অরুন্ধতী ঘোষ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অরুন্ধতী ঘোষ
ভিয়েনায় সিটিবিটি কূটনীতি এবং গণনীতি বিষয়ে বক্তৃতারত অরুন্ধতী ঘোষ,জুলাই, ২০১৩
ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি জেনেভা রাষ্ট্রসংঘ কার্যালয়
ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস
কাজের মেয়াদ
১৯৯৫ – ১৯৯৭
আরব প্রজাতন্ত্র মিশরের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত
কাজের মেয়াদ
১৯৯২ – ১৯৯৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৩৯-১১-২৫)২৫ নভেম্বর ১৯৩৯
মৃত্যু২৫ জুলাই ২০১৬(2016-07-25) (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাভারতীয়
প্রাক্তন শিক্ষার্থীলেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজ
পেশাকূটনীতিবিদ

অরুন্ধতী ঘোষ (জন্ম: ২৫ নভেম্বর, ১৯৩৯; মৃত্যু: ২৫ জুলাই, ২০১৬) একজন ভারতীয় কূটনীতিবিদ ছিলেন। তিনি জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘ কার্যালয়ে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন এবং ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে জেনেভা শহরে যে নিরস্ত্রীকরণের ওপর সম্মেলন হয়েছিল সেখানে কম্প্রিহেনসিভ নিউক্লিয়ার-টেস্ট-ব্যান ট্রিটি (সিটিবিটি) আলোচনায় অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ভারতীয় প্রতিনিধিদের তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[১] তিনি কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং মিশরের আরব প্রজাতন্ত্রে রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেছেন।

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

অরুন্ধতী ঘোষ মুম্বইতে বড়ো হয়েছেন এবং ক্যাথেড্রাল অ্যান্ড জন কন্নন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে তিনি কলকাতার লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজ থেকে স্নাতকোত্তীর্ণ হন এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা সমাপন করেন।

এক বিখ্যাত বাঙালি পরিবারের মেয়ে ছিলেন অরুন্ধতী। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রুমা পাল এবং প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সভাপতি ভাস্কর ঘোষের এক বোন ছিলেন তিনি।[২] সাগরিকা ঘোষ ছিলেন তার ভাইঝি এবং তার ভাইপো সঞ্জয় ঘোষ ছিলেন একজন সমাজকর্মী, যিনি ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে অসমে উলফা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হয়েছিলেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

অরুন্ধতী ঘোষের কর্মজীবনের সময়কালে তিনি অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ এবং নিউ ইয়র্কে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। এমনকি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় বাংলাদেশ সরকার নির্বাসনে থাকাকালীন সময়ে তিনিই ভারতের তরফে মৈত্রীর প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন।[৪]

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জেনেভায় অনুষ্ঠিত সিটিবিটি সম্মেলনে অরুন্ধতী ঘোষ ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান নিয়োজিত হয়েছিলেন। যে তিনটে মাত্র দেশ নিউক্লিয়র প্রযুক্তিতে উন্নত ছিল, তার মধ্যে এক প্রধান অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে ভারত এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিল এবং যদিও তখনো পরমাণু অ-বিস্তার চুক্তি (এনপিটি)-এর চৌহদ্দির বাইরে থাকা নিউক্লিয়র শক্তিধর হিসেবে অস্বীকৃত ছিল। বহুবিবৃত দীর্ঘস্থায়ী গৃহীত নীতি নিয়ে ভারত কয়েকটা দেশের পরমাণু অস্ত্র বাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাকে অস্বীকর করে, যেখানে সঙ্গতি থকা সত্ত্বেও অন্য কিছু দেশ সেগুলো সীমিত রাখার পক্ষে ছিল। অরুন্ধতী ঘোষ পশ্চিমী দেশের ভারতকে সিটিবিটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করানোর ব্যাপারে চাপ দেওয়াকে প্রতিরোধ করেছিলেন, এই উত্তেজনাপূর্ণ পদ্ধতিতে ভারতকে তার কীর্তিমান অবস্থানে অবিচল রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন।[৫]

যতদূর জানা যায়, তিনি ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অবসর-পরবর্তী কাজকর্ম[সম্পাদনা]

২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি নানা ধরনের কাজে সক্রিয়ভাবে নিজেকে নিযুক্ত রেখেছিলেন।[৬] ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি)-এর সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রসংঘ সেক্রেটারি জেনারেলের অ্যাডভাইসরি বোর্ড অন ডিসআর্মামেন্ট ম্যাটার্সের সদস্য ছিলেন[৭] ২০০৪ থেকে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কমিটি ফর ইকনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটসের ভারত থেকে তিনি সদস্য ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত তিনি ইন্সটিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস সংস্থার কার্যকরী পর্ষদের সদস্য ছিলেন। এছাড়া ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত অ-বিস্তার এবং নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্য ছিলেন।

পুরস্কার ও সম্মান[সম্পাদনা]

  • ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মার্চ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ফ্রেন্ডস অফ লিবারেশন ওয়ার অনার প্রদান।[৮]

উল্লেখসমূহ[সম্পাদনা]

  1. "Statement made by Ms. Arundhati Ghose, in the Plenary of the Conference on Disarmament on August 8, 1996"Federation of American Scientists। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  2. "Arundhati Ghose, Diplomat Who Played Decisive Role In India's Nuclear Future, Passes Away"First Post। ২৬ জুলাই ২০১৬। ২৭ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  3. "Terrorists, Human Rights and the United Nations"। South Asia Terrorism Portal। ১০ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৫ 
  4. Ghose, Arundhati। "Interview with Amb. Arundhati Ghose"Youtube। Friends of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  5. Subramanium, Chitra (৭ মে ২০১২)। "Smoking Guns: Eating Out Of A Foreign Hand"Outlook Magazine। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  6. "Former diplomat Arundhati Ghose passes away"Indian Express। ২৬ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  7. "Advisory Board on Disarmament Matters"United Nations Office for Disarmament Affairs। United Nations। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬ 
  8. "Awards Bestowed by Government of People's Republic of Bangladesh to Indian nationals" (পিডিএফ)। High Commission of India, Bangladesh। ১৬ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৬