জেমক মসজিদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুলতান আব্দুল সামাদ জামেক মসজিদ
মসজিদ জামেক সুলতান আব্দুল সামাদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
নেতৃত্বইমাম:উস্তাজ মোহাম্মদ ফয়সাল বিন টান মুত্তালিব (২০১০ - বর্তমান)
অবস্থান
অবস্থানকুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া
প্রশাসনকুয়ালালামপুর ইসলামী কাউন্সিল
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীইসলামী স্থাপত্য, মুরীশ স্থাপত্য, মুঘল স্থাপত্য
সম্পূর্ণ হয়১৯০৯
বিনির্দেশ
ধারণক্ষমতা১,০০০ [১]
মিনার২ টি

জেমক মসজিদ, আনুষ্ঠানিকভাবে সুলতান আবদুল সামাদ জেমক মসজিদ (মালয়: Masjid Jamek Sultan Abdul Samad, Jawi: مسجد جامع سلطان عبدالصمد) নামে ডাকা হয় । এটি মালয়েশিয়ায় কুয়ালালামপুরে প্রাচীনতম মসজিদগুলির একটি ।[২] এটি স্থানীয় ক্লাং এবং গম্বাক নামক নদীর মিলিত মোহনায় অবস্থিত । মসজিদটি জালান টন পিরাক এর অধিকারে রয়েছে । ১৯০৯ সালে নির্মিত এই মসজিদটির ডিজাইন করেন আর্থার বেনিনস হাবব্যাক । ইসলামী মুগল স্থাপত্যরীতিতে তৈরি এই মসজিদটি মালশিয়ায় ইসলামী ঐতিহ্যর এক অনন্য নিদর্শন । বর্তমানে মসজিদটি কুয়ালালামপুর ইসলামী কাউন্সিল পরিচালনা করে আসছে । মসজিদটিতে দুইটি বড় মূল মিনার রয়েছে , এছাড়াও কিছু ছোট ছোট মিনার রয়েছে ।

"জামেক" নাম মূলত মালয় ভাষা থেকে এসেছে, যার সমতুল্য আরবী শব্দ   (جامع), অর্থাৎ এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ উপাসনার (ইবাদাত) জন্য সমাবেত হয় । [৩] এটি স্থানীয়দের কাছে "শুক্রবার মসজিদ" (Friday Mosque) হিসাবেও পরিচিত । [৪]

ইতিহাস [সম্পাদনা]

গম্বাক এবং ক্লাং নদীর মিলিত স্থানে জামেক  মসজিদ

মসজিদটি ক্লাং এবং গোম্বাক নদীর মিলিত স্থানে এবং জেমক নামে একটি পুরনো মালয় সমাধির স্থানে অবস্থান । [৫][৬] জাভা স্ট্রিট এবং মালে স্ট্রিট এলাকায় মালয়েশিয়ার মাদ্রাসায় ইবাদাতের জন্য আরও কয়েকটি মসজিদ আগেও বিদ্যমান ছিল, কিন্তু জামেক মসজিদটি কুয়ালালামপুরে নির্মিত প্রথম একমাত্র বড় মসজিদ ছিল । ২৩ শে মার্চ, ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান স্যার আলাউদ্দিন সুলাইমান শাহের সুলতান কর্তৃক মসজিদটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় এবং ১৯০৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর সুলতান আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটি সকলের ইবাদাতের জন্য খুলে দেন । [৭][৮] জেমক মসজিদ নির্মাণের খরচ হয়েছে প্রায় $ ৩২,৬২৫, যা তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার হতে  মালে সম্প্রদায়ের  অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছিল । মসজিদটির স্থপতি ছিলেন আর্থার বেনিসন হাবব্যাক, যিনি ভারতীয় মুসলিম মুগল স্থাপত্য শৈলীর আদলে মসজিদটি ডিজাইন করেছিলেন।[৯] জামেক মসজিদ ১৯৬৫ সালে নির্মিত  কুয়ালালামপুরে প্রধান এবং জাতীয়  মসজিদ হিসেবে বিবেচিত হয় ।

মসজিদটি পরে অতিরিক্ত বাহ্যিক নির্মাণের সাহায্য আয়তন বাড়ানো হয়েছে।[১০] এই অতিরিক্ত বাহ্যিক নির্মাণের মাধ্যমে মূলত মসজিদটির সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে । ১৯৯৩ সালে ভারী বৃষ্টির কারণে মসজিদটির গম্বুজ ভেঙ্গে যায়, তবে পরবর্তীতে সময়ে এর মেরামত করা হয়েছে।

