পিংকি বিরানী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পিংকি বিরানী
জন্ম (1959-01-30) ৩০ জানুয়ারি ১৯৫৯ (বয়স ৬৫)
বোম্বে, ভারত
পেশাসাংবাদিক, লেখক

পিংকি বিরানী (জন্ম ৩০শে জানুয়ারী ১৯৫৯) একজন ভারতীয় লেখক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও গ্রন্থকার। তিনি তাঁর ওয়ানস ওয়াজ বোম্বে [১], অরুনা'স স্টোরি, বিটার চকোলেট: চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ ইন ইন্ডিয়া (এই বইটি জাতীয় পুরস্কার জিতেছে)[২] এবং ডেফ হেভেন বইয়ের জন্য সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছেন।[৩] তাঁর পঞ্চম বইটির নাম পলিটিক্স অফ দ্য উম্ব - দ্য পেরিলস অফ আইভিএফ, সারোগেসি অ্যান্ড মডিফায়েড বেবিজ[৪]

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা[সম্পাদনা]

বিরানীর জন্ম ভারতের মুম্বাই-তে। তাঁর পিতা-মাতা ছিলেন গুজরাটি মুসলিম। তাঁর বাবা একটি দোকানের মালিক ছিলেন এবং তাঁর মা ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি মুম্বাই, পুনে এবং মুসৌরীতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি আগা খান ফাউন্ডেশন বৃত্তি নিয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তিনি দ্য সানডে টাইমস পত্রিকায় ইন্টার্নশিপ করেছিলেন, যেখানে তিনি ব্রিটেনের জাতিগত দাঙ্গার বিষয়ে ব্যাপক প্রতিবেদন করেছিলেন।

কর্ম জীবন[সম্পাদনা]

তিনি ১৮ বছর বয়সে একজন টাইপিস্ট হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি যখন বৃত্তি শেষে ভারতে ফিরে এসেছিলেন, তিনি একজন প্রতিবেদক হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং সান্ধ্য কাগজের ভারতের প্রথম মহিলা সম্পাদক হয়েছিলেন।[৫] তাঁর প্রথম বই প্রকাশ করার পর, তিনি দৈনিক সাংবাদিকতা থেকে সরে এসেছিলেন।

পিংকির রচনা[সম্পাদনা]

পিংকি পাঁচটি বই লিখেছেন-

অরুনা'স স্টোরি একটি নার্সের জীবনের ঘটনা, যিনি ধর্ষিতা হবার পর ধর্ষকের অত্যাচারে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। বইটি ৫২ মিনিটের তথ্যচিত্রের একটি অংশ তৈরি করেছিল, যেটি প্রযোজনা করেছিল পিএসবিটি। তথ্যচিত্রের শিরোনাম ছিল প্যাসিভ ইউথানাসিয়া: কাহানী করুণা কি'। থিয়েটারের পরিচালক অরবিন্দ গৌড় এর গল্প থেকে চিত্রনাট্য লিখেছিলেন এবং একটি একক নাটক 'অরুনা'স স্টোরি' হিসাবে পরিচালনা করেছিলেন। একক অভিনয়টি সম্পাদনা করেছিলেন লুশিন দুবে[৬][৭]

বিটার চকোলেট বইটি ভারতে শিশু যৌন নির্যাতন সম্পর্কে লেখা। এই বই অবলম্বনে নির্মিত একটি একক নাটকের চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা করেছিলেন অরবিন্দ গৌড় । একক অভিনয়টি সম্পাদনা করেছিলেন লুশিন দুবে[৮][৯][১০]

ওয়ানস ওয়াজ বোম্বাই একটি সমাজবিজ্ঞানের বই।

ডেফ হেভেন, তাঁর কথাসাহিত্যের প্রথম রচনা, একটি আধুনিক দেশের নব্য-ফ্যাসিবাদের ঝাঁকুনির আশঙ্কা থেকে রক্ষা করার জন্য গঠন এবং শৈলীর সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।

পলিটিক্স অফ দ্য উম্ব - দ্য পেরিলস অফ আইভিএফ, সারোগেসি অ্যান্ড মডিফায়েড বেবিজ (২০১৬) বইটিতে, যখন বারে বারে মহিলাদের উপর আইভিএফ এবং সহায়তা করা পুনরুৎপাদনের অন্যান্য ধরণগুলি আক্রমনাত্মকভাবে ব্যবহার করা হয়, বিরানী তার সমালোচনা করেছেন, এবং বাণিজ্যিক সারোগেসি এবং তৃতীয় পক্ষের সহায়তায় প্রজননের অন্যান্য ধরণগুলিতে বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন। [১১]

