গাজীর পট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গাজীর পট বাংলার ঐতিহ্যবাহী এক ধরনের লোকচিত্রকলা।[১] লোকগীতির বিষয়বস্তু পীর বড়খাঁ গাজীর উপাখ্যান যাতে গাজী পীরের বিভিন্ন ঘটনা গীতি আকারে বর্ণনা করা হয়েছে। গাজীর পট উপাখ্যান পূর্বে বৃহত্তর ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, যশোর, খুলনা, রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল। পুরাতন গাজীর পট বর্তমানে আশুতোষ সংগ্রহশালা, শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, বাংলা একাডেমি সংগ্রহশালা প্রভৃতি স্থানে সংরক্ষিত রয়েছে। উপাখ্যানের মূল উপজীব্য গাজী পীরের মাহাত্ম্য ও অলৌকিক ক্ষমতা, কৌতুক মিশ্রিত হিতোপদেশ এবং মৃত্যুর ভয়।[২]

ঐতিহ্য[সম্পাদনা]

গাজীর পট বাংলাদেশে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়।[২] ঐতিহ্যগতভাবে, লোকচিত্রকলাটি বাংলার গ্রামাঞ্চলের বাড়ির আঙ্গিনায় প্রদর্শিত হয়। চারপাশে সবাই একত্রিত হন এবং কুশীলবরা এটি প্রদর্শন করেন। একজন প্রধান কুশীলব অঙ্কিত চিত্রসমূহ একটি কাঠির মাধ্যমে নির্দেশ করেন এবং সেগুলো সুর ও গীতের মাধ্যমে বর্ণনা করেন। সহকারী কুশীলবগণ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মাধ্যমে সাহায্য করেন।[২]

পটচিত্র সাধারণত ২৫টি প্যানেলে বিভক্ত এবং ৪'৮" x ১'১০" আকৃতির কাপড়ে অঙ্কিত থাকে। কেন্দ্রভাগের প্যানলটি ১২" x ২০'২৫" এবং কেন্দ্রের উপরে চার সারি এবং নিচে তিন সারি প্যানেল থাকে। প্যানেলগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে গাজী পীরের চিত্র এবং দুইপাশে মানিক পীর ও কালু পীরের চিত্র থাকে। অন্যান্য প্যানেলে বিভিন্ন ধরনের গাছ, প্রাণি এবং দেব-দেবী অঙ্কিত।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "রইল বাকি এক"সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২০ 
  2. "গাজীর পট"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২০