আসাফ যেয়নালি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আসাফ যেয়নালি 
আসাফ যেয়নালির বাড়ি, বাকু 

আসাফ যেয়নালাবদিন অগলু যেয়নালি (আজারবাইজানিঃ Asəf Zeynallı) আবার মাঝে মাঝে উচ্চারিত হয় যেয়নাল্লি (৫ এপ্রিল ১৯০৯, দেরবেন্ট-২৭ অক্টোবার ১৯৩২, বাকু), ছিলেন একজন আজারবাইজানি সুরকার।

প্রাথমিক জীবন [সম্পাদনা]

আসাফ যেনালী উদ্যানরক্ষক যেনালাবদিন এবং তার স্ত্রী আসবান্দ এর তৃতীয় সন্তান। তার বাড়ি বিখ্যাত ডেরবেন্টের ঐতিহাসিক নার‍্যিন-কালা এর পরে অবস্থিত। তার জন্মের কয়েক দিনের মাথায় তার বাবা মারা যায় এবং তার মা আসবান্দ, একজন তাঁতী, হয়ে ওঠেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। এছাড়াও তিনি ছিলেন অপেশাদার সংগীতজ্ঞ,  গায়িকা এবং একর্ডিওন বাদক যা তার ছোট ছেলের গানের প্রতি ঝোঁকের অন্যতম উৎস। ১৯১৬ সালে, ৭ বছর বয়সী যেয়নালি ডেরবেন্ট রিয়ালস্খুলে যোগদান করে যা ছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং যেখানে তিনি গায়কদলের একজন সদস্য হয়ে ওঠেন। তিনি সেখানে সানাই বাজানো শেখাতেন মাঝে মাঝে আবার স্কুলের বাইরে শৌখিন পাবলিক ব্রাস ব্যান্ডের অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণ করতেন। ১৯২০ সাল, তার পরিবার আজারবাইজানের বাকুতে চলে আসে যেখানে যেয়নালি একটি মিলিটারি বিদ্যালয়ে তার পড়ালেখা চালিয়ে যান পাশাপাশি সেখানে তিনি ভেঁপু বাজানো শিখেন।   [১]

অবদান [সম্পাদনা]

১৯২৩ সালে, যেয়নালি নতুন প্রতিষ্ঠিত গানের কলেজে (যা পরবর্তীতে তার নামেই নামকরণ করা হয়) অংশগ্রহণ করেন যেখানে তিনি  বিশিষ্ট সুরকার উযেয়ির হাজিবেয়ভ এর অধীনে শিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখানে অধ্যায়নরত অবস্থাতেই তিনি তার প্রথম সুরের কাজ সম্পন্ন করেন যার শিরোনাম ছিল মাহিনি ("গান") এবং একটি ট্রাম্পেট বাজিয়ে তা পরিবেশন করেন। তার এই সুরের পরিবেশন অনেক বিখ্যাত গানের বিশেষজ্ঞ দ্বারা হৃদয়ঙ্গমিত হয় ফলে এই তরুণ সুরকার ঠিক করেন যে তিনি আনুষ্ঠানিক মার্চ- যেমন আঞ্চলিক আজেরি সুরের জন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করবেন।  হাজিবেয়ভ কর্তৃক অনুপ্রাণিত হয়ে, যেয়নালি আজারবাইজান স্টেট সংগীত শিক্ষালয় এ সুরকার প্রোগ্রামে যোগদান করেন এবং ১৯২৬ এ উক্ত কলেজ থেকে স্নাতক লাভ করেন। সংগীত রচনার পাশাপাশি, যেয়নালি আজেরি সঙ্গীত ইতিহাসের উপর নিবন্ধন লিখেন যেখানে তিনি প্রধানত হাজিবেয়ভের ঐতিহাসিক আজেরি ঢং এবং পশ্চিম ইউরোপীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের মিলকরণের পদ্ধতি তুলে ধরেন। ১৯৩০ এর প্রথমদিকে, তিনি সেসব বুদ্ধিজীবীদের একজন ছিলেন যাঁরা সোভিয়েতের নিষেধাজ্ঞা টার এর লক্ষ্যের বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯২৮ সাল থেকে সঙ্গীত শিক্ষালয় (কনজারভেটরি) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানে যেয়নালি শিক্ষা দান করেন। সেখানে তিনি সঙ্গীত তত্ত্ব পড়তেন (গারা গারায়েভ, জভদাথ হাজিয়েভ এবং তোফিগ গুলিয়েভ তার ছাত্র ছিলেন)। ১৯২৯ সালে তিনি সুরের কাজকর্মের শীর্ষে অবস্থান করেন। সেই বছরে তার কাজ গুলোর মধ্যে শিশুদের যন্ত্রসঙ্গীত, সমবেত বাদকদলের জন্য গারাবাঘ শিকাস্তাসি, এবং অন্যান্য আঞ্চলিক সুরে পশ্চিমা সরঞ্জাম যোগ করার জন্য কিছু সুর। ১৯৩১ সালে তিনি উক্ত শিক্ষালয় থেকে স্নাতক লাভ করেন এবং বাকু তুর্কিক লেবার থিয়েটারের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখানে তার প্রধান অবদান ছিল বিতর্কিত প্রজ্ঞাপনের জন্য রচিত সঙ্গীত সেভিল।১৯৩২ সালে থিয়েটারটি সফলতার সাথে সেন্ট পিটার্সবার্গ ট্যুর সম্পন্ন করে।     

আসাফ যেয়নালি ১৯৩২ সালে, ২৩ বছর বয়সে অসুস্থার কারণে মৃত্যুবরণ করেন, তাই তার পূর্ব পরিকল্পিত বাকুকে উত্‌সর্গ করার জন্য ঐকতান সঙ্গীত সুর করা হয়নি।   

বাকু'র আসাফ যেয়নালি মিউজিক স্কুল বর্তমানে তার নাম বহন করছে। 

তথ্যসূত্র [সম্পাদনা]

  1. (রুশ) Asaf Zeynally ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে. Axtar.az