তারেক ফাতাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তারেক ফাতাহ
Tarek Fatah
জন্ম (1949-11-20) ২০ নভেম্বর ১৯৪৯ (বয়স ৭৪)
করাচী, সিন্ধু, পাকিস্তান
পেশারাজনৈতিক কর্মী, লেখক, মিডিয়া কর্মী
জাতীয়তাকানাডিয়ান
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকরাচী বিশ্ববিদ্যালয়
সময়কাল১৯৯৬- বর্তমান
বিষয়ধর্ম , রাজনীতি
সাহিত্য আন্দোলনধর্মনিরপেক্ষতা
দাম্পত্যসঙ্গীনার্গিস তাপাল
সন্তান২ জন
ওয়েবসাইট
tarekfatah.com

তারেক ফাতাহ (পাঞ্জাবী: ਤਾਰੇਕ ਫਤਹ) (জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৪৯) একজন কানাডিয়ান লেখক,[১] টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, ধর্মনিরপেক্ষ এবং উদারপন্থী কর্মী।[২] ফাতাহ কানাডিয়ান মুসলিম কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা এবং এর মুখমাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফাতাহ সমকামীদের অধিকার ও রাজনীতি থেকে ধর্মকে দূরে রাখার পক্ষে এবং শরিয়া শাসন ব্যবস্থার বিরোধী।

জীবনী[সম্পাদনা]

তারেক ফাতাহ ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের করাচীর একটি পাঞ্জাবি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যারা ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের পরে মুম্বাই হতে করাচিতে চলে আসে। তিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত বামপন্থী ছাত্রনেতা ছিলেন।[৩]

তিনি করাচী বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাণরসায়ন বিষয়ে স্নাতক পড়ে ১৯৭০ সালে করাচী সান পত্রিকায় যোগ দেন, এবং পাকিস্তানি টেলিভিশনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতেন।[৩] সে দুইবার সেনাবাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ হন। অবশেষে ১৯৭৭ সালে তাকে সেনা শাসক জিয়া-উল-হক তাকে সাংবাদিকতা হতে নিষিদ্ধ করেন।

তিনি পাকিস্তান ছেড়ে সৌদি আরবে চলে যান, পরে ১৯৮৭ সালে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।[৩]

তিনি নিজেকে পরিচয় দেন:

" আমি একজন পাকিস্তানে জন্ম নেয়া ভারতীয়, ইসলামে জন্ম নেয়া একজন পাঞ্জাবি; কানাডায় অভিবাসিত একজন ইসলামিক চেতনার, মার্ক্সবাদি যুবক।"

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

তিনি অন্টারিও নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এনডিপি) দলের হয়ে রাজনীতি করতেন। ফাতাহ ১৯৯৫ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নিলেও ব্যর্থ হন। পরে তিনি হাওয়ার্ড হ্যামটনের জন্য কাজ করেন।

২০০৬ সালের জুলাইয়ে তিনি লিবারেল পার্টি অফ কানাডার বব রাইকে সমর্থন দিয়ে এনডিপি থেকে পদত্যাগ করেন।

২০০৮ সালের ২ অক্টোবরে একটি সংবাদ সম্মেলনে ফাতাহ নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) -এর সমালোচনা করেন। ফাতাহ জানান তিনি ১৭ বছর ধরে এনডিপি সমর্থন করেছিলেন কিন্তু আর সেই দলের সাথে যুক্ত হতে পারেননি। এলেক্সে ম্যাকদোনের অধীনে ইসলামপন্থীরা দলে ঢোকা শুরু করে এবং জ্যাক লেটনেরন অধীনে তিনি তাদের "বন্যা" পার্টিতে দেখেছেন।

২০১১ সালে ফাতাহ জানান তিনি টুইটারে হুমকি পেয়েছেন।[৪] ফাতাহ টরন্টো পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে এবং ৫১ ডিভিশনের ২ জন পুলিশ অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ফাতাহ জানান সেই অফিসারদের মধ্যে একজন মুসলিম, যিনি এর পূর্ববর্তী মৃত্যুর হুমকি মধ্যে একটি তদন্ত বন্ধ করে এবং জানায় কোনো মৃত্যুর হুমকি নেই। ফাতাহ এই ঘটনায় টরন্টো পুলিশের সমালোচনা করেন।[৫]

২০১৫ সালে টরন্টো সান পত্রিকায় ফাতাহ লিখেন তিনি ২০১৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী স্টেফেন হার্পারকে ভোট দিতে যাচ্ছেন।[৬] ফাতাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বার্নি স্যান্ডার্স উভয়কেই সমর্থন করেছেন।[৭][৮]

দৃষ্টিভঙ্গি[সম্পাদনা]

দক্ষিণ এশিয়া[সম্পাদনা]

পাকিস্তান[সম্পাদনা]

পাকিস্তানকে সমালোচনা করে লেখালেখি করায় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে 'টরন্টো সান ' ওয়েবসাইট পাকিস্তানে ব্লক করা হয়, যেখানে ফাতাহ তার সম্পাদকীয় লেখতেন।[৯] এই খবরটি ফাতাহ নিজেই জানায় সবাইকে। এছাড়াও পাকিস্তানে তার বক্তৃতা নিষিদ্ধ করা হয়।[১০]

মধ্যপ্রাচ্য[সম্পাদনা]

ইসরাইল[সম্পাদনা]

