ফ্রেড বেকওয়েল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফ্রেড বেকওয়েল
ক্রিকেট তথ্য
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬০)
২৭ জুন ১৯৩১ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২০ আগস্ট ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৮ - ১৯৩৬নর্দাম্পটনশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৫০
রানের সংখ্যা ৪০৯ ১৪,৫৭০
ব্যাটিং গড় ৪৫.৪৪ ৩৩.৯৬
১০০/৫০ ১/৩ ৩১/৭৪
সর্বোচ্চ রান ১০৭ ২৫৭
বল করেছে ১৮ ১,৬০১
উইকেট ২২
বোলিং গড় - ৫৭.৭৭
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ০/৮ ২/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/০ ২২৫/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ এপ্রিল ২০১৮

আলফ্রেড হেনরি বেকওয়েল (ইংরেজি: Fred Bakewell; জন্ম: ২ নভেম্বর, ১৯০৮ - মৃত্যু: ২৩ জানুয়ারি, ১৯৮৩) স্টাফোর্ডশায়ারের ওয়ালসল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৩১ থেকে ১৯৩৫ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন ফ্রেড বেকওয়েল

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯২৮ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। এসেক্সের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত অভিষেক খেলায় পাঁচটি ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে কাছাকাছি এলাকায় ফিল্ডিং করতেন ফ্রেড বেকওয়েল। এসেক্সের বিপক্ষে খেলায় আটটি ক্যাচ নিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালে সহস্রাধিক রান সংগ্রহ করেন। পরের বছর সমারসেটের বিপক্ষ চমৎকার ২০৪ রানের ইনিংস উপহার দেন। ১৯৩৩ সালে ফ্রেড বেকওয়েল তার খেলোয়াড়ী জীবনের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। উপর্যুপরী দুই খেলায় নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। দর্শনীয় খেলার পাশাপাশি অসম্ভব ধরনের স্ট্রোক খেলেছিলেন।

১৯৩৫ সালে তার খেলার মান বেশ নিচের দিকে চলে যায়। দলকে তিনি মাত্র দুইবার ইনিংসে ৩০০ রানে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। তন্মধ্যে, ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে একটি খেলায় দলের ১৯৯ রানের বিপরীতে তার সংগ্রহ ছিল ১৪১ যা নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন। এরফলে ব্যাকওয়েল নিজের ক্রীড়াশৈলীকে ১৯৩৪ সালের পর্যায়ে নিয়ে যান।

নর্দাম্পটনশায়ারের অবস্থান ব্যাপকভাবেই তার উপর নির্ভরশীল ছিল। ইনিংস প্রতি ৪২ রান তুললেও অন্য কেউ ২৩-এর বেশি গড়ে রান তুলতে পারেননি। পরের বছর তার খেলায় উত্থান-পতন থাকলেও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপাধারী ডার্বিশায়ারের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণকে পাশ কাটিয়ে অপরাজিত ২৪১ রানের ইনিংস খেলেন। এরফলে তার দল খেলায় জয় পেয়েছিল।

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

পরের বছর জ্যাক হবস খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর বেকওয়েলকে সেরা উদীয়মান ও প্রতিশ্রুতিশীল উদ্বোধনী খেলোয়াড় হিসেবে অবিস্মরণীয় খেলোয়াড় হার্বার্ট সাটক্লিফের সাথে খেলতে দেখা যায়। ২৭ জুন, ১৯৩১ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে ফ্রেড বেকওয়েলের। রান আউটের দিক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেলেও দলে স্থায়ীভাবে আসন গড়তে পারেননি। তৃতীয় টেস্টে ম্যানি মার্টিনডেলের ফাস্ট বোলিং যথাযথভাবে মোকাবেলা করে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন যা তার একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল। ফলশ্রুতিতে ছয় টেস্টে অংশ নিয়ে রান গড়কে ৪৫-এ নিয়ে যান। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে ভারত ও সিলন গমন করেন। তবে, সেরা খেলা উপহার দিতে পারেননি। লেগ স্পিনে তার ভীষণ দূর্বলতা ছিল। এরফলে ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে বেশ ভালো করেন।

খেলার ধরন[সম্পাদনা]

তার দাড়ানোর ভঙ্গীমাটি ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বাধিক ‘দুই চোখা’ নীতি হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। ডান কাঁধটি মিড-অফের দিকে থাকতো এবং ব্যাটকে ধরার ভঙ্গীমা হাতলের শেষ প্রান্ত স্পর্শ করতো। সাধারণতঃ এ ধরনের দাড়ানোর বিষয়টি রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় দাড়ানো ব্যাটসম্যানকে দেখা যেতো। তবে, চমৎকারভাবে পায়ের কারুকাজের সংমিশ্রণে খেলতেন। অফ ব্রেকের বলকে মিডল স্ট্যাম্পে মোকাবেলা করতে ও শর্ট পিচের বলকে হুক করতেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৩৪ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[১] তিনি তার সময়কালে সর্বাধিক চিত্তাকর্ষক খেলোয়াড় হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন। কাউন্টি ক্রিকেটে বেশকিছু দূর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তবে দূর্ভাগ্যজনকভাবে কাউন্টি দল হিসেবে নর্দাম্পটনশায়ারে অবস্থানকালীন অধিকাংশ সময়েই বেশ দূর্বল দলের মর্যাদা পায়।

অবসর[সম্পাদনা]

সেরামানের খেলোয়াড় থাকা স্বত্ত্বেও ১৯৩৬ সালে গুরুতর গাড়ী দূর্ঘটনার কবলে পড়ে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।[২]

চেস্টারফিল্ডে ফিরতি খেলায় ডার্বিশায়ারের মোকাবেলা করতে গিয়ে ব্যাকওয়েল ও দলীয় সঙ্গী রেজিনাল্ড নর্থওয়ে ভ্রমণকালীন সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হন। নর্থওয়ে নিহত হন ও তিনি গুরুতর আঘাত পান। ডানহাতটি গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয় ও ১৯৩৭ এবং ১৯৩৮ সালে বৈদ্যুতিক শকসহ বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তিনি আর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিতে পারেননি। তবে, ১৯৩৯ সালের শেষদিকে কিছুটা আরোগ্য লাভ করেন। এরপর থেকেই জনসমক্ষ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।

২৩ জানুয়ারি, ১৯৮৩ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ডরসেটের ওয়েস্টবোর্ন এলাকায় ফ্রেড ব্যাকওয়েলের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Wisden Cricketers of the Year" (English ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  2. "Beloved Vic"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]