ম্যালকম হিল্টন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ম্যালকম হিল্টন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামম্যালকম জেমসন হিল্টন
জন্ম(১৯২৮-০৮-০২)২ আগস্ট ১৯২৮
চ্যাডারটন, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৮ জুলাই ১৯৯০(1990-07-08) (বয়স ৬১)
ওল্ডহ্যাম, গ্রেটার ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কজিম হিল্টন (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৫১)
১২ আগস্ট ১৯৫০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৭০
রানের সংখ্যা ৩৭ ৩৪১৬
ব্যাটিং গড় ৭.৪০ ১২.১১
১০০/৫০ –/– ১/৬
সর্বোচ্চ রান ১৫ ১০০*
বল করেছে ১২৪৪ ৫৫৩৬০
উইকেট ১৪ ১০০৬
বোলিং গড় ৩৪.০৭ ১৯.৪২
ইনিংসে ৫ উইকেট ৫১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৬১ ৮/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ২০২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ আগস্ট ২০১৮

ম্যালকম জেমসন হিল্টন (ইংরেজি: Malcolm Hilton; জন্ম: ২ আগস্ট, ১৯২৮ - মৃত্যু: ৮ জুলাই, ১৯৯০) ল্যাঙ্কাশায়ারের চ্যাডারটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] ১৯৫০ থেকে ১৯৫২ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি স্পিন বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন ম্যালকম হিল্টন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ল্যাঙ্কাশায়ারের চ্যাডারটন এলাকায় ম্যালকম হিল্টনের জন্ম। ১৯৪৫ সালে সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে ওয়েরনেথ ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। ১৯৪৬ সালে হোভে সাসেক্সের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। খেলায় তিনি অপরাজিত ২ রান ও একটি উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান।

১৯ বছর বয়সে মে, ১৯৪৮ সালে সফরকারী অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে ল্যাঙ্কাশায়ারের সদস্যরূপে খেলেন। খেলায় তিনি দুইবারই ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে বিদায় করে জাতীয় সংবাদপত্রগুলোয় প্রধান শিরোনামে চলে আসেন।[২]

তার প্রথম ১০ উইকেটই ছিল টেস্ট ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তাকে নিয়মিতভাবে খেলানো হয়নি। বিল রবার্টস ও এরিক প্রাইসের চলে যাবার পরি তিনি খেলার সুযোগ পান। ১৯৪৯ সালে মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে ১০৩ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯৫০ সালে প্রথম একাদশে স্থায়ীভাবে খেলতে নেমে ১৭ রানেরও কম খরচায় ১২৫ উইকেট পান।

১৯৫২ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার দল অনিশ্চয়তার দিকে ঝুঁকছিল। গৃহীত সিদ্ধান্তক্রমে হিল্টনকে প্রায়শঃই বব বেরি’র সাথে স্থান বিনিময়ে খেলতে হতো। এরফলে, উভয়ের খেলায় বিরূপ প্রভাব পড়ে।[৩] ১৯৫৩ সালে হিল্টন অনিয়মিতভাবে খেলায় অংশ নেন। কিন্তু, ১৯৫৪ সালের গ্রীষ্মের ভেজা সময়ে স্বরূপ ধারণ করে ৯৬ উইকেট তুলে নেন। ১৯৫৫ সালে প্রায়শঃই দলের বাইরে থাকা সত্ত্বেও ১০৪ উইকেট পান। এমনকি শেষদিকে ব্যাটিংয়ে নেমে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে একমাত্র শতক হাঁকান।

১৯৫৬ সালটি হিল্টনের সেরা মৌসুম ছিল। ঐ মৌসুমে তিনি ১৪৭টি উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান। ফলশ্রুতিতে উইজডেন কর্তৃক ১৯৫৭ সালের সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় অভিষিক্ত হন।

তবে, ১৯৫৭ সালে বলের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকেন। এরফলে দলের বাইরে তাকে রাখা হয় ও টমি গ্রীনহোকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। ১৯৫৮ সালে ৯৪ উইকেট নিয়ে নিজেকে তুলে ধরেন। তন্মধ্যে, নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৮/১৯। ১৯৫৯ সালের শুরুতে রয় ট্যাটারসল ও ম্যালকম হিল্টনকে বাদ দেয়া হয় এবং লেগ স্পিনার টমি গ্রীনহোকে দলে নিয়ে আসা হয়।

