ব্যবহারকারী:DelwarHossain/বদর দিবস

স্থানাঙ্ক: ২৩°৪৪′ উত্তর ৩৮°৪৬′ পূর্ব / ২৩.৭৩৩° উত্তর ৩৮.৭৬৭° পূর্ব / 23.733; 38.767
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বদর দিবস
১৭তম রমজান
অন্য নামবদর যুদ্ধের দিন
পালনকারীমুসলিম বিশ্ব
ধরনইসলামিক
তাৎপর্যমুলসমানদের প্রথম যুদ্ধ বিজয়
উদযাপনমসজিদ ও মাদ্রসাগুলোতে দোয়া-আলোচনা সভা
তারিখ১৭ রমজান
সম্পর্কিতরমযান, বদর যুদ্ধ

১৭ মার্চ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ রমজান মদিনার মুসলমান ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের দিনকে বদর দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এ দিনে ইসলামের ইতিহাসে প্রথম ও প্রধান যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত বদরের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ঐতিহাসিক এ দিনটিকে মুসলিম সম্প্রদায় বদর দিবস হিসেবে পালন করে।[১]

বদরের যুদ্ধ[সম্পাদনা]

মক্কায় মুহাম্মদ (সা) ইসলাম প্রচার শুরুর পর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন শুরু হয় । পরে মুহাম্মাদ (সা) ও তার সাথীরা মদিনায় হিজরত করেন। হিজরতের পরে অবতীর্ণ কুরআনের আয়াতে মুসলিমদেরকে অস্ত্রধারণের অনুমতি দেয়া হয়। মদিনায় আসার পর মুহাম্মাদ (সা) তিনটি প্রধান সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যুদ্ধের পূর্বে ৬২৩ থেকে ৬২৪ সালের মধ্যে মুসলিম ও কুরাইশদের মধ্যে বেশ কিছু খন্ডযুদ্ধ হয়। সেগুলোর প্রভাবে বড়ধরনের যুদ্ধ হিসেবে বদর সংঘঠিত হয়। [২]

৬২৪ সালের জানুয়ারিতে (২ হিজরির রজম মাস) মুহাম্মাদ (সা) বারো জন মুহাজিরকে অভিযানে পাঠান। বাহিনীর প্রতি দুইজনের আরোহণের জন্য একটি উট বরাদ্দ ছিল। মুহাম্মাদ (সা) বাহিনীর নেতা আবদুল্লাহ ইবনে জাহশকে একটি চিঠি দিয়ে বলেন যাতে দুই দিনের পথ অতিক্রম করার পর এই চিঠি পড়া হয়। নির্দেশ মোতাবেক দুইদিনের পথ অতিক্রম করার আবদুল্লাহ ইবনে জাহশ চিঠি পড়েন। এতে নির্দেশ দেয়া হয় যে চিঠি পড়ার পর যাতে তারা অগ্রসর হয়ে মক্কা ও তাইফের মধ্যবর্তী নাখলায় পৌছায়। এরপর কুরাইশ কাফেলার আগমনের অপেক্ষা করে এবং তাদের অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে মদিনায় অবহিত করা হয়। চিঠির নির্দেশ পড়ার পর তারা অগ্রসর হন। তবে পথিমধ্যে সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস ও উতবা ইবনে গাজওয়ানের উট হারিয়ে যায় ফলে তারা পিছিয়ে পড়েন।[২]

আবদুল্লাহ ইবনে জাহশ তার বাহিনীকে নিয়ে নাখলা পৌছে একটি কুরাইশ কাফেলা দেখতে পান। এতে আবদুল্লাহ ইবনে মুগিরার দুই ছেলে উসমান ইবনে আবদুল্লাহ ও নওফাল ইবনে আবদুল্লাহ এবং মুগিরার মুক্তপ্রাপ্ত দাস আমর ইবনে হাদরামি ও হাকিম ইবনে কাইসান ছিলেন। এই দিনটি ছিল রজব মাসের শেষ দিন। রজব যুদ্ধনিষিদ্ধ মাস ছিল তাই আক্রমণ করা সম্ভব ছিল না। অন্যদিকে মাস শেষ হওয়ার সময় দিলে কাফেলাটি মক্কার হারাম সীমানায় প্রবেশ করবে ফলে তাদের উপর আর আক্রমণ করা সম্ভব হবে না। এই পরিস্থিতিতে মুসলিম বাহিনীটি কাফেলা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। আক্রমণের শুরুতে তীরের আঘাতে আমর ইবনে হাদরামি নিহত হন। মুসলিমরা উসমান ইবনে আবদুল্লাহ এবং হাকিম ইবনে কাইসানকে গ্রেপ্তার করে। নওফাল ইবনে আবদুল্লাহ পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।[২]

