হরিদাস দত্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হরিদাস দত্ত
বিপ্লবী হরিদাস দত্ত
জন্ম১ নভেম্বর ১৮৯০
মৃত্যু২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

হরিদাস দত্ত (১ নভেম্বর ১৮৯০ - ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৬) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। রডা কোম্পানির অস্ত্রলুণ্ঠনে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

হরিদাস দত্ত ১ নভেম্বর ১৮৯০ সালে ব্রিটিশ ভারতের ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রবীণ বাঙালি বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষের সংস্পর্শে এসে তিনি মুক্তি সংঘে যোগ দেন। ১৯১২ সালে হরিদাস দত্ত এবং খগেন্দ্রনাথ দাস জগৎদলের নিকটে আলেকজান্ডার জুট মিলে শ্রমিক হিসাবে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেখানে নিষ্ঠুর ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারকে হত্যার জন্য তিন মাস সেখানে কাজ করেছিলেন। তবে তারা ব্যর্থ হয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।[১]

রডা কোম্পানির অস্ত্রলুণ্ঠন[সম্পাদনা]

১৯১৪ সনের ২৬ আগস্ট বিপিন গাঙ্গুলির দলের সভ্য শ্রীশচন্দ্র মিত্র বন্দুক ব্যবসায়ী রডা এন্ড কোম্পানির ৫০টি মশার পিস্তল এবং ৪৬ হাজার কার্তুজ সুকৌশলে অপহরণ করেন। খিদিরপুর বন্দর এলাকায় এই অভিনব অস্ত্র অপহরনে তার অন্যতম সাথী ছিলেন বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের আরেক বিপ্লবী শ্রীশ পাল। শ্রীশ মিত্র বিপ্লবী দলের জন্য চাকুরির মায়া ত্যাগ করে ফেরার হন। এই পিস্তল ও কার্তুজ বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়। কতক পিস্তল ও কার্তুজ পুলিস হস্তগত করতে সক্ষম হয়। অবশিষ্ট পিস্তল ও কার্তুজ অনুশীলন সমিতিসহ বিভিন্ন বিপ্লবী দলের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। শ্রী হরিদাস দত্ত, শ্রীশচন্দ্র পাল গাড়োয়ান সেজে গরুর গাড়িতে করে পিস্তল ও কার্তুজ কলকাতা বন্দর থেকে মলঙ্গা লেনের অতুল কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে নিয়ে যান।[২][৩] হরিদাস দত্তকে ১১ অক্টোবর ১৯১৪ সালে গ্রেপ্তার করা হয়[৪] এবং ৪ বছর কারাদন্ডে বন্দী হরিদাস দত্তকে প্রেসিডেন্সি জেলের জনমানবহীন কারাগারে বন্দী জীবন কাটাতে হয়, পরে হাজারিবাগ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পরে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন এবং ১৯৩০ থেকে ১৯৩৪ সালের মধ্যে ঢাকা, কুমিল্লা, মেদিনীপুরকলকাতায় বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স গ্রুপের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। পুলিশের ইনপেক্টর জেনারেল মিঃ লোম্যানকে হত্যার পর তিনি বিনয় বসুকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। হরিদাস দত্ত বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সদের কাছে মেজদা নামে জনপ্রিয় এবং পরিচিত ছিলেন। বিনয়, বাদল এবং দীনেশের রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণে তিনি জড়িত ছিলেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sengupta, Subodh C.; Basu, Anjal (২০০২)। Sansab Bangali Charitavidhan (Bengali)I। Kolkata: Sahitya Sansad। পৃষ্ঠা 615। আইএসবিএন 81-85626-65-0 
  2. "Kolkata's 'greatest daylight robbery' all but forgotten"thestatesman.com। ২৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৮ 
  3. "NGO commemorates Rodda arms robbery centenary"thestatesman.com। ২৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৮ 
  4. "Kali Das Basu And Ors. vs Emperor"indiankanoon.org। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৮ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪।