লোকমান খান শেরওয়ানী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লোকমান খান শেরওয়ানী
লোকমান খাঁ শেরওয়ানী
জন্ম(১৯১০-০৮-১৪)১৪ আগস্ট ১৯১০
মৃত্যু২৭ আগস্ট ১৯৬৯(1969-08-27) (বয়স ৫৯)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পাকিস্তানি
দাম্পত্য সঙ্গীশবনম খানম শেরওয়ানী

লোকমান খান শেরওয়ানী (১৪ আগস্ট ১৯১০ - ২৭ আগস্ট ১৯৬৯) ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন কর্মী ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি কবি ও সাংবাদিক। লোকমান খাঁ শেরওয়ানী বিবাহ করেন শবনম খানম শেরওয়ানীকে। তিনি ফরোয়ার্ড ব্লকের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

তিনি প্রতিষ্ঠাতা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অধীনে নিখিল ভারত ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রাদেশিক সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নেতাজী ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক স্বাধীনতার দাবিতে অব্যাহত আন্দোলন করে গেছেন। শেরওয়ানী অনেক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল - ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রাদেশিক সহ-সভাপতি, সারা বাংলা ভাড়াটে কৃষক কমিটির সভাপতি, বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি, আসাম বেঙ্গল রেলম্যান ইউনিয়নের সভাপতি, বেঙ্গল কৃষক কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, নিখিল ভারত কৃষক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং আরো অনেক।

ব্রিটিশদের দেওয়া কারাদণ্ড[সম্পাদনা]

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস নিখোঁজ হওয়ার পরে লোকমানকে ১৯৪৪ এবং ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ কারারুদ্ধ করে। লোকমান খান শেরওয়ানী ১৯-০২-১৯৪৪ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে লেখেন (বাংলাদেশ) এবং লোকমান খান শেরওয়ানী ২৭-১-১৯৪৫ সালে দম দম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে লিখেছিলেন (ভারত)।

বই এবং পত্রিকাসমূহ[সম্পাদনা]

তিনি বেশ কয়েকটি বই এবং শবনম নামে একটি কবিতার বই লিখেছিলেন যা নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম দিবস ২৫শে বৈশাখে কবিতা তাকে দিয়ে উৎসর্গ করা হয়েছিল। তার অন্য বইগুলির মধ্যে আছে রক্ষক ভক্ষক হলে রক্ষা করে কে, লোকমান বানী, বিদ্রোহী আরব, রূপায়তন, এবং দামামা'।[১]

তিনি বেশ কয়েকটি বাংলা সংবাদপত্র ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[২]

প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদনার কৃতিত্ব তার। (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে পুরস্কার প্রাপ্তি[সম্পাদনা]

শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনের কবিতা প্রতিযোগিতায় শেরওয়ানী লিখিত "২৫শে বৈশাখ" শিরোনামের কবিতাটি প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল। তিনি বিশ্ব ভারতীর কাছ থেকে ২,৫০০ টাকার নগদ পুরস্কার পেয়েছিলেন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে নিজ হাতে এই পুরস্কার দেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি[সম্পাদনা]

নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেরওয়ানীকে ১৯৩৫ সালের ১৫ অক্টোবর তার বাড়ি চট্টগ্রামের পাঠানটুলিতে চিঠি লিখেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্য তার প্রশংসা করেছিলেন। শেরওয়ানীকে লেখা নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি - ১ম ভাগ ২য় ভাগ

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’র মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথের সাথে পরিচয়[সম্পাদনা]

একসময় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু শেরওয়ানীর সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিচয় দেন। রবিঠাকুর তার সাথে দেখা করে খুব সন্তুষ্ট হয়েছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তার প্রশংসা করেছিলেন।সূত্র

শেরওয়ানীকে নিয়ে লেখা একটি নতুন বই[সম্পাদনা]

লোকমান খান শেরওয়ানীকে নিয়ে নতুন বই অধ্যাপক শামসুল হোসেন সম্পাদিত "লোকমান খান শেরওয়ানী" বইটির কাজ চলছে।

লোকমান খান শেরওয়ানীর জীবনী, প্রফেসর ডঃ শামসুল হোসেন এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক সম্পাদিত। বাতিঘর চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত।

শেরওয়ানী স্মৃতি সভা[সম্পাদনা]

২৭শে আগস্ট শেরওয়ানীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়।

চট্টগ্রামের মেয়র শেরওয়ানি স্মৃতি সভায় বক্তব্য রাখছেন

সূত্র

শেরওয়ানী সাংবাদিকতা পুরস্কার[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম একাডেমি, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকদের জন্য "শেরওয়ানী সাংবাদিকতা পুরস্কার" প্রবর্তন করে।

চট্টগ্রাম একাডেমি কর্তৃক লোকমান খান শেরওয়ানী সাংবাদিকতা পুরস্কারপ্রাপ্ত

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

Shewani Memorial Meeting at the Chittagong City Corporation Auditorium

Some Articles on Lokman Khan Sherwani

Books Dedicated to Lokman Khan Sherwani