মুদ্দুপালানি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুদ্দুপালানি
জন্ম১৭৩৯
নাগবাশ্রম, তাঞ্জাবুর জেলা
মৃত্যু১৭৯০
পেশানর্তকী
ভাষাতেলুগু
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিরাধিকা-শান্তভানম ("তৃপ্ত রাধা")
সঙ্গীপ্রতাপ সিং
আত্মীয়পিতামহী - তাঞ্জানায়কি, পিতা - মুথ্যালু, মাতা - রমা ভাধুতি
তাঞ্জোর নায়ক রাজ্য

'মুদ্দুপালানি একজন তেলুগু কবিদেবদাসী ছিলেন। তিনি জন্ম নিয়েছিলেন তাঞ্জোর রাজ্যে। কিছু ঐতিহাসিক তাঁর জীবনকাল ১৭৩৯-৯০ বলে উল্লেখ করেছেন ও তাঁর জন্ম বর্তমান তাঞ্জাবুর জেলার নাগবাশ্রমে বলে উল্লেখ করেছেন।[১] তিনি একজন কবি ও পণ্ডিত ছিলেন। তিনি তাঁর প্রেমমূলক মহাকাব্য রাধিকা শান্তভানম এর জন্য বিখ্যাত।

জীবনী[সম্পাদনা]

তাঞ্জাবুরের প্রতাপ সিং

মুদ্দুপালানি তেলুগু ও সংস্কৃত ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি একজন নর্তকী ও দেবদাসী ছিলেন।[২]

মুদ্দুপালানি বিখ্যাত বারবণিতা তাঞ্জানায়কির নাতনি ছিলেন। যখন তাঞ্জানায়কি সংগীত পরিবেশন করতেন, তখন রাজদরবারের পণ্ডিত ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ তা বিমোহিত হয়ে শুনতেন। তিনি, তাঁর অসম্পর্কিত ভাই আয়অভয়ার একটি ছেলে ও একটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। তিনি ছেলেটিকে বড় করে তোলেন। ছেলেটির নাম রেখেছিলেন মুথ্যালু। মুথ্যালু বড় হলে তাঁকে আরেক মেধাবিনী সুন্দরী বারবণিতা রমা ভাধুতির সাথে বিয়ে দেন। মুথ্যালু প্রভু সুব্রহ্মণ্যর ভক্ত ছিলেন। তাঁদের প্রথম সন্তান মেয়ে হলে পালানি নগরের এক মন্দিরের নামের সাথে মিল রেখে মেয়েটির নাম রাখেন। নামের পূর্বে উপাধি যোগ করা দক্ষিণ ভারতের একটি সাধারণ রীতি। তিনি তাঁর মেয়ের নামের আগে মুদ্দু যোগ করেন। এমন মেধাবী, সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মেছিলেন মুদ্দুপালানি।[৩]

মুদ্দুপালানি প্রতাপ সিং এর সঙ্গিনী ছিলেন।[৪] প্রতাপ সিং কলার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাঁর পূর্ববর্তী শাসকেরাও কলার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। রঘুনাথ নায়কের (রাজত্বকাল ১৬০০-১৬৩৪) রাজদরবারে রামাভদ্রম্বামধুরবাণীর মত বিখ্যাত নারী কবি ও সংগীতজ্ঞ স্থান পেয়েছিলেন।

বারবণিতা হলেও মুদ্দুপালানি জ্ঞানার্জনে অনেক সময় দিয়েছেন ও সাহিত্যচর্চা করেছেন। তাঁর প্রতিভা আকৃষ্ট করেছিল সাহিত্যবিশারদদের।[৫]

তাঁর রচিত রাধিকা শান্তভানম তাঁর নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে ফুটিয়ে তুলেছে বলে মনে করা হয়।[৬] তাঁর জীবনী সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায় না।

তাঁর দাদি তাঞ্জানায়কিও রাজার সঙ্গিনী ছিলেন। মুদ্দুপালানি তাঁকে সরিয়ে রাজার সঙ্গিনী হিসেবে আসেন। এর কিছু বছর পর রাজা যখন পুনরায় তাঞ্জানায়কির প্রতি আকৃষ্ট হন, তখন মুদ্দুপালানি এতে ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন বলে বলা হয়ে থাকে। [৭]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

