ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামফ্রান্সিস আলফ্রেড টার‌্যান্ট
জন্ম(১৮৮০-১২-১১)১১ ডিসেম্বর ১৮৮০
ফিটজরয়, ভিক্টোরিয়া উপনিবেশ
মৃত্যু২৯ জানুয়ারি ১৯৫১(1951-01-29) (বয়স ৭০)
আপার হথর্ন, ভিক্টোরিয়া,
অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনলেফট-আর্ম স্লো-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কডব্লিউএ টার‌্যান্ট (কাকা)
এলবিএন টার‌্যান্ট (পুত্র)
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৯–১৯২৫ভিক্টোরিয়া
১৯০৩–১৯১৪এমসিসি
১৯০৪–১৯১৪মিডলসেক্স
১৯১৫–১৯৩৬ইউরোপিয়ান্স
১৯২৭–১৯৩৩পাতিয়ালা
আম্পায়ারিং তথ্য
টেস্ট আম্পায়ার২ (১৯৩৩–১৯৩৪)
এফসি আম্পায়ার৮ (১৯৩২–১৯৩৪)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩২৯
রানের সংখ্যা ১৭,৯৫২
ব্যাটিং গড় ৩৬.৪১
১০০/৫০ ৩৩/৯৩
সর্বোচ্চ রান ২৫০*
বল করেছে ৬৩,৫৩১
উইকেট ১,৫১২
বোলিং গড় ১৭.৪৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৩৩
ম্যাচে ১০ উইকেট ৩৮
সেরা বোলিং ১০/৯০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩০৩/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ৯ অক্টোবর ২০১৮

ফ্রান্সিস আলফ্রেড ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট (ইংরেজি: Frank Tarrant; জন্ম: ১১ ডিসেম্বর, ১৮৮০ - মৃত্যু: ২৯ জানুয়ারি, ১৯৫১) ভিক্টোরিয়ার ফিটজরয়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৮৯৯ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে ভিক্টোরিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। এ সুদীর্ঘ সময়ে ৩২৯টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও, কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেফট-আর্ম স্লো-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট

মেলবোর্ন থেকে আগত ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্টের খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শেফিল্ড শিল্ডে অংশগ্রহণকারী ভিক্টোরিয়ার পক্ষে খেলার মধ্যে দিয়ে। তবে চূড়ান্ত সফলতা পান ইংল্যান্ডে। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে মিডলসেক্সের অল-রাউন্ডার হিসেবে দীর্ঘকাল প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অধিকাংশ সময়েই ভারতে অবস্থান করেছিলেন। এ সময়ে ইউরোপিয়ান্সের পক্ষে বোম্বের চতুর্দেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে ৫৬ বছর বয়সে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও কয়েক মৌসুম পূর্ব থেকেই ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার দুইটি টেস্টে আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করাসহ অনেকগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় আম্পায়ারিত্ব করেন।

বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট পর্যায়ের খেলায় অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়নি তার। দীর্ঘদিনের খেলোয়াড়ী জীবনে প্রায় ১৮০০০ রান ও ১৫০০-এর অধিক উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে আট মৌসুমে ১০০০ রান ও ১০০ উইকেট লাভের ন্যায় ডাবল লাভে সক্ষমতা দেখিয়েছেন ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ভিক্টোরিয়ার সাবেক খেলোয়াড় অ্যামব্রোস টার‌্যান্টের ভাইপো তিনি। ১৮৯৮-৯৯ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। তবে, ১৯০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার হিসেবে খুব কমই সফলতার মুখ দেখেছেন।

তারপর ১৯০৩ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান। সেখানে লর্ডসের মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। এমসিসির পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশগ্রহণের পর মিডলসেক্সের পক্ষে খেলার যোগ্যতা লাভ করেন তিনি। এ সময়েই গড়মানের পেসের পাশাপাশি বামহাতি স্পিনার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন। তবে পিচের সহযোগিতা না পেলে তার কিছুই করণীয় থাকতো না। ১৯০৪ সালে খাঁটিমানের ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস ঘটান।

