বহলা গণহত্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১৯৭১ বহলা গণহত্যা
১৯৭১ বাংলাদেশে গণহত্যা-এর অংশ
১৯৭১ সালে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বহলা গ্রামে পাক সেনাবাহিনী দ্বারা সংঘটিত গনহত্যায় প্রাণ হারানো শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ
স্থানবহলা, বিরল, দিনাজপুর
তারিখ১৩ ডিসেম্বর ১৯৭১
লক্ষ্যবহলা গ্রামবাসী
হামলার ধরনজাতি নির্মূল করা, গণহত্যা
হামলাকারী দলপাকিস্তান সেনাবাহিনী

বহলা গণহত্যা ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংগঠিত একটি গণহত্যা।[১][২]

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে সংঘবদ্ধ মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পাক সেনাবাহিনী পিছু হটতে থাকে। ১৩ ডিসেম্বর বিরল উপজেলার ভান্ডারা কিংবা রাণীপুকুর ইউপি থেকে পাক সেনাবাহিনী পিছু হটে দিনাজপুর শহরের দিকে আসতে থাকে। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে কাঞ্চন জংশন এবং রেলসেতু সংলগ্ন বিজোড়া ইউপির বহলা গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে গ্রামবাসীর কাছে মুক্তিবাহিনীর সংবাদ জানতে চায় পাক সেনাবাহিনী। বিরল উপজেলার বহলা গ্রামটি ছিলো মুক্তিবাহিনীর একটি ঘাঁটি। যেখান থেকে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অপারেশন চালাতেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের কেউ মুখ খুললেন না। এরপর পাক বাহিনী প্রস্তাব দেয় যে ওই গ্রামে তারা ক্যাম্প স্থাপন করবে। পাক সেনাবাহিনীর ওই প্রস্তাবেও গ্রামের মানুষ আপত্তি জানান। ফলে প্রথমে তাদের গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। গ্রামবাসীরা সেই নির্দেশ অমান্য করলে পাক সেনাবাহিনী গোটা গ্রামের পুরুষদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে বলে। এ সময় মাগরিবের আজান পড়ে। গ্রামবাসীরা নামাজ আদায় করতে চাইলেন কিন্তু পাক সেনাবাহিনী তাদের নামাজ আদায় করতে না দিয়ে ব্রাশ ফায়ারিং করে। এতে ৪৪ জন প্রাণ হারায়।[৩] সেদিন বহলা গ্রামে প্রাণে বেছে যান একমাত্র আব্দুল গণি ও আনিসুর রহমান।[১]

সেই গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া আব্দুল গণি, ২০১৪ সালে।

আব্দুল গণি ও আনিসুর রহমান জানান, গ্রামে পুরুষ সদস্য জীবিত না থাকায় ৩ দিন ওই ৪৪ জনের লাশ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের বিকেলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজন এসে পঁচন ধরা লাশ বহলা গ্রামের গণকবরের স্থানটিতে কয়েকটি গর্ত করে একসঙ্গে কবর দেন।[৪]

শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ[সম্পাদনা]

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১২ সালে শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে গণকবরের পাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বহলা ট্রাজেডি আজও কাঁদায় দিনাজপুরবাসীকে"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬। 
  2. "১৩ ডিসেম্বর বহলা ট্র্যাজেডি দিবস"jagonews24.com 
  3. "স্বীকৃতিহীন ৪৪ শহীদ পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন"banglanews24.com। ৭ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৯ 
  4. "বহলা ট্রাজেডি দিবস আজ"archive1.ittefaq.com.bd [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "১৩ ডিসেম্বর বিরল উপজেলার বহলা ট্রাজেডি দিবস | দিনাজপুর নিউজ"dinajpurnews.com। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৯