২০১০ সালে টরন্টো স্টারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় ফাতাহ ইসরাইল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও জিয়নেজম বিশ্বাস করতেন, তবে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের অবৈধ ও অনৈতিক দখলদারিত্বের অবসান ঘটনার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি ফিলিস্তিনি ইস্যুতে দুই রাষ্ট্র তত্ব সমর্থন করতেন।[১১]

ইরাক[সম্পাদনা]

ইরাকে জর্জ ডব্লিউ বুশের অভিযানের প্রতি নিন্দা প্রকাশ করে ফাতাহ। ইরাক বিষয়ে ফাতাহ লিখেছেন যে "ইরানমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই একটি জাতি ধ্বংস করতে সাহায্য করেছে।"

ইসলাম এবং মুসলিম[সম্পাদনা]

ইসলামী মৌলবাদ[সম্পাদনা]

২০০২ সালে দ্য গ্লোব এ্যান্ড মেইলের আয়োজিত আলোচনা সভায় ফাতাহ দাবি করেন যে "আজকে যে ইসলামী চরমপন্থীতা আপনি দেখেন সেটি সৌদি ভিত্তিক জিহাদি গোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন থেকে উৎপন্ন হয় যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও সিআইএ অর্থায়ন করে সহায়তা করেছিল এবং আফগান যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে এদেরকে সহায়তা করে"[১২]

২০১৬ সালে তারেক ভারতে শরিয়াহ ব্যাংক ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিরোধিতা করেছিলেন।[১৩]

ফাতাহ সম্রাট তৈমুর লং- এর নামে নিজের সন্তানের নামকরনের সাইফ আলি খানকারিনা কাপুরের সমালোচনা করেন।[১৪]

কুরআনকে সমর্থন এবং শরিয়তের বিরোধিতা[সম্পাদনা]

ফাতাহ জোর দিয়ে বলেন যে, "বিষ কুরআন থেকে আসছে না, বরং অষ্টম ও নবম শতাব্দীর মানুষের বানানো শরিয়াত আইন এবং সেইসাথে বিংশ শতাব্দীতে সৌদি আরব এবং ইরান দ্বারা নির্মিত একটি কল।[১২]

বই[সম্পাদনা]

ফাতাহ 'চেসিং এ মেরাজ: দ্যা ট্র্যাজিক এলুজন অফ এন ইসলামিক স্টেট বই লেখেন', যা ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়। ২০১৬ সালে এর ২য় সংস্করন প্রকাশিত হয়।[১৫] ফাতাহ'র ২য় বই 'দ্যা জিউ ইজ নট মাই এনিমি: আনভেলিং দ্যা মিথস দ্যাট ফুয়েল মুসলিম এন্টি-সেমিজম ' ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রকাশ পায়।[১৬] বইটি ২০১০ সালেই বার্ষিক হেলেন এবং স্ট্যান ভাইন কানাডিয়ান সাহিত্য পুরস্কার লাভ করে রাজনীতি ও ইতিহাস বিভাগে।[১৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. An Indian born in Pakistan: Meet and chat with Tarek Fatah at Firstpost Salon this Thursday, Firstpost, 23 November 2015.
  2. Pakistani-Canadian liberal activist: “the niqab is an Islamo-fascist symbol” – CIJNews English
  3. Tarek Fatah, "Race and religion at the Liberal Party convention" Globe and Mail, December 6, 2006
  4. Tarek Fatah's threatening tweet By Joe Warmington, Toronto Sun, March 8, 2011.
  5. Tarek Fatah: Some death threats don’t count by Tarek Fatah, National Post, March 4, 2011.
  6. Tarek Fatah (2015-10-13). "Why this socialist will vote for Harper". Toronto Sun.
  7. Tarek Fatah (2016-03-01). "My 1st choice is @BernieSanders, but if he's not in the running, anyone but that crooked woman with a crooked laugh".
  8. Tarek Fatah (2016-08-16). "Trump's jihad against jihad deserves support". Toronto Sun.
  9. "Toronto Sun website blocked in Pakistan: Report". Express Tribune. 8 February 2013. Retrieved 17 June 2013.
  10. "'There is a mini-Pakistan growing in Delhi': Author Tarek Fateh speaks out after his lecture on Arafat is cancelled". Daily Mail. 13 April 2013. Retrieved 17 June 2013. No such ruling is known on Fatah in Pakistan.
  11. John Goddard (19 November 2010). "The Jew Is Not My Enemy: Tarek Fatah". Toronto Star.
  12. Fatah, Tarek (July 13, 2007). "The question of jihad". The Globe and Mail. Retrieved 10 October 2015.
  13. "RBI's idea to bring Sharia Banking into the fray is deeply flawed, writes Tarek Fatah".
  14. "Taimur is to India what Hitler is to Israel: Saif and Kareena, please pay attention".
  15. http://indianbooksandperiodicals.com/Indian_Politics_and_International_Relations/The_Tragic_Illusion_of_an_Islamic_State_2nd_Edition_[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  16. http://www.chapters.indigo.ca/books/Jew-Not-My-Enemy-Unveiling-Tarek-Fatah/9780771047831-item.html?ref=Search+Books%3a+%2527tarek+fatah%2527[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  17. Rahim, Abdur. Canadian Immigration and South Asian Immigrants. Xlibris Corporation. p. 328. ISBN 9781499058727.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]