জেরুসালেম দূতাবাস আইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জেরুসালেম দূতাবাস আইন ১৯৯৫ যুক্তরাষ্ট্রের একটি সার্বজনীন আইন,যা রিপাবলিকান বিপ্লবের পর, ২৩শে অক্টোবর ১৯৯৫ ১০৪তম কংগ্রেস কর্তৃক জারি করা হয়। প্রস্তাবিত এই আইন সেনেট(৯৩-৫) এবং দ্যা হাউজ (৩৭৪-৩৭) দ্বারা গৃহীত হয় । আইনটি ৮ই নভেম্বর, ১৯৯৫ এ রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ব্যতীতই জারি করা হয়।

এই আইন জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে এবং জেরুসালেমকে একটি অবিভক্ত শহর হিসেবে থাকার স্বীকৃতি প্রদান করে। এর উদ্দেশ্য ছিল ৩১শে মে,১৯৯৯ এর মধ্যে ইজরায়েলের মার্কিন দূতাবাস বর্তমান স্থান হতে তেল আবিবে স্থানান্তরের জন্য তহবিল বাতিল করা । এই পরিপ্রেক্ষিতে,১৯৯৯ অর্থবছরে স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক বরাদ্দকৃত তহবিলের ৫০ শতাংশ জেরুসালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস প্রতিষ্ঠার আগে পর্যন্ত স্থগিত করে রাখা হয় "বিদেশে ভবন অধিগ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণ" এর উদ্দেশ্যে । জেরুসালেম ইজরায়েল কর্তৃক ঘোষণাকৃত রাজধানী হলেও, ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে আন্তর্জাতিকমহল দ্বারা স্বীকৃত নয় ।

এ সত্ত্বেও আইননুসারে, রাষ্ট্রপতিকে ৬ মাসের জন্য আইনটির প্রয়োগ স্থগিত রাখার এবং প্রতি ছয় মাস পর পর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আইন পরিত্যাগের এই সুবিধাটি বারংবার ক্লিনটন,বুশ এবং ওবামা কর্তৃক নবায়ন করা হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প জুন ২০১৭ এ এটি পুনর্বহাল করেন। ৫ই জুন ২০১৭, জেরুসালেমের পুনর্মিলনীর ৫০ বছর পূর্তিকে স্বরণীয় করতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনেট সর্বসম্মতিক্রমে একটি রেজল্যুশন পাস করে ৯০-০ এ। এই রেজল্যুশন জেরুসালেম দুতাবাস আইনকে পুনর্নিশ্চিত এবং সেইসাথে রাষ্ট্রপতি হতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সকল কর্মকর্তাকে এই আইন মেনে চলার জন্য আহবান করে।। ৬ই ডিসেম্বর, ২০১৭ এ ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং দূতাবাস স্থানান্তরের পরিকল্পনা শুরুর নির্দেশ প্রদান করেন। তবে, উক্ত ঘোষণার পরপরই ট্রাম্প দূতাবাস আইনের স্থগিতাদেশে স্বাক্ষর করেন যা আইনত ছয় মাসের জন্য দূতাবাস স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করবে। বিধিঅনুসারে, দূতাবাস আইনের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত না হয়েই, দুতাবাসটি যেকোনো সময়ই স্থানান্তর করা যাবে।

২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তে ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস- জেরুসালেমের আরনোনায়, তৎকালীন মার্কিন কনস্যুলেট-জেনারেলের কনস্যুলার সেবাপ্রদান সাইটে পুনরায় খোলা হবে। ইসরায়েলের ৭০তম স্বাধীনতা দিবসের সাথে মিল রেখে ১৪ই মে,২০১৮ মার্কিন দূতাবাসটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানান্তর করা হয়।

পটভূমি[সম্পাদনা]

জেরুসালেম ইহুদি, খ্রিস্টান, এবং ইসলাম ধর্মগুলির পবিত্র স্থান এবং ধর্মীয় স্থাপত্য বা সাইটগুলির মতো অনন্য আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ ধারণ করে।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিজয়ী ক্ষমতাগুলো একে "সভ্যতার পবিত্র বিশ্বাস" বলে আখ্যা দেয় এবং শর্ত দেয় যাতে বিদ্যমান অধিকার এবং দাবিসমূহ আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারে সংরক্ষিত থাকে।

জনগণের মতামত[সম্পাদনা]

ব্রুকিং ইন্সটিটিউশন কর্তৃক ২০১৭ সালের নভেম্বরে আয়োজিত এক ভোটে ২০০০জন প্রাপ্ত বয়ষ্ক এর মধ্যে ৬৩% আমেরিকানরা তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে স্থানান্তরের বিপক্ষে ভোট দেয় এবং ৩১% লোক তা সমর্থন করে। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ৮১% এর বিরুদ্ধে ছিল এবং ১৫শতাংশ তা সমর্থন করে । তাছাড়া রিপাব্লিকানদের মধ্যে ৪৪% এর বিরুদ্ধে ছিল এবং ৪৯% এটি সমর্থন করেছিল।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকান ইহুদী অপিনিয়নের এজেসি সমীক্ষা হয়। যা থেকে পাওয়া যায় যে ১৬% আমেরিকান ইহুদীরা জেরুসালেমে তাৎক্ষণিক দূতাবাস স্থানান্তরকে সমর্থন করে, ৩৬% ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সমোঝোতার পর তা স্থানান্তরের পক্ষে ভোট দেয়, ৪৪% দূতাবাস স্থানান্তরের বিপক্ষে ভোট দেয় এবং ৪% দ্বিধান্বিত ছিল।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]