রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা
জন্ম (1963-07-07) ৭ জুলাই ১৯৬৩ (বয়স ৬০)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনদিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার
কর্মজীবন১৯৮৬-বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
রং দে বাসন্তী (২০০৬)
ভাগ মিলখা ভাগ (২০১৩)
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা

রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা (জন্মঃ ৭ জুলাই, ১৯৬৩) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র হল অক্ষ (২০০১)। তার পরিচালিত অন্যান্য চলচ্চিত্রসমূহ হল রং দে বাসন্তী (২০০৬), দিল্লি-৬ (২০০৯), ভাগ মিলখা ভাগ (২০১৩) ও মির্জ্যা (২০১৬)। রং দে বাসন্তী (২০০৬) ও ভাগ মিলখা ভাগ চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনার জন্য তিনি দুইবার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রপরিচালক পুরস্কার লাভ করেন।[১]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

মেহরা ১৯৬৩ সালে ৭ জুলাই ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নতুন দিল্লির ক্লারিজেস হোটেলে কাজ করতেন।[২] তিনি নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১৯৮২ এশিয়ান গেমসে সাতারু হিসেবে নির্বাচিত ক্যাম্পেের অংশগ্রহণ করেন কিন্তু চূড়ান্ত পর্বে নির্বাচিত হন নি। মেহরা নতুন দিল্লির লোদী রোডের এয়ার ফোর্স বল ভারতী স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং পরে শ্রীরাম কলেজ অব কমার্সে ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়-এ পড়াশুনা করেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

মেহরা তার কর্মজীবন শুরু করে ইউরেকা ফোর্বস কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে। ১৯৮৬ সালে তিনি ফ্লিকস মোশন পিকচার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিজ্ঞাপন নির্মাতা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি কোকাকোলা, পেপসি, টয়োটা, আমেরিকান এক্সপ্রেস ও বিপিএলসহ বিভিন্ন ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক পণ্যের বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন। এছাড়া তিনি অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে নির্মিত সঙ্গীত ভিডিও "অ্যাবি বেবি" পরিচালনা করেন।

মেহরা পরবর্তীতে বিজ্ঞাপন নির্মাণ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণে মনোযোগ দেন। ২০০১ সালের জুনে তিনি তার কোম্পানি থেকে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অক্ষ নির্মাণ করেন। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন অমিতাভ বচ্চন। ছবিতে অমিতাভের অভিনয় সমাদৃত হলেও ছবিটি বক্স অফিসে তেমন ব্যবসা করতে পারে নি। মেহরা পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র রং দে বাসন্তী ২০০৬ সালে মুক্তি পায়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন আমির খানসোহা আলি খান। ভারতের দুর্নীতি নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি ভারতে হিট হয় এবং দেশের বাইরেও ভালো ব্যবসা করে। ছবিটি হিতকর বিনোদন প্রদানকারী শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে, শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য বাফটা পুরস্কার এর মনোনয়ন লাভ করে এবং সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে একাডেমি পুরস্কারের জন্য ভারতীয় নিবেদন হিসেবে নির্বাচিত হয়।[৪] মেহরা ছবিটি প্রযোজনা ও পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রপরিচালক পুরস্কার লাভ করেন।

মেহরা প্রযোজিত ও পরিচালিত পরবর্তী চলচ্চিত্র দিল্লি-৬ ২০০৯ সালে মুক্তি পায়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন অভিষেক বচ্চন, সোনম কাপুর, ও ওম পুরি। ছবিটি অভিনয়ের জন্য নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করে এবং বক্স অফিসে অসফল হয়। তিনি ২০১১ সালে তিন থে ভাই প্রযোজনা করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন মৃগদীপ লম্বা। এটি তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র।[৫] ছবিটি সমাদৃতও হয় নি, ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করে নি। পরবর্তীতে মেহরা মিলখা সিংয়ের আত্মজীবনীমূলক ভাগ মিলখা ভাগ (২০১৩) পরিচালনা করেন।[৬] এতে মিলখা সিংয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন ফারহান আখতার। ছবিটি হিতকর বিনোদন প্রদানকারী শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে এবং ছবিটির জন্য মেহরা ও ফারহান দুজনেই সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেন। মেহরা শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র একাডেমি পুরস্কার, স্ক্রিন পুরস্কার, স্টার গিল্ড পুরস্কারজি সিনে পুরস্কার লাভ করেন।

২০১৬ সালে মেহরা পাঞ্জবি বিয়োগান্তক প্রেমের গল্প মির্জা ও সাহিবা অবলম্বনে নির্মাণ করেন মির্জ্যা[৭] এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন হর্ষবর্ধন কাপুরসৈয়ামি খের। দুজনেরই এই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।[৮] এই চলচ্চিত্রে ২০০৭ সালের পর প্রথম চিত্রনাট্য রচনা করেন গুলজার[৯][১০]

চলচ্চিত্রের তালিকা[সম্পাদনা]

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা টীকা
পরিচালক প্রযোজক চিত্রনাট্যকার
২০০১ অক্ষ Green tickY Red XN Green tickY
২০০৬ রং দে বাসন্তী Green tickY Green tickY Green tickY
২০০৯ দিল্লি-৬ Green tickY Green tickY Green tickY
২০১১ তিন থে ভাই Red XN Green tickY Red XN
২০১৩ ভাগ মিলখা ভাগ Green tickY Green tickY Red XN
২০১৬ মির্জ্যা Green tickY Green tickY Red XN

পুরস্কার ও মনোনয়ন[সম্পাদনা]

পুরস্কার বছর পুরস্কারের বিভাগ মনোনীত চলচ্চিত্র ফলাফল
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ২০০৭ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র রং দে বাসন্তী বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিজয়ী
২০১৪ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ভাগ মিলখা ভাগ বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিজয়ী
আন্তর্জাতিক ভারতীয় চলচ্চিত্র একাডেমি পুরস্কার ২০০৭ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র রং দে বাসন্তী বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক মনোনীত
২০১৪ শ্রেষ্ঠ পরিচালক ভাগ মিলখা ভাগ বিজয়ী

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Rakeysh Omprakash Mehra"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ১৪ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  2. SenGupta, Anuradha (৮ আগস্ট ২০০৬)। "Being Rakeysh Mehra: Inspiring youth"IBN Live। ২০১৩-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  3. Sharma, Garima (২২ নভেম্বর ২০১১)। "Studying is now like a race: Rakeysh Mehra"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  4. "Rang De Basanti chosen for Oscars"বিবিসি নিউজ। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  5. Amin, Ruhail (৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। "No more big budgets for Rakeysh Mehra"গ্ল্যামশাম। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  6. "No one wanted to produce Bhaag Milkha Bhaag: Rakeysh Omprakash Mehra"ফার্স্ট পোস্ট। ২৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  7. Ghosh, Sankhayan (১৯ ডিসেম্বর ২০১৫)। "'Mirza-Sahiban is one of the greatest love stories'"দ্য হিন্দু। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  8. "Rakeysh Omprakash Mehra: Gave ample time to Harshvardhan, Saiyami Kher to grasp their characters in 'Mirza Sahibaan'"IBN Live। ৮ মে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  9. "I just tell stories and tell them to the best of my ability: Rakeysh Mehra"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া। ১৬ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 
  10. Mukherjee, Tatsam (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Mirzya director Rakeysh Omprakash Mehra changed Rang De Basanti's climax a week before release"ইন্ডিয়া টুডেনতুন দিল্লি। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]