তিনি ও ট্যাটারসল ১৯৫০-এর দশকে কাউন্টি দলে অনবদ্য খেলা উপহার দেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে যৌথভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্য মনোনীত হন। ঐ খেলায় চুয়াত্তর হাজারের অধিক দর্শকের সমাগম ঘটে।

তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা জিম হিল্টন কিছু সময়ের জন্য ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ও পরবর্তীকালে সমারসেটের পক্ষে খেলেছেন। ১৯৫৬ সালে ওয়েস্টন-সুপার-মেয়ারে ম্যালকম হিল্টন ১৪টি সমারসেটের ও জিম হিল্টন ৮টি ল্যাঙ্কাশায়ারের উইকেট লাভে সবিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন।

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ঘরোয়া ক্রিকেটে সফলতার প্রেক্ষিতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে খেলার জন্য মনোনীত হন। ১২ আগস্ট, ১৯৫০ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। তবে, খেলায় তেমন সফলতা পাননি। অত্যন্ত দৃঢ়প্রত্যয়ী মনোভাব নিয়ে ১৯৫১ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেন।[৪] হেডিংলির নিষ্প্রাণ পিচে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩/১৭৬ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।

পরবর্তী শীতকালে ভারত গমন করেন। এ সফরে তার ভূমিকা নিয়ে উইজডেন সমালোচনা করে যে, ভারতীয় পিচে তিনি নিজেকে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাস্বত্ত্বেও, কানপুরে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে নয় উইকেট দখল করেন। ল্যাঙ্কাশায়ারীয় দলীয় সঙ্গী ও অফ স্পিনার রয় ট্যাটারসলকে সাথে নিয়ে দলের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেন।

ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান তার সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, এ শতাব্দীতে ল্যাঙ্কাশায়ারের সেরা বামহাতি স্লো বোলার হিসেবে তিনি প্রভূতঃ সুনাম কুড়িয়েছেন। ২২ বছর বয়সে টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হন। দৃশ্যতঃ স্থায়ীভাবে এ স্থানের যোগ্য হলেও অন্য স্পিনারদের দাপটে তাকে এ স্থান পরিত্যাগ করতে হয়েছিল।

এছাড়াও, দলীয় সঙ্গীদের অভিমত, তিনি ক্রিকেটকে সঠিকভাবে উপভোগ করতে পারেননি। তাস্বত্ত্বেও ১০০৬টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১৯ গড়ে রান দিয়ে।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৫৯ সালে গ্রীষ্মের মরা পিচে হিল্টনের যাত্রা তেমন ভালো হয়নি। ফলশ্রুতিতে গ্রীনহাউকে নীতিনির্ধারকমণ্ডলী অগ্রাধিকার দেন।[৫] তবে কেউই খেলায় অংশগ্রহণ করেননি। ১৯৬১ সালে শেষ মুহুর্তে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে এজবাস্টনে খেলার জন্য তাকে ডাকা হয়। এটিই তার সর্বশেষ খেলায় অংশগ্রহণ ছিল। খেলায় তিনি ২২ ও ২ রান তুলেছিলেন। তবে, প্রথম ইনিংসে রে হিচককের কাছে বেশ নাকানিচুবানি খান ও চার ওভারে ২৬ রান দিয়েছিলেন।

১৯৬১ সালে চার্চের পক্ষে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সংরক্ষিত খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৬২ ও ১৯৬৩ সালে বার্নলের পক্ষে ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে খেলেন।[৬] পরবর্তীকালে চার্চের অধিনায়কত্ব করেছিলেন ম্যালকম হিল্টন।

৮ জুলাই, ১৯৯০ তারিখে ৬১ বছর বয়সে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের ওল্ডহ্যামে ম্যালকম হিল্টনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 90আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Brightly Fades The Don – Jack Fingleton(1949)
  3. John Kay in Lancs summary Playfair CA 1953 & 1954
  4. Wisden 1952
  5. Cricketer Winter Annual 1959
  6. League Reports by G Brooking (The Cricketer 1962)

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]