আকিরা ইয়োশিনো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আকিরা ইয়োশিনো সদুনা
吉野 彰
জন্ম (1948-01-30) ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮ (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাজাপানি
মাতৃশিক্ষায়তনকিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কারআইইইই পরিবেশবাদী ও নিরাপদ প্রযুক্তি পুরস্কার (২০১২)
বিশ্ব শক্তি পুরস্কার (২০১৩)
চার্লস স্টার্ক ড্র‍্যাপার পুরস্কার (২০১৪)
জাপান পুরস্কার (২০১৮)
নোবেল পুরস্কার (২০১৯)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রতড়িৎ রসায়ন
প্রতিষ্ঠানসমূহআসাহি কাসেই
মেইজো বিশ্ববিদ্যালয়

আকিরা ইয়োশিনো (吉野 彰; জন্ম: ৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮) হলেন একজন জাপানি রসায়নবিদ। যিনি আসাজি কাসেই কর্পোরেশনের ফেলো ও মেইজো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তাকে আধুনিক লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির জনক হিসেবে অভিহিত করা হয় যা মোবাইল ফোনল্যাপটপে ব্যবহৃত হয়।[১] তিনি ২০১৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।[২]

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

আকিরা ইয়োশিনো ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি জাপানের সুইটায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তিনি কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক ও ১৯৭২ সালে স্নাতকোত্তর করে ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।[৪][৫]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

  • ১৯৭২: কাওয়াসাকি বিজ্ঞানাগাত, আসাহি কাসেই কর্পোরেশন, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ইত্যাদি।
  • ১৯৯২: ব্যবস্থাপক, পণ্য উন্নয়ন দল, আয়ন ব্যাটারি ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগ, আসাহি কাসেই কর্পোরেশন।
  • ১৯৯৪: ব্যবস্থাপক, প্রযুক্তি উন্নয়ন, এ অ্যান্ড টি ব্যাটারি কর্পোরেশন, (এলআইবি ম্যানুফ্রাকচারার, আসাহি কাসেই ও তোশিবার যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত)
  • ২০০৩–বর্তমান: ফেলো, আসাহি কাসেই কর্পোরেশন/পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা
  • ২০০৫–বর্তমান: সাধারণ ব্যবস্থাপক, ইয়োশিনো গবেষণাগার, আসাহি কাসেই কর্পোরেশন ল/ উন্নত ব্যাটারি গবেষণা।

মাধ্যমিক লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি উদ্ভাবন[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে আকিরা ইয়োশিনো পলিসেটিলিন ব্যবহার করে রিচার্জ করা যায় এমন ব্যাটারি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পলিসেটিলিন হল এক রকম তড়িৎবাহী পলিমার যেটি হিদেকি শিরাকাওয়া আবিষ্কার করেছিলেন ও তার আবিষ্কারের জন্য তিনি পরবর্তীতে ২০০০ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

১৯৮৩ সালে ইয়োশিনপ লিথিয়াম কোবাল্ট অক্সাইড (LiCoO2) (১৯৭৯ সালে গডশ্যাল ও তার দল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে,[৬][৭][৮] ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন বি. গুডএনাফ ও কোইচি মিজুশিমা এটি আবিষ্কার করেছিলেন) ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন ও পলিসেটিলিনকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। এই ধরনের ব্যাটারির অ্যানোডে কোনো লিথিয়াম ছিল না এবং এখানে লিথিয়াম আয়ন ক্যাথোডের LiCoO2 থেকে অ্যানোডে আসত চার্জিংয়ের সময়, যা ছিল আধুনিক লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির পথপ্রদর্শক।

পলিসেটিলিনের ঘনত্ব খুব কম যার দরুন ব্যাটারির কর্মে সমস্যা সৃষ্টি কর‍ত। এর দরুন ইয়োশিনো কার্বনীয় বস্তু অ্যানোডে ব্যবহার করেন ও ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম প্রোটোটাইপ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি তৈরি করেন ও পেটেন্ট লাভ করেন। এভাবেই জন্ম হয়েছিল আধুনিক লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির।

সনি ১৯৯১ সালে এবং এঅ্যান্ডটি ব্যাটারি (আসাহি কাসেই ও তোশিবার যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত) ১৯৯২ সালে এই ধরনের ব্যাটারি বাজারে আনে।

ইয়োশিনো আবিষ্কার করেছিলেন যে অ্যানোডের জন্য কার্বনীয় পদার্থ উপযুক্ত। ইয়োশিনো ফয়েল কারেন্ট সংগ্রাহকের উন্নয়ন ঘটান।[৯] যা কম মূল্যে উচ্চ ভোল্টেজ পাবার বিষয় নিশ্চিত করেছিল।[১০] এছাড়া, ব্যাটারিতে অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য ধনাত্মক তাপীয় সহগযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছিল।[১১]

