পৌরনমি (২০০৬-এর চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পৌরনমি
পরিচালকপ্রভু দেবা
প্রযোজকএম. এস. রাজু
রচয়িতাপবন কুমার
পারুচুরি পিকচার্স
শ্রেষ্ঠাংশেপ্রভাস
তৃষা
চার্মি
সিন্ধু তোলানি
রাহুল দেব
সুরকারদেবী শ্রী প্রসাদ
চিত্রগ্রাহকবেণু
সম্পাদককৃষ্ণ রেড্ডি
প্রযোজনা
কোম্পানি
মুক্তি২১ এপ্রিল, ২০০৬
স্থিতিকাল১৬৭ মিনিট
দেশভারত
ভাষাতেলুগু

পৌরনমি (অনুবাদ: পূর্ণিমা) হল ২০০৬ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তেলুগু অ্যাকশনধর্মী নৃত্যবহুল চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেন প্রভু দেবা ও প্রযোজনা করেন এম. এস. রাজু। এই ছবিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন প্রভাস, তৃষা (নামভূমিকায়), চার্মি, সিন্ধু তোলানিরাহুল দেব[১] প্রভাস ও তৃষা জুটির পূর্ববর্তী ছবি বর্ষাম হিট হওয়ায় এই ছবিটি মুক্তির আগে দর্শকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। ছবির সংগীত পরিচালনা করেন দেবী শ্রী প্রসাদ, সম্পাদনা করেন কৃষ্ণ রেড্ডি এবং সিনেম্যাটোফ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন বেণু

ছবিটি একই নামে তামিলমালয়ালম ভাষায়[২] এবং হিন্দিতে ত্রিদেব: প্যার কি জং (২০০৮) নামে ডাব করা হয়।[৩] ছবিটি ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্রাজিলিয়ান ছবি বিহাইন্ড দ্য সান থেকে আংশিক অনুপ্রাণিত। উক্ত ছবিটি ইসমাইল কাদারের একটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এবং সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রোডরিগো স্যান্টোরো। ছবির শ্যুটিং হয়েছে হাম্পির বিরূপাক্ষ মন্দির, হাতির আস্তাবল ও ধাপযুক্ত সিঁড়িতে।

কাহিনি-সারাংশ[সম্পাদনা]

ছবিটির সূত্রপাত ১৯৫০-এর দশকে অন্ধ্রপ্রদেশের দীর্ঘ খরাবিধ্বস্ত একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। এই অবস্থায় একটি প্রাচীনপন্থী পরিবারের সদস্যা (বেদা শাস্ত্রী) এগিয়ে আসেন। শিব যাতে তুষ্ট হয়ে গ্রামে বৃষ্টিপাত ঘটান, সেই জন্য তিনি শিবমন্দিরে নৃত্য শুরু করেন। সাত দিন সাত রাত একনাগাড়ে নৃত্য করার পর চরম পরিশ্রান্তির ফলে তাঁর মৃত্যু ঘটে। শেষ পর্যন্ত গ্রামে বৃষ্টিপাত হয় এবং সেই দীর্ঘ খরার অবসান ঘটে। তারপর গ্রামে একটি প্রথা চালু হয়। এই প্রথা অনুসারে, প্রতি বারো বছর অন্তর সেই শুভদিনে সেই নর্তকীর পরিবারের একজন বালিকা শিব মন্দিরে নৃত্য পরিবেশন করে।

এরপর বর্তমান যুগের প্রেক্ষাপটে কাহিনির সূত্রপাত ঘটে। গ্রামবাসীরা চাইছে, পরিবারের জ্যেষ্ঠা কন্যা পৌরনমি (তৃষা) উক্ত অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করুক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে উৎসবের কয়েক মাস আগেই সে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। সবাই মনে করে, সে কারও সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। তখন নৃত্যানুষ্ঠানের জন্য সকলের দৃষ্টি পড়ে পৌরনমির ছোটো বোন চন্দ্রকলার (চার্মি) প্রতি। কিন্তু তার বাবা (চন্দ্র মোহন) অরাজি হন। পরে জানা যায় যে, পৌরনমি পালিয়ে যায়নি। গ্রামের জমিদার (রাহুল দেব) পৌরনমিকে রক্ষিতা করে রাখতে চেয়েছিলেন বলে বাবা তাকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন জমিদারের কুনজর থেকে রক্ষা করার জন্য। তাঁর ভয় ছিল চন্দ্রকলার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। তাই তিনি তাকে নাচ শেখাতে রাজি হননি।

