পণ মৃত্যু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পণ মৃত্যু বলতে বোঝায়, যৌতুক বা পণ নিয়ে বিবাদের ফলে বিবাহিত মহিলার, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির ক্রমাগত হয়রানি ও অত্যাচারের স্বীকার হয়ে অথবা আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়ে মৃত্যু। এর মাধ্যমে মহিলার নিজের ঘর তার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা হয়ে দাঁড়ায়। পণ মৃত্যুর ঘটনা প্রধানত ভারত,[১] পাকিস্তান,[২] বাংলাদেশ[৩] এবং ইরানে[৪][৫] ঘটতে দেখা যায়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে সর্বোচ্চ ৮,৩৯১ টি পণ মৃত্যু সংঘটিত হয়েছল, অর্থাৎ প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে ১.৪ জনের মৃত্যু। ভারতে প্রতি বছর নারী হত্যার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই পণ মৃত্যুর ঘটনা, যা ১৯৯৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একটি স্থিতিশীল প্রবণতা হিসেবে দৃশ্যমান।[৬] জনসংখ্যার নিরীখে, পাকিস্তানে পণ মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ, প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে ২.৪৫ জনের মৃত্যু। সেখানে বছরে ২,০০০ টি পণ মৃত্যুর ঘটনা পাওয়া যায়।[৭][৮]

নারীর প্রতি সহিংসতার অনেকগুলো ধরনের মধ্যে একটি হলো পণ মৃত্যু, এর পাশাপাশি রয়েছে ধর্ষণ, ইভ টিজিং, নারী খৎনা, অ্যাসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি।

ভারত[সম্পাদনা]

পণ মৃত্যু, বিয়ের পর পরই যৌতুক নিয়ে অসন্তোষের কারণে কনের স্বামী ও স্বামীর পরিবার দ্বারা সংঘটিত হত্যা বা কনের আত্মহত্যার সাথে সম্পর্কিত। সাধারণত এটি স্বামীর পরিবারের ধারাবাহিক গৃহ নির্যাতনের একটি পরিসমাপ্তি হিসেবে সংঘটিত হয়।[৯][১০] অধিকাংশ পণ মৃত্যু ঘটে যখন যুবতী মহিলারা, হয়রানি এবং নির্যাতন সহ্য করতে অক্ষম হয়ে আত্মহত্যা করে। এই ধরনের আত্মহত্যার অধিকাংশই ঘটে গলায় দড়ি দেওয়া, বিষ খাওয়া অথবা গায়ে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে। অনেক সময় স্বামী অথবা শ্বশুরবাড়ির লোকেরা বধূকে আগুনে পুড়িয়ে মারে; একে বলে ব্রাইড বার্নিং বা পুড়িয়ে বধূ হত্যা এবং অনেক সময় সাজানোভাবে এটিকে আত্মহত্যা অথবা দুর্ঘটনা বলে চালাবার করা চেষ্টা হয়। ভারতীয় মহিলাদের পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে সাধারণত পণ সম্পর্কিত বিবাদের সাথে জড়িত বলেই ধারণা করে নেওয়া হয়।[১১] পণ মৃত্যুর ঘটনায়, খুন অথবা আত্মহত্যার জন্য স্বামীর পরিবার অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়।[১২]

দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ভারতে পণ মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে, সমগ্র ভারতে ১৮,২৩৩ টি পণ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল।[১] এর অর্থ প্রত্যেক ৯০ মিনিটে একজন বধূকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। পণ সম্পর্কিত বিবাদ, ভারতে প্রতি বছর প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে ১.৪ জনের মৃত্যু ঘটায়।[১৩][১৪][১৫]

১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে, ভারতীয় পুলিশ প্রদত্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর তারা ২,৫০০ এর বেশি, পুড়িয়ে বধূ হত্যার খবর পায়।[১৬] দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ভারতে প্রায় ৮,৩৩১ টি পণ মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।[১] পণ মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের (৭,১৪৬) তুলনায় ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে (৮,‌১৭২) ১৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল,[১৭] যে ১০ বছর সময়কালে ভারতের জনসংখ্যা ১৭.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।[১৮] এই পরিসংখ্যানের যথার্থতা সমালোচকদের কাছ থেকে ব্যাপক পর্যালোচনার স্বীকার হয়েছে, কেননা তাদের মতে পণ মৃত্যুর ঘটনা ধারাবাহিকভাবে অ-নথিভুক্তই থেকে যায়।[১৯]

