আব্দুল করিম পাটওয়ারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আব্দুল করিম পাটওয়ারী
জন্ম১৯২৫
মৃত্যু২১ জানুয়ারি ২০০০
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত
 পাকিস্তান
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণরাজনীতিবিদ,
১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের সৈনিক,
মুক্তিযোদ্ধা
রাজনৈতিক দলমুসলিম লীগ
আওয়ামী লীগ
সন্তানপাঁচ ছেলে দুই মেয়ে
পিতা-মাতারৌশন আলী পাটওয়ারী (পিতা)

আব্দুল করিম পাটওয়ারী (১৯২৫ - ২১ জানুয়ারি ২০০০) বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা।[১][২] চাঁদপুর জেলার উন্নয়নে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্দুল করিম পাটওয়ারী ১৯২৫ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলা শহরের তালতলা পাটওয়ারী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতার নাম রৌশন আলী পাটওয়ারী।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

তিনি চাঁদপুর পৌরসভার প্রথম এবং দুইবারের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।[২] মেয়র থাকাকলীন তিনি চাঁদপুর পৌরবাসীর কাছে কর্মদক্ষতার কারণে বেশ সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে ছিলেন সৎ ও নিষ্ঠাবান। যার কারণে সকল রাজনৈতিকদের কাছে আদর্শবান রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিতি পান। তিনি তার কর্মজীবনে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। সাবেক চাঁদপুর মহকুমা রেডক্রস সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট, চাঁদপুর জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য ও কার্যকরী কমিটির সদস্য, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের চীফ ওয়ার্ডেন, চাঁদপুর জেলা কারাগারের অস্থায়ী পরিদর্শক, চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সদস্য, কচি-কাঁচার মেলা চাঁদপুর-এর প্রতিষ্ঠাতা, উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন ডায়াবেটিক সমিতি, মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, চাঁদপুর ফাউন্ডেশনের। এছাড়াও তিনি আরো অনেক সামাজিক উন্নয়ন সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

তিনি রাজনৈতিক জীবনে একজন সফল ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আর রাজনৈতিক জীবনেও ছিলেন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান। এক কথায় যাকে একজন রাজনৈতিক আইডল হিসেবে বলা যায়। পাকিস্তান শাসনামলে মুসলিম লীগে যোগদানের মাধ্যমে তিনি তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেন এবং ঐসময় বিডি মেম্বার ও এমপিএ ছিলেন।[২] পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঐ দলের রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। তিনি চাঁদপুর মহাকুমা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৭৩ সালে চাঁদপুর পৌরসভার প্রথম ও ১৯৭৩ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত একাধারে দুইবার পৌর মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন।[৩]

সমাজসেবা মূলক কাজ[সম্পাদনা]

তিনি তার কর্মব্যস্ততার মাঝেও বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি অনেক জায়গা দান করেছেন। তিনি বাসস্ট্যান্ড মসজিদে গোর-এ গরীবা’র প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি, আঞ্জুমানে খাদেমুল ইনসান চাঁদপুর-এর প্রতিষ্ঠাতা ও পাটওয়ারী বাড়ি জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং শহরের বিষ্ণুদী আজিমিয়া সপ্রাবি’র পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।[৩] এছাড়াও চাঁদপুরের প্রেসক্লাবটি তার দান করা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান[সম্পাদনা]

তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় চাঁদপুর জেলার ভাষা আন্দোলনের সংগঠকের দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।[২]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

আব্দুল করিম পাটওয়ারীর সম্মাননায় চাঁদপুর জেলা শহরের একটি সড়কের নামকরণ করা হয় আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়ক

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২০০০ সালের ২১শে জানুয়ারি ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "চাঁদপুর জেলা : প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৪ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  2. "করিম পাটওয়ারীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন"দৈনিক যুগান্তর - অনলাইন। ২৩ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. "সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"নাগরিক বার্তা - অনলাইন। ২১ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]