অনূঢ়া রাণাসিংহে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অনূঢ়া রাণাসিংহে
අනුර රණසිංහ
১৯৭৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে অনূঢ়া রাণাসিংহে
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৯৫৬-১০-১৩)১৩ অক্টোবর ১৯৫৬
কালুতারা
মৃত্যু৯ নভেম্বর ১৯৯৮(1998-11-09) (বয়স ৪২)
কলম্বো
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম পেস
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৩)
১৪ মার্চ ১৯৮২ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ )
৭ জুন ১৯৭৫ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা
রানের সংখ্যা ৮৮ ১৫৩
ব্যাটিং গড় ২২.০০ ২১.৮৫
১০০/৫০ ০/১ ০/১
সর্বোচ্চ রান ৭৭ ৫১
বল করেছে ১৯ ৫৪
উইকেট
বোলিং গড় ৬৯.০০ ১৪০.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ১/২৩ ১/২১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/০ ০/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ অক্টোবর ২০১৯

অনূঢ়া নন্দনা রাণাসিংহে (সিংহলি: අනුර රණසිංහ; জন্ম: ১৩ অক্টোবর, ১৯৫৬ - মৃত্যু: ৯ নভেম্বর, ১৯৯৮) কালুতারা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১][২][৩] শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ সময়কালে শ্রীলঙ্কার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে বার্গার রিক্রিয়েশন ক্লাব দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন অনূঢ়া রাণাসিংহে

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে সেরা বিদ্যালয় বালক ক্রিকেটারের পুরস্কার লাভ করেন। এ পর্যায়ে তিনি নালন্দা কলেজ কলম্বোর পক্ষে প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছিলেন। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুম থেকে ১৯৮৯-৯০ মৌসুম পর্যন্ত অনূঢ়া রাণাসিংহের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও নয়টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন অনূঢ়া রাণাসিংহে। ১৪ মার্চ, ১৯৮২ তারিখে ফয়সালাবাদে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮২ তারিখে চেন্নাইয়ে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রথম আসরে অভিষেক ঘটে তার। শ্রীলঙ্কার পক্ষে তিন খেলার সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। সর্বমোট ১৯ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও, দশ ওভার বোলিং করে ৬৫ রান খরচ করেছিলেন তিনি। ১১ জুন, ১৯৭৫ তারিখে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫৫ রান দিলেও উইকেট শূন্য অবস্থায় তাকে মাঠ থেকে ফিরে আসতে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১৮ বছর বয়সে খেলতে নামেন। ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপেও এর ব্যতয় ঘটেনি।

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি[সম্পাদনা]

দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে নিজ দেশে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে উদ্বোধনী টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। তাসত্ত্বেও সৌভাগ্যবশতঃ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। প্রথম ওডিআইয়ে দ্রুতগতিতে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ধাবিত হতে গিয়ে জিওফ কুকের বলে কট আউটে তাকে বিদেয় নিতে হয়েছিল। ঐ খেলায় তার দল মাত্র ছয় রানের ব্যবধানে পরাভূত হয়েছিল। দ্বিতীয় খেলায় তিনি শূন্য রানে বিদেয় নেন। তাসত্ত্বেও, তার দল তিন রানের ব্যবধানে জয়লাভ করতে সমর্থ হয়। এ খেলায় তিনি নয় ওভার বোলিং করে মাত্র ৩৭ রান দেন।

ওডিআইয়ে সুন্দর খেলা প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮১-৮২ মৌসুমে পাকিস্তান গমনে শ্রীলঙ্কা দলের অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত হন। প্রথম টেস্টে তার খেলার সুযোগ ঘটেনি। তবে, দ্বিতীয় খেলায় রবি রত্নায়েকেকে বাদ দিয়ে দল নির্বাচকমণ্ডলী ব্যাটিংয়ের মান সমৃদ্ধকরণের দিকে এগিয়ে নিতে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেন। শ্রীলঙ্কা দল বেশ ভালমানের ব্যাটিং করলেও রাণাসিংহে খুব কমই অবদান রাখেন। পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী টেস্ট সফরে তিনি প্রথম খেলেন। ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ইনিংসে ৬ ও ৫ রান তুলেন। নতুন বল হাতে নিয়ে সুবিধে করতে না পারলেও প্রথম ইনিংসে ১/২৩ পান। বারো ওভারে ৪০ রান খরচায় উইকেট-রক্ষক আশরাফ আলী’র উইকেট লাভে সক্ষম হন। তৃতীয় টেস্টে আবারও বাদ পড়েন।

ভারত গমন, ১৯৮২-৮৩[সম্পাদনা]

এক বছর বাদে ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে ভারত গমনের সুযোগ পান। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদায় নেন। তবে, কপিল দেব ও দিলীপ দোশী’র ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে ৭৭ রান তুলে দলের ড্রয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ২৩০ রানে পিছিয়ে থেকেও দলকে জয়ের দিকে ধাবিত করেছিলেন। তবে, ভারত দল ১৩৫/৭ তোলার পর খেলাটি শেষ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে শ্রীলঙ্কা দলের অন্যতম নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে ভাবা হতো। এটিই তার সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ ছিল।

অবসর[সম্পাদনা]

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে বিধিনিষেধের কবলে পড়েন। তাকে ২৫ বছর মেয়াদে সকল স্তরের ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়। ১৯৮৯ সালে নিষেধাজ্ঞাদেশ স্থগিত করা হলে আরও কয়েক মৌসুম ক্লাব ক্রিকেট খেলেন। এরপর তিনি কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন।

৪২তম জন্মদিন উদযাপনের চার দিন আগে ৯ নভেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে মাত্র ৪২ বছর বয়সে কলম্বোয় আকস্মিকভাবে অনূঢ়া রাণাসিংহের দেহাবসান ঘটে।[৪] নালন্দা জুনিয়র ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশন সীমিত ওভারের এনকাউন্টার আয়োজন করে। তার স্মরণে এ প্রতিযোগিতার নামকরণ করা হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. List of Sri Lanka Test Cricketers
  2. "Sri Lanka – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯ 
  3. "Sri Lanka – Test Bowling Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯ 
  4. Alter, J. (৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "The one that got away"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]