳﺘﺌﺬنا
  • কিতাব আল-বিরর ও আল-সিলাহ - آﺘباه اﻟرﺒ واﻟﺼﺔﻠ (তাকওয়ার গুণাবলী, শিষ্টাচার ও বন্ধন-রক্ষা নিয়ে বইটি)
  • কিতাব আল তারিক - آﺘباه اﻟﺘاراﻳﺦ (ইতিহাসের বই)
  • কিতাব আল-দাকাইক ফী-আল-রাকা'ইক - آﺘباه اﻟرﻗهاﺋﻖ ﻟ اﻟرﻗﺎﺋﻖ
  • কিতাব রিক্বা আল-ফাতাওয়া - آﺘباه رﻗعذا اﻟﻔﺘذاوى (ইসলামিক রায় সংক্রান্ত বই)
  • কিতাব আল-জুহদ ও আল-রাকা'ইক - آﺘبذا اﻟﺰهﺪ واﻟرﻗذاﻖﺋ
  • কিতাব আল-সুনান ফিল-ফিকহ - آﺘبھا اﻟﺴﻨﻦ ﻲﻓ اﻟﻔﻘﻪ
  • কিতাব আল-মুসনাদ - آﺘبھا اﻟﻤﺴﺪﻨ
  • কিতাব তাফসীর আল-কুরআন - آﺘبذا تفسير القرآن

মৃত্যু[সম্পাদনা]

ফোরাত নদীর তীর ঘেষে বুহাইত নামক স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তখন তিনি জিহাদ শেষে গাজী বেশে দেশে ফিরছিলেন। রমাজানের চার তারিখ হিজরী ১৮১ সালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল তেষট্টি বছর।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Yahya, Farhia (২০১৫-০২-০১)। The Life of Abdullah ibn al-Mubarak: The Scholar of the East and the Scholar of the West (ইংরেজি ভাষায়)। Al-Faatih Publishing। পৃষ্ঠা ১১। 
  2. Al-'Asqalani, Shihab Al-Din Abu Al-Fadl Ibn Hajar (২০১৩)। Taqrib al-tahdhib (আরবি ভাষায়)। Turath For Solutions। পৃষ্ঠা ৩৮৬। আইএসবিএন 978-9957-636-66-1 
  3. Abu Nu'aym। Ḥilyat al-Awliyā’। পৃষ্ঠা v. 11 p. 389। 
  4. Robson, J.। "Encyclopaedia of Islam"referenceworks.brillonline.com (২য় সংস্করণ)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৪ 
  5. SALEM, FERYAL E. (২০১৩)। ‘ABD ALLĀH B. AL-MUBĀRAK BETWEEN ḤADĪTH, JIHĀD, AND ZUHD: AN EXPRESSION OF EARLY SUNNI IDENTITY IN THE FORMATIVE PERIOD। Dissertation। 
  6. Abu Nu'aym। Ḥilyat al-Awliyā’। পৃষ্ঠা v. 11 p. 390। 
  7. Knysh, Alexander (২০১০-১১-১৫)। Islamic Mysticism: A Short History (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। পৃষ্ঠা ২১। আইএসবিএন 978-90-04-19462-5 
  8. "আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহমাতুল্লাহ আলাইহি"ইসলামী লাইফ বাংলা। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০২০