জাতীয় পরিষদ (ভুটান)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জাতীয় পরিষদ
གི་རྒྱལ་ཡོངས་ཚོགས་སྡེ་
'গ্যেলইয়ং ত্শোগদে'
প্রতীক বা লোগো
ধরন
ধরন
উচ্চ কক্ষ
নেতৃত্ব
চেয়ারপার্সন
তাশি দোরজি
১০ মে ২০১৮ থেকে
ডেপুটি চেয়ারপার্সন
জিগমে ওয়াংচুক
১০ মে ২০১৮ থেকে
গঠন
আসন২৫
রাজনৈতিক দল
নির্বাচন
সর্বশেষ নির্বাচন
২০ এপ্রিল ২০১৮
সভাস্থল
গ্যেলইয়ং ত্শোখং, থিম্পু
ওয়েবসাইট
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

জাতীয় পরিষদ হল ভুটানের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, সংসদের উচ্চকক্ষ, যেটা ড্রুক গ্যালপো (ড্রাগন কিং) এবং জাতীয় সমাবেশ নিয়েও গঠিত।

ভুটানের সংসদ কক্ষগুলোর একটা পড়শি দেশ ভারতের রাজ্যসভার মতো এবং উচ্চকক্ষ অন্য দ্বিদলীয় ওয়েস্টমিনস্টার-পদ্ধতির মতো, এটি আর্থিক অথবা বাজেট সম্পর্কিত আইন পাস করতে পারেনা। ভুটানি আইন প্রণয়ন এবং পর্যালোচনা করার পাশাপাশি জাতীয় পরিষদ ভুটানের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা ভুটানের স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকর এরকম বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনার কক্ষ হিসেবে কাজ করে যা প্রধানমন্ত্রী দ্রুক গ্যালপো এবং জাতীয় সমাবেশকে নজরে আনতে হয়। ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি পরিষদের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন পরিষদের বিশ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

সদস্যপদ[সম্পাদনা]

পঁচিশ জন সদস্য নিয়ে জাতীয় পরিষদ গঠিত হয়েছে। কুড়িটা জেলার নির্বাচকদের দ্বারা কুড়ি জন সাংসদ নির্বাচিত হন, যেখানে দ্রুক গ্যালপো (রাজা) দ্বারা পাঁচ জন সদস্য মনোনীত হন। সদস্যরা কোনো রাজনৈতিক দলভুক্ত হতে পারেন না এবং তাদের অবশ্যই একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হতে হবে।[১](অনুচ্ছেদ ১১)

সাধারভাবে প্রথম জাতীয় পরিষদের সদস্যগণ বয়সে তরুণ ছিলেন, তাদের বেশির ভাগেরই বয়স ৪০ থেকে কম। এটাই বলা হয়ে থাকে যে,[২] কেননা শুধুমাত্র যে ব্যক্তিরা স্নাতক, তাদেরই প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং ভুটানে সাম্প্রতিক শিক্ষার প্রবেশ তুলনামূলকভাবে আধুনিক হয়েছে।

চেয়ারপার্সন[সম্পাদনা]

জাতীয় পরিষদের চেয়ারপার্সনদের সম্পূর্ণ তালিকা:[৩]

নাম কার্যকাল শুরু কার্যকাল শেষ
নামগে পেনজোর [৪] ২৯ এপ্রিল ২০০৮ ২০১৩
সোনম কিং [৫] ১০ মে ২০১৩ ২০১৮
তাশি দোরজি ১০ মে ২০১৮ বর্তমান