১৯০৫ সালে পূর্ণাঙ্গমানের ক্রিকেটার হবার পর মিডলসেক্সের অমূল্য সম্পদে পরিণত হন তিনি। বোলিং উপযোগী পিচে কুশলতার সাথে ব্যাটিং করে সকলের নজর কাড়েন। লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে নিশ্চিত পরাজয়বরণ করা থেকে দলকে ড্র করান। ১৯০৬ মৌসুমের অধিকাংশ সময়ই নিজ মাঠে ব্যাটিং উপযোগী পিচে তার বোলিং বেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। তবে, বৃষ্টিবিঘ্নিত ওল্ড ট্রাফোর্ডের মাঠে বেশ সফলতা পান এবং ইয়র্কশায়ারে প্রথমবারের মতো সহস্রাধিক রান তুলেন।

১৯০৭ সালে লর্ডসে নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ৯/৫৯ পান। কয়েকজন ব্যাটসম্যান তার বোলিং সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, এ জাতীয় চমৎকার বোলিং তারা কখনো দেখেননি। পুরো মৌসুমে তিনি ১৫.৭০ গড়ে ১৮৩ উইকেট ও ৩২ গড়ে ১৫৫২ রান তুলেছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাবর্তন[সম্পাদনা]

ঐ মৌসুমের শীতকালে ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। ছয় খেলায় অংশ নিয়ে ৭৬ গড়ে ৭৬২ রান তুলেন। তন্মধ্যে সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে ১৫৯ ও সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ২০৬ রান করেছিলেন।

১৯০৮ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে তাকে সর্বদাই বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিতি ঘটানো হতো। বিশ্বস্ত ফিল্ডার ও দক্ষতাসম্পন্ন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। পেলহাম ওয়ার্নারের সাথে অন্যতম সেরা উদ্বোধনী জুটি গড়েন। উইকেট সহযোগিতামূলক আচরণ করলে মৃত্যুদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ও ব্যতিক্রম হলে বেশ রান দিতেন।

১৯১১ সালে লর্ডসে সারের বিপক্ষে মিডলসেক্সের ইনিংস ঘোষণার প্রাক্বালে সত্তর মিনিটে ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন।

যুদ্ধ চলাকালীন ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট ভারতে ছিলেন। ম্যাটিং উইকেটে দূর্বল ব্যাটিংসমৃদ্ধ দলের বিপক্ষে তার বোলিংয়ের মোকাবেলা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। ১৯১৮-১৯ মৌসুমে এক ইনিংসে দশ উইকেটের সবগুলোসহ সেঞ্চুরি করার বিরল কীর্তিগাঁথা রচনা করেন। যুদ্ধের পর সফরকারী দল নিয় ভারত সফরে আসতেন। এ সময় খুব কমই ভারতের বাইরে তাকে খেলতে দেখা যেতো। তাস্বত্ত্বেও, ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমের শেষদিকে একটি খেলায় অংশ নিয়ে ৭৮ রান তুলেছিলেন। এ সময়ে তার বয়স ছিল সাতান্ন বছর। ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ডের সর্বপ্রথম দুই টেস্টে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও এমসিসি দলের ঐ সফরে বিভিন্ন খেলায় সাথে ছিলেন।

ফ্রাঙ্ক টার‌্যান্ট ও তার সন্তান লুইস টার‌্যান্ট এমসিসি ও দক্ষিণ পাঞ্জাবের মধ্যকার খেলায় একত্রে আম্পায়ার হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন যা বেশ দূর্লভ ঘটনারূপে বিবেচ্য। পরবর্তীকালে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে একত্রে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় উভয়ে অংশ নেন।

২৬ আগস্ট, ১৯০৯ তারিখে মিডলসেক্সের সদস্যরূপে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে খেলেন। ঐ খেলায় একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাট্রিকশুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেছিলেন তিনি।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]