কয়েক দশক ধরে ভারতীয় পণবিরোধী আইন চালু থাকা সত্ত্বেও সেগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ না-হওয়ায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল।[২০] ভারতে পণ মৃত্যু কোন নির্দিষ্ট ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।[২১]

নিষেধাজ্ঞা[সম্পাদনা]

১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দেরপণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন, বিয়েতে পণ নিবেদন, প্রদান অথবা গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে, যে আইনের সংজ্ঞায় "পণ" হলো বিবাহের সময় দাবিকৃত উপহার বা পূর্বশর্ত হিসাবে প্রদানকৃত। পূর্বশর্ত ব্যতীত প্রদানকৃত উপহার পণ হিসেবে গণ্য হয় না এবং তা আইনসিদ্ধ। পণ দাবি করা অথবা দেওয়া হলে ছ-মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে, অথবা  ৫,০০০ (US$ ৬১.১২) রুপি পর্যন্ত অর্থদণ্ড হতে পারে। এই পণবিরোধী আইন নানাভাবে পরিবর্তিত হয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কার্যকর হয়েছে।[২২] হত্যা এবং আত্মহত্যা বাধ্যতামূলকভাবে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির দ্বারা বিধিবদ্ধ হয়েছে।

ভারতীয় নারী অধিকার কর্মীরা পণ মৃত্যু রোধী আইন, যেমন পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন ১৯৬১ এবং আরো কঠোর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারা (১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে কার্যকর), এগুলোর পক্ষে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচারণা করেছেন।পারিবারিক নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে সুরক্ষা আইন, ২০০৫ (পিডব্লুডিভিএ) এর অধীনে একজন মহিলা পারিবারিক সহিংসতা সুরক্ষা কর্মকর্তার সহায়তায় পণ এর জন্য তার সাথে সংঘটিত হেনস্থার অবসান ঘটাতে পারেন। তবে, এই আইনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।[২৩]

যদিও কয়েক দশক ধরে ভারতীয় পণবিরোধী আইনগুলো চালু আছে, তথাপি এগুলো অকার্যকর বলেই সমালোচিত হয়েছে।[২০] পণ মৃত্যু এবং খুনের ঘটনা অরক্ষিতভাবে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে চলেছে এবং এগুলো যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ ঘটাচ্ছে।[২৪]

পাকিস্তান[সম্পাদনা]

পাকিস্তানে যৌতুক প্রদান ও প্রত্যাশা (দাহেজ নামে পরিচিত) সংস্কৃতির অংশ ও দেশের সকল অঞ্চলে প্রায় ৯৫ শতাংশ বিবাহের ক্ষেত্রেই কনের পরিবারের পক্ষ থেকে থেকে বরের পরিবারকে যৌতুক প্রদান করা হয়।[২৫]

কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে পণ মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান।[২৬][২৭][২৮] পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সময় থেকেই যৌতুক নিয়ে সহিংসতা এবং মৃত্যু ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে।[২৯][৩০][৩১] প্রতি বছর ২,০০০ এরও বেশি যৌতুক-সম্পর্কিত মৃত্যু ও প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে বার্ষিক ২.৪৫ মৃত্যুর হার নিয়ে, পাকিস্তানে পণ মৃত্যুর হার সর্বাধিক।[৩২][৩৩]

পাকিস্তানে পণ মৃত্যুর হার নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। কিছু মত অনুযায়ী, পাকিস্তানের আধিকারিকরা পণ মৃত্যু রেকর্ড করেন না এবং প্রকৃত মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তানে চুলার আগুনে নারীর দগ্ধ হওয়ার মোট গড় বার্ষিক হার প্রতি ১০০,০০০ জনের মধ্যে ৩৩ জন, যার মধ্যে ৪৯% ইচ্ছাকৃত অথবা গড় বার্ষিক হার প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে প্রায় ১৬ জন।[৩৪][৩৫][৩৬]

