ডোনাল্ড স্মিথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডোনাল্ড স্মিথ
১৯৫৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ডোনাল্ড স্মিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামডোনাল্ড ভিক্টর স্মিথ
জন্ম(১৯২৩-০৬-১৪)১৪ জুন ১৯২৩[১]
ব্রডওয়াটার, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১০ জানুয়ারি ২০২১(2021-01-10) (বয়স ৯৭)
অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৮৪)
২০ জুন ১৯৫৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট২৫ জুলাই ১৯৫৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭৭
রানের সংখ্যা ২৫ ১৬,৯৬০
ব্যাটিং গড় ৮.৩৩ ৩০.৩৩
১০০/৫০ –/– ১৯/৮৮
সর্বোচ্চ রান ১৬* ২০৬*
বল করেছে ২৭০ ২২,২৩৩
উইকেট ৩৪০
বোলিং গড় ৯৭.০০ ২৮.৪৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১২ ৭/৪০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং –/– ২৩৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ অক্টোবর ২০১৯

ডোনাল্ড ভিক্টর স্মিথ (ইংরেজি: Donald Smith; জন্ম: ১৪ জুন, ১৯২৩ - মৃত্যু: ১০ জানুয়ারি, ২০২১) সাসেক্সের ব্রডওয়াটার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[২]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বামহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন ডন স্মিথ নামে পরিচিত ডোনাল্ড স্মিথ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ডোনাল্ড স্মিথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। যুদ্ধ পরবর্তী সময়কালে ডোনাল্ড স্মিথ অল-রাউন্ডার হিসেবে সাসেক্স দলে খেলতেন। বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে বামহাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। ১৯৫০ সালে দেড় হাজারের অধিক রান তুলে নিজেকে প্রথম একাদশে স্থায়ী করে নেন। ব্যাটিং উদ্বোধন কিংবা মাঝারিসারিতে দ্রুতলয়ে রান তুলতে সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। ৩২ বছর বয়সেও ৭৩ উইকেট পেয়েছেন তিনি। ১৯৫৭ সালে আরও সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। তবে, সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলটির বিপক্ষে কাউন্টি দলের সদস্যরূপে খেলে ১৪৭ রান তুলেছিলেন। ১৯৫৭ সালে পাঁচ সেঞ্চুরি সহযোগে ২০৮৮ রান তুলেন।

শুরুতে তিনি স্পিনার হিসেবে আবির্ভূত হন। পরবর্তীতে বলকে সুইং করানোয় দক্ষতা প্রদর্শন করেন। কাউন্টি ক্রিকেটের শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। এরপর তিনি দলে থিতু হবার পর দীর্ঘকাল দলটিতে অবস্থান করতে থাকেন। ১৯৪৯ সালে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম শতরানের সন্ধান পান। নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে এ দ্বি-শতরানটির কল্যাণে ঐ মৌসুমে দেড় হাজারের রান তুলেন। তবে, কেমব্রিজ থেকে ডেভিড শেপার্ড দল ভিড়লে ক্ষণিকের জন্যে ব্যাটিংয়ের অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়। তবে, ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে পুনরায় ঐ স্থানে ফিরে যান। তাসত্ত্বেও ঐ মৌসুমে ২০৮৮ রান তুলেন। হোভে অবস্থানকালে প্রথম নয় বছরে মাত্র নয় উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু, ১৯৫৫ সালে রবিন মারলারের পরামর্শক্রমে বামহাতি মিডিয়াম বোলারে পরিণত হলে ঐ গ্রীষ্মে ৭৩ উইকেট পান।

গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে সাসেক্সের ১৯৫ মিনিটে ২৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় তিনি নয়টি ছক্কা ও এগারোটি চারের মারে ১৬৬ রানের দূর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন। এরপর, ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশের বিপক্ষে ১৪৭ রান তুলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড স্মিথ। ২০ জুন, ১৯৫৭ তারিখে লর্ডসে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৫ জুলাই, ১৯৫৭ তারিখে লিডসে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। তবে তিন টেস্টে অংশ নিয়ে খুব কমই সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। চার ইনিংসে মাত্র ২৫ রান তুলেছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে সফররত ভারতীয় দলের বিপক্ষে ৩৪ বছর বয়সে খেলেন। কিন্তু, সিরিজে রানের ফুলঝুড়ি ছোটায় লর্ডস টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলায় অংশগ্রহণ করা থেকে তাকে বিরত রাখা হয়। ঐ মৌসুমে তিনি তিন টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, চার ইনিংসে মাত্র ২৫ রান ও এক উইকেট পেয়েছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৬২ সালে খেলার জগৎ থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি কোচিং জগতে প্রবেশ করেন ও ল্যান্সিং কলেজে মাঠ কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। ল্যান্সিং স্কুলে বিশ বছরের অধিক সময় যুক্ত ছিলেন। শ্রীলঙ্কা দলের টেস্ট ক্রিকেটে অন্তর্ভূক্তির পরপরই তিনি কোচের দায়িত্বে ছিলেন।[১] এরপর তিনি ১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসিত হন।[১][৩] নভেম্বর, ২০১৩ সালে রেগ সিম্পসনের দেহাবসানের পর তিনিই বয়োজ্যেষ্ঠ ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন।[৪]

১০ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে ৯৭ বছর বয়সে ডোনাল্ড স্মিথের দেহাবসান ঘটে। তার মৃত্যুর ফলে ইয়ান থমসন ইংল্যান্ডের বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটারের সম্মাননাপ্রাপ্ত হয়েছেন।[৫]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, ১৯৯৩ সালের শুরুরদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম ঐতিহাসিক বিজয়ে আর কেউ না হলেও অন্ততঃ একজন ইংরেজ টেস্ট খেলোয়াড় নিশ্চিতরূপেই খুশি হয়েছিলেন। দৃঢ় প্রত্যয়ী মনোভাবের বামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও কার্যকরী সিম বোলিংয়ের অধিকারী ডোনাল্ড স্মিথ ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 154আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. "England's oldest men's Test cricketer Don Smith passes away at 97"ANI News। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. Hayward, Paul (৩০ নভেম্বর ২০১৭)। "Meet Don Smith – England's oldest living Test cricketer"The Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২০ 
  4. "Records | Test matches | Individual records (captains, players, umpires) | Oldest living players"। Stats.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-০২ 
  5. "Don Smith: England's oldest living male Test cricketer dies aged 97"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০২১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]