আবু বারযাহ আল আসলামি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আবু বারযাহ্‌ আল-আসলামী (মৃত্যু ৬৫ হিজরি) রাসুল এর একজন অন্যতম সাহাবা ছিলেন । তিনি একজন হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবা ছিলেন ।[১]

নাম ও বংশ পরিচয়[সম্পাদনা]

আবু বারযাহ্‌র আসল নাম ইতিহাস প্রনেতাদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য নাম হিসেবে মূলনাম নাদলা ইবন উবাইদ উল্লেখ করা হয় এবং আবু বারযাহ্‌ ডাকনাম বলা হয়।[২]

ইসলাম গ্রহণ ও যুদ্ধে অংশগ্রহন[সম্পাদনা]

মক্কায় ইসলামী দাওয়াতের সূচনা পর্বেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন । মুসলমান হওয়ার পর কাফিরদের সাথে যত সংঘর্ষ হয়েছে তার সবগুলিতে তিনি হযরত রাসূলে কারীমের সাথে ছিলেন এবং বীরত্বের সাথে অংশগ্রহণ করেন ।

মক্কা বিজয়ের দিন[সম্পাদনা]

ইতিপূর্বে ইসলামের দাস হত্যাকারী ও ইসলাম ত্যাগী আবদুর রহমান ইবন খাতাল কে আবু বারযাহ আল আসলামি মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলের নির্দেশে হত্যা করেন । অন্য একটি বর্ণনা মতে সাঈদ ইবন হুয়াইরিস আল-মাখযূমী ও আবু বারযাহ্‌ আল-আসলামী একযোগে আবদুর রহমান ইবন খাতাল কে হত্যা করেন।

রাসুল পরবর্তী যুগে[সম্পাদনা]

[৩] হযরত রাসূলে পাকের জীবদ্দশা পর্যন্ত আবু বারযাহ্‌ মদীনায় বসবাসরত ছিলেন। হযরত উমারের খিলাফতকালে তিনি বসরার বাসিন্দা হন। সিফ্‌ফীন যুদ্ধে হযরত আলীর পক্ষে অবস্থান করেন । তিনি নাহরাওয়ানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করেন । তিনি ‍খুরাসান অভিযানেও অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে ইতিহাসবেত্তাগণ উল্লেখ করেছেন ।

স্বভাব ও চরিত্র[সম্পাদনা]

হযরত আবু বারযাহ্‌র স্বভাবে যুদ্ধের একটা ভাব বিদ্যমান ছিল। তিনি দামী কাপড় পরতেন না এবং ঘোড়ায়ও সওয়ার হতেন না । তিনি যেমন মূল্যবান কাপড় পরতেন তেমনি ঘোড়ায়ও সওয়ার হতেন । গরীব-দুঃখীর সেবা করা ছিল আবু বারযাহ্‌র বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি ফকীর মিসকীনকে আহার করাতেন। ‍হাসান ইবন হাকীম তার মার নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন। আবু বারযাহ্‌ বিধবা, ইয়াতিম ও মিসকীনদের সকালে এবং সন্ধ্যায় সারীদ (আরবদের এক প্রকার প্রিয় খাদ্য) আহার করাতেন ।[৪]

হাদিস বর্ণনা[সম্পাদনা]

আবু বারযাহ্‌ রাসূল এর দীর্ঘ সাহচর্যের সুযোগ পেয়েছিলেন । তিনি সর্বমোট ৬৪ টি হাদিস বর্ণনা করেছেন । তারমধ্যে ২৭ টি বুখারী ও মুসলিম শরীফ উভয়ই বর্ণনা করেছেন । ২ টি বুখারী শরীফ ও ৪ টি মুসলিম শরীফ এককভাবে বর্ণনা করেছেন ।

একটি হাদিস

আবূ বারযাহ্ থেকে বর্ণিতঃ,আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আমাকে এমন একটি বিষয় অবহিত করুন, যার সাহায্যে উপকৃত হতে পারি। তিনি বললেন, মুসলিমদের চলার পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিবে।[৫]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

হযরত আবু বারযাহ্‌র মৃত্যুর সময়কাল সম্পর্কে মতপার্থক্য আছে। কারও মতে হিজরী ৬০, আবার কারও মতে হিজরী ৬৫ সনে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। দ্বিতীয় মতটি অধিকতর সঠিক বলে মনে হয়। কারণ, মারওয়ান ও আবদুল্লাহ ইবন যুবাইরের সংঘর্ষের সময় পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন ।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. (বইঃ আসহাবে রাসূলের জীবনকথা – দ্বিতীয় খন্ড) 
  2. [আল ইসাবা-৪/১৯] 
  3. [আবু দাউদ, কিতাবুল জিহাদ; সীরাতু ইবন হিশাম-২/৪১০] 
  4. [হায়াতুস সাহাবা-২/১৯৪-৯৫] 
  5. সহিহ মুসলিম- ৬৫০০ 
  6. [হায়াতুস সাহাবা-২/৪০৭]