বেগম জাফর আলি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেগম জাফর আলি
জন্ম১৯০১
শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর
মৃত্যু১৯৯৯
পেশাশিক্ষাবিদ, নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী
পরিচিতির কারণনারী স্বাধীনতা, কাশ্মীরের প্রথম ম্যাট্রিকুলেশন পাস করা মহিলা
দাম্পত্য সঙ্গীআগা জাফর আলী কিজিলবাশ
সন্তানআগা নাসির আলী, আগা শওকত আলী, আগা আশরাফ আলী
পিতা-মাতাখান বাহাদুর আগা সৈয়দ হুসাইন ঠাকুর
আত্মীয়আগা শহীদ আলী (নাতি)
পুরস্কারপদ্মশ্রী

বেগম জাফর আলি (বিবাহের আগের নাম: সাহেবজাদি সৈয়দা ফাতিমা)[১] কাশ্মীরের প্রথম নারী হিসেবে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং পরবর্তীতে কাশ্মীরের স্কুলগুলোর পরিদর্শক হিসেবে নিযুক্ত হন।[২] তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, নারী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী, শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক এবং পরবর্তীতে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিধায়ক।[৩] তিনি অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্সের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ভারত ভাগের আগে তিনি সংগঠনটির সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও তাঁর বোন ফাতিমা জিন্নাহ যখন কাশ্মীরে আসেন তখন জাফরের পরিবারে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়; এবং এ সুবাদে বেগম আলি তাঁদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান। এটি তাঁকে প্রভাবিত করেছিল এবং তিনি স্বাধীনতা পূর্ব ভারতে নারী স্বাধীনতার আন্দোলনে তাঁর প্রচেষ্টা কেন্দ্রীভূত করার জন্য অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স ত্যাগ করেছিলেন।[৩][৪]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

বেগম জাফর আলি ১৯০১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খান বাহাদুর আগা সৈয়দ হুসাইন ঠাকুর কাশ্মীরের মহারাজ হরি সিংহের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র ও বিচারমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন।[৫]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

বেগম আলি ১৯২৫ সালে গার্লস মিশন হাই স্কুলে (বর্তমান নাম: মলিনসন গার্লস স্কুল) শিক্ষকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। নারী অধিকারের ব্যাপারে আপোসহীন এই মহিলা উপত্যকায় মেয়েদের শিক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে শিক্ষার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে বুঝিয়ে বলতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর রাখা বক্তব্যগুলো, যেসব মহিলারা নিজের মেয়েদের স্কুলে পাঠানো শুরু করেছিল তাদের ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করত।[৪] বেগম কাশ্মীরে বসবাসকারী এক সম্ভ্রান্ত আফগান পরিবারের ছেলে আগা জাফফার আলী কিজিলবাশের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[৬] এই দম্পতির তিন পুত্র ছিল। বড় ছেলে আগা নাসির আলী-আইএএস, ছিলেন সরকারি চাকুরিজীবী। তিনি ১৯৭৭ সালে ভারতের শ্রমসচিব হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় ছেলে আগা শওকত আলী যিনি ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় পাকিস্তানের সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন। বেগমের কনিষ্ঠ পুত্র আগা আশরাফ আলী ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ যিনি জম্মু ও কাশ্মীরের উচ্চশিক্ষা বিষয়ক কমিশনার হিসাবে অবসরে যান।[২] তাঁর নাতি এবং প্রখ্যাত কাশ্মীরি-আমেরিকান কবি আগা শহীদ আলী রচিত দ্য ওয়েল্ড স্যুট: দ্য কালেক্টেড পোয়েম কবিতা সংকলনে তাঁর স্মরণে একটি কবিতা রয়েছে।[৭]

সম্মাননা ও শেষ জীবন[সম্পাদনা]

১৯৮৭ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক পদ্মশ্রীতে ভূষিত করে।[৮] কিন্তু পরবর্তীতে দূরদর্শন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের অগণতান্ত্রিক নীতির প্রতিবাদে পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।[৫] ১৯৯০-এর দশকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন এবং ১৯৯৯ সালে তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি নিজের পুত্র আগা শওকত আলীর সাথে সেখানেই থাকতেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kandahar's Qizilbash"Kashmir Life (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৫ 
  2. "Kandahar's Qizilbash"। ২০১৭-১১-৩০। 
  3. "Seven Influential Kashmiri Women"। The Parallel Post। ২২ মার্চ ২০১৫। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০১৫ 
  4. "Feminism In India | Intersectional Feminism – Desi Style!"Feminism In India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৫ 
  5. libas। "AGHA NASIR ALI | Libas" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-২৫ 
  6. "Agha Family of Srinagar Kashmir"। 
  7. Shahid Ali Agha (২০০৯)। The Veiled Suite: The Collected Poems। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 393। আইএসবিএন 9780393068047 
  8. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৫