অরুণা শানবাগ মামলা[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে, পিংকি বিরানী অরুণা শানবাগের পক্ষে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেছিলেন, অরুণা ছিলেন মুম্বাইয়ের কেইএম হাসপাতাল এ কর্মরত একজন নার্স। ১৯৭৩ সালের ২৭শে নভেম্বর একজন ঝাড়ুদার তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল।[১২] হামলার সময় শানবাগকে শিকল দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছিল এবং অক্সিজেনের অভাবে অর্ধমৃত অবস্থায় তাঁকে ফেলে রেখে চলে যায়। এই ঘটনার পরে তাঁকে কেইএম হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছিল এবং ৪৮ বছর ধরে একটি খাবার নল দিয়ে খাবার খাইয়ে জীবিত রাখা হয়েছিল। ২০১৫ সালে নিউমোনিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।[১৩] বিরানীর ২০০৯ সালের আবেদনে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে "অরুণার ক্রমাগত অস্তিত্ব তাঁর মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকাকে লঙ্ঘন করছে"। ২০১১ সালের ৭ই মার্চ সুপ্রিম কোর্ট তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।[১৪] এতে অরুনার জীবন সমর্থনকে বন্ধ করার আর্জি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল কিন্তু ভারতে নিষ্ক্রিয় ইচ্ছামৃত্যুকে বৈধতা দেওয়ার এক বিস্তৃত নির্দেশিকা জারি করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট ভিরানিকে শানবাগের "পরবর্তী বন্ধু" হিসাবে স্বীকৃতি দিতেও অস্বীকৃতি জানায়, যা মামলা আবেদন দায়ের করার সময় বিরানী বিবরণীতে ব্যবহার করেছিলেন।[১৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

পিংকি বিবাহ করেছেন সাংবাদিক এবং অ্যক্সিডেন্টাল ইন্ডিয়া র লেখক শঙ্কর আইয়ার কে।[১৬]

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

পুস্তক সমূহ[সম্পাদনা]

  • অরুনা'স স্টোরি: দ্য ট্রু অ্যাকাউন্ট অফ এ রেপ অ্যান্ড ইটস আফটারমাথ। ভাইকিং, 1998
  • বিটার চকোলেট: চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ ইন ইন্ডিয়া, পেঙ্গুইন বুকস, ২০০০
  • ওয়ান্স ওয়াজ বোম্বে। ভাইকিং। ১৯৯৯। আইএসবিএন 0-670-88869-9 
  • ডেফ হেভেন, হার্পারকলিন্স পাবলিসার্স ভারত, ২০০৯ আইএসবিএন ৮১-৭২২৩-৮৪৯-৫.
  • পলিটিক্স অফ দ্য উম্ব - দ্য পেরিলস অফ আইভিএফ, সারোগেসি অ্যান্ড মডিফায়েড বেবিজ, পেঙ্গুইন রেন্ডম হাউস, ২০১৬ আইএসবিএন ৯৭৮-০৬৭০০৮৮৭২০

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Virani, Pinki, 1959- (২০০১)। Once was Bombay। New Delhi: Penguin। আইএসবিএন 0-14-028791-4ওসিএলসি 49350714 
  2. Srinivasan, Madhumita (২০১৫-০৮-০৫)। "Theatre tribute to Aruna Shanbaug"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-৩০ 
  3. R. Krithika (১৯ জুলাই ২০০৯)। "As we see ourselves"The Hindu। ২৯ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৩ 
  4. "The Egg Commerce"। Daily Pioneer। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬। 
  5. "Pinki Virani"। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০ 
  6. Pratyush Patra। "Aruna Shanbaug's story retold on stage"Times of India। Delhi,India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-০৪ 
  7. Shikha Jain (২১ অক্টোবর ২০১৮)। "Aruna's Story: She was no less a martyr who sparked progressive change"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-০৪ 
  8. Drama critic (২০০৪-০১-০৭)। "Nobody's Child"Indian Express। ২০০৪-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৮-২৯ 
  9. Drama critic (১১ এপ্রিল ২০০৫)। "An unspoken bitter truth"The Hindu। Chennai, India। ৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-২৪ 
  10. SHALINI UMACHANDRAN (১২ সেপ্টে ২০০৪)। "`It happens here too'"The Hindu। Chennai, India। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১৩ 
  11. "Pinki Virani on commercial surrogacy: 'Worst kind of patriarchy posturing as pro-woman choice'"Firstpost। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  12. "India court admits plea to end life of rape victim"BBC News, Delhi। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৯। 
  13. "Aruna Shanbaug: Brain-damaged India nurse dies 42 years after rape"BBC News। ১৮ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  14. "After 36 yrs of immobility, a fresh hope of death"Indian Express। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১১ 
  15. "Supreme Court decision on Aruna Ramachandra Shanbaug versus Union of India" (পিডিএফ)। Supreme Court of India। ১০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  16. "Virani saga"The Tribune। ১ আগস্ট ২০০৯। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]