১৯৮৬ সালে ইয়োশিনো লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি তৈরির অনুমোদন প্রদান করেন। তার এই ব্যাটারি ছিল পূর্বের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি অপেক্ষা উন্নত। তার এই ব্যাটারি সম্পর্কে পরীক্ষা চালিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ মতামত প্রদান করেছিল যে এটি সে আমলে প্রচলিত ধাতব লিথিয়াম ব্যাটারি থেকে আলাদা।[১২]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • ১৯৯৮ জাপান রসায়ন সমাজ থেকে রসায়ন প্রযুক্তি পুরস্কার
  • ১৯৯৯: তড়িৎ রসায়ন সমাজ থেকে ব্যাটারি বিভাগ প্রযুক্তি পুরস্কার
  • ২০০১: ইচিমুরা শিল্প পুরস্কার—অসাধারণ অর্জন পুরস্কার
  • ২০০৩: শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের প্রশংশা লাভ, উন্নয়ন বিভাগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পুরস্কার
  • ২০০৪: জাপান সরকার থেকে বেগুনি রিবনের পুরস্কার
  • ২০১১: জাপানের বস্তুবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফাউন্ডেশন থেকে ইয়ামাজাকি-তেইচি পুরস্কার[১৩]
  • ২০১১: এনইসি সিঅ্যান্ডসি ফাউন্ডেশন থেকে সিঅ্যান্ডসি পুরস্কার[১৪]
  • ২০১২ : আইইই থেকে আইইই পরিবেশবাদী ও নিরাপদ প্রযুক্তি পুরস্কার[১৫]
  • ২০১৩ : বিশ্ব শক্তি পুরস্কার[১৬]
  • ২০১৪ : চার্লস স্টার্ক ড্র‍্যাপার পুরস্কার[১৭]
  • ২০১৮ : জাপান পুরস্কার[১৮]
  • ২০১৯ : ইউরোপীয় উদ্ভাবক পুরস্কার[১৯]
  • ২০১৯ : রসায়নে নোবেল পুরস্কার[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Akira Yoshino: Inventing The Lithium Ion Battery"Asian Scientist। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  2. "Nobel prize in chemistry awarded for work on lithium-ion batteries"The Guardian। ৯ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৯ 
  3. https://www.asahi-kasei.co.jp/asahi/jp/news/2013/pdf/ze140108.pdf
  4. "Akira Yoshino: Inventing The Lithium Ion Battery"। ১ জুন ২০১৮। 
  5. http://www.asahi-kasei.co.jp/asahi/en/r_and_d/interview/yoshino/pdf/lithium-ion_battery.pdf
  6. N. A. Godshall, I. D. Raistrick, and R. A. Huggins, Journal of the Electrochemical Society, Abstract 162, Vol. 126, p. 322C; "Thermodynamic Investigations of Ternary Lithium-Transition Metal-Oxide Systems for Lithium Batteries" (August 1979).
  7. N. A. Godshall, I. D. Raistrick, and R. A. Huggins, Journal of the Electrochemical Society, Extended Abstract 162, Vol. 79-2, pp. 420-422; Thermodynamic Investigations of Ternary Lithium-Transition Metal-Oxide Systems for Lithium Batteries" (October 1979).
  8. Ned A. Godshall, "Electrochemical and Thermodynamic Investigation of Ternary Lithium -Transition Metal-Oxide Cathode Materials for Lithium Batteries: Li2MnO4 spinel, LiCoO2, and LiFeO2", Presentation at 156th Meeting of the Electrochemical Society, Los Angeles, CA, (17 October 1979).
  9. "Article of Tech-On"। ২২ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। , JP 2128922, Yoshino; Akira, "Nonaqueous secondary Battery", Application date 28 May 1984, issued 2 May 1997, assigned to Asahi Kasei
  10. "JP 2642206" , Yoshino; Akira, "Battery", Application date 28 May 1989, issued 2 May 1997, assigned to Asahi Kasei
  11. "JP 3035677" , Yoshino; Akira, " Secondary battery equipped with safety element", Application date 13 September 1991, issued 25 February 2000, assigned to Asahi Kasei
  12. Lithium-ion secondary battery (Japanese) 2nd edition, chapter2 "History of development of lithium-ion secondary battery", P27-33, Nikkan Kogyo Shimbun (1996)
  13. "MST 山崎貞一賞 - トップページ"www.mst.or.jp (jp ভাষায়)। 
  14. "NEC C&C Foundation"www.candc.or.jp 
  15. The reason for the award-winning of the IEEE Medal and prize winners, John B. Goodenough and Rachid Yazami were awarded jointly.
  16. "Russia honors lithium-ion scientist"। ২৩ জুন ২০১৩ – Japan Times Online-এর মাধ্যমে। 
  17. "UT Austin's John B. Goodenough Wins Engineering's Highest Honor for Pioneering Lithium-Ion Battery"। ৬ জানুয়ারি ২০১৪। ১৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৮ 
  18. Lee, Bruce Y.। "10 Lessons On How To Innovate From This Year's Japan Prize Winners" 
  19. Office, European Patent। "Akira Yoshino (JP)"www.epo.org