২৩ শে জুন, ২০১৭ তারিখে, মসজিদের পূর্বপুরুষ-সেলেনোরার সুলতান সুলতান শরফুদ্দীন ইদ্রিস শাহ সুলতান আব্দুল সামাদ-এর মসজিদটি সুলতান আবদুল সামাদ জামেক মসজিদ নামকরণ করেন । মসজিদটি মূলত যে জমির উপর নির্মিত তা সেলাঙ্গোর রাজ্যের  অংশ ছিল ।[১১]

আকৃতি[সম্পাদনা]

জামেক মসজিদটির মূল অংশ (বাম)

ইমাম ও জামেক মসজিদে মুহাদিন[সম্পাদনা]

ইমাম[সম্পাদনা]

  1. উস্তাজ হজ মুহম্মদ বিন আওয়ান বায়সার (১৯৭৬- ১৯৯৫ থেকে জেমক মসজিদের ইমামদের প্রধান) 
  2. উস্তাজ হজ আবদুল হালিম বিন ইয়াতীম (১৯৯০-বর্তমান) 
  3. উস্তাজ মোহাম্মাদ জামরী বিন শাফি (২০০৪-২০১৩) 
  4. উস্তাজ মোহাম্মদ ফয়সাল বিন তান মুত্তালিব (২০১০-বর্তমান থেকে জামেক মসজিদের ইমামদের প্রধান) 
  5. উস্তাজ মোহাম্মদ সাইফুল আযহার (২০১০ থেকে ২০১২ সালের জেমক মসজিদের ইমামদের প্রধান) 
  6. উস্তাজ মোহাম্মদ হায়মাম (২০১২) 
  7. উস্তাজ মোহাম্মদ সিকরি (২০১২-বর্তমান) 
  8. উস্তাজ আহমেদ ফেরদৌস (২০১৩ - ২০১৪) 
  9. উস্তাজ আব্দুল রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)

মুহাদিন[সম্পাদনা]

  1. উস্তাজ মোহাম্মদ আল-শাহাকফি (২০১১-২০১২) 
  2. উস্তাজ মোহাম্মাদ সিুকরি (ডিসেম্বর ২০১১-জুলাই ২০১২)
  3. উস্তাজ না আজহারউদ্দিন বিন আহমদ 
  4. উস্তাজ মোহাম্মদ ইজওয়ান বিন শরীফ ( ২০১৪ নভেম্বর পর্যন্ত) 
  5. উস্তাজ মোহাম্মদ হাফিজ (২০১২ সালের জুলাই থেকে)
  6. উস্তাজ মোহাম্মদ ফারহান (২০১১ সালের জুন থেকে)
  7. উস্তাজ আহমেদ সাঈতি (ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সাল থেকে)

আরও দেখুন [সম্পাদনা]

গ্যালারী [সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র [সম্পাদনা]

  1. Tariq, Qishin (২৩ জুন ২০১৭)। "KL's oldest mosque renamed Masjid Jamek Sultan Abdul Samad"। The Star Online। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৭ 
  2. "Jamek Mosque"Tourism Malaysia। ২৫ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৪ 
  3. "Masjid Jamek, a beautiful mosque surrounded by the city"Malaysia Travel Guide। ১৯ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  4. "Masjid Jamek: Friday Mosque"History Asia। ৩ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  5. J.M. Gullick (২০০০)। A History of Kuala Lumpur 1856-1939। The Malaysian Branch of the Royal Asiatic Society। পৃষ্ঠা 164। 
  6. Bavani M (১৩ এপ্রিল ২০১৬)। "Rock-solid proof of 200-year-old graves"The Star 
  7. Lam Seng Fatt (১৫ অক্টোবর ২০১১)। Insider's Kuala Lumpur (3rd Edn): Is No Ordinary Travel Guide. Open Your Eyes to the Soul of the City (3rd Revised সংস্করণ)। Marshall Cavendish International Asia Pte Ltd। পৃষ্ঠা 38–39। আইএসবিএন 9789814435390 
  8. "Masjid warga kota"Utusan Online। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ২১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  9. Malaysian Institute of Architects (২০০৭)। Architectural Heritage: Kuala Lumpur - Pre-Merdeka। Pertubuhan Akitek Malaysia। 
  10. Audrey Southgate, Gregory Byrne Bracken (১৫ জানুয়ারি ২০১৪)। A Walking Tour Kuala Lumpur (2nd সংস্করণ)। Marshall Cavendish Editions। আইএসবিএন 9789814516945 CS1 maint: Uses authors parameter (link)
  11. QISHIN TARIQ (২০১৭-০৬-২৩)। "KL's oldest mosque renamed Masjid Jamek Sultan Abdul Samad"The Star