পাকিস্তানের যৌতুক ও বিবাহ উপঢৌকন (সীমাবদ্ধতা) বিল, ২০০৮, অনুযায়ী যৌতুকের সর্বোচ্চ সীমা ৩০,০০০ পাকিস্তানি রুপি ও উপহারের সর্বোচ্চ সীমা ৫০,০০০ পাকিস্তানি রুপি।[৩৭] আইনটি বরের পরিবার কর্তৃক যৌতুকের দাবিকে বৈধতা প্রদান করে ও বিয়েতে প্রকাশ্যে যৌতুক আদান প্রদানের সুযোগ তৈরি করে। তবে, এই আইন এবং ১৯৬৭, ১৯৭৬ এবং ১৯৯৮ এর অনুরূপ যৌতুক বিরোধী আইন, সেইসাথে ১৯৬৪ সালের পারিবারিক আদালত আইন অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলন কর্মীদের মতে, পুলিশ যৌতুক সম্পর্কিত পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ নিবন্ধন এবং এর জন্য মামলা করতে অস্বীকার করে থাকে।[৩৮]

পাকিস্তানের বিভিন্ন সামরিক ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার যৌতুক এবং ব্যয়বহুল ভোজের ঐতিহ্যগত প্রদর্শন (ওয়ালিমা) অবৈধ ঘোষণার চেষ্টা করেছে। এই ধরনের একটি প্রচেষ্টা ছিল ১৯৯৭ সালের আইন, ১৯৯৮ সালের অধ্যাদেশ (XV) এবং ১৯৯৯ সালের অধ্যাদেশ (III)। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে এগুলোর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। আবেদনকারী, ধর্মীয় শরিয়া আইনের অধীনে বেশ কয়েকটি হাদিস উদ্ধৃত করে দেখানোর চেষ্টা করেন যে ইসলাম ওয়ালিমা এবং তৎসম্পর্কিত প্রচলিত রীতিনীতিকে উৎসাহিত করে। আবেদনকারী দাবি করেছিলেন যে পাকিস্তান সরকারের এই আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা ইসলামি অনুশাসনের পরিপন্থী। পরিশেষে, সুপ্রিম কোর্ট এই আইন এবং অধ্যাদেশগুলোকে অসাংবিধানিক হিসেবে রায় দেয়।[৩৮]

বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে পণ কে বলা হয় যৌতুক এবং এটি নারী মৃত্যুর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যৌতুক সম্পর্কিত সহিংসতার কারণে প্রতি ১০০,০০০ মহিলার মধ্যে বছর প্রতি ০.৬ থেকে ২.৮ জন বধূর মৃত্যু হয়েছে।[৩৯][৪০] মৃত্যুর কারণের মধ্যে রয়েছে আত্মহত্যা, আগুন এবং অন্যান্য ধরনের গৃহ নির্যাতন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ১০ মাস সময়কালের মধ্যে যৌতুক সংক্রান্ত সহিংসতার শিকার ৪,৪৭০ জন নারী বা প্রতি বছর প্রায় ৭.২ জন নারী যৌতুক সম্পর্কিত সহিংসতার শিকার হয়েছেন।[৩]

ইরান[সম্পাদনা]

পণ পারস্যের একটি প্রাচীন রীতি। ইরানে যৌতুক সম্পর্কিত সহিংসতা এবং মৃত্যুর খবর ইরানের সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে কিছু কিছু আবার ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।[৪১] ২০১৪ সালের একটি গবেষণায় ইরানে পণ মৃত্যুর উল্লেখ পাওয়া যায়।[৫] ২০১৮ সালের ইরানি চলচ্চিত্র "এন্ডলেস?" এ ইরানে নারীর পণ মৃত্যু জনিত ট্রমা প্রদর্শিত হয়েছে।[৪২]

নির্মূলে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা[সম্পাদনা]

পণ মৃত্যুর ঘটনা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং এই প্রথা রদ করার উদ্দেশ্যে একটি বিশ্বব্যাপী সক্রিয় আন্দোলন সংঘটিত করেছে। এই আন্দোলনবাদী সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিসংঘ, পণ মৃত্যুসহ নারীদের প্রতি বিভিন্ন সহিংসতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