রজব মাসে আক্রমণ করার কারণে মুসলিম দলটি ফিরে আসার পর মুহাম্মাদ (সা) ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন যে তিনি তাদের হারাম মাসে যুদ্ধের অনুমতি দেননি। তিনি কাফেলা থেকে অর্জিত সম্পদ এবং বন্দীদের গ্রহণে অসম্মতি জানান।[২] অন্যদিকে রজব মাসে আক্রমণের কারণে কুরাইশরাও মুসলিমদের কটুক্তি করতে শুরু করে।এরপর কুরআনের অবতীর্ণ আয়াতে বলা হয় যে পবিত্র মাস লঙ্ঘন করার চেয়ে মক্কার লোকেদের অত্যাচার আরো বেশি নিকৃষ্ট।[২] এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর মুহাম্মাদ (সা) কাফেলা ও বন্দীদেরকে গ্রহণ করেন। উসমান ও হাকিমের মুক্তি চেয়ে কুরাইশরা বার্তা পাঠায় এবং বিনিময় হিসেবে পণ্য প্রদানের কথা বলে। কিন্তু ইতিপূর্বে নিখোজ হওয়া সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস ও উতবা ইবনে গাজওয়ান তখনও ফিরে আসেননি। কুরাইশদের হাতে তাদের জীবনের আশঙ্কা থাকায় তিনি সেসময় প্রস্তাবে রাজি হননি। এরপর তারা দুইজন ফিরে আসেন এবং পণ্য গ্রহণ করে বন্দীদের মুক্তি দেয়া হয়। বন্দীদের মধ্যে হাকিম ইবনে কাইসান ইসলাম গ্রহণ করে মদিনায় থেকে যান। পরবর্তীতে বিরে মাউনায় তিনি নিহত হয়েছিলেন। উসমান ইবনে আবদুল্লাহ মক্কা চলে যান।

ইতিপূর্বে গাজওয়ায়ে উশাইরা থেকে বেঁচে যাওয়া কুরাইশ কাফেলাটি সিরিয়া থেকে মক্কা ফেরার সময় মুহাম্মাদ (সা) তাদের তথ্য সংগ্রহের জন্য তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহসাইদ ইবনে জাইদকে উত্তরে প্রেরণ করেন। তারা হাওরা নামক স্থানে পৌছে কুরাইশ কাফেলার অপেক্ষায় থাকেন এবং কাফেলা এই স্থান অতিক্রমের সময় তারা মদিনায় ফিরে ঘটনা অবহিত করেন। কাফেলাটিতে একহাজার উট এবং এসব উটে ৫০,০০০ স্বর্ণমুদ্রা মূল্যের মালামাল ছিল। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাফেলায় রক্ষী ছিল ৪০জন।[২]

এই কাফেলায় আক্রমণের জন্য মুহাম্মাদ (সা) মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানান। তবে পরবর্তীতে বৃহদাকার কুরাইশ বাহিনীর সম্মুখীন হতে হবে এমন আশঙ্কা তখনও ছিল না তাই তিনি এতে সকলের অংশগ্রহণ জরুরি বলে উল্লেখ করেননি। ফলে অনেক মুসলিম মদিনায় থেকে যায়। ঘোষণার পর মুহাম্মদ (সা) বদরের দিকে যাত্রা করেন।[২]

দিবস ঘোষণা[সম্পাদনা]

বিভিন্ন দেশে পালন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. The Sealed Nectar, Page 274
  2. (বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ (স:)-এর বিশ্বখ্যাত জীবনী গ্রন্থ), আর্-রাহীকুল মাখতূমলেখক- আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরী (রহ.) (বাংলা চতুর্থ সংস্করণ সংস্করণ)। তাওহীদ পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ৫৫৯। আইএসবিএন 9789848766064