আলবার্ট রেল্ফ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলবার্ট রেল্ফ
আনুমানিক ১৯০৫ সালে আলবার্ট রেল্ফ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম২৬ জুন, ১৮৭৪
বারওয়াশ, পূর্ব সাসেক্স, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৬ মার্চ, ১৯৩৭ (৫২ বছর)
ওয়েলিংটন কলেজ, বার্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৩ ৫৬৫
রানের সংখ্যা ৪১৬ ২২২৩৮
ব্যাটিং গড় ২৩.১১ ২৬.৭৯
১০০/৫০ -/১ ২৬/১১২
সর্বোচ্চ রান ৬৩ ১৮৯*
বল করেছে ১৭৬৪ ১০৮১৯৩
উইকেট ২৫ ১৮৯৭
বোলিং গড় ২৪.৯৬ ২০.৯৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১৪
ম্যাচে ১০ উইকেট ২৩
সেরা বোলিং ৫/৮৫ ৯/৯৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৪/- ৫৩৫/-
উৎস: ক্রিকইনফো, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আলবার্ট এডওয়ার্ড রেল্ফ (ইংরেজি: Albert Relf; জন্ম: ২৬ জুন, ১৮৭৪ - মৃত্যু: ২৬ মার্চ, ১৯৩৭) পূর্ব সাসেক্সের বারওয়াশ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯০৩ থেকে ১৯১৪ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন আলবার্ট রেল্ফ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

মাইনর কাউন্টিজে ২৫ বছর বয়সে নরফোকের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। এরপর সাসেক্স ক্লাবে যোগদান করে তাৎক্ষণিকভাবে সফলতার মুখ দেখেন। শুরুর দিকে ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে খেলতে দেখা যেতো। ১৯০৩ সালে তার বোলিংয়ের বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এ পর্যায়ে প্লাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ঐ সফরে দুই টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় আলবার্ট রেল্ফের। তন্মধ্যে, সিডনিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে টিপ ফস্টারের সাথে নবম উইকেট জুটিতে মূল্যবান ১১৫ রান তুলে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে আলবার্ট রেল্ফ বেশ স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আটবার সহস্রাধিক রান ও শতাধিক উইকেটে গড়া ডাবল লাভের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তন্মধ্যে ১৯১৩ সালে ১৮৪৬ রানের পাশাপাশি ১৪১ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। ফলশ্রুতিতে উইজডেনের ১৯১৪ সালের সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন। তার ব্যাটিংয়ের ধরন প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, উচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে তার শতরান করা নিয়ে প্রথম দর্শনে সন্দিহান হলেও বলকে ব্যাট স্পর্শের জন্য অপেক্ষা করতেন যা দেখতে তেমন সুন্দর ছিল না। তবে মৌসুমের পর মৌসুম যখন রান সংগ্রহের দিকে উত্তরণ ঘটাতে থাকেন তখন নিশ্চয়ই কেউ এতে দ্বিমত পোষণ করবেন না।[১]

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৩ টেস্টে অংশ নিয়েছেন। ১১ ডিসেম্বর, ১৯০৩ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে আলবার্ট রেল্ফের। ১৯০৫-০৬ ও ১৯১৩-১৪ মৌসুমে দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেছেন। এছাড়াও নিজ দেশে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একবার খেলেছেন।

লর্ডস টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার সংগৃহীত ৩৫০ রানের মধ্যে তিনি করেছিলেন ৫/৮৫। তবে সিডনি বার্নসকে সুযোগ দিতে সিরিজের বাদ-বাকি টেস্ট থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়। ১৯০৫-০৬ মৌসুমে জোহেন্সবার্গে সিরিজের প্রথম টেস্টে বল হাতে বেশ নাকানি-চুবানি খান। তার বলগুলো লেগের দিকে যেতে থাকে। ঐ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ে সক্ষমতা দেখায়। দলীয় অধিনায়ক ওয়ার্নার দীর্ঘশ্বাস ফেলে মন্তব্য করেছিলেন যে, আলবার্ট এ তুমি কি করছো?

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

১৯০৭-০৮ মৌসুম থেকে ১৯০৯-১০ মৌসুম পর্যন্ত অকল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪০-এর দশকে ড্যান রিস লিখেছিলেন যে, নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা ক্রিকেট কোচ ছিলেন তিনি তিনি খেলার ধরন প্রয়োগে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন ও খেলায় তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছিলেন।[২] এছাড়াও অকল্যান্ডের পক্ষে আটটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৫২.৭৫ গড়ে ৬৩৩ রান তুলেছিলেন ও[৩] ১১.৭৯ গড়ে ৫৩ উইকেট পেয়েছেন।[৪]

আলবার্ট রেল্ফের অংশগ্রহণকালীন সময়ে অকল্যান্ড দল প্লাঙ্কেট শীল্ডে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।[৫]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২১ সালে তিনি তার চূড়ান্ত মৌসুমে হরশ্যামে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৫৩ রান তুলেন। এ সময়ে ওয়েলিংটন কলেজে ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়া পিতার স্থলাভিষিক্ত হবার ফলে খেলায় অংশগ্রহণ স্তিমিত হয়ে আসে তার। পরবর্তীকালে মাইনর কাউন্টিজে বার্কশায়ারের পক্ষে খেলেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন আলবার্ট রেল্ফ। স্বীয় স্ত্রীর দীর্ঘকালীন অসুস্থতায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে বন্দুকের সাহায্যে আত্মহননের পথ বেছে নেন।[৬] মৃত্যুকালীন আনুমানিক £২০৮৮০ পাউন্ড-স্টার্লিংয়ের সম্পত্তি রেখে যান তিনি।[৭]

রবার্ট রেল্ফ ও আর্নেস্ট রেল্ফ নামীয় দুই কনিষ্ঠ ভ্রাতা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Cricketers of the Year 1914: Albert Relf. Espncricinfo.com. Retrieved on 1 June 2018.
  2. Dan Reese (1948) Was It All Cricket? George Allen & Unwin, London. p. 364.
  3. Albert Relf batting by team. Cricketarchive.com. Retrieved on 1 June 2018.
  4. Albert Relf bowling by team. Cricketarchive.com. Retrieved on 1 June 2018.
  5. "Cricketer's Death"New Zealand Herald। LXXIV (22709): 19। ২২ এপ্রিল ১৯৩৭। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ 
  6. Obituaries 1937. Wisden 1938
  7. Philip Thorn (১৯৯৪)। "Test cricketers' wills 1934 to 1960"The Cricket Statistician (87): 35–36। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]