জাতিসংঘ[সম্পাদনা]

জাতিসংঘ ১৯৪৫ সালে এর গঠনকাল থেকেই নারী অধিকারের প্রবক্তা হিসেবে কাজ করেছে। জাতিসংঘের সনদের প্রস্তাবনা,[৪৩] মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র (১৯৪৮ সালে গৃহীত),[৪৪] নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি[৪৫] (১৯৬৬ সালে গৃহীত), অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে[৪৬] (এটিও ১৯৬৬ সালে গৃহীত) (এই তিনটি নথি সম্মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক অধিকার আইন বা বিল অফ রাইটস হিসাবে পরিচিত)[৪৭] এবং নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদে[৪৮] (২০১২) নারী অধিকারের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্বব্যাপী শিশুদের জন্য উপলব্ধ শিক্ষার মান উন্নত করার দিকে প্রাধান্য দিলেও, পণ মৃত্যুর বিরুদ্ধেও একটি সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে। ২০০৯ সালের ৯ মার্চ (আন্তর্জাতিক নারী দিবস) ওয়াশিংটন ডিসি তে একটি সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান ভেনেমান প্রকাশ্যে পণ মৃত্যু এবং অপরাধীদের শাস্তিহীনতার বিচার ব্যবস্থার নিন্দা করেন।[৪৯] ইউনিসেফ লিঙ্গ সমতার জন্য ২০০৯ সালে তাদের প্রথম ও ২০১০ সালে দ্বিতীয় কৌশলগত অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা চালু করে। এই পরিকল্পনাগুলোর লক্ষ্য হল ইউনিসেফের সমস্ত আন্তর্জাতিক কার্যক্রম ও ক্রিয়ার মধ্যে লিঙ্গ সমতাকে উচ্চতর অগ্রাধিকার দেওয়া।[৫০]

বেসরকারী সংস্থা[সম্পাদনা]

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জনগণকে শিক্ষিত করার প্রচেষ্টায় পণ মৃত্যুকে বিশ্বব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সংঘটনের একটি প্রধান অবদানকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে।[৫১] এছাড়াও, তাদের বার্ষিক মানবাধিকার মূল্যায়নে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ভারতে পণ মৃত্যুর ঘটনার পাশাপাশি এর অপরাধীদের দায়মুক্তির জন্য ভারতের সমালোচনা করেছে।[৫২]

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, পণ মৃত্যু নিরোধে কোনও অগ্রগতি করতে না পারার জন্য ভারত সরকারের সমালোচনা করেছে এবং ২০১১ সালে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারতের নিষ্প্রভতা সম্পর্কেও সমালোচনা করেছে।[৫৩] ২০০৪ সালে, গ্লোবাল ফান্ড ফর উইমেন তার "নাও অর নেভার" তহবিল প্রকল্প চালু করে। এর মাধ্যমে তারা দেশীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহ করে ভারতীয় সহ বিশ্বজুড়ে নারীবাদী সংগঠনগুলির প্রচেষ্টার অর্থায়ন করার আশা করে। ২০০৭ সালের হিসাবে নাও অর নেভার তহবিল প্রায় ৭০ লক্ষ ডলার সংগ্রহ এবং বিতরণ করেছিল। [৫৪]

