কয়াধু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কয়াধু
কয়াধু
লস এঞ্জেল মিউজিয়াব অব আর্টে সংরক্ষিত ভাগবত পুরাণে বর্ণিত কয়াধুর (ডানদিকে) নরসিংহ দ্বারা হিরণ্যকশিপু বধ দর্শনের চিত্র
পরিবারজম্ভাসুর (পিতা)
হিরণ্যকশিপু (স্বামী)
প্রহ্লাদ, অনুহ্লাদ, হ্লাদ, সংহ্লাদ (পুত্র)
সিংহিকা (কন্যা)

কয়াধু (সংস্কৃত ভাষা: कयाधु (স্ত্রীলিঙ্গ) [১]) ছিলেন মহিষাসুরের ভগিনী দানবকুল জাত জম্ভাসুরের কন্যা৷ কয়াধু কমলা বা জম্ভলিকা নামেও পরিচিতা ছিলেন৷ হিন্দু ভাগবত পুরাণ অনুসারে কয়াধুর বিবাহ হয় দক্ষকন্যা দিতিকশ্যপ মুনির পুত্র হিরণ্যকশিপুর সহিত৷ [২] হিরণ্যকশিপুর ঔরসে তাঁর চারপুত্র তথা হ্লাদ, প্রহ্লাদ, সংহ্লাদ ও অনুহ্লাদ ও এক কন্যা সিংহিকা জন্মলাভ করে৷ সিংহিকা ছিলেন হিন্দু পুরাণে বহুচর্চিত নাম রাহুর মাতা৷ [৩]

পুরাণে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে হিরণ্যকশিপুর দীর্ঘ পরিশ্রম ও বুদ্ধির দ্বারা বিজিত রাজ্যে একসময়ে ইন্দ্র এবং তার দেব্যসেনানী আক্রমণ চালায়৷ ইন্দ্রের দলপতিত্বে তারা সাময়িকভাবে রাজ্য দখল করে লুঠতরাজ শুরু করে এবং হিরণ্যকশিপুর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কয়াধুকে অপহরণ করে ইন্দ্রপুরীতে নিয়ে যান৷ যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রতি বিরূপ আচরণ ঘোরতর পাপ তাই তারা সন্তান জন্মানো অবধি অপেক্ষা করতে থাকে ও সিদ্ধান্ত নেয় যে জাত সন্তানকে তারা হত্যা করবে৷ প্রহ্লাদ জন্ম নেওয়ার পূর্বে ইন্দ্রদেবের পরিকল্পনায় মহর্ষি নারদ হস্তক্ষেপ করেন এবং ইন্দ্রদেবকে জানান যে, গর্ভস্থ সন্তান বৈষ্ণবশ্রেষ্ঠ মহাভাগবতের রূপ তাই ইন্দ্রের সেই সন্তানকে হত্যা করা উচিৎ হবে না৷ [৪]

এরপর ইন্দ্রদেব নিজের সিদ্ধান্ত আপাত স্থগিত রাখেন এবং কয়াধুকে নারদের হস্তোগত করেন৷ যতদিন না পর্যন্ত প্রহ্লাদ জন্ম নেয় এবং হিরণ্যকশিপু কয়াধুকে রাজগৃহে ফেরৎ নিয়ে যান ততদিন অবধি তিনি নারদের আশ্রমেই থাকেন৷ আশ্রমে নারদ গর্ভস্থ মাকে ধীশক্তির শিক্ষা দেন৷ বলা হয় গর্ভস্থ মায়ের আচরণের ওপর সন্তানের প্রকৃতি নির্ভর করে, তাই মায়ের শিক্ষা থেকে গর্ভস্থ শিশুও সেই শিক্ষালাভ করে৷[৫] এর ফল স্বরূপ সদ্যোজাত শিশু প্রহ্লাদের গর্ভস্থ অবস্থায় আহরিত জ্ঞানের কারণে পরবর্তীকালে রক্ষকুল বিদ্যালয়ে শেখানো লোভ লিপ্সা ও জাগতিক অসচ্চরিত্রতার শিক্ষা তার ওপর কোনোরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি৷ এরকারণে স্বধর্মচ্যুত পুত্রের প্রতি পিতা হিরণ্যকশিপু মুখ ফিরিয়ে নেন৷ আক্রোশের বশে হিরণ্যকশিপু তার পুত্র প্রহ্লাদকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে প্রতিবারই বিষ্ণু তাকে রক্ষা করেন৷ অন্তিমে তিনিই নৃসিংহ অবতার গ্রহণ করেন ও দানবরাজকে হিংস্রনখর দ্বারা তারই রাজবাড়ীর চৌকাঠে হত্যা করেন৷ [৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]