কলিন ব্লাইদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কলিন ব্লাইদ
আনুমানিক ১৯০৫ সালে গৃহীত কলিন ব্লাইদের স্থিরচিত্র
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকলিন ব্লাইদ
জন্ম(১৮৭৯-০৫-৩০)৩০ মে ১৮৭৯
ডেপ্টফোর্ড, কেন্ট, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৮ নভেম্বর ১৯১৭(1917-11-08) (বয়স ৩৮)
পাসচেনডেল, বেলজিয়াম
ডাকনামচার্লি
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৩০)
১৩ ডিসেম্বর ১৯০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১১ মার্চ ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৯-১৯১৪কেন্ট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ৪৩৯
রানের সংখ্যা ১৮৩ ৪,৪৭৮
ব্যাটিং গড় ৯.৬৩ ৯.৮৭
১০০/৫০ ০/০ ০/৫
সর্বোচ্চ রান ২৭ ৮২*
বল করেছে ৪,৫৪৬ ১০৩,৭০৬
উইকেট ১০০ ২,৫০৬
বোলিং গড় ১৮.৬৩ ১৬.৮১
ইনিংসে ৫ উইকেট ২১৮
ম্যাচে ১০ উইকেট ৭১
সেরা বোলিং ৮/৫৯ ১০/৩০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/– ২০৬/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কলিন ব্লাইদ (ইংরেজি: Colin Blythe; জন্ম: ৩০ মে, ১৮৭৯ - মৃত্যু: ৮ নভেম্বর, ১৯১৭) ডেপ্টফোর্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ থেকে ১৯১৪ সময়কালে কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলেছেন। মূলতঃ স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলার ছিলেন ‘চার্লি’ ডাকনামে পরিচিত চার্লি ব্লাইদ

সচরাচর ১৯০০ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে তাকে অন্যতম সেরা বোলাররূপে বিবেচনা করা হতো। ১৯০১ থেকে ১৯১০ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে ১৯ টেস্টে অংশ নেন তিনি। ১৯০৪ সালের উইজডেন সংস্করণে তাকে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে মনোনীত করা হয়।[১][২]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন ও বেলজিয়ামের পাসচেনডেল এলাকার কাছে ৮ নভেম্বর, ১৯১৭ তারিখে ৩৮ বছর বয়সে তিনি নিহত হন। কেন্টের নিজ মাঠে ক্যান্টারবারির সেন্ট লরেন্স গ্রাউন্ডে ব্লাইদসহ বিশ্বযুদ্ধে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী ক্লাবের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকল্পে স্মারক প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হয়।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

ডেপ্টফোর্ড এলাকায় কলিন ব্লাইদের জন্ম। অ্যাঞ্জেল গ্রাউন্ডের টনব্রিজ নার্সারিতে অধ্যয়ন করেন তিনি। ১৮৯৯ সালে কেন্ট দলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। মাঠের বাইরে তিনি বেহালা বাজাতে পারতেন।

১৩ ডিসেম্বর, ১৯০১ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। সর্বশেষ টেস্ট খেলেন ১১ মার্চ, ১৯১০ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

বলের আচরণ ও স্পিনের ওপর পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ ছিল তার। সঠিক নিশানায় ক্রমাগত বোলিং করতে পারতেন। বল ছোঁড়ার পূর্ব-মুহূর্তে আঙ্গুলের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতেন। এরফলে বলটি অর্থোডক্স ব্রেক বা লেট ইনসুইঙ্গার হবে কি-না নির্ধারণ করতেন। পিচ সহায়ক বোলিং করতেন তিনি।[৩][৪]

অনুভূতিপ্রবণ ও শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গীর অধিকারী ছিলেন কলিন ব্লাইদ। বেহালায় তার সবিশেষ দক্ষতা ছিল। মৃগীরোগে আক্রান্ত হওয়া স্বত্ত্বেও আগস্ট, ১৯১৪ সালে ছড়িয়ে পড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। ১৯১৪ সালের শেষে ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা তিনি পূর্বেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।[৪] সেপ্টেম্বরে আকস্মিকভাবে মৌসুমের খেলা বন্ধ হয়ে গেলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের কথা ঘোষণা করেন।[৫]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

লিডস ও ইয়র্কশায়ার খনি এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠা কিংস অউন ইয়র্কশায়ার লাইট ইনফেন্ট্রি’র (কেওওয়াইএলআই) দ্বাদশ ব্যাটলিয়নে যোগ দেন।[৬] তিনি সার্জেন্ট পদবী ধারণ করেন। পাসচেনডেলের কাছে পাইমার্ন ও ফরেস্ট হলের মাঝামাঝি এলাকায় রেললাইনে কর্মরত অবস্থায় শত্রুর নিক্ষিপ্ত গোলা তার বুকে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।[৭]

বেলজিয়ামের ইপ্রেসের (ইপার) কাছে অক্সফোর্ড রোড কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন সিমেট্রিতে তাকে সমাহিত করা হয়। কেন্ট ও ইংল্যান্ডের সতীর্থ ফ্রাঙ্ক ওলি টনব্রিজ পারিশ চার্চে ব্লাইদের শবানুষ্ঠানে অংশ নেন। উত্তর টনব্রিজের একটি রাস্তা তার নামে নামাঙ্কিত হয়।[৪] সেন্ট লরেন্স গ্রাউন্ডে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাধির পশ্চিম পার্শ্বে খোদিত আকারে লেখা রয়েছে: ‘কেন্ট একাদশের কলিন ব্লাইদ ১৯১৪-১৮ সালে সংঘটিত যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন ও ১৮ নভেম্বর, ১৯১৭ তারিখে ইপ্রেসে নিহত হন। ৩৮ বছর বয়সে অপ্রত্যাশিতভাবে বিদায় নিলেও ঐ সময়ের সেরা বোলারদের একজন ছিলেন ও সতীর্থ ক্রিকেটারদের প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি।’ তবে তারিখটি ভুলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তার দেহাবসান ঘটেছে ৮ তারিখে।[৮]

২০০৯ সালে ফ্ল্যান্ডার্সের যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্রে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল পরিদর্শনে আসে। সেখানে তারা ব্লাইদের সমাধিতে পাথরে নির্মিত ক্রিকেট বল রেখে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে। তৎকালীন ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রস মন্তব্য করেন যে, ‘এটি গভীর আবেগময় মুহূর্ত ও দূর্দান্ত অভিজ্ঞতা।’[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Colin Blythe"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৭ 
  2. "Colin Blythe" (ইংরেজি ভাষায়)। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৭ 
  3. Barclay's, pp.156–157.
  4. "Tonbridge cricketers" (ইংরেজি ভাষায়)। Tonbridge Historical Society। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৭ 
  5. Scoble, p. 180.
  6. Scoble, p. 181.
  7. Scoble, pp. 185–186.
  8. Scoble, p. 8.
  9. "England pay respects in Flanders" (ইংরেজি ভাষায়)। BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]