একটি অপেক্ষাকৃত ছোট সংস্থা, ভি-ডে, নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে নিজেকে উৎসর্গ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিভিন্ন সমাজ এবং কলেজ ক্যাম্পাসে নাটক, আর্ট শো এবং কর্মশালার মতো অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে, ভি-ডে তহবিল সংগ্রহ করে এবং পণ মৃত্যু সহ লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার বিষয়ে জনগণকে শিক্ষিত করে।[৫৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "National Crime Statistics (page 196)" (পিডিএফ)। National Crime Records Bureau, India। ২০১৩-০১-১৬। ২০১৪-০৬-২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০১-০২ 
  2. PAKISTAN: The social injustice behind the practice of dowry-when greed dictates society Asian Human Rights Commission (2014)
  3. UN Women, Bangladesh Report 2014-Annexes United Nations (May 2014) Table 6 page xiii
  4. Isfahan man kills daughter over inability to pay dowry Public Broadcasting Service, Washington DC (August 16, 2010)
  5. Kiani et al. (2014), A Survey on Spousal Abuse of 500 Victims in Iran, American Journal of Forensic Medicine and Pathology, 35(1):50-54, March 2014
  6. "Dowry Deaths Make Significant Share Of Female Killings In India: Report"NDTV.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৩ 
  7. Subhani, D., Imtiaz, M., & Afza, S. (2009), To estimate an equation explaining the determinants of Dowry, MePRC Journal, University of Munich, Germany
  8. Anderson, Siwan (2000), "The economics of dowry payments in Pakistan", Mimeo, Tilburg University Press, Center for Economic Research
  9. Jane Rudd, "Dowry-murder: An example of violence against women." Women's studies international forum 24#5 (2001).
  10. Meghana Shah, "Rights under fire: The inadequacy of international human rights instruments in combating dowry murder in India." Connecticut Journal of International Law 19 (2003): 209+
  11. Kumar, Virendra (ফেব্রু ২০০৩)। "Burnt wives"Burns29 (1): 31–36। ডিওআই:10.1016/s0305-4179(02)00235-8 
  12. Oldenburg, V. T. (2002). Dowry murder: The imperial origins of a cultural crime. Oxford University Press.
  13. Provisional 2011 Census Data, Government of India (2011)
  14. Crime statistics in India ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে, Government of India (2011)
  15. http://ncrb.nic.in/CD-CII2011/Statistics2011.pdf Crime statistics in India ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত জানুয়ারি ২৯, ২০১৩ তারিখে, Government of India (2011)
  16. Bride-burning claims hundreds in India: Practice sometimes disguised as suicide or accident CNN, August 18, 1996.
  17. "Point No.17, Dowry Deaths" (পিডিএফ)। ২০১১-০৬-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-১৪ 
  18. Decadal Growth Rates in India ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে Census of India, Government of India, New Delhi (2012)
  19. Caleekal, Anuppa। "Dowry Death"। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০৫ 
  20. Manchandia, Purna (২০০৫)। "Practical Steps towards Eliminating Dowry and Bride-Burning in India"। Tul. J. Int'l & Comp. L.13: 305–319। 
  21. June 30, David Devadas; June 30, 1988 ISSUE DATE:; November 28, 1988UPDATED:; Ist, 2013 13:45। "Dowry-related deaths break religious, caste and geographical barriers"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৫ 
  22. "Section 1-4, Dowry Act"indiacode.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৮ 
  23. Shalu Nigam (2019) Women and Domestic Violence Laws in India: A Quest for Justice https://www.amazon.in/Women-Domestic-Violence-Law-India/dp/1138366145
  24. Spatz, Melissa (১৯৯১)। "A "Lesser" Crime: A Comparative Study of Legal Defenses for Men Who Kill Their Wives"। Colum. J. L. & Soc. Probs.24: 597, 612। 
  25. "Zeba Sathar, Cynthia Lloyd, et al. (2001–2002) "Adolescents and Youth in Pakistan" (পিডিএফ)web.archive.org। ২০১৪-০৩-১২। Archived from the original on ২০১৪-০৩-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  26. Yasmeen, Samina (১৯৯৯)। "Islamisation and democratisation in Pakistan: Implications for women and religious minorities"South Asia: Journal of South Asian Studies (ইংরেজি ভাষায়)। 22 (sup001): 183–195। আইএসএসএন 0085-6401ডিওআই:10.1080/00856408708723381 
  27. "Ibraz, T. S., Fatima, A., & Aziz, N. (1993) "Uneducated and Unhealthy: The Plight of Women in Pakistan""web.archive.org। ২০১৪-১১-০৭। Archived from the original on ২০১৪-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  28. Niaz, Unaiza (২০০৪)। "Women's mental health in Pakistan"World Psychiatry3 (1): 60–62। আইএসএসএন 1723-8617পিএমআইডি 16633458পিএমসি 1414670অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  29. Hussain, R. (1999) "Community perceptions of reasons for preference for consanguineous marriages in Pakistan", Journal of Biosocial Science Vol.31 No.4 pp.449-461