এদিকে চন্দ্রকলার সৎ-মা (মঞ্জু ভার্গবী) তাঁদের চিলেকোঠাটি শিব কেশব নামে এক পাশ্চাত্য শৈলীর নৃত্য প্রশিক্ষককে ভাড়া দেন। কিছুকাল লড়াই করার পর চন্দ্রকলার মনে কেশবের জন্য এক অনুভূতির সঞ্চার ঘটে। কিন্তু কেশব তা গ্রহণ করে না। একটি ফ্ল্যাশব্যাকের প্রকাশ ঘটিয়ে সে বলে, তার সঙ্গে পৌরনমির বিবাহ হয়েছিল এবং কেশবের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে পৌরনমির মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুকালে পৌরনমি তার শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করে জানায় যে, তার বোন যেন প্রথা রক্ষা করতে মন্দিরে নৃত্য পরিবেশন করেন। কেশব তাকে কথা দিয়েছিল যে, সেটা সে করবেই। সেই কথা শুনে বাবার আশীর্বাদ নিয়ে চন্দ্রকলা নাচ শিখতে রাজি হয়ে যায়। কেশব তাকে কথা দেয় যে, জমিদারের থেকে সে তাকে রক্ষা করবে। জমিদার চন্দ্রকলাকে অপহরণ করতে গেলে, কেশব তাকে রক্ষা করে। চন্দ্রকলা কঠোর পরিশ্রম করে খুব কম সময়ের মধ্যে একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত সে মন্দিরে সোৎসাহে নৃত্য পরিবেশ করে এবং গ্রামেও আবার বৃষ্টিপাত হয়। জমিদার ও কেশবের মধ্যে কিছু সংঘাতের পর কেশব ও চন্দ্রকলার বিবাহ সম্পন্ন হয়।

কয়েক বছর পরে তাদের মেয়ে সেই নাচটি শিখতে অস্বীকার করে। ছবির শেষে দেখা যায়, কেশব মন্দিরে বসে তার মেয়েকে প্রথাটির বর্ণনা দিচ্ছে।

কলাকুশলী[সম্পাদনা]

সংগীত[সম্পাদনা]

ছবির গীত রচনা করেন সিরিবেন্নেলা সীতারামশাস্ত্রী এবং সুরারোপ এবং নেপথ্য সংগীত রচনা করেন দেবী শ্রী প্রসাদ। ছবির সংগীত সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ায়। ধ্রুপদি, মেলোডি, পাশ্চাত্য এমনকি পপ সংগীতের বিভিন্ন ধারাকে এই ছবিতে ব্যবহারের জন্য দেবী শ্রী প্রসাদ বিশেষভাবে প্রশংসিত হন। গানগুলিও প্রশংসিত হয়। "ভারত বেদমুগ", "মুব্বল নব্বকলা", "ইয়েভারো চুডালি" ও "পল্লকিবাই" গানগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কে. এস. চিত্রাএস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যমের গাওয়া "মুব্বল নব্বকলা" গানটি অধিকতর জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই গানটি গেয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ নেপথ্য গায়িকা বিভাগে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস সাউথের মনোনয়ন লাভ করেছিলেন। দেবী শ্রী প্রসাদ তাঁর সংগীত পরিচালনায় নুব্বোস্তানান্তে নেনোদ্দান্তানা নামে অপর একটি ছবিতেও এই গানটি ব্যবহার করেছিলেন।[৪]

ট্র্যাক তালিকা[সম্পাদনা]

ট্র্যাক তালিকা
নং.শিরোনামশিল্পী(বৃন্দ)দৈর্ঘ্য
১."ভাবমাইনা"জয়দেব, পূণ্য শ্রীনিবাস (বীণা) ও শ্রীনিবাস (জাতি)৩:২৩
২."কোয়ো কোয়ো"শান৪:৩৭
৩."ইয়েভারো চুডালি (নারী কণ্ঠে)"কে. এস. চিত্রা৪:২৯
৪."মুব্বল নব্বকলা"এস. পি. বালসুব্রহ্মণ্যম, কে. এস. চিত্রা, দেবী শ্রী প্রসাদ ও সমবেত কণ্ঠে৫:০৯
৫."ইয়েবেরো রাবলি (দ্বৈতকণ্ঠে)"কে. এস. চিত্রা ও সাগর২:৫৪
৬."পল্লকিবাই"গোপিকা পূর্ণিমা৪:৪৭
৭."ইচি পুচুকুন্তে"টিপ্পু ও সুমঙ্গলী৪:৩৬
৮."বংশীধ্বনি (যন্ত্রসংগীত)"কিরণ২:০৯
৯."রক এন রোল"যন্ত্রসংগীত১:৫২
১০."ভারত বেদমুগা"কে. এস. চিত্রা, দেবী শ্রী প্রসাদ ও সমবেত কণ্ঠে৫:৫০

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pournami Retrieved 3 November 2013.
  2. "Pournami"। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৩ 
  3. ":പൗർണ്ണമി (2008)"। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  4. - స్వరాభిషేకం - Muvvala Navvakala - S P Balasubrahmanyam & Chithra - 1st Dec 2013 https://www.youtube.com/title=Swarabhishekam - స్వరాభిషేకం - Muvvala Navvakala - S P Balasubrahmanyam & Chithra - 1st Dec 2013 |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Prabhu Deva