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের প্রথমদিকে ভুটানি আইনে উল্লিখিত রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদ ('লোদি ত্শোগদি') জাতীয় পরিষদের পূর্বসূরি ছিল।[৬] শুরুতে রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদের সভ্যেরা একই সঙ্গে এককক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ ত্শোগদু তথা ভুটানের আধুনিক জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। জাতীয় পরিষদের কার্যক্রম এবং নীতিসমূহ কার্যকর করতে তত্ত্বাবধানের লক্ষ্যে দ্রুক গ্যালপো ও মন্ত্রীদের পরামর্শ দেওয়ার জন্যে রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদ ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৭] রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদ একটা মন্ত্রণাদাতা এবং পরামর্শদাতা সংস্থা হয়ে কাজ করত। ছ-জন সদস্য গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত, দুজন যাজকদের দ্বারা মনোনীত এবং একজন দ্রুক গ্যালপো দ্বারা মনোনীত হয়ে নেতৃত্ব দিতেন।[৬][৭] ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের পরিষদ সদস্যতার নিয়মানুযায়ী সন্ন্যাসী প্রতিনিধিগণ বিদ্বজ্জন হিসেবে শিক্ষিত ছিলেন এবং 'দ্রুকপা কার্গুপা ধর্ম' সম্পর্কে উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন।[৬] সন্ন্যাসী মনোনয়ন জাতীয় সংসদের অনুমোদনের ওপর নির্ভর করত। গ্রাম সংসদের সমর্থনক্রমে জাতীয় সংসদ আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের নির্বাচন করত।[৬] তাদের শিক্ষিত হতে হোত, ভুটানি ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি এবং প্রথা সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হোত।[৬] দ্রুক গ্যালপোর মুখ্য পরামর্শদানকারী শক্তি হিসেবে রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদ একটা মূল সরকারি সংস্থা ছিল এবং সরাসরি জাতীয় সংসদের সঙ্গে মতবিনিময় করে কাজ করত।[৬]

রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদ মন্ত্রিপরিষদসহ ভুটানের প্রথম মন্ত্রিসভা গঠন করেছিল। (বর্তমানে লেঙ্গ্যে ঝুঙ্গস্টং)।[৭] এর সদস্যগণ সম্মিলিতভাবে মহামহিম রাজা এবং জাতীয় সংসদ (ত্শোগদু)-এর কাছে দায়বদ্ধ ছিল।[৭]

ভুটানের সংবিধানের ১১ নম্বর ধারার অধীনে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদের উল্লেখ ছিলনা। পরবর্তী ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় পরিষদ আইন জাতীয় পরিষদের বিধিবদ্ধ ভিত্তি নথিভুক্ত করেছিল।[৮] 'রাজকীয় পরামর্শদাতা পরিষদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য সকল আইন' এই কাঠামোর সরাসরি বাতিলের অংশ ছিল।[৮] জাতীয় পরিষদ আইনগুলো পরবর্তী যোগ্যতাসমূহ স্থির করেছিল: সভা, বিবৃতি, বিতর্ক এবং নির্বাচন পদ্ধতি; কমিটি এবং আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ; এবং জাতীয় পরিষদ সদস্যদের জন্যে নিশ্চিতকরণ, বহিষ্কার এবং অন্যান্য দণ্ডদান।[৮] ওই আইন আরো স্থাপনা করেছিল একজন চেয়ার পার্সন, একজন ডেপুটি চেয়র পার্সন এবং জাতীয় পরিষদের শাসনের জন্যে রাজকীয়ভাবে একজন সেক্রেটারি জেনারেল নিয়োগ করেছিল।[৮]

২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ থেকে ৩০ মে জাতীয় পরিষদসহ সংসদের প্রথম যুক্ত অধিবেশন বসেছিল। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জুন থেকে ২৪ জুলাই জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৯]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Constitution of the Kingdom of Bhutan (English)" (পিডিএফ)। Government of Bhutan। ২০০৮-০৭-১৮। ২০১১-০৭-০৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-১৩ 
  2. "Main Bhutan election date is set", Subir Bhaumik, BBC, January 17, 2008
  3. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে National Council of Bhutan.
  4. "Penjore is NC chairman (Politics)"। এপ্রিল ২৯, ২০০৮। নভেম্বর ১২, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৯ 
  5. "Dasho Dr. Sonam Kinga elected NC Chairperson"। মে ১০, ২০১৩। 
  6. "Bhutan – Structure of the Government"Country StudiesCountry Studies US। ২০০৭-০৫-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০২  |প্রকাশক= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  7. "Constitution of Bhutan"Constitutions of All CountriesLucknow, India: City Montessori School। ২০০৮-০৭-২২। ২০০৯-১২-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০২ 
  8. "National Council Act 2008" (PDF)Government of Bhutan। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "About Us"National Council of Bhutan onlineGovernment of Bhutan। ২০১০-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-০২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]