  30. Shah, K. (1960). "Attitudes of Pakistani students toward family life", Marriage and Family Living Vol.22 No.2 pp. 156-161
  31. Korson, J. H., & Sabzwari, M. A. (1984). "Age and Social State at Marriage, Karachi, Pakistan 1961-64 and 1980: A Comparative Study", Journal of Comparative Family Studies 15(2), pp. 257-279.
  32. Operational Note: Pakistan ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে Refworld, A United Nations initiative (August 2011), see pages 16-21
  33. Imtiaz, Subhani, Muhammad; Sarwat, Afza (১০ এপ্রিল ২০১৮)। "To estimate an equation explaining the determinants of Dowry"mpra.ub.uni-muenchen.de। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০১৮ 
  34. Nasrullah; Muazzam (২০১০)। "Newspaper reports: a source of surveillance for burns among women in Pakistan"। Journal of Public Health32 (2): 245–249। ডিওআই:10.1093/pubmed/fdp102পিএমআইডি 19892782 
  35. Juliette Terzieff (October 27, 2002) "Pakistan's Fiery Shame: Women Die in Stove Deaths" WeNews, New York
  36. Miller, B. D. (১৯৮৪)। "Daughter neglect, women's work, and marriage: Pakistan and Bangladesh compared"]"Medical Anthropology8 (2): 109–126। ডিওআই:10.1080/01459740.1984.9965895পিএমআইডি 6536850 
  37. Ashraf Javed (June 9, 2013) "Done to a daughter over dowry" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-০৯-০১ তারিখে, The Nation (Pakistan)
  38. "Fight Against Dowry"web.archive.org। ২০১৪-১১-০৮। Archived from the original on ২০১৪-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  39. Huda, Shahnaz (২০০৬-১১-০১)। "Dowry in Bangladesh: Compromizing Women's Rights"South Asia Research (ইংরেজি ভাষায়)। 26 (3): 249–268। আইএসএসএন 0262-7280ডিওআই:10.1177/0262728006071707 
  40. "Women's Safety: Ghosts on the Prowl « Dhaka Courier"web.archive.org। ২০১৪-১১-০৯। Archived from the original on ২০১৪-১১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  41. "Isfahan man kills daughter over inability to pay dowry"www.webcitation.org। ২০১৪-১১-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  42. Correspondent, Loren King Globe; March 29; 2018; Comments, 4:19 p m Email to a Friend Share on Facebook Share on TwitterPrint this Article View। "Summiting Provincetown to address sexual harassment, racism, and pay disparity in the entertainment industry - The Boston Globe"BostonGlobe.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  43. "Charter of the United Nations: Preamble"web.archive.org। ২০১২-১০-০৫। Archived from the original on ২০১২-১০-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  44. "The Universal Declaration of Human Rights"www.un.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  45. "International Covenant on Civil and Political Rights"। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১০, ২০২১ 
  46. "International Covenant on Economic, Social and Cultural Rights"। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১০, ২০২১ 
  47. "International Law"www2.ohchr.org। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১০, ২০২১ 
  48. "CEDAW 29th Session 30 June to 25 July 2003"www.un.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  49. "Statement of UNICEF Executive Director Ann M. Veneman on International Women's Day"UNICEF। ২০১৭-০৬-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  50. "Gender equality"www.unicef.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  51. "Gender, Sexuality, & Identity"Amnesty International USA (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  52. "Countries"www.amnesty.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  53. "Human Rights Watch | Defending Human Rights Worldwide"web.archive.org। ২০১৪-১১-০৮। Archived from the original on ২০১৪-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  54. "Her Majesty Queen Noor and Nancy Pelosi Join GFW to Announce Endowment for the World's Women - Global Fund for Women"web.archive.org। ২০১৪-১১-০৮। Archived from the original on ২০১৪-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  55. "Dowery Deaths & Bride Burnings | V-Day: A Global Movement to End Violence Against Women and Girls Worldwide."web.archive.org। ২০১৩-০৬-০৩। Archived from the original on ২০১৩-০৬-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 

বিস্তারিত পঠন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]