তাঁর রচিত সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম হল রাধিকা শান্তভানম। লেখনীটিতে খোলাখুলিভাবে রাধার সাথে কৃষ্ণর এবং কৃষ্ণর সাথে তাঁর পত্নী ইলার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ফুটে উঠেছে। লেখনীটিতে এছাড়াও ফুটে উঠেছে রাধার ঈর্ষার কথা।

লেখনীটি লেখার ধারণা পেয়েছিলেন তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে। একদিন তাঁর স্বপ্নে কৃষ্ণ এসে বিষয়টি নিয়ে লেখার নির্দেশ দেন।[৮] এরপর তিনি সেটা নিয়ে লেখা আরম্ভ করেন।

লেখনীটি বিংশ শতাব্দীতেও বিতর্ক ও অনুমোদনের বিষয় ছিল কেননা, লেখনীটিতে খোলাখুলিভাবে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে।[৯]

তিনি জয়দেবের লেখা একটি বিখ্যাত গ্রন্থ অষ্টপদী শিরোনামে তেলুগু ভাষায় অনুবাদ করেন।[১০][১১] এছাড়াও, তামিল ভাষায় আন্দাল কর্তৃক লিখিত বিষ্ণুর প্রশংসা সংবলিত গ্রন্থ থিরুপ্পাভাই তেলুগু ভাষায় অনুবাদ করেন।[১২]

তিনি সপ্তপদালু নামে সাতটি বাক্যের এক ধরনের গান নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন।[১৩] বর্তমানে 'সপ্তপদালু' রচিত হয় না।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Muddupalani. (2011). Radhika Santwanam—The Appeasement of Radhika. Trans. Sandhya Mulchandani. New Delhi: Penguin, p. xi.
  2. Pran Nevile, "The courtesan was also a scholar", The Tribune, 12 December 1999, accessed 8 December 2010; Paromita Bose, ‘"Devadasi" Reform in Colonial South India: The Case of Radhika Santwanam ’, in Transcultural Negotiations of Gender, ed. by S. Bhaduri and I. Mukherjee (Springer India, 2016), pp. 115-21 (p. 116). DOI 10.1007/978-81-322-2437-2_11.
  3. Muddupalani. (2011). Radhika Santwanam—The Appeasement of Radhika. Trans. Sandhya Mulchandani. New Delhi: Penguin, pp. xi-xii.
  4. Muddupalani. (2011). Radhika Santwanam—The Appeasement of Radhika. Trans. Sandhya Mulchandani. New Delhi: Penguin, p. xii.
  5. Women Writing in India: 600 B. C. to the Present, ed. by Susie Tharu and K. Lalita, 2 vols (London: Pandora, 1991), I 6.
  6. Women Writing in India: 600 B. C. to the Present, ed. by Susie Tharu and K. Lalita, 2 vols (London: Pandora, 1991), I 117.
  7. Muddupalani. (2011). Radhika Santwanam—The Appeasement of Radhika. Trans. Sandhya Mulchandani. New Delhi: Penguin, pp. xii-xiii.
  8. Velcheru Narayana Rao and David Shulman, Classical Telugu Poetry: An Anthology, "Muddupalani", pp. 293-296
  9. Susie J. Tharu and Ke Lalita, Women Writing in India: 600 B.C. to the early twentieth century (Feminist Press, 1991; আইএসবিএন ১-৫৫৮৬১-০২৭-৮), pp. 116-119
  10. Luniya, Bhanwarlal Nathuram (১৯৭৮)। Life and culture in medieval India। Kamal Prakashan। পৃষ্ঠা 159। ওসিএলসি 5749542 
  11. Madhavananda, Swami; Majumdar, Ramesh Chandra (১৯৮২)। Great women of India। Advaita Ashrama। পৃষ্ঠা 338–339। ওসিএলসি 9702931 
  12. Paromita Bose, ‘"Devadasi" Reform in Colonial South India: The Case of Radhika Santwanam ’, in Transcultural Negotiations of Gender, ed. by S. Bhaduri and I. Mukherjee (Springer India, 2016), pp. 115-21 (p. 116). DOI 10.1007/978-81-322-2437-2_11.
  13. Women Writing in India: 600 B. C. to the Present, ed. by Susie Tharu and K. Lalita, 2 vols (London: Pandora, 1991), I 118.